Ajker Patrika

আলীকদমে সুপেয় পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তি মানুষের

বান্দরবান প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জুন ২০২৪, ১৪: ৩৮
আলীকদমে সুপেয় পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তি মানুষের

গ্রীষ্মের শুরু থেকেই সুপেয় পানির তীব্র সংকটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বান্দরবানের আলীকদমের মানুষদের। বাধ্য হয়ে খাল, ঝিরি ও নদীর দূষিত পানি পান করছেন অনেকে। এতে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন খাওয়ার পানির জন্য তপ্ত রোদের মধ্যে নলকূপের সামনে কলসি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন আলীকদম সদর ইউনিয়নের নারীরা। গ্রীষ্মে পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না তাঁরা। শুষ্ক মৌসুমে পানি পাওয়া যায় এক থেকে দুই কলসি, অনেক সময় তা-ও পাওয়া যায় না। 

উপজেলার ৩ নম্বর নয়াপাড়া ও ৪ নম্বর কুরুকপাতা ইউনিয়নের পাহাড়ি পল্লিতেও পানির জন্য হাহাকার চলছে। আলীকদমের সদর ইউনিয়নে ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড ও ৩ নম্বর নয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩, ৪, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে খাওয়ার ও ব্যবহারের পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। খাওয়ার পানির সংকট মেটাতে নদীর পানি পান করছে অনেকে। 

আলীকদমের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মংশিপুপাড়ার বাসিন্দা মায়েশিং মারমা বলেন, পাড়ায় একটি নলকূপ আছে, তবে নষ্ট হয়ে গেছে গত বছর, পানির তৃষ্ণা মেটাতে পাড়াবাসী বাসায় নদী থেকে পানি নিয়ে যায়।

সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাজেদা বেগম ও রোহানা আক্তার জানান, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরো এলাকায় কয়েকটি নলকূপ থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে কেবল একটি নলকূপে পানি পাওয়া যায়। 

তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও জনপ্রতিনিধিদের তদবির না থাকার কারণে পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পানির এই সংকট মেটাতে আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে পানি সংগ্রহ করে ঘোলা পানি খাচ্ছি। 

স্থানীয়রা জানান, এলজিইডি ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের দেওয়া রিং ওয়েল, নলকূপগুলো অল্প গভীরতায় স্থাপন করা হয় বর্ষা মৌসুমে, যার কারণে শুষ্ক মৌসুম এলে পানি ঠিকমতো পাওয়া যায় না। সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের যে একটি নলকূপের পানি পাওয়া যায় সেটি ৩০ বছরের পুরোনো।

অন্যদিকে ৪ নম্বর কুরুকপাতা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মালে ম্রো বলেন, ‘আমরা সরাসরি ঝিরির পানি ব্যবহার করে আসছি, করার কিছুই নেই।’ 

2-আলীকদম সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পানি সংগ্রহের জন্য পেতে রাখা কলসির দীর্ঘ সারিসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আলীকদমে পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ২০১১ সালের ১১ জুন শুরু হলে তখন ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি জলাধার নির্মাণের পর প্রকল্পের কাজ পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরিত্যক্ত শোধনাগারটি পুনরায় নির্মাণের জন্য ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ ২০২২ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু গত বছরের ১২ এপ্রিল উদ্বোধনের দিনই পানি সরবরাহ দেওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্পের শুরু থেকে দুই দফায় এ পর্যন্ত সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয় হলেও পানি পায়নি আলীকদমবাসী। 

এ বিষয়ে সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আমি চেষ্টা করছি ৪ নম্বর ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পানির সংকট মেটাতে।’ 

রিংওয়েল বর্ষায় স্থাপন করা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আলীকদম উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হালিমকে ফোন দেওয়া হরে বলেন, আপনি ঘণ্টাখানেক পরে যোগাযোগ করেন। পরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনে প্রক্রিয়া মানা হয়নি: ইউনেসকো

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশিরভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত