Ajker Patrika

জাহাজের বর্জ্য থেকে সোনা

নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২১, ১৩: ০১
জাহাজের বর্জ্য থেকে সোনা

লক্ষ্মীপুর থেকে ১৯৯৬ সালে ভাগ্যের সন্ধানে চট্টগ্রামে আসেন বেলাল হোসেন। নগরীর সিডিএ মার্কেট এলাকায় একটি ভাঙ্গারির দোকানে কাজ নেন। কয়েক বছর কাজ শিখে ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন নিজেই। এখন তিনি প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী। তাঁর মতো শতাধিক ব্যবসায়ী জাহাজের বর্জ্য কিনে সেগুলো ভেঙে নানা ধরনের মূল্যবান পদার্থ সংগ্রহ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করেছেন। সংগ্রহ করা এসব পদার্থের মধ্যে আছে স্বর্ণও।

জাহাজ থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্যগুলোর মধ্যে ইলেকট্রনিক প্যানেল বোর্ড থেকে তার ও তামা; স্টাটার ও ব্রেকার থেকে পিতল, রুপা; আইসি কন্ট্রাক্ট ও টাইমার থেকে তামার পাত; ট্রান্সফরমার থেকে পিতল ও চান্দি; কালাই বক্স থেকে স্বর্ণ সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া মোটরজাতীয় বর্জ্য থেকে লোহা, তামা, অ্যালুমিনিয়াম; হাইড্রোলিক পণ্য থেকে তামা, পিতল, লোহা সংগ্রহ করা হয়।

লামিয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আরিফ উদ্দিন জানান, সীতাকুণ্ড উপজেলার মাদামবিবির হাট, ভাটিয়ারি, লালবাগ এলাকার জাহাজের পণ্যের বিভিন্ন ডিপো থেকে এসব বর্জ্য সংগ্রহ করেন তিনি। ব্যবহারের অনুপযোগী পণ্যগুলো ভেঙে সোনা, রুপা, তামা, পিতল ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়। ব্যবহারের অনুপযোগী পণ্যগুলো ‘ঝোলঝাল’ নামে পরিচিত।

ঝোলঝাল এসব বর্জ্যের কিছুতে কালাই (ইলেকট্রনিকস পণ্যে চিকন সোনালি প্রলেপ) থাকে। এই কালাই থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সোনা সংগ্রহ করা হয়। স্বর্ণ প্রক্রিয়াজাত করার জন্য কালাইগুলো নিতে হয় ‘আরা ঘরে’ (সোনা পরিশোধনাগার)।

আরা ঘরে দীর্ঘ আট বছর ধরে কাজ করেন এমন একজন কারিগর মো. সায়েম বলেন, ইট দিয়ে খোলা চুলা তৈরি করে সেখানে চুনা পাউডার ও কয়লা দিয়ে আগুন জ্বালাতে হয়। এই আগুনে সিসা দিয়ে কালাই ঢালতে হয়। দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর সেখান থেকে কালাইয়ের পরিশোধিত অংশ সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত অংশ নাইট্রিক অ্যাসিড দিয়ে গলিয়ে পাউডার করা হয়। এই পাউডারে সোহাগা ও লবণ মিশিয়ে আগুনে পুড়ে সোনা সংগ্রহ করা হয়। তিন কেজি কালাই গলিয়ে এক ভরি নয় আনা সোনা পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত