Ajker Patrika

সম্রাটের জামিন শুনানি শেষ হয়েছে, আদেশ পরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১২: ২৫
সম্রাটের জামিন শুনানি শেষ হয়েছে, আদেশ পরে

ঢাকা মহানগর যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় জামিন শুনানি হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ হাসিবুজ্জামানের আদালতে এই শুনানি হয়। 

সম্রাটের পক্ষে অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী, গাজী জিল্লুর রহমান প্রমুখ শুনানি করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে মোশারফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করেন। 

আজ এই মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল। সম্রাটকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য আইনজীবী সময় চাইলে আদালত সময় মঞ্জুর করেন। 

জামিন শুনানির সময় সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সম্রাটের অসুস্থতার বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘গুরুতর অসুস্থ থাকায় তিনি জামিন পেতে পারেন। সম্রাট এমন একজন ব্যক্তি, যিনি পালাবেন না।’ 

সম্রাটের আইনজীবীরা বলেন, সম্রাট নির্দোষ। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আনা হয়েছে। তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে গুরুতর অসুস্থ। তাঁকে তিলে তিলে ধ্বংস করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলা দেওয়া হয়েছে। আড়াই বছর ধরে সম্রাট কারাগারে আছেন। কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর জামিন প্রয়োজন। 

দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করেন। 

শুনানি শেষে আদালত বলেন, ‘আসামিপক্ষ থেকে অনেক কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে। সেসব পর্যালোচনা করতে সময়ের প্রয়োজন। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আমি পরে আদেশ দেব। তবে আজই আদেশ হবে।’ 

এর আগে গত ২২ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বদলি করেন। 

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। 

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন এবং বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে তাঁর ১ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। 

ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরে তাঁকে নিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

পরদিন র‍্যাব বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে। সেইসব মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। পরে সিআইডি অর্থ পাচারের অভিযোগে এবং দুদক জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আরও দুটি মামলা করে। 

গত সোমবার মাদকের মামলায় এবং এর আগে রোববার অর্থ পাচার ও অস্ত্র আইনে দায়ের করা পৃথক তিন মামলায় সম্রাটকে জামিন দেন ঢাকার তিনটি পৃথক আদালত। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত