রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা, মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট

চলতি বছরের শেষ মুহূর্ত ‘থার্টি ফাস্টর নাইট’ ঘিরে রাজধানীতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা। ইংরেজি নববর্ষ-২০২৩ উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে বছরের শেষ রাতে ঢাকা মহানগর এলাকায় জনশৃঙ্খলা ও যানবাহনে শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে কিছু এলাকায় সাময়িক ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী ও হাতিরঝিল, শাহবাগসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এবং মোড়ে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে অছাত্র ও বহিরাগতদের বের করে দেওয়া হয়েছে সন্ধ্যার পর। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। থার্টি ফার্স্ট নাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালনে থাকছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ছাড়াও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করতে থার্টি ফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে ফানুস ওড়ানো প্রতিবছর নিষিদ্ধ করা হয়। এবারও সেই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার (মদের দোকান) খোলা থাকবে না। সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে থার্টি ফার্স্ট নাইট-২০২২ উদ্‌যাপন উপলক্ষে কমিশনারস মিট দ্য প্রেসে ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রধান খন্দকার গোলাম ফারুক এমন একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন।

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকায় রাত ৮টা থেকে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। রাত ৮টার পর থেকে ওই এলাকায় প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ওই এলাকায় প্রবেশের জন্য আমতলী ও কাকলী ক্রসিং খোলা থাকবে। সেখানকার বসবাসরত নাগরিকদের রাত ৮টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় প্রবেশের অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘থার্টি ফার্স্ট উপলক্ষে নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে। হাতিরঝিল এলাকায় ডুবুরি মোতায়েন থাকবে। তবে সন্ধ্যার পরে হাতিরঝিলে কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’

রামপুরা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। সন্ধ্যার পর থেকে এই এলাকায়ও সজাগ দৃষ্টি রেখেছে পুলিশ। এ বিষয়ে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজকের রাতে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা তৎপর আছি। সব গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আমাদের ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। রাখা হয়েছে পুলিশ চেকপোস্ট।’

গুলশান এলাকার জন্য গত বৃহস্পতিবারই দেওয়া হয়েছে এই রাতের জন্য আলাদা নির্দেশনা। ডিএমপির সেই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টা থেকে ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনযোগে প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) ও মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। রাত ৮টা থেকে গুলশান বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে মহাখালী এলাকা ও ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড, চেয়ারম্যানবাড়ি মোড়, ঢাকা গেট, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে না। তবে ওই এলাকা থেকে বের হওয়ার জন্য এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে, যার কারণে টিএসসি ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় লোকজনের ভিড় নেই বলা চলে। বিশৃঙ্খলা ও অতিরঞ্জিত করে নতুন বছরের প্রথম প্রহর উদ্‌যাপনে নিরুৎসাহিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ ছাড়া নগরীর ২১টি পয়েন্টে ডাইভারশন চলবে। পয়েন্টগুলো হলো—ফিনিক্স ক্রসিং, শান্তা ক্রসিং, বটতলা ক্রসিং, জিএমজি মোড়, পুরাতন আড়ং ক্রসিং, নিকেতন ক্রসিং, পুলিশ প্লাজা ক্রসিং, মসজিদ গ্যাপ, মায়াগঞ্জ ক্রসিং, বনানী চেয়ারম্যানবাড়ি মোড়, বনানী ১১ নম্বর রোড, শুটিং ক্লাব ক্রসিং, ইউনাইটেড হাসপাতাল গ্যাপ, বনানী ২৩ নম্বর রোড, ঢাকা গেট, মানারাত ক্রসিং, নতুন বাজার ক্রসিং, জাতিসংঘ গোল চত্বর, গুদারাঘাট গ্যাপ, বাড্ডা লিংক রোড ও কালাচাঁদপুর গ্যাপ।