Ajker Patrika

আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল: স্বজনের অপেক্ষায় এখনো পথ চেয়ে আছেন পাতিলে ভেসে আসা মুসলিম

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
মুসলিম উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মুসলিম উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ভয়াল সেই রাতের ঘটনার ৩৪ বছর পার হয়েছে। এখনো স্বজনের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে আছেন ঘূর্ণিঝড়ে পাতিলে ভেসে আসা ৩৬ বছর বয়সী যুবক মুসলিম উদ্দিন। বর্তমানে তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বাস করছেন সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের জঙ্গল ভাটিয়ারী পাহাড়ের ভেতরে স্থাপিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। প্রতিবছর এই দিন এলে স্বজন হারানোর বেদনায় ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি। অশ্রুতে বুক ভাসালেও তিনি এখনো জানেন না তাঁর মা-বাবা কে কিংবা তাঁদের বাড়িঘর কোথায় ছিল।

শুধু মুসলিম উদ্দিন নন, স্মরণকালের ভয়াবহ সেই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কথা উপকূলের মানুষ এখনো ভুলে যায়নি। ৩৪ বছর আগে ২৯ এপ্রিল সামনে এলে ভয়াল সেই ট্র্যাজেডির করুণ চিত্র ভেসে ওঠে চোখের সামনে। দিনটি এলেই উপকূলীয় এলাকার ঘরে ঘরে কান্না আর শোকের রোল ওঠে। ওই দিনের মধ্যরাতে আঘাত হানা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সীতাকুণ্ডের সলিমপুর থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত ৯টি ইউনিয়ন। প্রায় ২২৫ কিলোমিটার গতিবেগ ঝড় ও ৩০-৩৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে উপকূল পরিণত হয়েছিল বিরানভূমিতে।

এ সময় মারা যান এলাকার প্রায় ৭ হাজার মানুষ। আর নিখোঁজ হয়েছিল প্রায় ৩ হাজার শিশু-নারী-পুরুষ। ক্ষতি সাধিত হয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ। ভয়াল সেই রাতের ৩৪টি বছর পেরিয়ে গেলেও উপকূলের অবস্থা সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। এখনো এলাকার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।

সেই দিনের কথা জানতে চাইলে অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠেন মুসলিম উদ্দিন। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সময় তিনি দুই বছরের শিশু। তিনি বড় একটি পাতিলের ভেতরে করে ভেসে ভাটিয়ারী উপকূলে আসেন বলে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। ঘূর্ণিঝড়ের পরদিন ভেসে আসা পাতিলের ভেতর থেকে কান্নার শব্দ শুনে জেলে সম্প্রদায়ের এক লোক তাঁকে উদ্ধার করেন। পরে তাঁকে ভাটিয়ারী বাজারের উত্তর পাশের তেলীবাড়ী এলাকার স্থানীয় এক মুসলিম পরিবারের কোলে তুলে দেন।

শিশুকালের সেই সময়ের স্মৃতি তাঁর মনে না থাকলেও ৭ থেকে ৮ বছর বয়সের স্মৃতি তাঁর বেশ মনে রয়েছে। আট বছর বয়সে যখন তাঁর পালক বাবার পরিবারে অভাব-অনটন দেখা দেয়। তখন তিনি ভাটিয়ারী কাঁচাবাজারে ঘুরে ঘুরে পলিথিন (বাজারের ব্যাগ) বিক্রি শুরু করেন। পরে নিজের চেষ্টায় উঠে দাঁড়িয়েছেন।

মুসলিম উদ্দিন আরও জানান, তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বর্তমানে সুখের সংসার করলেও নিজের পিতৃপরিচয়ের শূন্যতায় নীরবে কাঁদছেন তিনি। বর্তমানে তাঁর মা-বাবা কোথায় আছেন, কেমন আছেন, জানেন না তিনি। তাঁদের স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, এটাই সবচেয়ে বড় কষ্টের অনুভূতি তাঁর জীবনে।

কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারীসহ কয়েকটি উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা জানান, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের বন্যার পর থেকে গত ৩৪ বছরে উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের নামে কয়েক শ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে বেড়িবাঁধ নির্মিত হলেও তা কয়েক বছর না পেরোতেই পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে। এখনো এসব ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধে ভাঙন থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

বাঁশবাড়িয়া এলাকার উপকূলীয় স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ৩৪ বছর পার হলেও এখনো সীতাকুণ্ডের উপকূলীয় এলাকায় নির্মাণ করা হয়নি টেকসই বেড়িবাঁধ। এখনো এই অঞ্চলের মানুষ ষাটের দশকের ভঙ্গুর বেড়িবাঁধের ওপর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন।

উপকূলীয় বাসিন্দারা আরও জানান, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এবং পরবর্তীতে ১৯৯৪ ও ১৯৯৭ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক প্রাণহানির পর আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার অর্থায়নে উপকূলীয় এলাকায় বিপুলসংখ্যক ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। সীতাকুণ্ডের পৌর এলাকাসহ ৯টি ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কথা থাকলেও হয়েছে মাত্র ৫৬টি।

সলিমপুর থেকে বাঁশবাড়িয়া উপকূলীয় এলাকায় দেখা গেছে, শিপ ইয়ার্ড নির্মাণ করতে গিয়ে ওই সব এলাকায় বনায়ন নেই বললেই চলে। গত পাঁচ-ছয় বছরে কুমিরা ও বাঁশবাড়িয়া উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন কেটে আরও ছয়টি শিপ ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। ওই সব এলাকায় বনায়নের কোনো চিহ্নই দেখা যাচ্ছে না। ১৯৯১ সালের মতো পুনরায় যদি এসব এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়, তাহলে আরও ব্যাপক প্রাণহানিসহ সম্পদ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সীতাকুণ্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, এখানে যে বেড়িবাঁধ আছে, সেটি ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের জন্য পর্যাপ্ত নয়। কারণ ১৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ঘোড়ামরা-কুমিরাসহ ৪ কিলোমিটার প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কিন্তু সেগুলোর ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা থাকায় সংস্কারও হচ্ছে না। নিয়মিত সাগরের পানি ঢোকে। ঝড়ে তা ভয়াবহ হতে পারে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. শামস্ জামিরুল জানান, উপকূলীয় এলাকার মানুষের তুলনায় আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা অপ্রতুল। ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তীতে যতগুলো আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলোর সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও নির্মাণের সময় সঠিক পরিকল্পনার অভাবে অধিকসংখ্যক লোক আশ্রয় নিতে পারে না।

সীতাকুণ্ড উপকূলীয় বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আলী রনি জানান, সীতাকুণ্ড উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সামুদ্রিক ঝড়-ঝঞ্ঝা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে সরাসরি থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত বেড়িবাঁধে ব্যাপক বনায়ন করা হয়। কিন্তু কিছু অসাধু চক্র উপকূলীয় বেড়িবাঁধ রক্ষায় লাগানো গাছগুলো রাতের আঁধারে কেটে সাবাড় করছে। ফলে গাছ উজাড়ে অব্যাহত মাটি ক্ষয়ের মাধ্যমে বেড়িবাঁধ যেমন বিপন্ন হচ্ছে, তেমনি আবারও জলোচ্ছ্বাসের মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন উপকূলীয় এলাকাবাসী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নওগাঁয় ১৩০ বস্তা ডিএপি ও ৩০ বস্তা টিএসপি সার জব্দ

­­­নওগাঁ প্রতিনিধি
জব্দ করা সার। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ করা সার। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁর ধামইরহাটে ১৩০ বস্তা ডিএপি ও ৩০ বস্তা টিএসপি সার জব্দ করেছে স্থানীয় জনতা। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার পূর্ব বাজার এলাকার সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে সারবোঝাই একটি ট্রাক আটকে দেয় জনতা। পরে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সারের বস্তাগুলো থানায় হস্তান্তর করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিএডিসি ডিলার মেসার্স সরকার ট্রেডার্সের মালিক লিপি রানী সরকার নওগাঁ বিএডিসি গুদাম থেকে বিকেলে সারগুলো নিয়ে রাতে ধামইরহাট এলাকায় যান। এলাকাবাসী ট্রাকটি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে সারগুলোর বৈধ গন্তব্য ও বিতরণপত্র দেখাতে না পারায় জনতার সন্দেহ হয়। পরে বিষয়টি তারা পুলিশ ও কৃষি বিভাগকে জানায়। ধামইরহাট থানা-পুলিশ ও উপজেলা কৃষি বিভাগ ঘটনাস্থলে গিয়ে সার, ট্রাক ও চালককে থানায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ধামইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, সারগুলো থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ডিলারের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সড়কের ওপর রাখা ধানে দুর্ঘটনা, কুলাউড়ায় দুই চাচাতো ভাই নিহত

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সড়কের ওপর রাখা ধানে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই চাচাতো ভাই নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. গিয়াস উদ্দিন (৫৫) ও তাঁর চাচাতো ভাই জালাল আহমদ (৪৫)। তাঁরা দুজনই শরীফপুর ইউনিয়নের তেলিবিল (তালতলা) গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মোটরসাইকেলে করে বটতলা বাজারে যাচ্ছিলেন গিয়াস ও জালাল। তালতলা এলাকায় সড়কের ওপর জমি থেকে কাটা ধানের গাদা রাখা ছিল। এতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুই ভাই গুরুতর আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. লোকমান আহমদ বলেন, একই পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্যা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকেরা জানান, আমন মৌসুমে ধান কাটার সময় বিভিন্ন সড়কে ধান ও খড় রাখা সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কুয়াশায় খড় পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়ে। এ বিষয়ে প্রশাসন বা স্থানীয়ভাবে কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় অনেকেই প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে সংঘাত বন্ধে বিশেষ কম্বিং অপারেশন চালানো হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নরসিংদী প্রতিনিধি
আজ সকালে নরসিংদী পুলিশ লাইনস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে নরসিংদী পুলিশ লাইনস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর চরাঞ্চলে চলমান সংঘাত, দখলবাজি ও সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশেষ কম্বিং অপারেশন চালানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে নরসিংদী পুলিশ লাইনস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।

পরিদর্শনকালে তিনি পুলিশ লাইনসে বৃক্ষরোপণ করেন এবং হাসপাতাল, রেশন স্টোর, রান্নাঘর, খাবারের মান, পুকুর, প্রশিক্ষণের মাঠসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন। সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় নরসিংদীর পুলিশ সুপারসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নরসিংদীতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এখন রায়পুরা উপজেলা। চরাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের আড্ডা, আধিপত্য বিস্তার ও অবৈধ অস্ত্রের বিস্তার উদ্বেগজনক। যত দ্রুত সম্ভব কম্বিং অপারেশন চালিয়ে সব সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

রায়পুরার চরাঞ্চলে দীর্ঘদিনের সংঘাত মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার চরাঞ্চলকে সন্ত্রাসমুক্ত করে স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে সমন্বিত অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, ঘোষিত বিশেষ কম্বিং অপারেশন বাস্তবায়িত হলে বহুদিনের সশস্ত্র সংঘাত, গোলাগুলি ও সন্ত্রাসী তৎপরতার অবসান ঘটবে এবং নরসিংদীর চরাঞ্চলে শান্তি ফিরে আসবে।

পরে দুপুর ১২টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জেলা কারাগার পরিদর্শন করেন। বেলা ২টায় তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন, যেখানে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কৃষি উৎপাদন, সার-বীজ সরবরাহ ও সেচ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদকসেবী ও বখাটের উৎপাতে অতিষ্ঠ শহরবাসী, প্রতিকার চাইলেন পুলিশ সুপারের কাছে

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
মোহনগঞ্জ থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোহনগঞ্জ থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদকে ছেয়ে গেছে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌর শহর। দিনরাত চলে মাদকসেবী ও বখাটেদের উৎপাত। এতে অতিষ্ঠ শহরবাসী। এ ছাড়া শহরের একাধিক স্থানে চলে অসামাজিক কার্যকলাপ। এসব স্থানে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব অসামাজিক কার্যকলাপ দীর্ঘদিন ধরে চললেও স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এসব বন্ধে শহরের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে এবার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন।

শহরের ৮০ জন বাসিন্দা স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র গত রোববার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এর অনুলিপি জেলা প্রশাসক, সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে।

আজ বুধবার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, এসব ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ মিলে যৌথ অভিযান পরিচালনা করলে আশানুরূপ ফল আসবে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, পৌর শহরে মাদকসেবীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। মাদকের টাকা জোগাড় করতে তরুণেরা অপরাধে জড়াচ্ছেন। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও মাদকে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মোহনগঞ্জ থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমেনা খাতুন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলব। যৌথভাবে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত