Ajker Patrika

কুবিতে উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৮: ৫৯
কুবিতে উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দপ্তরে শিক্ষক সমিতির তালা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে ২৪ ঘণ্টা আলটিমেটামের পর দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তিন দপ্তরে তালা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষক নেতাদের উপস্থিতিতে তিনটি কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়।

শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ এবং হামলায় ‘মদদদানকারী’ ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ, গেস্টহাউস শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা, পদোন্নতির জন্য আবেদন করা শিক্ষকদের অবিলম্বে পদোন্নতির ব্যবস্থা করাসহ সাত দফা দাবি জানিয়ে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে শিক্ষকেরা তিন দফায় ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। যার সঙ্গে সবশেষ যুক্ত হয় ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম।

দপ্তরে তালা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা উপাচার্য স্যারকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেননি। তাই আগের ঘোষণা অনুযায়ী প্রক্টর, ট্রেজারার ও উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাঁদের কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কার্যালয়ে তালা থাকবে।’

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আন্দোলন চললেও নিয়মিত ক্লাস, পরীক্ষা হবে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করুক। কিন্তু যেভাবে শিক্ষকদের অধিকার বঞ্চিত করা হচ্ছে, অবৈধ শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমাদের এই পদক্ষেপ। আমরা আশাবাদী, উপাচার্য এ সংকট নিরসনে এগিয়ে আসবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারের দপ্তরে তালা। ছবি: আজকের পত্রিকাএ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। অন্যদিকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহা. হুমায়ুন কবির এ বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এদিকে কুবির জনসংযোগ কর্মকর্তা এমদাদুল হক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনের জন্য জরুরি সিন্ডিকেট সভা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে এই সভা হয়। সভায় সব সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সমস্যা নিরসনের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারাররা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে অবহিত করবেন এবং পরবর্তী দিক নির্দেশনা চাইবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দপ্তরে তালা। ছবি: আজকের পত্রিকাবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উপাচার্যের কার্যালয়ে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক গ্রেড-১ ও অধ্যাপক গ্রেড-২ পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য গঠিত কমিটির সভা আগামী ১৬ মে হওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. সাদেকা হালিমকে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো নিষ্পত্তির দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখা ও সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলমান রাখার স্বার্থে সবার সহযোগিতা কামনা করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম আবদুল মঈন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত