Ajker Patrika

নিজের বেতন বাড়ানোর দাবি প্রত্যাহার করলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি

তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম
Thumbnail image

এখনো বন্দরনগরীর বহু জায়গায় আছে ওয়াসার পানির জন্য হাহাকার। গড়পড়তা বিল নিয়েও অভিযোগের অন্ত নেই। পানি অপচয়–চুরি তো নিয়মিত ঘটনা। নিয়ম করে পানির দাম বাড়ানো তো আছেই। গ্রাহকদের ভোগান্তি দূর করতে না পারলেও নিজের বেতন দেড়শ শতাংশ বাড়াতে চেয়েছিলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একেএম ফজলুল্লাহ। তবে সমালোচনার মুখে সেই দাবি থেকে সরে এলেন ওয়াসা এমডি। বৃহস্পতিবার ওয়াসা বোর্ডের ৬৬ তম সভায় নিজের বেতন বাড়ানোর দাবিটি প্রত্যাহার করে নেন। 

ওয়াসা সূত্র জানায়, বর্তমানে একেএম ফজলুল্লাহর মূল বেতন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তবে সেই বেতন দেড়শ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার জন্য গত বছরের মে মাসে ওয়াসা বোর্ডকে চিঠি দেন তিনি। বোর্ড সুপারিশ করলে প্রতি মাসে তাঁর বেতন হতো ৬ লাখ টাকার ওপরে। গত বছরের ৪ মে অনুষ্ঠিত ওয়াসা বোর্ডের ৬১ তম সভায় এমডির বেতন-ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বোর্ড সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যজিত কর্মকারকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি করা হয়। তবে কমিটি বেতন বাড়ানোর বিষয়ে সুপারিশ করতে সেভাবে আগ্রহ দেখায়নি। 

আট মাস ধরে বেতন বাড়ানোর বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না দেখে এ বছরের ২৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ৬৫ তম বোর্ড সভায় নতুন করে প্রস্তাবটি তোলেন এমডি। তবে সেদিন আজকের পত্রিকায় ‘নিজের বেতন ১৫০% বাড়াতে চান এমডি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বেশ সমালোচনা তৈরি হয়। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। 

এমন পরিস্থিতিতে বোর্ড সভায় বেতন বাড়ানোর সুপারিশ না করে এমডির বেতন-ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নতুন করে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। আজকের সভায় বেতন বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল। তবে নিজেই বেতন বাড়ানোর দাবি প্রত্যাহার করে নিলে বিষয়টি এখানেই চুকে যায়। 

ওয়াসার বোর্ড সদস্য জাফর আহমদ সাদেক আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এমডি বেতন বাড়ানোর যে আবেদন করেছিলেন, তিনি সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আগের বেতনেই তিনি দায়িত্ব পালন করে যাবেন।’ 

তবে বেতন বাড়ানোর দাবি থেকে কেন সরলেন, সে বিষয়ে বক্তব্য জানতে একেএম ফজলুল্লাহকে তিনবার ফোনকল করা হলেও তিনি জবাব দেননি। 

অবশ্য বোর্ড সদস্য জাফর আহমদ সাদেক এ বিষয়ে বলেন, ‘এমডি সভায় বলেছেন, সব জায়গায় (অন্যান্য ওয়াসার এমডির) বেতন বেশি। আমিও চেয়েছিলাম। কিন্তু এটি নিয়ে যেহেতু একটি কমিটি হয়েছে—দরকার নেই।’ 

১৯৯৮ সালে ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে অবসরে যান একেএম ফজলুল্লাহ। এর ১১ বছর পর ২০০৯ সালের ৬ জুলাই চেয়ারম্যান পদে এক বছরের জন্য ওয়াসাতে নিয়োগ পান তিনি। আরও এক বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসাতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ তৈরি করা হলে সেই পদে নিয়োগ পান একেএম ফজলুল্লাহ। এরপর সাতবার পুনর্নিয়োগ পেয়ে ১১ বছর ধরে এই পদে আছেন। 

ওয়াসার সূত্র জানায়, শুরু থেকে একেএম ফজলুল্লাহকে মাসে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হচ্ছে। ২০১৬ সালে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য আবেদন করলে তাঁর মূল বেতন বাড়িয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা করা হয়। এর পাশাপাশি বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, আপ্যায়ন, বিশেষ ভাতাসহ অন্যান্য মিলিয়ে মোট ৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা পান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত