Ajker Patrika

ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধ, স্বস্তি নদীপারের মানুষের

বেলাল হোসাইন, শরীয়তপুর
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪, ১২: ০১
ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধ, স্বস্তি নদীপারের মানুষের

শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীর দুই পাড়ে ৩৫৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। নদীর দুই পাড়জুড়ে পুরোদমে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। ৫০ বছরের ভাঙনকবলিত কীর্তিনাশা নদীর পাড় এখন ধীরে ধীরে দৃষ্টিনন্দন পর্যটন এলাকায় পরিণত হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পটির ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করায় স্বস্তি ফিরছে দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীর নড়িয়া থেকে প্রবাহিত হয়ে সদর উপজেলার ওপর দিয়ে কীর্তিনাশা নদীটি মাদারীপুর সদরের রাজারচর এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদে গিয়ে মিলিত হয়েছে। প্রতিবছর বর্ষা শুরু হলে নড়িয়া ও শরীয়তপুর সদরের ২০টির বেশি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেয়। এতে বহু ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, গাছপালাসহ বহু স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। নদীর এই ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে দীর্ঘদিন যাবৎ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল ভাঙনকবলিত দুই পাড়ের মানুষ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর ‘শরীয়তপুর জেলার কীর্তিনাশা নদীর ডান ও বাম তীর রক্ষা (১ম সংশোধিত) প্রকল্প’ একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩৫৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় ১১.৮৪ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, ৩.৮৫ কিলোমিটার সতর্কতামূলক নদীতীর সংরক্ষণ ও দুটি রেগুলেটর নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জেলার দুটি পৌরসভা, আটটি ইউনিয়ন ও মাদারীপুরের একটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে। এতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২২ সালের ৯ মার্চ প্রকল্পটির ১১.৮৪ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী বর্ণ হক বলেন, ‘অক্টোবর ২০২১ থেকে জুন ২০২৫ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২১টি প্যাকেজে ১১.৮৪ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ চলমান আছে। এ জন্য একাধিক ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। ৯টি প্যাকেজে ৩.৮৫ কিলোমিটার সতর্কতামূলক নদীতীর সংরক্ষণ কাজ ও একটি প্যাকেজে একটি এক ভেন্ট ও একটি দুই ভেন্টের রেগুলেটর নির্মাণকাজের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

বিভাগীয় প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘১১.৮৪ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ কাজের পুরোটা প্রথমে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে। এরপর ব্লক ডাম্পিং, পরে স্লপ (ঢাল) প্রস্তুত এবং সর্বশেষ ব্লক প্লেসিং করা হবে। ৩.৮৫ কিলোমিটার সতর্কতামূলক নদীতীর সংরক্ষণকাজের প্রথমে জিও ব্যাগ ডাম্পিং, এরপর স্লপ প্রিপারেশন এবং সর্বশেষ স্যান্ড সিমেন্ট ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে।’

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব বলেন, ‘প্রকল্পটির ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের শুরু থেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট টিম তদারক করে যাচ্ছে। কাজের গুণগত মান নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ নেই। সবাই সন্তোষজনক প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। আশা করছি গুণগত মান বজায় রেখেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।’

শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বলেন, ‘কীর্তিনাশা নদীর ভাঙন দুই পাড়ের বহু মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য দীর্ঘদিনের একটি সমস্যা ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাঙন রোধে প্রকল্প দিয়েছেন। এ জন্য আমরা শরীয়তপুরবাসী তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। কাজ সম্পন্ন হলে দীর্ঘদিনের ভাঙন থেকে আমরা রক্ষা পাব এবং ভাঙনকবলিত নদীর তীর পর্যটন এলাকায় পরিণত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত