Ajker Patrika

গরু খুঁজতে গিয়ে মিয়ানমারের মাইনে পা হারালেন অংঞাথাইন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯: ১১
গরু খুঁজতে গিয়ে মিয়ানমারের মাইনে পা হারালেন অংঞাথাইন

সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো অংঞাথাইন তঞ্চঙ্গ্যার বাঁ পা ঢেকে রাখা হয়েছে গামছা দিয়ে। পাশে বসে ব্যথা থেকে একটু স্বস্তি দিতে ছেলেকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন মা গিইয়াংমা তঞ্চঙ্গ্যা। ছেলেও বারবার চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সেই ঘুম আসছে কোথায়? একটু পর পর ব্যথায় কঁকিয়ে উঠছেন ২৩ বছরের এই তরুণ। 

এই অংঞাথাইন তঞ্চঙ্গ্যা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইনের বিস্ফোরণে পা হারানো বাংলাদেশি তরুণ। আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে গিয়ে এভাবেই পাওয়া গেল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের এই বাসিন্দাকে। 

গতকাল শুক্রবার দুপুরে অংঞাথাইন ও চার যুবক তুমব্রু সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া এলাকায় গরু খুঁজতে যান। একপর্যায়ে মাটিতে পুঁতে রাখা মাইনে পা পড়ে অংঞাথাইনের। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে, মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। উড়ে যায় তাঁর বাঁ পায়ের গোড়ালি। 

অংঞাথাইনকে উদ্ধার করেন কয়েকজন তরুণ। তাঁদের একজন শামং। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোলে করে অংঞাথাইনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। পরে প্রথমে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করাই। তবে গুরুতর আহত হওয়ায় তাঁকে শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

অংঞাথাইনের মা গিইয়াংমা আফসোস করে বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সে দেশের সশস্ত্র বিদ্রোহীদের লড়াই চলছে। আর সেসবের সাতপাঁচে না থেকেও কিনা আমার ছেলেকে পা হারাতে হলো! তাদের কারণে আমার ছেলেটা আর কখনো নিজের পায়ে হাঁটতে পারবে না।’

আর চোখে জল নিয়ে আহত অংঞাথাইন বলেন, ‘গরু খুঁজতে গিয়ে পা-টাই হারালাম। আমরা পাঁচজন গরু খুঁজতে গিয়ে হাঁটছিলাম। সবার সামনে আমি ছিলাম। হঠাৎ বাঁ পা-টা একটি গর্তে পড়তেই বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আর কিছু জানি না।’

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘অংঞাথাইনের বাঁ পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার হবে। যতটুকু সম্ভব পা রক্ষা করা যায়, ততটুকু চেষ্টা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত