Ajker Patrika

বিদায় নয়, নতুন শুরু

বিদায় নয়, নতুন শুরু

চবি সংবাদদাতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে গতকাল অংশ নেওয়া গ্র্যাজুয়েটদের উল্লাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে গতকাল অংশ নেওয়া গ্র্যাজুয়েটদের উল্লাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

চারদিকে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা! তবু হাজার হাজার শিক্ষার্থীর পরনে স্যুট–টাই, গায়ে কালো রঙের গাউন, মাথায় কালো টুপি। দীর্ঘদিন পর চেনা স্থানে সবাই একত্রিত। কালো টুপিটা আকাশের দিকে ছুড়ে দিয়ে অনেকেই ছবি তুলছেন। কেউ নিজের গা থেকে গাউন খুলে মা–বাবার গায়ে পরিয়ে দিচ্ছেন, কেউবা ছোট্ট শিশুর জন্য তৈরি করেছেন একই রঙের গাউন ও টুপি। বন্ধু–বান্ধব, শিক্ষকদের সঙ্গে কোলাকুলি করছেন, আনন্দে মেতে উঠেছেন।

গতকাল বুধবার এমন চিত্রই দেখা গেছে সবুজে ঘেরা পাহাড়ি ক্যাম্পাস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে।

‘সমাবর্তন’ শব্দের মধ্যেই আছে একধরনের আবেগ, উৎকণ্ঠা আর লুকানো প্রাপ্তির গল্প। সমাবর্তন মানে শুধু বিদায় নয়, এটি নতুন শুরু। বিদায়ের এই উৎসব একটিবারের জন্য থামিয়ে দেয় সময়কে, চোখে আনে জল, আর হৃদয়ে জাগায় আশার দীপ্তি।

শিক্ষার্থীরা তাদের একাডেমিক জীবনের ইতি টানেন এই অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে। এটি শুধু সনদ বিতরণের আয়োজন নয়; এটি তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্তও বটে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে গ্র্যাজুয়েটরা যখন আকাশের দিকে কালো টুপি ছুড়ে দেন, তখন মনে প্রশ্ন জাগে—আবার দেখা হবে কি না জীবনের আরেক মঞ্চে।

দীর্ঘ ৯ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন; যেখানে একসঙ্গে অংশ নেন প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী। প্রধান আকর্ষণ ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় দুপুর একটায়। তবে ঘড়ির কাঁটা ২টা ছুঁতেই পুরো সমাবর্তন প্যান্ডেল হয়ে ওঠে এক বিশাল প্রাপ্তির প্রতীক। প্রধান উপদেষ্টার আগমনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। কেউ কেউ গরমে অস্বস্তি বোধ করলেও অনেকেই মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছেন তাঁর বক্তব্য।

শিশুসন্তানকে নিয়ে সমাবর্তনে অংশ নেওয়া এক মা।	ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশুসন্তানকে নিয়ে সমাবর্তনে অংশ নেওয়া এক মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমাবর্তনে অংশ নিতে সিলেট থেকে আসা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব এ রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এই দিনটি সবার জন্যই অনেক আনন্দ ও স্বপ্নের। পড়াশোনা শেষে প্রতিটি শিক্ষার্থীই এই দিনের জন্য অপেক্ষা করে।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল আব্বা–আম্মার দোয়া। অনেক সময় হতাশ হয়ে গেলে তাঁদের কথা ভেবে দ্বিগুণ পরিশ্রম করতাম। তাঁরাও আমাকে সাহস আর অনুপ্রেরণা দিতেন। তাই আজকের আনন্দের পুরোটা তাঁদের প্রাপ্য। এজন্যই বাড়ি থেকে অনেক দূরে হলেও তাঁদের সঙ্গে নিয়ে এসেছি। তাঁরাও অনেক আনন্দিত। নিজের খুব ভালো লাগছে। এই খুশি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত