Ajker Patrika

হাটে আসছে গরু, জমেনি বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ০৯: ২২
বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রলারে করে ঢাকায় আসছে কোরবানির পশু। ছবি: মেহেদী হাসান
বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রলারে করে ঢাকায় আসছে কোরবানির পশু। ছবি: মেহেদী হাসান

পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানী ঢাকায় বসেছে কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাট। হাটগুলোতে দেশীয় গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়ার পাশাপাশি উঠেছে দুম্বা এবং উট। তবে বেচাকেনা তেমন শুরু হয়নি।

এবার দেশীয় পশুতেই কোরবানির সক্ষমতার কথা জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এক যুগ আগেও কোরবানির জন্য ভারতীয় পশুর ওপর নির্ভরতা ছিল।

এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ২১টি কোরবানির পশুর হাট বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় বসেছে ১৩টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ৮টি। গাবতলী এবং ডেমরার সারুলিয়ায় স্থায়ী হাট রয়েছে। পূর্বাচলের ৩০০ ফুটেও হাট বসেছে।

গত রোববার এবং গতকাল সোমবার কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু-ছাগল নিয়ে হাটে আসছেন খামারি ও পশুর ব্যাপারীরা। কুষ্টিয়ার শৈলকুপা উপজেলা থেকে ১৫টি গরু নিয়ে মোহাম্মদপুরের বছিলায় কোরবানির পশুর হাটে এসেছেন আবুল কাশেম ব্যাপারী। তিনি জানান, গ্রামের বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে এনেছেন। বেশির ভাগই দেশি গরু। গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম সামান্য বেশি।

বছিলা হাটে গরু নিয়ে আসা আরেক ব্যাপারী নওগাঁর আইজুল মিয়া বলেন, এবার কোরবানির পশুর বাজার অত সুবিধার মনে হচ্ছে না। গ্রামের পশুর হাট জমজমাট হলেও ঢাকার হাটগুলো জমেনি। দু-একজন হাটে এলেও দাম যাচাই করে ফিরে যাচ্ছেন।

গাবতলী হাটে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও রাজবাড়ী থেকে খামারিরা কেউ ১৫টি, কেউ ২৫টি গরু নিয়ে এসেছেন। যশোর থেকে গরু নিয়ে এসেছেন সাবের হোসেন। তাঁর লাল রঙের সবচেয়ে বড় গরুটির দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। সাবের বলেন, ‘পাকিস্তানি সিন্ধি জাতের এই গরুর ওজন বেশি। দেখতেও ভালো, তাই ২০ লাখ টাকা দাম চেয়েছি। এখনো ক্রেতা পাইনি।’

দু-একজন ক্রেতার দেখা মিলেছে হাটে। পূর্বাচল হাটে গরু কিনতে আসা মোহাম্মদ নামের একজন জানান, তিনি ৮০ হাজার টাকায় একটি মাঝারি দেশি গরু কিনেছেন। নামাপাড়ার আল আমিন শিকদার ছেলেকে নিয়ে হাট ঘুরে একটি গরু কিনেছেন ১ লাখ টাকায়।

শাহজাহানপুর, ইস্টার্ন হাউজিং, ভাটারা, দনিয়া কলেজের সামনে, ধোলাইখাল, কমলাপুর হাটে বিক্রেতারা কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন। আরও ব্যাপারী গরু, মহিষ, ছাগল নিয়ে আসছেন। তবে হাটগুলোতে বেচাকেনা জমে ওঠেনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, এবার কোরবানির জন্য ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৫৪৪টি খামারে প্রস্তুত করা হয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি গবাদিপশু। এগুলোর মধ্যে ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি গরু-মহিষ, ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি ছাগল-ভেড়া এবং ৫ হাজার ৫১২টি অন্য প্রজাতির। এ বছর ২০ লাখ ৬৮ হাজার ১৩৫টি গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকবে। গত বছর প্রস্তুত ছিল ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. বয়জার রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু রয়েছে। ফলে দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকবে। খামারিরাও ন্যায্যমূল্য পাবেন।

জানা গেছে, কোরবানির পশুর চাহিদার ৭০ শতাংশ আসবে তিনটি বিভাগ থেকে। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ আসবে রাজশাহী বিভাগ থেকে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাথমিক হিসাবে দেশে এবার প্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকার কোরবানির পশু বিক্রি হবে।

কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোরবানির ঈদে পশুর অর্থনৈতিক বাজার এক লাখ কোটি টাকার। কোরবানিতে পশু কেনাবেচায় খামারিদের আয়ের সুযোগ হয়। কর্মসংস্থান হয় পশুর ব্যাপারীদের। কোরবানির পর পশুর চামড়ারও বড় বাজার রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত