Ajker Patrika

মানিকছড়িতে দাম চড়া গরুর, কমার অপেক্ষায় হাট থেকে খালি হাতে ফিরছেন ক্রেতা

আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৩, ১৪: ৪৭
মানিকছড়িতে দাম চড়া গরুর, কমার অপেক্ষায় হাট থেকে খালি হাতে ফিরছেন ক্রেতা

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার গরুর হাটে এবার গরুর দাম চড়া। পাহাড়ি লাল গরু কিনতে আসা অনেক ক্রেতাই তাই দাম কমার আশায় খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। এদিকে সামনের দিনগুলোতে বেচাকেনা জমে ওঠার আশা করছেন বিক্রেতারা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বৈশ্বিক করোনা মহামারির সময়েও ছোট-বড় ১০৫টি খামার ও বাড়িতে যথেষ্ট গরু মোটাতাজা করেছিলেন খামারি ও ক্ষুদ্র কৃষক। তখন বাজারে গোখাদ্যের মূল্য সহনীয় থাকায় অবিক্রীত গরু লালন-পালনেও তেমন বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অজুহাতে গত এক বছরে দুই থেকে আড়াই গুণ বেড়েছে গোখাদ্যের দাম। তাই গরু ও ছাগল কম লালন-পালন করা হয়েছে। বড় খামারিরা সবুজ ঘাসে কিছুটা ঘাটতি কমিয়ে আনলেও ছোট খামারি বা বাড়িতে গরু লালন-পালন করা ব্যক্তিরা বেশি সমস্যায় পড়েছেন। তাই গরুর সংখ্যা কম হওয়ার পাশাপাশি দাম বেশি এবার।

গতকাল শনিবার উপজেলার সবচেয়ে বড় গরুর বাজার মহামুনি চত্বরে অবস্থিত মানিকছড়ি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে হাজারের বেশি গরু উঠেছে। তবে বিক্রেতারা দাম বেশি হাঁকছেন। কোরবানির জন্য গরু কিনতে আসা ক্রেতাদের বেশির ভাগ লোক গরু না কিনে ফিরে গেছেন। বেচাকেনাও তাই হয়েছে কম। তবে উপজেলা সদরের মানিকছড়ি বাজার, তিনটহরী বাজার, যোগ্যাছোলা ও কালাপানি বাজারে শেষ সময়ে বেচাকেনা জমে ওঠার আশা করছেন বিক্রেতারা।

চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি লাল গরু কিনতে বাজারে আসা ফরহাদ গনি নয়ন বলেন, ‘পাহাড়ের মাঠে-ঘাটে চরে সবুজ ঘাস খেয়ে বেড়ে ওঠা লাল গরু দেখতে অনেক সুন্দর। কিন্তু অস্বাভাবিক দাম হাঁকায় গরু না কিনে ফিরে গেলাম। শহরে আরও কম দামে গরু মিলবে।’

উপজেলার খামারি মো. আবদুল কাদের আজকের পত্রিকাকে বলেন, গোখাদ্যের মূল্য আকাশচুম্বী হওয়ায় খৈল, ভুসি, সয়াবিন খাওয়ানো সম্ভব হয়নি। ফলে সবুজ ঘাসের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে এবং কম গরু পালন করেছি। আগেভাগে ভালো দামেই গরু বিক্রি করতে পেরেছি।’

ডাইনছড়ির গরু ব্যবসায়ী ও কৃষক মো. আনু মিয়া বলেন, এ বছর সবুজ ঘাসনির্ভর গরু পালন করেছে মানুষ। তবে দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি ও দাবদাহে প্রকৃতিতে সবুজ ঘাস নেই বললেই চলে। সাধারণ কৃষকেরা পরিকল্পিত ঘাস চাষে অভ্যস্ত নন। ফলে আশানুরূপভাবে গরু মোটাতাজা করতে পারেননি।

উপজেলার বড় খামারগুলোর একটি এ কে ডেইরি ফার্মের ম্যানেজার মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘গত বছর আমাদের ফার্মে কোরবানির জন্য দেড় শ ষাঁড় মোটাতাজা করা হয়েছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে বছরজুড়ে গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে এবার গরুর সংখ্যা ৭০–৭৫টিতে নিয়ে এসেছি। মোটামুটি সবুজ ঘাসে খাইয়েই (শতকরা আশি শতাংশ) এদের মোটাতাজা করছি।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন রনি কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে দীর্ঘ সময় গোখাদ্যের মূল্য আকাশচুম্বী থাকায় উপজেলায় খামারের সংখ্যা না কমলেও গরু-ছাগল পালন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ ছাড়া গরু মোটাতাজা করায় অনেকে আগের মতো পর্যাপ্ত খাদ্য না খাওয়ানোয় বাজারে সুন্দর ও সবল গরুর সংখ্যা কম। তুলনামূলক এবার গরু-ছাগলের দামও বেশি। প্রাণিসম্পদ দপ্তর গরুর সন্ধানে থাকা গ্রাহকদের অনলাইনে তথ্য দেওয়ার ব্যবস্থাসহ নিয়মিত গরুর বাজার তদারক করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত