Ajker Patrika

বৃষ্টিতে শ্রেণিকক্ষে ছাতা দিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা

ফেনী (পরশুরাম) প্রতিনিধি
বৃষ্টিতে শ্রেণিকক্ষে ছাতা দিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা

কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ফেনীর পরশুরাম সরকারি পাইলট স্কুলের শ্রেণিকক্ষে টিনের চালের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। যেসব শিক্ষার্থী আসার সময় ছাতা নিয়ে আসতে পারে নাই, তাদের বেশির ভাগের স্কুলব্যাগ বৃষ্টিতে ভিজে যায়। এতে স্কুলে আসতে অনাগ্রহী হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীরা। 

আজ রোববার দেখা গেছে, স্কুলে একটি মাত্র নতুন ভবন রয়েছে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পুরোনো আধা পাকা টিনশেডের কক্ষে পাঠদান করছেন শিক্ষকেরা। 
 
ওই ভবনে টিনের চাল ফুটো থাকায় বৃষ্টির পানি সরাসরি পড়ছে শ্রেণিকক্ষে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই শ্রেণি কক্ষের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করছে। 

স্কুলের অফিস সহকারী মো মামুনুর রশিদ জানান, ‘বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ নেই। নতুন একটি ভবন থাকলেও ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষ। নিচ তলায় শুধুমাত্র তিনটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। বাধ্য হয়েই পুরোনো টিনশেড কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে।’ 

স্কুলশিক্ষকেরা জানান, ‘বেশ কয়েক বছর ধরেই জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনে পাঠদান করতে হচ্ছে। গ্রীষ্ম ও শীত মৌসুমে পাঠদান কার্যক্রম চললেও বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি পড়ার কারণে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করা সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীরা ছাতা মাতায় দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।’ 

ইকবাল হোসেন নামে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, ‘তাদের স্কুলের চালের অবস্থা খুব খারাপ, সিলিংও ভাঙা। একটু বৃষ্টি হলেই তাদের ক্লাসরুমের ভেতরে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়তে শুরু করে। মেঝেতে পানি জমে যায়।’ 

পরশুরামে শ্রেণিকক্ষে চালের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানিএকই কথা বলেন আরেক ছাত্র মো. জাহাঙ্গীর আলম, ‘ক্লাসের অবস্থা খুবই খারাপ। অকেজো ভবনেও আমাদের ক্লাস হচ্ছে। বেশি বৃষ্টি হলে চালের ফুঁটা দিয়ে পানি ঘরের ভেতরে পড়ে। গত এক সপ্তাহ ধরে শ্রেণিকক্ষের ভেতরেই আমাদের ছাতা কিংবা পলিথিন মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হয়। চলতি বর্ষা মৌসুমে এইভাবে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।’ 

স্কুলের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান চৌধুরী আসিফ বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়, স্কুলের ভবনগুলি এতই জরাজীর্ণ যে, শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে ক্লাস করছে। তা ছাড়া বর্ষা মৌসুম শুরুর পর থেকেই শিক্ষার্থীরা ছাতা মাথায় দিলে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। বিষয়টি ইতিপূর্বে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘পুরোনো টিনশেড সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া পাইনি। তাই এই বৃষ্টির মধ্যে বাধ্য হয়েই পুরোনো টিনশেড ক্লাস নিতে হচ্ছে। বইখাতাসহ পোশাক ভিজে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বাড়ি থেকে ছাতা নিয়ে এসে ক্লাস করছে।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো সফিউল আলম তালুকদার বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। টিনশেড মেরামত করতে খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না। বর্ষা শুরুর আগেই পুরোনো টিন বদলে মেরামত করে দিলে শিক্ষার্থীদের ছাতা মাতায় দিয়ে শ্রেণিকক্ষে বসতে হতো না।’ 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা শসসাদ বেগম বলেন, ‘ছবিটি আপনার মাধ্যমে দেখেছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। সরেজমিন দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

সাতকানিয়ায় ডাকাত পড়েছে বলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে মারধর, নিহত ২

ইউএনওর সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে পেটালেন বিএনপি নেতারা

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত