Ajker Patrika

শুধু চাল নয়, আর্থিক সহায়তাও চান জেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫: ০৯
Thumbnail image

সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় শুধু চাল নয়, প্রতি মাসে প্রতি পরিবারের জন্য কমপক্ষে ৮ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মৎস্যশ্রমিকেরা। 

আজ মঙ্গলবার ঢাকার প্রেসক্লাবে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘জেলে কার্ড পাওয়ার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা ও কিছু সুপারিশ’ শীর্ষক গবেষণার তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলেদের এসব দাবির কথা জানান বক্তারা। ২০১৮ সাল থেকে পাথরঘাটা ও মহেশখালীতে চলে আসা এ গবেষণায় সহযোগী হিসেবে আছে বিলস, কোস্ট ফাউন্ডেশন, টেকসই সমুদ্র মানবাধিকার মৎস্য আহরণ ও চাষ, দ্য ড্যানিশ ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান রাইটস ও সুইডেন সারভিজ। 

অনুষ্ঠানে গবেষণার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শেখ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সরকারি যে চালের সহায়তা দেওয়া হয়, তা একেবারেই অপ্রতুল। চালের বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতি মাসে প্রতিটি জেলে পরিবারের জন্য যদি অন্তত ৮ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়, তাহলে তারা মোটামুটিভাবে চলতে পারে।

জানান, গবেষণাধীন এলাকায় মাত্র ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ মৎস্যজীবী জেলে কার্ডধারী। বাকিরা কার্ড পাননি। ৬৫ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় মাত্র ৪৬ শতাংশ জেলে সরকারি বরাদ্দকৃত চাল পেয়েছেন। বাকিরা কোনো সহায়তা পাননি। ফলে এ সময় অনেককেই উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে চলতে হয়, যা তাঁদের সারা জীবনের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। জানান, অল্পসংখ্যক নারীকেও জেলে হিসেবে তাঁরা পেয়েছেন, যাঁরা জেলে কার্ডধারী। 

সভাপতির বক্তব্য মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি পরিচালক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী বলেন, মৎস্যজীবীরা যাতে শ্রমিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান, সে বিষয়টিতে নজর দেওয়া জরুরি। এতে শ্রমিক হিসেবে তাঁদের অধিকার নিয়ে কথা বলা যাবে। এসব শ্রমিকের মানবাধিকার, তাঁদের সন্তানদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বাহাদুর বলেন, যখন সরকারি তালিকা করা হয়, তখন অধিকাংশ জেলে সমুদ্রে থাকেন। ফলে তাঁরা তালিকার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা দাদনের কাছ থেকে ১২০ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হন। এটাকে ভয়ানক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। 

মিজানুর রহমান বলেন, তাঁরা নিষেধাজ্ঞা মানতে চান, তবে এই সময়ে জেলেরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হন, সে অনুযায়ী তাঁরা তেমন কিছুই পান না। ফলে তাঁদের খুবই মানবেতরভাবে চলতে হয়। 

মিজানুর আরও জানান, তেলের দাম বাড়ায় অনেক জেলে ছোট ছোট জেলে নৌকা নিয়ে সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে তাঁরা এখন শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

অন্য বক্তারা জানান, সরকারের আর্থিক সহায়তা ছাড়া জেলেদের এ অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়। পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত