Ajker Patrika

রামগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মৃতের স্বজনেরা হাসপাতাল ঘেরাও করে চিকিৎসকের শাস্তির দাবি করেন।

মৃত প্রসূতি নাজমা খাতুন রামগঞ্জ পৌর জগৎপুর গ্রামের প্রবাসী আসাদ উল্যার স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী।

মৃত নাজমা খাতুনের বড় মেয়ে (১৭) সায়মা আক্তার বলে, ৩০ জুন মা আল ফারুক নামের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির কাছে নিয়মিত চেকআপ করাতে যায়। চিকিৎসককে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা জানালে চিকিৎসক ন্যান্সি ইনজেকশন দিয়ে ব্যথা কমিয়ে দেওয়ার পর শারীরিক সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। চলতি মাসের ২ তারিখে তীব্র ব্যথা নিয়ে আবারও হসপিটালে গেলে ওই চিকিৎসক দ্বিতীয়বারের মতো ইনজেকশন দিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেন।

সায়মা আক্তার বলে, ‘৩ তারিখেও আমার মা হসপিটালে আসলে চিকিৎসক বলেন, ‘কোনো সমস্যা নাই।’ পরদিন থেকে গর্ভের বাচ্চার নড়াচড়া না হওয়ায় চতুর্থবারের মতো মাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক বলেন, ‘বাচ্চার হার্টবিট নেই, বাচ্চা গর্ভে মারা গেছে।’ এ সময় দ্রুত সিজার করিয়ে মায়ের শারীরিক অবস্থা বেশি ভালো না বলে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। আমার মাকে ঢাকার আদ্ব-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক জানান, ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে। প্রায় ১২-১৩ দিন মাকে সেখানে চিকিৎসা করিয়েও মাকে বাঁচাতে পারিনি।’

চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করে সায়মা আক্তার বলে, ‘তারা আমাদের টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাপ দিচ্ছে।’

নাজমা খাতুনের জা মীনা বেগম বলেন, ‘মাত্র ৫-৭ মিনিটে আমার জায়ের সিজার করেই তাড়াহুড়ো ওই চিকিৎসক ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। ঢাকায় নিলে সেখানকার চিকিৎসক জানান তাঁর ভুল চিকিৎসা হয়েছে। গতকাল সকালে আদ্ব-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মরদেহ নিয়ে রামগঞ্জে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনেরা হাসপাতাল ঘেরাও করে চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেন।’ 

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসকের কোনো কাগজপত্র নেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি করা প্রয়োজন। 

আজ মঙ্গলবার এই অভিযোগের বিষয়ে ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির মোবাইল নম্বরে কলে দিলে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমার কথার বলার প্রয়োজন নাই। যাঁদের সঙ্গে কথা বলার দরকার তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে।’

হাসপাতালের মালিক আল ফারুক বলেন, ‘আপনারা তো অনেকেই নিউজ করেছেন, ফেসবুকে ভাইরাল করেছেন। অন্য কোনো হাসপাতালে মনে হয় চিকিৎসা করান না। সব ভুল আমাদেরই, এখন আর কী করা।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গুনময় পোদ্দার মোবাইল ফোনে প্রথমে বিষয়টি না জানার কথা বললেও পরে জানান, ‘আমি ঢাকার বাইরে আছি। পুরো বিষয়টি এখন বলতে পারব না। কিছুটা শুনেছি। খোঁজ নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত