Ajker Patrika

হামলা, ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনে আরও চার মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী। ছবি: সংগৃহীত
চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া আরও চার মামলায় কারাগারে থাকা সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন। এর আগে আদালত চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দী থাকা আসামি চিন্ময় দাসের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোতোয়ালি থানার এই চার মামলার মধ্যে তিনটির বাদী হচ্ছে পুলিশ। অন্য মামলাটির বাদী হলেন নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের ভাই জানে আলম।

গত রোববার আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা এই চার মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ঘটনার দিন পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্য পালনে বাধাদান, ভাঙচুর, জানমালের ক্ষতিসাধন ও বিস্ফোরক আইনে মামলাগুলো হয়েছে। অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, শুনানিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালতে হাজির করা হয়নি, কিন্তু ভার্চুয়াল শুনানিতে জেলখানা থেকে সংযুক্ত করা হয়।

মামলার আবেদনে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, আসামি চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ পৃথক চার মামলার তদন্তে পাওয়া আসামি। ঘটনার দিন চিন্ময়ের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হুকুমে মামলার এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা কয়েক শ আসামি পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্য পালনে বাধাদান, ভাঙচুর ও জানমালের ক্ষতিসাধন করার তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে গত সোমবার চিন্ময়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোট নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আটক করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাঁকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় চিন্ময়ের আইনজীবীরা জামিন চাইলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ওই দিন জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় তাঁর অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেন। তাঁরা এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লাঠিপেটা করে এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আইনজীবী হত্যাসহ ওই দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ছয়টি মামলা হয়।

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যায় গত বছরের ৩০ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন। এতে এজাহারে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। একই দিন আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে আদালত প্রাঙ্গণে হামলা, ভাঙচুর, ক্ষতিসাধন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করেন। এ মামলায় আসামির সংখ্যা ১১৬। এর আগে ২৭ নভেম্বর সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা করে। ঘটনার কয়েক দিন পর চট্টগ্রাম আদালতে আরও একটি মামলা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত