Ajker Patrika

পটিয়ায় স্বতন্ত্রের আড়ালে বিদ্রোহী প্রার্থী যাঁরা

কাউছার আলম, পটিয়া (চট্টগ্রাম) 
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ২৩
পটিয়ায় স্বতন্ত্রের আড়ালে বিদ্রোহী প্রার্থী যাঁরা

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় ১৭ ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ায় বাকি ১৪ ইউনিয়নে স্বতন্ত্রের আড়ালে নির্বাচন করছেন বিএনপির ৭, আওয়ামী লীগের ১১ ও যুবলীগের ৩ প্রার্থী।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন যেসব ইউনিয়নে তাঁরা হলেন—আশিয়া ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে ছৈয়দ মাঈনুল হক রাশেদ ও মোটরসাইকেল প্রতীকে বেলাল উদ্দিন চৌধুরী; ছনহরা ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীকে কাজী আবু জাফর; জিরি ইউনিয়নে ঘোড়া প্রতীকে গতবারের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম ভোলা, চশমা প্রতীকে আবুল কালাম বাবুল; কুসুমপুরা ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে জাকারিয়া ডালিম ও চশমা প্রতীকে নুর রশিদ চৌধুরী এজাজ; কোলাগাঁও ইউনিয়নে টেলিফোন প্রতীকে মাহবুবুল হক চৌধুরী ও আনারস প্রতীকে কাসেম রাসেল; জঙ্গলখাইন ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে দিদারুল আলম ও চশমা প্রতীকে সাহাদাত হোসেন সবুজ; কেলিশহর ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে নিখিল দে; ধলঘাট ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে শফিউল আলম বাদশা, হাইদগাঁও ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে বি এম জসিম। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বর্তমান রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন।

এসব ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোটের মাঠে দলটির নিজেরাই পরস্পর শত্রুতে পরিণত হয়েছেন। এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ১৪ প্রার্থীকে দল থেকে এরই মধ্যে বহিষ্কার করেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। 

এ ছাড়া সাতটি ইউনিয়নে বিএনপির নেতারা স্বতন্ত্র হয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম (আনারস), কচুয়াই ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বাবু (আনারস), খরনা ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান মফজল আহম্মদ চৌধুরী  (আনারস), কাশিয়াইশ ইউনিয়নে মোহাম্মদ কাইছ (আনারস), হাইদগাঁও ইউনিয়নে ঘোড়া প্রতীকে নাসির উদ্দীন, ভাটিখাইন ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে আমিনুল হক ও ছনহরা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ দৌলতী (আনারস)। তাঁরা সবাই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পদ-পদবিতে থেকে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন এবং চারজন সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান।

অন্যদিকে বড়লিয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীনুল ইসলাম সানু, দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম ও শোভনদণ্ডী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে বর্তমান চেয়ারম্যান এহছানুল হক আওয়ামী লীগের মনোনীত একক চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় উপজেলা নির্বাচন অফিস তাঁদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণা করেছে। তাঁরা তিনজনই এবার হ্যাটট্রিক বিজয়ী চেয়ারম্যান হয়েছেন। 

অন্যদিকে কচুয়াই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান এস এস ইনজামুল হক জসিম, হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নে গতবারের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে পরাজিত প্রার্থী ফৌজুল কবির কুমার, কাশিয়াইশ ইউনিয়নে একটানা পাঁচবারের চেয়ারম্যান আলহাজ্ আবুল কাশেম, খরনা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ও ভাটিখাইন ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বখতিয়ার। এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় দলটির একক প্রার্থীরা বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন।  

পটিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব খোরশেদ আলম বলেন, বিএনপির কয়েকজন নেতা ওই এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। যেহেতু বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচন করছে না, তাই সেই গ্রহণযোগ্যতায় তাঁরা নিজ নিজ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটের মাঠে আছেন। তাঁরা নিজেদের মতো ভোট চাইছেন ভোটারদের কাছে। এখানে আমাদের বিএনপির কেউ তাঁদের পক্ষে মাঠে নেমে ভোট চাইবেন না। কারণ বর্তমান সরকারের এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। তাই ভোটের কোনো ধরনের পরিবেশ না থাকার কারণে এবারের স্থানীয় সরকার (ইউপি) নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি।  

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ মোহাম্মদ সেলিম নবী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন, তাঁরা অনেকেই বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী বা মদদপুষ্ট। যদিও বিএনপি বলেছে, তারা দলীয়ভাবে নির্বাচন করছে না। 

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছৈয়দ মাঈনুল হক রাশেদ জানান, সারা দেশে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। বর্তমান সরকার উন্নয়নবান্ধব। হুইপও উন্নয়নবান্ধব। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আশিয়ার উন্নয়ন তলানিতে রয়ে গেছে একজন অযোগ্য জনপ্রতিনিধির কারণে।  

রাশেদ বলেন, ‘পটিয়ার ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত ইউনিয়ন আশিয়া। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সড়কগুলোর বেহাল দশা। তিনি এলাকার কোনো নেতাকর্মীকে মূল্যায়ন করেন না। আজ আশিয়ার আপামর জনসাধারণ সোচ্চার হয়েছে পরিবর্তনের পক্ষে। তাই আমি তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কে অবহেলিত আশিয়াকে যুক্ত করার জন্য প্রার্থী হয়েছি। আমি নির্বাচিত হলে আশিয়াকে একটি আধুনিক ইউনিয়নে রূপান্তর করব।’  

কোলাগাঁও ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগের মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ কোলাগাঁও ইউনিয়নবাসীর সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। বিগত পাঁচ বছর বর্তমান চেয়ারম্যানের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ ছিল না এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড যদি তৃণমূল আওয়ামী লীগের মতামত গ্রহণ করত, তাহলেই সবকিছু বিবেচনা করে মনোনয়ন বোর্ড নমিনেশন আমাকে দিত, সেই বিশ্বাস আমার ছিল। আমি নৌকার বিরুদ্ধে নই, আমি একজন জনবিচ্ছিন্ন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। দল আমার বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, তা আমি মাথা পেতে নেব এবং মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাব। আগামী ২৬ ডিসেম্বর নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ দিয়ে আমার প্রতীক টেলিফোনে জনগণ ভোটের বিপ্লব ঘটিয়ে বিপুল ভোটে বিজয় সুনিশ্চিত করবে সেই প্রত্যাশা করি।’

কচুয়াই ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও বিএনপির নেতা খলিলুর রহমান বাবু বলেন, ‘আমি টানা ১৪ বছর চেয়ারম্যান ছিলাম। এবারও এলাকার সাধারণ মানুষের অনুরোধে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’

বাবু আরও জানান, ‘কচুয়াই এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ বর্তমান চেয়ারম্যানের ওপর। এলাকার কোনো কিছু টাকা ছাড়া তিনি করেন না। এবারের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর লোকজন আমাকে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। আমি এখনো আশঙ্কায় আছি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে।’  

হাবিলাসদ্বীপ ও কুসুমপুরা ইউনিয়নে এবার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বাকি ১২টি ইউনিয়নে হবে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগামী নির্বাচন পুলিশের নেতিবাচক ইমেজ ভাঙার বড় সুযোগ: আইজিপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ‘হল অব প্রাইড’-এ অনুষ্ঠিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন আইজিপি বাহারুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ‘হল অব প্রাইড’-এ অনুষ্ঠিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন আইজিপি বাহারুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশ পুলিশের জন্য এক চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ‘হল অব প্রাইড’-এ অনুষ্ঠিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি। সভায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, র‍্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) প্রধান মো. গোলাম রসুল, অতিরিক্ত আইজি, ঢাকাস্থ বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, সব পুলিশ কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিরা উপস্থিত ছিলেন।

এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দেশের সব জেলা পুলিশ সুপার। সভায় অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা ও অপরাধ পরিস্থিতির চিত্র উপস্থাপন করেন।

আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, অতীতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশ সম্পর্কে জনমনে যে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার একটা বড় সুযোগ আগামী নির্বাচন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

আইজিপি বাহারুল আলম আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের হারানো বা লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধারে তৎপরতা জোরদার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং অস্ত্র উদ্ধারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত পুরস্কার সম্পর্কে প্রচারণা বাড়াতে হবে। ইউনিটপ্রধানদের চলমান নির্বাচনী প্রশিক্ষণ নিবিড়ভাবে তদারকিসহ হয়রানিবিহীনভাবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সময়মতো প্রদান নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশ সুপারদের আহ্বান জানান আইজিপি।

গুম কমিশনে করা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা ও মামলা করার নির্দেশ দেন আইজিপি। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে উদ্ভূত মামলাগুলো বিশেষ গুরুত্বসহ তদন্ত ও দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।

আইজিপি মামলা তদন্তের গুণগত মান উন্নয়নের ওপরও জোর দেন। সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা এবং অনলাইনে যুক্ত জেলা পুলিশ সুপাররা প্রশাসনিক ও অপারেশনাল নানা বিষয়ে পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নার্সকে ক্লিনিকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, চিকিৎসক কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহীতে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে বিয়ের আশ্বাসে নার্সকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার ওই চিকিৎসককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে তাঁকে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম আহসান হাবিব (২৯)। তিনি লক্ষ্মীপুর এলাকার আল-আরাফাহ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক। তাঁর বাড়ি নওগাঁ জেলায়।

গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে ২৩ সেপ্টেম্বর নগরীর রাজপাড়া থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।

জানা যায়, নগরীর অন্য একটি বেসরকারি ক্লিনিকের নার্স পদে চাকরি করেন ভুক্তভোগী। ঘটনার দিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগীকে চিকিৎসক আহসান হাবিব নিজের চেম্বারে ডেকে এনে ধর্ষণ করেন।

পরে ভুক্তভোগী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষা শেষে তিনি মামলা করেন।

জানতে চাইলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানি না। মামলায় ঘটনাস্থল হিসেবে আমাদের ক্লিনিকের নাম আছে বলে জেনেছি। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই আহসান হাবিবকে ক্লিনিক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজপাড়া থানার পরিদর্শক আব্দুল আলিম জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগী নার্স রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষা শেষে তিনি মামলা করেন।

তিনি আরও জানান, মামলা হওয়ার পর গতকাল রোববার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিন বিকেলেই তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটির তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও পাঁচ বছরের শিশু ধর্ষণের দুই মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে ১২ বছরের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের দায়ে দুই আসামিকে ও রামপুরায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক মো. গোলাম কবীর পৃথক দুই মামলায় এ রায় দেন।

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ঘটনাস্থলের বাড়ির ব্যবস্থাপক আব্দুল গাফফার ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মো. বাচ্চু। রাজধানীর রামপুরায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন বাচ্চু মিয়া হাওলাদার।

উভয় মামলায় প্রত্যেক আসামিকে দণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা পরিশোধে ব্যর্থ হলে প্রত্যেককে অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী রাশেদুল ইসলাম দুটি মামলার রায়ের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর ওই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর মা-বাবা কর্মস্থলে যান। বেলা ৩টার দিকে আসামিরা যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলের হাশেম রোডের বাসায় ১২ বছরের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বললে তাঁরা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

পরে একই বছরের ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে আব্দুল গাফফার তাকে ডেকে নিয়ে তার সঙ্গে যেতে বলেন। তখন ভুক্তভোগী তাঁর সঙ্গে না গিয়ে বিষয়টি তার মাকে জানায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা ১ নভেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে দুজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পরিদর্শক তাসলিমা আক্তার। ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার বিচার চলাকালে ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

রায়ের সময় আসামি বাচ্চুকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায় শেষে তাঁকে সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। অপর আসামি গাফফার পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

অপর দিকে শিশু ধর্ষণ মামলার বিবরণে জানা যায়, ওই শিশুর মা রামপুরা টিভি সেন্টার রোডে একটি গ্যারেজে রান্না করতেন। ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল বেলা ২টার দিকে বাচ্চু মিয়া হাওলাদার শিশুকে দোকান থেকে ঠান্ডা পানি এনে দিতে বলেন। শিশুটি তাঁর কাছে গেলে বাচ্চু মিয়া হাওলাদার তাকে রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন। মেয়ের ফিরে আসতে দেরি হওয়ায় তার মা তাকে খুঁজতে যান। সেখানে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখতে পান তিনি। পরে মেয়েটি মাকে সব খুলে বলে। এ ঘটনায় শিশুটির মা ওই দিনই রামপুরা থানায় মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন রামপুরা থানার উপপরিদর্শক এস এম মুকুল মিয়া। ১৬ নভেম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনাল ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য নেন।

আসামি বাচ্চু মিয়া হাওলাদারকে রায়ের সময় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায় শেষে তাঁকে সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি 
শামীম আকতার। ছবি: সংগৃহীত
শামীম আকতার। ছবি: সংগৃহীত

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন শামীম আকতার (৪০) নামের এক যুবক। আজ সোমবার উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের কাশিডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

শামীম আকতার ওই গ্রামের পজির উদ্দীনের ছেলে। তিনি স্থানীয় নাট্যমঞ্চে অভিনয়ের কারণে এলাকায় নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত।

শামীমের ভাই জাপান জানান, ইতালি থেকে ভাবি মোবাইলে জানান যে শামীম ঘরের ভেতর গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করছে। বাজার থেকে ছুটে আসার আগেই মারা যায় শামীম। দরজা ও জানালার গ্রিল বন্ধ ছিল। পরে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতর ঢুকে দেখি ঝুলন্ত অবস্থায় আছে শামীম।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই মাস আগে ৩০ লাখ টাকা খরচ করে ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টা করেন শামীম ও তাঁর স্ত্রী মুক্তা আক্তার। ভিসা জটিলতার কারণে স্ত্রী চলে গেলেও স্বামী আটকে যান। চেষ্টা করছিলেন ভিসা জটিলতা কাটিয়ে স্ত্রীর কাছে যাওয়ার।

এ ছাড়া ইতালিতে মুক্তা আক্তার কাজে যোগ দিতে পারেননি। তাঁর ভরণপোষণের জন্য প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা পাঠাতে হতো। টাকার জন্য খুব চাপে ছিলেন শামীম।

বালিয়াডাঙ্গী টাইগার নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘শামীম সচেতন ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর অভিনয় দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হই। সেই শামীম এমন অঘটন ঘটাবেন। আমরা ভাবতে পারি না। তাঁর মৃত্যুতে সবাই শোকাহত।’

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার তদন্ত কর্মকর্তা দিবাকর অধিকারী জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনের কাজ করছে। পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার পর এ বিষয়ে বলা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত