Ajker Patrika

নেপথ্যে অ্যানালিস্ট শফিকুল!

তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৮: ৩৯
নেপথ্যে অ্যানালিস্ট শফিকুল!

চট্টগ্রাম ওয়াসার সার্ভারে দুই সপ্তাহ ধরে ঢোকাই যাচ্ছে না। এ কারণে বিল জমা দিতে গ্রাহকদের চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ত্বকপোড়া রোদে তাঁদের দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সার্ভারের এই কচ্ছপগতির পেছনে সংস্থাটির সিস্টেম অ্যানালিস্ট শফিকুল বাশারের হাত আছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অবশ্য গ্রাহকদের কষ্ট বাড়িয়ে ‘রক্ষা’ পেলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশকে গুরুত্ব না দিয়ে বিপদে পড়েছেন শফিকুল। দায়িত্বে অবহেলার জন্য এই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

সিস্টেম অ্যানালিস্টকে দেওয়া নোটিশের একটি কপি আজকের পত্রিকা'র কাছে সংরক্ষিত আছে। সেই কারণ দর্শানোর নোটিশ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৬ মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ওয়াসার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের সভা হয়। সেই সভায় জুম মিটিংয়ে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য সিস্টেম অ্যানালিস্টকে আগেভাগেই নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) তাহেরা ফেরদৌস বেগম ও সচিব শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী সভার আগে ত্রুটিহীন উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা সম্পৃক্ত করার জন্য বারবার তাঁকে নির্দেশ দেন। কিন্তু সভা চলার সময় সেই সেবা পাওয়া যায়নি। তাতে সভা বিঘ্নিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

ওয়াসার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্ব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জুম মিটিংয়ে যুক্ত হওয়ার পর ডিভাইস জটিলতার কারণে বারবার আলোচনা বিঘ্ন হচ্ছিল। এটি চলতে থাকে অনেকক্ষণ। একপর্যায়ে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ল্যাপটপ ছুড়ে মারেন। আরেকজন কর্মকর্তা অবশ্য সেটি ধরে ফেলেন। এরপরই সিস্টেম অ্যানালিস্টকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে সচিবকে নির্দেশ দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

ওয়াসার সচিব শাহিদা ফাতেমা চৌধুরীর সই করা এই নোটিশের জবাব সাত দিনের মধ্যে সিস্টেম অ্যানালিস্টকে দিতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘আপনার এই ধরনের দায়িত্বে অবহেলা চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রবিধানমালা-২০২০-এর আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধিমালার ৪৮ ধারার পরিপন্থী। এমন অবহেলার জন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা সাত কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।’

শফিকুলের বিরুদ্ধে অবশ্য অভিযোগ নতুন নয়। তাঁর স্ত্রী লুৎফি জাহানও ওয়াসায় কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে দায়িত্বে আছেন। দুজনের নিয়োগ নিয়েই আছে প্রশ্ন। কয়েক মাস আগে ওয়াসায় আসা স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন অডিট অধিদপ্তর টিমও দুজনের ‘গায়েবি’ নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আবার ওয়াসার এমডির ‘আত্মীয়’ পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখানোর অভিযোগও আছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

আগেও সার্ভারের জটিলতার পেছনে শফিকুল বাশার জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঈদের ছুটি শেষে অফিস শুরুর প্রথম দিনই শফিকুল নতুন করে সার্ভার চালু করেন। এটি করতে গিয়ে বেশ কিছু কারিগরি বিষয় গুলিয়ে ফেলেন তিনি। তাতে শুরু হয় জটিলতা।

কারণ দর্শানোর নোটিশের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল বাশার মোবাইলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে আসলে আমার সরাসরি কোনো দায় নেই। জুম মিটিং শুরু হলো। কথাবার্তা চলছিল। এর মধ্যেই ডিভাইসটা হ্যাং করলে সমস্যা হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সার্ভার জটিলতার বিষয়ে শফিকুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঈদের লম্বা বন্ধে সার্ভার বন্ধ ছিল। ঈদের পর চালু করতে গিয়ে দেখা গেল চালু হয়নি। আসলে আমাদের চারটি সার্ভারের মধ্যে তিনটি চালু হয়েছে, একটি হয়নি। সেটি চালু করতে গিয়ে কিছু জটিলতা হয়। এটি হতেই পারে। আমরা এটি ঠিক করতে রাত-দিন কাজ করছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত