Ajker Patrika

শিগগিরই পরীর পাহাড়ে উচ্ছেদে যাচ্ছি: ডিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শিগগিরই পরীর পাহাড়ে উচ্ছেদে যাচ্ছি: ডিসি

ঐতিহ্যবাহী পরীর পাহাড়ে সরকারি ভবনের বাইরে সাড়ে তিনশ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। সরকারি নির্দেশনায় এসব অবৈধ স্থাপনা খুব শিগগিরই উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। 

মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘শুধু পরীর পাহাড় নয়, চট্টগ্রাম শহরের সব পাহাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সংরক্ষণ করা হবে। আমরা শিগগিরই উচ্ছেদে যাচ্ছি। পরীর পাহাড়কে হেরিটেজ ঘোষণা করা হবে।' 

পরীর পাহাড়ে থাকা জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনগুলো উচ্ছেদ করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মমিনুর রহমান বলেন, 'পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ অনুযায়ী কোন পাহাড় বা টিলার ওপর কোনোরূপ স্থাপনা করা যাবে না। আইন সবার জন্য সমান। আমরা শুধু সরকারি নির্দেশনা পালন করছি।' 

মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, জেলা আইনজীবী সমিতি পাহাড় এবং টিলা কেটে অবৈধভাবে পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে। এ সব স্থাপনাকে পাহাড় ধস, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদির জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি আবারও সরকারের কোনো সংস্থার অনুমোদন না নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু আইনজীবী ভবন’ ও ‘একুশে আইনজীবী ভবন' নামক দুইটি ১২ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। ৬০০টি চেম্বার বরাদ্দের জন্য আইনজীবীদের নিকট থেকে দুই লাখ টাকা করে ১২ কোটি টাকা আদায় করেছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। 

এছাড়াও কোর্ট বিল্ডিংয়ে আইনজীবীরা অর্ধশতাধিক অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ দোকানপাট, খাবার হোটেল, ছাত্রাবাস, বস্তি ও মুদি দোকান তৈরি করে ভাড়া আদায় করছে এবং এই স্থাপনাটিকে একটি অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। 

আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ এনামুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আইনজীবী সমিতির সব ভবনই বৈধ। নতুন যে দুটি ভবন হচ্ছে, তার মধ্যে একটি অনুমোদন নেওয়া আছে। অন্যটি অনুমোদনের অপেক্ষায়।' 

পরীর পাহাড় থেকে ডিসির লোকজনই টাকা তোলেন দাবি করে তিনি বলেন, 'অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কোনো আইনজীবী জড়িত নয়।'   

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৮ টাকা কেজি আলু, গাড়ি থামতেই মানুষের ভিড়

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজার থেকে গতকাল বিকেলে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজার থেকে গতকাল বিকেলে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দূর থেকে মাইকে ভেসে আসছিল ঘোষণা, ‘৫০ কেজি আলুর বস্তা মাত্র ৫০০ টাকা!’ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজারে আলুর গাড়িটি থামতেই ভিড় জমায় লোকজন। দর-কষাকষির পর শেষমেশ বস্তাপ্রতি দাম নেমে আসে ৪০০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজি মাত্র ৮ টাকা।

বর্তমানে খুচরা বাজারে ভালো মানের আলুর দাম যখন প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা বা ১০০ টাকায় ৫-৬ কেজি, তখন এই দামে আলু পেয়ে ক্রেতারা দারুণ খুশি। কেউ এক বস্তা, কেউ দুই বস্তা, আবার কেউ তিন বস্তা আলু কিনেছেন।

আলু কিনতে আসা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘আলুগুলো তেমন ভালো নয়। তবে এত কম দামে পাওয়া যাচ্ছে, তাই এক বস্তা নিলাম। গরু-ছাগলের খাবার হবে।’

আরেক ক্রেতা মো. ছাবের আলী বলেন, ‘যেটুকু খাওয়া যায় খাব। আর প্রতিদিন গরুকে ২ কেজি করে ঘাসের সঙ্গে কেটে দেব। তা ছাড়া এই আলুর গাছ বের হলে লাগালেও হতে পারে।’

ক্রেতা আবু হানিফ জানান, মাইকে ৫০০ টাকা দাম শুনে বাজারে ভিড় জমে। লোকজনের দর-কষাকষিতে শেষ পর্যন্ত প্রতি বস্তা ৪০০ টাকায় বিক্রি শুরু করেন বিক্রেতা।

আলু ব্যবসায়ী মো. উমর ফারুক জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন জেলায় তাঁদের চারটি গাড়ি আলু বিক্রির জন্য বের হয়। তিনি বলেন, ‘৫০ কেজির বস্তা ৪০০ টাকায় বিক্রি করেও আমাদের লাভ থাকছে। যে বাজারেই থামছি, ১০ থেকে ১৫ মণ আলু বিক্রি হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আলুর অন্তত ৩০ কেজি মানুষ খেতে পারবে এবং বাকি ২০ কেজি গরু-ছাগলের খাবার হবে। এত সস্তায় আলু সাধারণত পাওয়া যায় না। প্রায় আড়াই মাস ধরে ব্যবসা করছি। আরও দুই মাস চলবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

জাবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম। তিনি বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।

নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মিত বহুতল ভবনে প্লাস্টারের কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়।

ভবনটি নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত নির্মাণশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের নবম তলায় প্লাস্টারের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাত ৮টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তবে এই ঘটনা ক্যাম্পাসে জানাজানি হয় রাত ১১টার দিকে।

ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ভবনের নবম তলায় প্লাস্টারের কাজ করা হচ্ছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান। পরে সাভারের এনাম মেডিকেলে নেওয়া হলে তিনি মারা যান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে সিপিবি সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
মাউথ স্পিকার হাতে অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাউথ স্পিকার হাতে অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেট জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমনকে আটক করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। শুক্রবার মধ্যরাতে নগরের কালীবাড়ি এলাকার সুমনের নিজ বাসা থেকে এসএমপি জালালাবাদ থানা-পুলিশ তাঁকে আটক করে।

রাত ২টায় আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। কী অভিযোগে আটক করা হয়েছে, তা সকালে জানাবেন উল্লেখ করে অভিযান চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সিপিবি সিলেটের সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী বেদানন্দ ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ি এলাকার বাসা থেকে সুমনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

সম্প্রতি আনোয়ার হোসেন সুমন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার নগরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন চালকেরা। এতে আনোয়ার হোসেন সুমনও সম্পৃক্ত ছিলেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে সুমনসহ কয়েকজন মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর দাবি আদায়ে রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন চালকেরা। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে রোববার অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন তাঁরা। তার আগেই শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে সুমনকে আটক করা হলো।

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, অটোরিকশাচালকদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে। এ ছাড়া পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে সংঘাতের আশঙ্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকদের শনি ও রোববারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে সিলেট মহানগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে বহু রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এর পর থেকে নগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলতে দেওয়া হচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শতবর্ষেও আব্দুর রহিমকে পরতে হয় না চশমা, নড়বড়ে হয়নি দাঁত

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি
মিঠাপুকুর উপজেলা সদরের মোহনা হোটেলের সামনে বসে ভিক্ষা করেন বৃদ্ধ আব্দুর রহিম। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিঠাপুকুর উপজেলা সদরের মোহনা হোটেলের সামনে বসে ভিক্ষা করেন বৃদ্ধ আব্দুর রহিম। ছবি: আজকের পত্রিকা

১০৫ বছর বয়স। কিন্তু নড়বড়ে হয়নি একটি দাঁতও, পরতে হয় না চশমা। এই বয়সেও দিব্যি হেঁটে চলাফেরা করেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের নিঝাল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম।

গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলা সদরের মোহনা হোটেলের সামনে বসে ভিক্ষা করছিলেন বৃদ্ধ আব্দুর রহিম। তিনি একটি চাকু দিয়ে সুপারি কাটছিলেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাওয়া হয়, এই বয়সেও কি সুপারি চিবোতে পারেন?

প্রশ্ন শুনে মুচকি হাসলেন রহিম। জানালেন, তাঁর দাঁত পড়েনি, এমনকি নড়বড়েও হয়নি। আলাপচারিতার মাঝেই পান-সুপারি মুখে দিয়ে কাপড়ের পোঁটলা থেকে চুনের ডিব্বা বের করলেন। তিনি জানান, তাঁর বয়স এখন ১০৫ বছর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল ৫১ বছর।

পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের জনক আব্দুর রহিম এখনো বেশ সক্ষম। তিনি বলেন, তাঁর ছেলে-মেয়েদের দেখলে তাঁদেরই বয়স বেশি মনে হবে। তাঁর আপন চার ছোট ভাই অনেক আগে মারা গেছেন। মাথার চুল দেখিয়ে তিনি বললেন, এখনো কিছুটা চুল কালো রয়েছে।

এত বয়সেও শারীরিক সক্ষমতা ঠিক থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভিক্ষা করি বটে, তবে ভালো খাবার খাই। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করি, মাথায় তেল দিই। ডিম ও কলা খাই। নিয়মিত গোসল করি এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের চেষ্টা করি।’

৯ ছেলে-মেয়ে থাকতেও কেন ভিক্ষা করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের সংসার ঠিকমতো চলে না। কেউ চট্টগ্রাম, কেউ ঢাকায় থাকে, অন্যরা কৃষিশ্রমিকের কাজ করে। আমার স্ত্রী বেঁচে আছেন, তবে তিনি এখন অচল হয়ে পড়েছেন।’

জীবনের এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ধনদৌলত, হায়াত-মৌত আল্লাহর হাতে। তাঁর (স্রষ্টার) রহমতেই এখনো বেঁচে আছি এবং ভালো আছি। তবে আমার টাকার দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত