Ajker Patrika

৯ ঘণ্টা পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু, দীর্ঘ যানজট

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ০৭
Thumbnail image

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। 

এতে দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ জামতলা বাজার এলাকা পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটারজুড়ে যানবাহনের লম্বা লাইন তৈরি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন আটকে থাকা শত শত যানবাহনের যাত্রী ও চালকেরা।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত ১টার পরে অতিমাত্রায় কুয়াশার ঘনত্ব বাড়ায় নৌদুর্ঘটনা এড়াতে রাত দেড়টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। কুয়াশার ঘনত্ব কমে এলে ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে ১০টায় পুনরায় এই নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়। 

বুধবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে দেখা যায়, ফেরিঘাট এলাকায় সহস্রাধিক ঢাকামুখী গাড়ি নদী পাড়ি দিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ জামতলা বাজার পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছে। শীত ও কুয়াশায় আটকে থাকা যাত্রীরা গাড়িতেই বসে আছেন। অনেকে গাড়ি থেকে নেমে বাইরে চায়ের স্টলে ভিড় করছেন। অনেকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে ফেরিঘাটের দিকে এগোচ্ছেন। ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কসহ পন্টুনে কিছু গাড়ির সঙ্গে বেশ কিছু যাত্রী কখন ফেরিতে উঠবেন সে জন্য অপেক্ষা করছেন। অনেকে আবার ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে নদী পাড়ি দিচ্ছেন। 

ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে নদী পাড়ি দিতে আসা খাইরুল আলম বলেন, ‘আমার গাড়িটা ফেরিঘাট থেকে এখনো প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। আমাকে দ্রুত ঢাকায় যেতে হবে। তাই ঝুঁকি নিয়েই একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ট্রলারে করে নদী পাড়ি দেব।’

ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে ওঠার ব্যাপারে দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, নৌ-দুর্ঘটনা এড়াতে নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক টহল দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রলারচালকেরা স্থান পরিবর্তন করেন। ফেরিঘাট থেকে লঞ্চঘাট, আবার লঞ্চঘাট থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে যাত্রী পারাপার করার চেষ্টায় আছেন। ট্রলারে যাতে করে কেউ পারাপার হতে না পারে, সে জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে।’ 

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যানবাহনগুলো সকাল ১০টার দিকেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। রিকশা, অটোরিকশা ও ভ্যানে করে জরুরি কাজে ছুটে চলা মানুষের জবুথবু অবস্থায় বসে চলাচল করতে দেখা যায়।

সাতক্ষীরা থেকে মঙ্গলবার রাত ৭টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে রাত ১২টার দিকে ওয়াজেদ চৌধুরী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এসে সিরিয়ালে আটকা পড়ে এ কে ট্রাভেলসের একটি পরিবহন। কিছু দূর এগোতেই ফেরি বন্ধ হয়ে গেলে সারা রাত সিরিয়ালেই থাকতে হয় তাদের। বাসের সুপারভাইজার ফজর আলী বলেন, ‘আমাদের ভোরবেলায় গাবতলী পৌঁছানোর কথা থাকলেও ফেরিঘাট থেকে এখনো দুই কিলোমিটার দূরে আছি। ফেরি পেতে এখনো তিন-চার ঘণ্টা লাগবে।’   

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া  ও পাটুরিয়ায় সাতটি করে ফেরি নোঙর করে ছিল। কুয়াশায় ফেরি বন্ধের ৯ ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরি ছেড়ে যায়। ফেরি বন্ধ ও স্বল্পতার কারণে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হয়। এতে দৌলতদিয়া প্রান্তে সাত শতাধিক বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকে রয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত