Ajker Patrika

কর্ণফুলীতে ৩৩ বছরেও হয়নি টেকসই বাঁধ

মো. ইমরান হোসাইন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১: ০১
কর্ণফুলীতে ৩৩ বছরেও হয়নি টেকসই বাঁধ

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল আঘাত হানা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের ৩৩ বছর পরও চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে দুর্যোগ মোকাবিলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। সেই সঙ্গে নেই পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙনের ঝুঁকির মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন।

বসতভিটা রক্ষায় তাঁরা নিজস্ব অর্থায়নে বাঁধ নির্মাণ করেছেন। তবে তা যথেষ্ট নয়। তাঁরা টেকসই বাঁধ নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছর ২৯ এপ্রিল এলে স্বজন হারানোর কথা স্মরণ করে এখনো শিউরে ওঠেন অনেকেই। ওই ঘূর্ণিঝড়ে কর্ণফুলীতে সাড়ে ৩ হাজার মানুষ মারা যায়। তাদের মধ্যে জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর গ্রামে মারা যায় ৫ শতাধিক মানুষ।

বিলীন হয়ে যায় হাজারো বাড়িঘর ও ফসলি খেত। সেই স্মৃতি এখনো ভোলেননি নিহতদের স্বজনেরা। তাঁদের দাবি, বেড়িবাঁধ না থাকা ও পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টারের অভাবে এ অঞ্চলে প্রাণহানির সংখ্যা বেশি ঘটেছিল। এখনো টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ও কর্ণফুলী নদীর পানির জোয়ারে এই এলাকা প্লাবিত হয় প্রতিবছর।

এ ছাড়া ২০১৬ সালে নবগঠিত এ উপজেলায় বর্তমানে কতটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে, তার তথ্য পাওয়া না গেলেও বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ভবনগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা যায়। তবে বিদ্যমান জনসংখ্যা অনুযায়ী আরও ২০ থেকে ৩০টি কেন্দ্র প্রয়োজন এ উপজেলায়।

উপকূলীয় ডাঙ্গারচরের বাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য সিরাজুল ইসলাম হৃদয় বলেন, ‘১৯৯১ সালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ডাঙ্গারচর এলাকায়। বিগত সময়ে নদীর পাড় ভেঙে গ্রামের অনেকের বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। এখন নদী প্রায় আমাদের বাড়ির কাছে চলে আসছে। এখনো টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মিত হয়নি। গ্রামবাসী নিজেদের অর্থায়নে মাটি দিয়ে একটি বাঁধ নির্মাণ করলেও তা স্থায়ী নয়। বেড়িবাঁধ দিয়ে নদীর ভাঙন ঠেকানো না গেলে হয়তো একদিন আমাদের বাড়িঘরও বিলীন হয়ে যাবে।’

২০১৮ সালে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে জন্য ৫৭৭ কোটি টাকার বরাদ্দ 
এলেও এখনো কর্ণফুলীর জুলধা ও শিকলবাহা ইউনিয়নে বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। পাঁচ কিলোমিটারের অধিক এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ না হওয়ায় শঙ্কায় বসবাস করছে উপকূলের হাজারো পরিবার।

শিকলবাহা ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘শিকলবাহা ইউনিয়নের তিন কিলোমিটার অংশে কোনো বেড়িবাঁধ নেই। প্রতি বর্ষার আগে মাটির বাঁধ দিলেও অনিয়মের কারণে কাজ সুষ্ঠু হয় না। এবার বর্ষার আগে নতুন বাঁধ না দিলে পুরো এলাকা তলিয়ে যাবে পানিতে। বিষয়টি অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানকে অবহিত করা হলে তিনি বাঁধ নির্মাণে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’

এ নিয়ে কথা হলে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় উপপ্রকৌশলী মিজানুল হক জানান, আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর জন্য নতুন করে বরাদ্দের জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এবং অনুমোদিত প্রকল্পের টাকা পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে।

যোগাযোগ করা হলে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্ণফুলীর বড় উঠান, শিকলবাহা, জুলধা, চরলক্ষ্যা ও চরপাথরঘাটা ইউনিয়নে খাল খনন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ১৮ কোটি ১৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু বরাদ্দের টাকা না পাওয়ার কারণে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এই প্রকল্পের অর্থ পাওয়া গেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত