Ajker Patrika

দুবাইয়ে কেনাকাটা করছেন আবদুল্লাহর নাবিকেরা, দেশে ফিরবেন মে মাসের মাঝামাঝি

সবুর শুভ, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ২৩: ০৮
দুবাইয়ে কেনাকাটা করছেন আবদুল্লাহর নাবিকেরা, দেশে ফিরবেন মে মাসের মাঝামাঝি

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে থাকা এমভি আবদুল্লাহ থেকে কয়লা খালাস কার্যক্রম চলার ফাঁকে নাবিকেরা কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন দুবাইয়ের অভিজাত বিপণি কেন্দ্রগুলোয়। আজমান সিটি সেন্টারে গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাহাজের চিফ অফিসার মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ খানসহ কয়েকজন নাবিক কেনাকাটা সারেন। 

নাবিকেরা ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কেনাকাটা সারছেন। আগামী মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরবেন ২৩ নাবিক।  

কেনাকাটার এক ফাঁকে নাবিকদের সঙ্গে দেখা হয় দুবাইয়ে কর্মরত চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাকার মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ারের সঙ্গে। মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ খানের বাড়িও চন্দনাইশ উপজেলায়। 

সেই হিসেবে দুইজনকে বেশ উৎফুল্ল দেখা যায়। এ সময় মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ারের মোবাইলে তোলা নাবিকদের কয়েকটি ছবি তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে পাঠিয়েছেন।

এদিকে কয়লা খালাস শেষে এমভি আবদুল্লাহ আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল ) আল হামরিয়া বন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে। মিনা সাকারা নামক আরেক বন্দরে নোঙর করে মালামাল লোড করার পর চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দিবেন বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ খান। 

তিনি বলেন, অনেকদিন পর মাটির গন্ধ পেলাম। জাহাজ থেকে নামতে হলে আমিরাত সরকারের অনুমতি লাগে। গত বৃহস্পতিবার ৩ জন ও শুক্রবার ২০ জন আমরা জাহাজ থেকে নামার অনুমতি পেয়েছি। সেই হিসেবে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য বিভিন্ন মার্কেট থেকে কেনাকাটা করছি আমরা (নাবিকেরা )।  

এ বিষয়ে জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম জানান, গত ২২ এপ্রিল রাত পৌনে ১০ টায় (বাংলাদেশ সময় ) জাহাজটি জেটিতে ভেড়ার পর রাত ২টা থেকে শুরু হওয়া কয়লা খালাস কার্যক্রম এখনো চলছে। আগামী মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে নাবিকেরা জাহাজে করে দেশে ফিরে আসবেন। 

বর্তমানে দুবাইতে অবস্থানরত মেহেরুল করিম আরও জানান, কয়লা খালাস কার্যক্রম চলার ফাঁকে নাবিকেরা পরিবারের জন্য কেনাকাটা করছে। তিনি রোববার (২৮ এপ্রিল ) বিমানযোগে দেশে ফিরবেন বলেও জানান।  
   
এদিকে সোমালি দস্যুদের কবল থেকে মুক্তির পর নাবিকদের রিসিভ করতে  দুবাই ছুটে যান জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাতের নেতৃত্বে একটি দল। সেই দলে রয়েছেন মেহেরুল করিমও। 

সোমালিয়ার উপকূল থেকে মুক্ত হওয়ার ৯ দিনের মাথায় তীরের দেখা পান জাহাজটির ২৩ নাবিক। গেল ৬ দিন ধরে খালাস কাযর্ক্রম চলছে।দুবাইয়ের অভিজাত বিপণি কেন্দ্রে কেনাকাটা করছেন নাবিকেরা।সোমালিয়ার দস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হওয়া নাবিকেরা হলেন- মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল , মো. সালেহ আহমদ, মো. শরিফুল ইসলাম ও মো. নুরুদ্দিন।

জানা গেছে, জিম্মিদশায় মুক্তিপণ পরিশোধের পর ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে নাবিকরাসহ এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত হয়। এরপরই জাহাজটি আল-হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। ৯ দিনের মাথায় বন্দরের বহির্নোঙর পৌঁছায় জাহাজটি। ১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লাবাহী জাহাজটি দস্যুদের কবলে পড়েছিল। ৩৩দিন জলদস্যুদের কব্জায় ছিল জাহাজসহ নাবিকেরা।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত