Ajker Patrika

রেগুলেটর না থাকায় পানিতে ডুবছে হাইমচরের কৃষিজমি

চাঁদপুর প্রতিনিধি
হাইমচর উপজেলার উত্তর আলগী ইউনিয়নের মহজমপুর গ্রামের মৈশালবাড়ীসংলগ্ন ব্রিজের এক পাশে বালুভর্তি জিউ-টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাইমচর উপজেলার উত্তর আলগী ইউনিয়নের মহজমপুর গ্রামের মৈশালবাড়ীসংলগ্ন ব্রিজের এক পাশে বালুভর্তি জিউ-টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

অতিবৃষ্টিতে গত দুই বছর ধরে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের দেড় হাজার হেক্টরের বেশি কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক হাজার কৃষক ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, সেচ প্রকল্পের আওতাধীন এসব জমির পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা নেই। দুটি ব্রিজের নিচে রেগুলেটর (গেট) স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে রেগুলেটর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে উত্তর আলগী ইউনিয়নের মহজমপুর গ্রামের মৈশালবাড়ীসংলগ্ন ব্রিজে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রিজের এক পাশে বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। গত বছর অতিবৃষ্টির সময় এটি এভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে আর কোনো পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একই অবস্থা দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের চরভাঙ্গা গ্রামের চুন্নু মিয়ার বাড়িসংলগ্ন ব্রিজের।

স্থানীয়রা জানান, গত বছরের অতিবৃষ্টিতে মেঘনা নদীসংলগ্ন সেচ প্রকল্প এলাকার পান, ধান, মৌসুমি সবজি ও মাছ চাষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বছরও বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

মহজমপুর গ্রামের পানচাষি হারুন গাজী বলেন, ‘গত বছর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউএনও ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন ব্রিজের নিচে রেগুলেটর নির্মাণের আশ্বাস দেন। কিন্তু এখনো কোনো কাজ শুরু হয়নি।’

হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের চরভাঙ্গা গ্রামের চুন্নু মিয়ার বাড়িসংলগ্ন ব্রিজেও জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের চরভাঙ্গা গ্রামের চুন্নু মিয়ার বাড়িসংলগ্ন ব্রিজেও জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

একই গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম খান বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও নদীর পানি বাড়লে ব্রিজের নিচ দিয়ে পানি ঢুকে পড়ে। কিন্তু বের হওয়ার পথ না থাকায় জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। রেগুলেটর স্থাপন এখন খুব জরুরি।’

স্থানীয় অটোরিকশাচালক আলী আহম্মদ বলেন, ‘চরভাঙ্গা ও মহজমপুর—দুটো ব্রিজেই রেগুলেটর দরকার। এ ছাড়া কৃষকের ফসল বাঁচবে না।’

মহজমপুর গ্রামের কৃষক শফিকুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘সেচ প্রকল্পের ভেতরে অতিবৃষ্টিতে পানি আটকে মাছ চলে যায়, ফসল ডুবে যায়। এ বছর অনেকেই আবাদই করতে পারেননি।’

হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার বলেন, ‘গত বছর অতিবৃষ্টিতে সেচ প্রকল্পের ভেতরের বহু জমির ফসল নষ্ট হয়। বিশেষ করে প্রায় ১০০ হেক্টর জমির পানখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের যান্ত্রিক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেন, ‘অতিবৃষ্টিতে ক্ষতি কমাতে ১৫টি রেগুলেটর স্থাপনের জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। হাইমচরের এ দুটি ব্রিজ ওই প্রকল্পে নেই। তবে নতুন প্রকল্পে যুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের আরেক নির্বাহী প্রকৌশলী জহরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি রেগুলেটর নির্মাণে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা লাগে। কৃষকের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ: বরখাস্তের দণ্ড বদলে বাধ্যতামূলক অবসর

ভারত যে পারমাণবিক বোমা ফেলেনি, পাকিস্তানের বুঝতে সময় লেগেছে ৩০-৪৫ সেকেন্ড

‘ভিআইপি রুম না পেয়ে’ হোটেল বারে ভাঙচুর, যুবদলের পদ হারালেন মনির হোসেন

বিএনপি নেতার ছেলের নেতৃত্বে হামলার ৩৫ দিন পর মৃত্যু, লাশ নিয়ে বিক্ষোভ

ফরিদপুরে এ কে আজাদের বাড়ির সামনে বিএনপির মিছিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত