Ajker Patrika

পটুয়াখালীতে সাবেক চিফ হুইপের ছোট ভাইয়ের কারাদণ্ড

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
এ কে এম ফরিদ মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত
এ কে এম ফরিদ মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীতে চেক ডিজঅনারের মামলায় এ কে এম ফরিদ মোল্লা নামে এক ব্যবসায়ীকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার যুগ্ম জেলা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. বেলাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

দণ্ডিত এ কে এম ফরিদ মোল্লা পটুয়াখালী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের ছোট ভাই। বহুল আলোচিত এই মামলায় দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়, যা নিয়ে জেলায় ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স হোসেন অ্যান্ড ব্রাদার্স’-এর স্বত্বাধিকারী এ টি এম মোকাম্মেল হোসেনের সঙ্গে ফরিদ মোল্লার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে ফরিদ মোল্লা বিভিন্ন সময়ে মোকাম্মেল হোসেনের কাছ থেকে মোট ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ধার নেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি টাকা পরিশোধ না করে, বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ভাইয়ের অবস্থান দেখিয়ে অর্থ ফেরত দিতে গড়িমসি করেন।

পরে ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ফরিদ মোল্লা তাঁর প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনিরা এন্টারপ্রাইজের ব্যাংক হিসাব থেকে মোকাম্মেল হোসেনকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু পরদিন রূপালী ব্যাংকের নিউ টাউন করপোরেট শাখায় চেকটি জমা দিলে সেটি ডিজঅনার হয়।

এরপর ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি বাদী আইনজীবীর মাধ্যমে ফরিদ মোল্লাকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। কিন্তু আসামি ওই দাবির স্বীকৃতি না দিয়ে তা অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর না দেখে মোকাম্মেল হোসেন আদালতের শরণাপন্ন হন।

বাদীপক্ষের অভিযোগ, আসামির ভাই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা হওয়ায় মামলাটি প্রভাবিত করার একাধিক প্রচেষ্টা হয়েছিল। তবে আদালত সব দিক বিবেচনায় মামলার রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে মনে করছেন বাদীপক্ষ।

রায়ে সন্তুষ্ট বাদী এ টি এম মোকাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমি সব সময় সততার সঙ্গে ব্যবসা করেছি। অনেক চাপের মধ্যে ছিলাম, তবে আজ ন্যায়বিচার পেয়েছি। আদালতের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় এই মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা আইনের জন্য একটি বড় বিজয়।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী আল-আমীন সুজন বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যেকোনো ক্ষমতার ঊর্ধ্বে আইনের বিচার প্রক্রিয়া চলতে পারে, সেটিই আজ আদালত দেখিয়ে দিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত