Ajker Patrika

ফেনীতে যমজ বোনের মেডিকেলে পড়ার স্বপ্নপূরণ

এমাম হোসেন, দাগনভূঞা (ফেনী)
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩: ৩৬
Thumbnail image
যমজ বোন তাসীন তাসফিয়া ও তানহা তাবাসসুম। ছবি: সংগৃহীত

ফেনীর দাগনভূঞায় যমজ বোন ২০২৪-২৫ সেশনে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁরা হলেন তাসীন তাসফিয়া ও তানহা তাবাসসুম।

এর মধ্যে তাসফিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ আর তাবাসসুম সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন। তাঁদের বাবা চণ্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং মা দক্ষিণ জগৎপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

তাসফিয়া ও তাবাসসুম ছোটবেলা থেকে ছিলেন মেধাবী। উভয়ে উদরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন।

দাগনভূঞা আতাতুর্ক মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছেন জিপিএ-৫। আর এইচএসসিতে নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁরা।

তাসীন তাসফিয়া বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল, সহযোগিতা ছিল। আমরা দুজনে কে কী পড়ছি, তা শেয়ার করেছি, আবার পরীক্ষায় কেউ কারও থেকে কম পাব না, এটাও মাথায় রেখে পড়াশোনা করেছি। এভাবেই শেষ পর্যন্ত মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছি আমরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবার প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরে ভালো লাগছে। তবে আরও বেশি ভালো লাগত, যদি আমাদের দাদা ও নানা বেঁচে থাকতেন। আমাদের এ সাফল্যে তাঁরা সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন।’

তাঁর বোন তানহা তাবাসসুম বলেন, ‘একা চান্স পেলে হয়তো এত আনন্দ লাগত না। দুজনে একসঙ্গে চান্স পাওয়ার অনুভূতিটা নিজে চান্স পাওয়ার আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি।’

দুজনে প্রতিযোগিতার সঙ্গে পড়াশোনা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মেডিকেলে ভর্তির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কোচিংয়ে মডেল টেস্ট দিয়ে এসে দুজনই দেখতাম, আমাদের কার কোথায় ভুল হচ্ছে। আমারটা ও ধরিয়ে দিত, আর আমি তারটা। মা-বাবার স্বপ্ন ছিল, আমরা মেডিকেলে চান্স পাব, ডাক্তার হব। তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মা-বাবাও আমাদের ওপর খুশি।’

তাঁদের মা সুলতানা রাজিয়া আরজু বলেন, ‘তাসীন ও তানহার পড়াশোনার হাতেখড়ি আমার কাছেই। প্রাইমারি থেকেই তাদের পড়াশোনার বেশ আগ্রহ ছিল। সব ক্লাসেই তাদের রেজাল্ট ভালো ছিল। এখন মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। এর চেয়ে বেশি আনন্দের আর কী হতে পারে। এই অনুভূতি বলে প্রকাশ করার মতো নয়।’

বাবা কামাল উদ্দিন সোহাগ বলেন, ‘স্কুল থেকেই যেকোনো বিষয়ে তাদের একটু দেখিয়ে দিলেই বাকিটা তারা নিজে নিজে করে ফেলত। আমি ও আমার স্ত্রী দুজনই শিক্ষক। আমাদের কাছে সব ছাত্রছাত্রীই সন্তানের মতো। তাই অন্য শিক্ষার্থীদের যেমন পড়াশোনার ব্যাপারে গাইড করতাম, আমাদের সন্তানদেরও তেমনই করেছি।’

আতাতুর্ক সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের সাবেক সাতজন শিক্ষার্থী ২০২৪-২৫ সেশনে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের মধ্যে শিক্ষক দম্পতির যমজ সন্তান রয়েছে। এ জন্য আমরা শিক্ষকেরা অত্যন্ত গর্বিত। আমরা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত