Ajker Patrika

জীবনের পড়ন্তবেলায় প্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তাঁরা

বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০: ৩২
জীবনের পড়ন্তবেলায় প্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তাঁরা

জীবনের পড়ন্তবেলায় প্রেম, অতঃপর পরিণয়। এলাকায় চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছেন এক বয়স্ক যুগল। আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সোনাহার গ্রামে। মুজিব জন্মশতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের রঙিন বাড়িতে তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। 

বরের নাম আশ্রাফ আলী ব্যাপারী (৬২), কনে বানু বেগম (৫৪)। গতকাল শনিবার রাতে যুগলের বিয়ে সম্পন্ন হয়। একাকিত্ব ঘোচাতে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন তাঁরা। 

ব্যতিক্রমধর্মী এ বিয়েতে ১ লাখ ১ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। পরে নগদ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধিত দেনমোহরে ওই দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়। বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাখার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকুর উদ্যোগে এই বিয়েতে গ্রামের প্রায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বর-কনে উভয়েই বর্তমানে চাখার ‍ইউনিয়নের সোনাহার গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। 

চট্টগ্রাম থেকে আসা বানু বেগমের ঘরে ‍এক কন্যাসন্তান রয়েছে। বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের জম্বদ্বীপ থেকে আসা বৃদ্ধ ‍আশরাফ ‍আলী ব্যাপারী ছিলেন চিরকুমার। তবে জীবনের শেষ সময়ে এসে আর একাকিত্ব সইতে পারছিলেন না। সিদ্ধান্ত বদল করে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন বানু বেগমকে। বিয়ের আগে বেশ কিছু দিন তাঁরা প্রেম করেছেন। এ নিয়ে অনেক কটুকথাও শুনতে হয়েছে। তবে বিয়েটা বেশ ধুমধাম করেই দিয়েছেন এলাকাবাসী। 

ইউপির চেয়ারম্যান সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকু বলেন, ‘চাখার ‍ইউনিয়নের সোনাহার গ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা বিয়ের পাত্র ভিক্ষুক আশরাফ ‍আলী ব্যাপারী ছিলেন চিরকুমার। বৃদ্ধ বয়সে বেশ একাকিত্বের জীবন কাটাতেন ‍আশরাফ। পরে তিনি এই নিঃসঙ্গতা কাটাতে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।’ 

ধুমধুম বিয়ে দেন স্থানীয়রা। রঙিন কাগজ আর বেলুন দিয়ে সাজানো হয় বাসরঘরএকই প্রকল্পের বাসিন্দা পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করা বানু বেগমের স্বামী মারা যাওয়ার পর মেয়ে-জামাইয়ের সঙ্গে ছিলেন। নিঃসঙ্গতা কাটাতে তিনিও বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। ‍এর মধ্যে ‍উভয়ের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ‍উঠলে পরিবারের সম্মতিতে গতকাল রাতে ধুমধাম করে তাঁদের বিয়ে দেওয়া হয়। 

এমন ‍আয়োজনে এলাকাবাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয় ব্যাপক কৌতূহল। চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এলাকাবাসী নবদম্পতির দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করেছেন। ‍এই বিয়ের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনন্য প্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। ‍আমিসহ ‍আমার এলাকাবাসী সবাই তাঁদের ‍এই বিয়েতে খুশি।’ 

আশরাফ ‍আলী ব্যাপারী ও বানু বেগম তাঁদের দাম্পত্যজীবন যেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সুখময় হয় সে জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত