Ajker Patrika

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ৩৫
Thumbnail image

রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করেছেন হোটেলটির চাকরিচ্যুত কয়েকজন কর্মী।

আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন তাঁরা। বৈষম্যের শিকার এবং বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুত শ্রমিক ও কর্মচারীবৃন্দের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান। 

তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের ইন্ডিয়াপ্রীতির কারণে কিছু রাজনৈতিক নেতা, কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত বিএসএলের (বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং হোটেলের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় ইন্ডিয়ান জিএম নিয়োগপ্রাপ্ত হন। যিনি এই হোটেলে ইন্ডিয়ান রাজত্ব কায়েম করতে চান এবং হোটেলের কর্মীদের সঙ্গে শাসকের মতো আচরণ করেন; যা আমাদের দেশীয় আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক; যা কর্মপরিবেশ ধ্বংস করে দিয়েছে।’ 

এদের অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে বিআইসিসি লস প্রজেক্টে পরিণত হয়। যেখানে পিডব্লিউডি প্রায় ৪২৫ কোটি টাকা হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে পাবে। 

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, বর্তমানে হোটেলটি প্রায় এক হাজার কোটি টাকা লোকসানে আছে। 

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ইন্ডিয়ান পরামর্শ সংস্থার মাধ্যমে অদূরদর্শী এবং অদক্ষ প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে বাংলাদেশের পরিবেশের অনুপযুক্ত হোটেল সংস্কারকাজ সম্পন্ন হয়। যার দরুন হোটেলের অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত হোটেলের প্রকৌশল বিভাগকে সংস্কারকাজে নিয়োজিত থাকতে হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে সবার পক্ষ থেকে মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বিএসএলের এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলের পক্ষ থেকে বিআইসিসিতে কর্মরত ছিলাম। পিডব্লিউডির সঙ্গে বিএসএলের চুক্তি শেষ হওয়ায় গত ২৪ জানুয়ারি বিএসএল বিআইসিসিকে পিডব্লিউডির কাছে হস্তান্তর করে। ফলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল সব কর্মীকে প্রায় এক মাস ছুটিতে রাখে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হোটেলের শ্রমিক ইউনিয়নের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্য ও এক্সিকিউটিভ কমিটির পরামর্শে বোর্ড সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুসারে কিছু কর্মীকে চাকরিতে বহাল রেখে বাকিদের আকস্মিক ও অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করে। বাকি কর্মীদের মধ্যে কিছু সদস্যকে পুনর্নিয়োগ করা হয়। কিন্তু অন্যদের ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি; যা চরম বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে।’ 

বৈষম্যের অবসান চেয়ে চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করেছেন। হোটেলের এমডিজিএম, এইচআর ডিরেক্টর, আইটি ডিরেক্টর এবং আরও কিছু সদস্য প্রবল দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। তাঁরা অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলেও জানানো হয়। দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা হোটেলটিকে দেউলিয়ার হওয়ার পথে নিয়ে যাচ্ছেন বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। 

মো. নুরুজ্জামান বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের অনৈতিক সিদ্ধান্তে সৎ ও যোগ্য কর্মচারীরা চাকরিচ্যুত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। অবৈধভাবে তাঁদের পছন্দের পূর্বপরিচিতদের নিয়োগ দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন। অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত কর্মচারীরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া মো. নুরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারী নূর মোহাম্মদ আল মাসুদ, মোহাম্মদ আতিক প্রমুখ। তাঁরা অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের দাবি জানান। চাকরিচ্যুত কর্মীদের (পারমানেন্ট এবং কন্ট্রাকচুয়াল) আগামী দুই দিনের মধ্যে নিজ নিজ পদে পুনর্বহালেরও দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত