Ajker Patrika

বরগুনায় শহীদ মিনার মাঠে পশুর হাট, ক্ষুব্ধ সচেতন মহল

  বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনায় শহীদ মিনার মাঠে পশুর হাট। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরগুনায় শহীদ মিনার মাঠে পশুর হাট। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরগুনা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাঠে ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাট বসানো হয়েছে। বৃষ্টির কারণে মাঠে কাদা থাকায় শহীদ মিনারের বেদিতে জুতা পায়েই উঠে পড়েছেন অনেক ক্রেতা ও বিক্রেতা। এতে নানা মহলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হলে প্রশাস‌নের তৎপরতায় শহীদ মিনার থে‌কে নামিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের।

শহীদ মিনার মাঠে গরুর হাট বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা জেলা প্রশাসক মো.শফিউল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহীদ মিনার মাঠে গরুর হাট বসানোর বিষয়ে পূর্বে আমি অবগত ছিলাম না। যখন বিষয়টি জেনেছি, তখন আমি এটি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। ওই মাঠে আর গরু কেনাবেচা হবে না।’

পরিবেশকর্মী আরিফুর রহমান জানান, মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি শহীদ মিনারে গেলে দেখতে পান, মিনারের বেদিতে পান-সিগারেট-বাদামের ভ্রাম্যমাণ দোকান নিয়ে বসেছেন কিছু লোক। ঠিক তখনই একাধিক ব্যক্তিকে তিনি জুতা পরে বেদিতে হাঁটাহাঁটি করতে দেখেন।

এ সময় জুতা পরে উঠেছেন কেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে বলেন, ‘বাবা, এইডা মোর অন্যায় হইছে। কী করমু? হাডের মধ্যে বওনের (বসা) কোনো জায়গা নাই। তাই সবার দ্যাখাদেখি মুই শহীদ মিনারে জোতা লইয়া উঠছি।’

গরু বিক্রি করতে আসা আলম শিকদার বলেন, ‘শহীদ মিনারে স্যান্ডেল পরে ওঠা নতুন না। এই জায়গা দিয়ে যখন যাই, তখন অনেককেই শহীদ মিনারে এভাবে ওঠানামা করতে দেখি। হাটের কারণে আজ শহীদ মিনারে অনেকেই জুতা নিয়ে উঠছি।’

খেলাঘর বরগুনা শাখার চারুকলাবিষয়ক সম্পাদক ও পরিবেশকর্মী আরিফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শহীদ মিনারে জুতা, স্যান্ডেল পরে ওঠা জাতিকে অপমান করা। বরগুনা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। ইজারাদারকে আগেভাগেই বারণ করলে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত না।

হাটের ইজারাদার তহিদুর রহমান বলেন, ‘এক দিনের জন্য শহীদ মিনার মাঠে পশুর হাট বসিয়েছিলাম। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এটি আমরা করতে বাধ্য হয়েছি। তবে পশুর হাট ভবিষ্যতে আর বসানো হবে না।’

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) বরগুনার সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, ‘শহীদ মিনার বাঙালির চেতনার জায়গা। এটা কোনো ইট-বালু-রড সিমেন্টের স্থাপনা নয়। এটা হলো আবেগ আর শ্রদ্ধার স্থান। সেই শহীদ মিনারের গরুর হাট বসিয়ে এভাবে অবমূল্যায়ন করা হবে, এটা মানতে পারছি না।’

বরগুনা পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক অনিমেষ বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক দিনের জন্য ইজারাদারকে শহীদ মিনার মাঠে হাট বসানোর মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শহীদ মিনারের সম্মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে শুনে আমি হাটে মাইকিং করিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে হাটের জন্য নির্ধারিত সরকারি শিশুসদন মাঠে যেতে বলা হয়েছে। তবে সেখানেও হাট বসানোর জন্য সরকারি বিধিনিষেধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পৌরসভার একমাত্র হাটটি নিয়ে আমরা বিপাকে পড়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত