Ajker Patrika

গরু বেচে ঋণ শোধ করবেন কুষ্টিয়ার রফিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২১, ১৩: ৩৯
গরু বেচে ঋণ শোধ করবেন কুষ্টিয়ার রফিক

রোববার বেলা আড়াইটা। রাজধানীর ভাটারার কাছে ১০০ ফুট সাঈদনগর বালুর মাঠ গরুর হাট। চারপাশে সারি সারি গরু। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাটে ব্যাপারীদের কেউ ১০টি তুলেছেন, আবার কেউবা ১৫টি গরু। কিন্তু হাটের মাঝখানে ওয়াচ টাওয়ারের নিচে মাত্র একটি গরু দাঁড় করানো। আসা–যাওয়ার পথে দরদাম করছেন ক্রেতারা। কিন্তু মনমতো দাম না পাওয়ায় বিক্রি করছেন না কুষ্টিয়া থেকে আসা ব্যাপারী রফিকুল ইসলাম।

এত দূর থেকে তিনি একটিমাত্র গরু হাটে এনেছেন শুধু ঋণের টাকা শোধ করার জন্য। মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য গত বছর ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ করেছিলেন। করোনার এই দুর্যোগে তা শোধ করতে পারছিলেন না। তাই শেষ ভরসা নিজের গোয়ালের গরু। সেটা নিয়েই হাজির হয়েছেন সাঈদনগর হাটে।

আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপে রফিক জানান, কৃষিকাজ করে যে আয় হয়, তা পরিবারের ভরণপোষণেই চলে যায়। ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য চাপের মধ্যে রয়েছেন অনেক দিন। কিছুতেই টাকার ব্যবস্থা করতে পারছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে গোয়ালে থাকা গরু নিয়ে চলে এসেছেন ঢাকায়।

চার দিন আগে সাঈদনগর হাটে লাল রঙের এই গরুটি তুলেছেন রফিক। কিন্তু প্রত্যাশিত দাম না মেলায় বিক্রি করতে পারছেন না। রফিক বলেন, ‘এলাকার আরও কয়েকজনের সঙ্গে আসছি। তারা একেকজন চার-পাঁচটা করে আনছে। সঙ্গে আমারটাও উঠাইছি।’

‘হাটে আনার পর সবাই দাম জিজ্ঞেস করে। কেউ ভালো দাম বলে না। গরু বিক্রি করার ইচ্ছা ছিল না। এই গরুটা আমার নিজের বাড়ির। অনেক যত্ন করে পালছি। কিন্তু মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সময় টাকা ধার করছিলাম ১ লাখ ২০ হাজার। সংসারের টানাটানি। যে কাজ করি সেটার টাকা দিয়া ধার শোধ কইরবার পারি নাই। তাই গরুটা নিয়া আসছি।’

ক্রেতারা দাম জিজ্ঞেস করলে গরুটি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকছেন রফিক। রোববার সকাল থেকে অন্তত ২০ জন ক্রেতা দরদাম করেছেন। কিন্তু বিক্রি করতে পারছেন না। রফিক বলেন, ‘গরুটা সবাই দেখে পছন্দ করতেছে। কিন্তু কেউ ১ লাখ টাকা বলে আবার কেউ ১ লাখ ১০ হাজার পর্যন্ত দাম বলে। আমি ১ লাখ ৪০-৫০ হাজার টাকা হইলে বিক্রি করে দিব। ধারের টাকা দিয়া যা থাকে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত