Ajker Patrika

ভোর পাঁচটাতেও জ্বলছিল ডিপো, পুড়েছে ৫০০ কনটেইনার 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সীতাকুণ্ড থেকে
আপডেট : ০৫ জুন ২০২২, ০৮: ৩৪
ভোর পাঁচটাতেও জ্বলছিল ডিপো, পুড়েছে ৫০০ কনটেইনার 

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের পর বিস্ফোরণে ঠিক কতটি কনটেইনার পুড়েছে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে অবস্থান করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য আর ডিপোতে কর্মরত অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংখ্যাটি ৪০০ থেকে ৫০০ এর কম নয়। 

ভোর পাঁচটার সময়েও ডিপোর কনটেইনারে আগুন জ্বলছিল। ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিটের সদস্যরা আগুন নির্বাপণে তাঁদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে পানির সংকটে পড়তে হয়েছে তাঁদের। এই সমস্যা তৈরি হয় ডিপোতে থাকা ট্রাকগুলো নিরাপদে সরাতে গিয়ে। আধপোড়া ও অক্ষত থাকা ট্রাকগুলো দ্রুত ডিপো থেকে বের হওয়ার সময় নির্বাপণ কাজে ব্যবহৃত হোস পাইপের ওপর চাপা দেয়। এতে হোসপাইপ ফেটে ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। পুনরায় সচল করা হলেও বারবার বাধার মুখে পড়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল পানি চলাচল। 

ডিপোতে কর্মরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিপোতে নিয়মিত সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার কনটেইনার থাকে। বেশ কিছু কনটেইনারবাহী বের হতে পারে। তবে বেশির ভাগই সেখানে আটকে ছিল। কারণ চাইলেই কনটেইনার নিয়ে বের হতে পারে না ট্রাকগুলো। অনুমোদনের বিষয় থাকে। 

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের সীতাকুণ্ডের কেশবপুরে অবস্থিত এই ডিপোটি নেদারল্যান্ডস-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত। ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে চালু হওয়া এই ডিপোটি দেশের অন্যতম বড় ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো-আইসিডি হিসেবে পরিচিত। 

শনিবার রাত ৯টার লোড-ইয়ার্ডে রাসায়নিক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রথমদিকে আগুনের ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ও ডিপোর কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাছ থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিলেন। ডিপোর কর্মীদের কেউ কেউ আগুনের দৃশ্য ভিডিও করছিলেন। রাত ১১টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে তাদের অনেকেই আগুনে তলিয়ে যান। 

ডিপোতে আগুনে চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন রাশেদুল ইসলাম। ডিপোর আইসিডি-২ শাখায় কর্মরত আছেন। তাঁর অবশ্য রাতে ডিউটি ছিল না। আগুনের খবর পেয়ে পাশের কোয়ার্টার থেকে অন্যদের নিয়ে ছুটে আসেন রাশেদুলও। তিনি বলেন, ‘আগুনের দৃশ্য দেখছিলাম। এমন সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে হাতে থাকা মোবাইলটিও হারিয়ে যায়। আগুনের তাপে চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছি।’ পরে অন্য সহকর্মীরা তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। 

আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত শতাধিক আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন মারা গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া দুজনের সন্ধান মিলছে না। 

আহতদের মধ্যে অন্তত ৪০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইন-চার্জ আশেকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আহতদের বিভিন্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত