Ajker Patrika

সাংবাদিকদের ফোন কেড়ে নিয়ে শাসালেন কুবি ছাত্রলীগ নেতা

কুবি প্রতিনিধি
সাংবাদিকদের ফোন কেড়ে নিয়ে শাসালেন কুবি ছাত্রলীগ নেতা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) তিনজন সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে প্রমাণ লোপাট ও শাসানোর অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার সাকিবের বিরুদ্ধে। এ সময় তিনি আরও কয়েকজন নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বার্তা ২৪ এর কুবি প্রতিনিধি অনন মজুমদার, বাংলা ট্রিবিউনের কুবি প্রতিনিধি ইমতিয়াজ হাসান রিফাত ও বাংলাদেশ বুলেটিনের কুবি প্রতিনিধি জাভেদ রায়হানের ব্যক্তিগত ফোন কেড়ে নেন, তাদের শাসান এবং দালিলিক প্রমাণ নষ্ট করেন।

গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে পূর্বে প্রকাশিত সংবাদের জেরে কথা বলার একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক ইমতিয়াজ হাসান রিফাত ও জাভেদ রায়হান বলেন, ‘কুবি ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস ভাই আমাদের সঙ্গে পূর্বে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে কথা বলছিলেন। এর একপর্যায়ে আমাদের ওপর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন খায়রুল বাশার সাকিব। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ঘিরে ছিলেন। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আমরা তিনজন দালিলিক প্রমাণ হিসাবে রেকর্ড করার চেষ্টা করলে খায়রুল বাশার সাকিব আমাদের হাত ও পকেট থেকে মোবাইল কেড়ে নেন এবং রেকর্ড ডিলিট করতে বাধ্য করেন। এ সময় তিনি রেকর্ড কেন করেছি, তা নিয়ে আমাদের হেনস্তা করেন।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খায়রুল বাশার সাকিব প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন। পরে বলেন, ‘আমি তাদের জিজ্ঞাসা করেছি রেকর্ড করছে কি না। এরপর সে নিজেই তা ডিলিট করেছে।’ 

কেন সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘তারা অনুমতি নিয়ে রেকর্ড করেনি। তাই তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে।’ 

গত ১৯,২০ ও ২১ জুলাই কুবি শাখা ছাত্রলীগের মানববন্ধন, একই দিন উপাচার্যের কক্ষে কুবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের বিরুদ্ধে টেন্ডার বাণিজ্য এবং নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়ে উপাচার্যকে চাপ প্রয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরই জেরে খায়রুল বাশার সাকিব কুবি প্রতিনিধি আবু সাঈদকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সিট থেকে চলে যেতে বলেন এবং তাঁর সিটে প্রথম বর্ষের একজনকে তুলে দেন। পরবর্তীতে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের হস্তক্ষেপে আবু সাইদকে তাঁর নিজের সিট বুঝিয়ে দেওয়া হয়। 

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু সাইদ বলেন, ‘উনি (সাকিব) রুমে এসে আমাকে বলে, তোমাকে রুমে কে তুলছে? আমি তাঁকে জানাই, প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে কথা বলে আমি গত বছর হলে উঠি। তখন উনি এ ব্যাপারে কিছুই জানে না জানিয়ে প্রথম বর্ষের একজনকে আমার বেডে তুলে দেন এবং আমাকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খায়রুল বাশার সাকিব বলেন, ‘আমি এসব কাজ করিনি।’ 

তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একই রুমে থাকা রফিক উদ্দিন বলেন, ‘খাইরুল বাশার সাকিব ভাই রুমে এসে আবু সাইদকে বের হয়ে যেতে বলেন ও তাঁর সিটে আরেকজনকে উঠিয়ে দেন।’

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ড. মো. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখন জানলাম। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’ 

ছাত্রলীগের এই নেতার বিরুদ্ধে এর আগে গত ১৮ মার্চ ডেকোরেশন ব্যবসায় ব্যবহৃত বাঁশে প্রস্রাব করতে নিষেধ করায় স্থানীয় এক যুবককে পেটানোর অভিযোগ রয়েছে। এই সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই এই তিন সাংবাদিকসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর নানা সময়ে খাইরুল বাশার সাকিব আক্রমণাত্মক আচরণ প্রকাশ করে আসছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত