Ajker Patrika

থমথমে তুমব্রু সীমান্ত, বেড়েছে বিজিবির টহল

মাঈনুদ্দিন খালেদ, তুমব্রু (নাইক্ষ্যংছড়ি) থেকে ফিরে
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১: ৩৫
থমথমে তুমব্রু সীমান্ত, বেড়েছে বিজিবির টহল

বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে মর্টার শেলের আঘাতে এক রোহিঙ্গা নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সীমান্তের ওপারে এখনো থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে বিজিবির টহল। শুক্রবার রাতে নিরাপদে যাওয়া দুই গ্রামের মানুষ ফিরে এসেছে স্ব-স্ব ঘরে। বিশেষ করে সীমান্ত থেকে কুতুপালং উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীরা নিরাপদে পরীক্ষা দিতে পেরে বেশ আনন্দিত। 

ঘুমধুমের তুমব্রু বাজারে কথা হয় স্থানীয় গ্রামপুলিশ আবদুল জাব্বার ও ব্যবসায়ী বদিউল আলমের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, শুক্রবার রাতে শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০ নম্বর শেডের পাশের একটি অস্থায়ী দোকানে আড্ডা দিচ্ছিল ৮ থেকে ১০ জন রোহিঙ্গা। হঠাৎ রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরপর দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে। মর্টার শেলের একটি শূন্যরেখায় থাকা কোনারপাড়ার তুমব্রু খাল পাড়ে পাথরে বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ইকবাল। আহত হয় সাতজন। 

জব্বার ও বদিউল আরও বলেন, শুক্রবার রাতে গোলার আঘাতে হতাহতের পর ঘুমধুমের কোনারপাড়া ও মাঝেরপাড়ার দুই গ্রামের ৬০ পরিবার নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছিল। আর হেডম্যানপাড়ার নারীদের সরিয়ে রাখা হয় বিপদমুক্তির জন্য। এভাবে তিন গ্রামের অধিকাংশ মানুষই শনিবার সকালে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছে। 

তুমব্রু সীমান্ত থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী শিফতি, রাশেল, জাহাঙ্গীর, আজিজুল হক, নায়িম, রোকেয়া বেগম, তাসলিমা আক্তার, উক্যয়ন তঞ্চংগা ও ম্যওয়ে তঞ্চংগা জানান, সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কেন্দ্র পরিবর্তন করে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা দিতে পারায় তারা খুব খুশি। এ সময় শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস ও ছাত্রনেতা সাদ্দামের গাড়ির ব্যবস্থা করার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানায়। 

ইউএনও সালমা ফেরদৌস বলেন, সীমান্তের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ঘুমধুম থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে নিরাপদে কুতুপালং উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। 

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দিল মোহাম্মদ বলেন, অবিস্ফোরিত গোলাটি সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল বেস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আর এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। 

ঘুমধুম ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘মিয়ানমার বাহিনী কী চায়, তা বুঝতে পারছি না। তবে বিজিবি সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে। তাদের টহল বাড়ানো হয়েছে।’ 

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাবের সাবেক ক্রীড়া ও পাঠাগার সম্পাদক মো. আবদুর রশিদসহ একাধিক সাংবাদিক অভিযোগ করেন, ঘুমধুম ও তুমব্রুতে দায়িত্ব পালনে তাঁদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। ঘুমধুম সীমান্তে টহলরত বিজিবির সদস্যরা তুমব্রু বাজার, তুমব্রু গ্রাম, বাইশফাঁড়ি, কোনার পাড়া, মধ্যমপাড়া, হেডম্যানপাড়া, ইউনিয়ন পরিষদ ও উত্তরপাড়াসহ ঘুমধুমে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেন। 

এ প্রসঙ্গে বিজিবির সদস্যরা বলেন, তাঁরা ওপরের নির্দেশে এসব করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত