Ajker Patrika

কসবায় এনজিওর বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ জুন ২০২২, ১৯: ০১
কসবায় এনজিওর বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পল্লি ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিওর বিরুদ্ধে গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঋণ দেওয়ার নামে অভিনব কৌশলে সঞ্চয়ের নামে পাঁচ শতাধিক গ্রাহক এ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। গ্রাহকদের চাপে অফিস ভাড়া দেওয়া বাড়ির মালিক জেসমিন আক্তার কসবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তবে পুলিশ বলছে, প্রতারক চক্রের নাম-ঠিকানা সঠিক না হওয়ায় মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

সাধারণ ডায়েরি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৩ জুন পল্লি ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কসবা পৌর সদরের ইমামপাড়ায় জেসমিন আক্তারের বাড়িতে অফিস ভাড়া নেয়। অফিসটি ভাড়া নিয়ে পল্লি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রকল্পের নামে ঋণ দেওয়ার জন্য কেন্দ্র খোলেন। পল্লি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা গ্রাহকদের প্রতি লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সঞ্চয়ের নামে ১০ হাজার টাকা করে নেয়। ২৬ জুন থেকে গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। ঋণ নিতে এসে গ্রাহকেরা দেখতে পায় অফিস দরজায় তালা ঝুলছে। দরজায় তালা দেখে গ্রাহকেরা বুঝতে পারে ওরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। পরদিন ২৭ জুন বিকেল পর্যন্ত শত শত গ্রাহক কর্মকর্তাদের অপেক্ষায় থাকেন এবং আহাজারি করেন।

২৭ জুন সন্ধ্যায় সরেজমিনে কসবা পৌর সদরের ইমামপাড়ায় জেসমিন আক্তারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়; ওই পল্লি ফাউন্ডেশনের অফিসে তালা ঝুলছে। এ সময় প্রতারণার শিকার নারী-পুরুষ ওই অফিসের সামনে ভিড় করে আছে। জানতে চাইলে প্রতারণার শিকার উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের সিএনজিচালক আবদুল কাদের (৬০) জানান, তার বাড়িতে ঋণ দেওয়ার নামে কেন্দ্র করেন পল্লি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। ওই গ্রামের ১১ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণ দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা সঞ্চয় নেয়।

উপজেলার চারুয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেন, মজলিশপুর গ্রামের নয়ন মনি, কোনাঘাটা গ্রামের আবুল কালাম, শাহ আলম ও রোকসানা জানান, পল্লি ফাউন্ডেশনের লোকজন তাঁদের প্রতি লাখে ১০ হাজার টাকা করে সঞ্চয় নিয়ে ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ থেকে সঞ্চয় গ্রহণ করেন।

বাড়ির মালিক জেসমিন আক্তার বলেন, ‘১৩ জুন আমার বাড়িতে এসে তিনটি কক্ষ ভাড়া নেয় পল্লি ফাউন্ডেশন। ৫ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী পল্লি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মাসিক ৫ হাজার টাকা ভাড়ায় তার নিচতলার পূর্ব পাশের ৩ কক্ষবিশিষ্ট ইউনিটটি ভাড়া নেন। তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার কথা বললে জানায়, সবার পরিচয়পত্র এক সপ্তাহের মধ্যে দিয়ে দেবে। আমি বাবার বাড়ি আখাউড়ায় গিয়েছিলাম বেড়াতে। সেখান থেকে এসে দেখি ওদের অফিসে তালা। গ্রাহকদের কাছ থেকে শুনে বুঝতে পারি আমিসহ গ্রাহকেরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।’ জেসমিন ২৬ জুন কসবা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান।

কসবা সমাজ সেবা অফিসার রাজু আহমেদ জানান, পল্লি ফাউন্ডেশন নামের কোন সংগঠন সমাজসেবার নিবন্ধন নেয়নি। কসবা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ তদন্ত করে দোষীদের খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত