Ajker Patrika

সোনারগাঁয়ে ১০ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে দূষিত হয়েছে পানি। সেই পানিতে বন্দী হয়ে রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে দূষিত হয়েছে পানি। সেই পানিতে বন্দী হয়ে রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অতি বর্ষণে কৃত্রিম বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বেড়িবাঁধের ভেতরের ১০টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দা। সেই পানিতে বিভিন্ন শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে দূষিত হয়ে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে অনেক কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীর। বসতঘরে পানি প্রবেশ করায় অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের ভেতরের পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের ভারগাঁও, বাটপাড়া, কাজীপাড়া, দরগাবাড়ী, খিদিরপুরসহ প্রায় ১০ গ্রামে দেখা দিয়েছে কৃত্রিম বন্যা। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও বাড়ির উঠান। অনেকের ঘরের ভেতরে ঢুকে গেছে পানি। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ। বেকার হয়ে গেছে অনেকে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ছেলেমেয়ের স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় যাওয়া।

বিভিন্ন শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে পানি দূষিত হয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। এমনকি কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। এতে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে বৃষ্টি মৌসুম এলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত এ সমস্যা থেকে মুক্তি চান তাঁরা।

শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে দূষিত হয়েছে পানি। সেই পানিতে বন্দী হয়ে রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে দূষিত হয়েছে পানি। সেই পানিতে বন্দী হয়ে রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাটপাড়া গ্রামের আনিছুর রহমান জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলে বেড়িবাঁধের মানুষ জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। বাড়ি থেকে বের হতে না পেরে দরিদ্র পরিবারগুলো খাবারসংকটে পড়েছে।

দরগাবাড়ী গ্রামের আলী হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানে তিন ফসলি জমি রয়েছে। প্রতিবছর পানি জমে থাকায় কোনো ফসল করা যাচ্ছে না।’ অতিরিক্ত পাম্প বসিয়ে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফয়সাল আহাম্মেদ জানান, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানোর পর পানিবন্দী দরিদ্র মানুষের মধ্যে শুকনা খাবার ও চাল বিতরণ করেছেন এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য পাম্প বসানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ইউএনও ফারজানা রহমান বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের জন্য তিনটি পাম্প রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুত পাম্প বসানোর। পানিবন্দী যারা দরিদ্র, তাদের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত