Ajker Patrika

বস্তিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসছে শিগগিরই

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ১৭
Thumbnail image

রাজধানীতে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা বস্তিগুলোয় আগুন লাগলে নেভাতে গিয়ে নানা সংকটে গলদঘর্ম হতে হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। বস্তির আগুন নেভাতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়তে হয় পানির জন্য। বেশির ভাগ বস্তিতে সহজে পানি পাওয়ার সুযোগ না থাকায় অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। আর আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় পুড়ে ছারখার হয় বস্তিবাসীর স্বপ্ন ও জীবন।

এমন পরিস্থিতিতে গত জুনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছিলেন, রাজধানীর সব কটি বস্তিতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ফায়ার হাইড্রেন্ট (অগ্নিনির্বাপণ কাজে ব্যবহৃত বিশেষ পানিকল) বসানো হবে। এরপর পেরিয়ে গেছে সাড়ে চার মাস, এখনো এ সংক্রান্ত কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি।

জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সেলিম রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রত্যেক বস্তি এলাকা কেন্দ্র করে ফায়ার হাইড্রেন্টের প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এবারের বাজেটে এ জন্য বরাদ্দও রাখা হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হবে।’

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে ঢাকা শহরের বিভিন্ন বস্তিতে অন্তত ২৪ বার অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এ সময়ে সারা দেশের বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে ৪৭ বার। ঢাকার বস্তিতে আগুনে ক্ষতি হয়েছে ৮৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। সারা দেশে ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ১৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা। তবে বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।

ডিএনসিসি সূত্র জানায়, দুর্যোগ মোকাবিলায় নতুন অর্থবছরে (২০২১-২২) ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই টাকায় বস্তিবাসীর বাসস্থান নিরাপদ রাখতে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমে কড়াইলসহ প্রধান বস্তিগুলোয় ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানোর কাজ শুরু হবে।

ফায়ার হাইড্রেন্টসম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন স্থপতি ইকবাল হাবিব। আজকের পত্রিকা তিনি বলেন, ‘ফায়ার হাইড্রেন্টে পানি সরবরাহসহ অন্যান্য কাজ ওয়াসার। হাতিরঝিল, ধানমন্ডি লেক, কল্যাণপুরসহ শহরে যেসব জলাধার আছে, এসব জলাধার ব্যবহার করে হাইড্রেন্ট সিস্টেম করা যেতে পারে। যথেষ্ট সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রকল্প হাতে নিতে হবে। এমনিতে কাটাছেঁড়ায় নগরীজুড়ে খারাপ অবস্থা।’

বস্তির অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক না করে শুধু ফায়ার হাইড্রেন্ট বসালে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমবে না বলে মন্তব্য করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ‘হাইড্রেন্ট থাকা মানে আগুন লাগার ঝুঁকি কমে যাবে—বিষয়টা এমন নয়। হয়তো আগুন নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। কিন্তু আগুন লাগার কারণগুলো বিদ্যমান থাকবে। কারণ, বস্তিগুলো বানানো হয় বাঁশ-কাঠের মতো দাহ্য পদার্থ দিয়ে। বস্তিতে অবৈধ গ্যাসের ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে। এসব কারণে সব সময় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির মধ্যে থাকে বস্তিগুলো। এর জন্য অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের বিকল্প নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত