Ajker Patrika

সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না দেড় কোটি টাকার সেতু

মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী
সেতুটির কাজ শেষ হলেও দুই পাশে কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় গত তিন বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেতুটির কাজ শেষ হলেও দুই পাশে কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় গত তিন বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নের দীঘিরজান-বজরা সড়কের মাওলানা বাড়ির সামনে খালের ওপর প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতুটির কাজ শেষ হলেও দুই পাশে কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় গত তিন বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি সেটি। ফলে সেতুর কোনো সুফল পাচ্ছে না স্থানীয় বাসিন্দারা। সড়ক বিভাগ বলছে, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সংযোগ সড়ক সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত করতে না পারায় সেতুটি চালু করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একপাশে ভাঙাচোরা সড়ক অপর পাশে পানিতে ভরা পুকুর। এর মাঝখানে খালের ওপর তৈরি করা হয়েছে সেতুটি। জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলা থেকে সেনবাগ উপজেলায় চলাচলের পথে পুরোনো সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় স্থানীয়দের চাহিদার ভিত্তিতে বজরা ইউনিয়নের মাওলানা বাড়ির সামনে খালের ওপর ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ১৮ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থ সেতুটি নির্মাণের প্রায় তিন বছর শেষ হলেও তা কারও কাজে আসছে না।

স্থানীয়রা বলছেন, সেনবাগ উপজেলা থেকে সোনাইমুড়ী উপজেলায় আসার সহজ পথ এ সড়কটি। কিন্তু নতুন ব্রিজের পাশে থাকা পুরাতন ব্রিজটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাওয়ায় এবং দুই পাশে কোনো রেলিং না থাকায় প্রতিনিয়ত পারাপারে সেখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। দিনের বেলায় দেখেশুনে ব্রিজটি পার হতে পারলেও রাতের বেলায় বেশি ঘটছে দুর্ঘটনা। বিকল হচ্ছে যানবাহন, আহত হচ্ছে মানুষ।

সেতুটির কাজ শেষ হলেও দুই পাশে কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় গত তিন বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেতুটির কাজ শেষ হলেও দুই পাশে কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় গত তিন বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ছবি: আজকের পত্রিকা

আব্দুল হামিদ নামের একজন সিএনজি চালক বলেন, ‘এ সড়কটি মূলত সেনবাগ উপজেলা থেকে সোনাইমুড়ী উপজেলায় আসা-যাওয়া করার সংযোগ সড়ক। আগে এটি ভাঙাচোরা ছিল। গত কয়েক বছর আগে দীঘিরজান থেকে বজরা বাজার পর্যন্ত সড়কটির নতুন করে কাজ করা হয়। আগে গাড়ির চাপ কম থাকলেও সড়ক নতুন করে করার পর গাড়ির চাপ বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েক গুণ।’

মনির হোসেন নামের একজন পিকআপচালক বলেন, ‘এ সড়কটি ব্যবহার না করলে আমাদের চৌমুহনী চৌরাস্তা হয়ে সোনাইমুড়ী ও আশপাশের বাজারগুলোতে যেতে হবে। আর চৌমুহনী দিয়ে আসলে ১৫ মিনিটের পথ যানজটের কারণে দুই ঘণ্টায়ও আসা সম্ভব হবে না। মাওলানা বাড়ির সামনের ব্রিজটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক করে দ্রুত চালু করে দিলে এ পথে চলা লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হবে।’

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, এ ব্রিজটি দীঘিরজান থেকে বজরা সড়কের একটি অংশ ছিল। সড়কের কাজ অনেক আগে শেষ করে সেটি চালু করা হয়েছে, যার সুফল মানুষ পাচ্ছে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে ব্রিজটির সঙ্গে সড়কের সংযোগ করা সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের ৭ ধারা শেষ হয়েছে। স্টিমেট পাওয়ার পর অধিগ্রহণ জটিলতা শেষ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিজটি চালু করা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত