Ajker Patrika

বরিশাল টার্মিনালে দুই দফায় সংঘর্ষ, বাস চলাচল বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ০৪ মে ২০২৪, ২২: ৩৬
বরিশাল টার্মিনালে দুই দফায় সংঘর্ষ, বাস চলাচল বন্ধ

বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে শ্রমিকদের হর্ন বাজানোকে কেন্দ্র করে বাসচালককে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে দুই দফা সংঘর্ষের পর কেন্দ্রীয় টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সে সময় বাস মালিক সমিতির একটি পক্ষের শ্রমিকেরা সড়কে বাঁশ ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন এবং বিক্ষোভ করেন। এতে তিন ঘণ্টার মতো টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ থাকে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

এদিকে আজ সন্ধ্যার পর দ্বিতীয় দফায় টার্মিনাল এলাকায় শ্রমিকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকেরা টেম্পোতে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করতে গেলে টেম্পো শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় অর্ধশতাধিক টেম্পো ভাঙচুর করেন বাস শ্রমিকেরা। 

সংঘর্ষের সময় মেয়র খোকনের ব্যানার ও বাস মালিক সমিতির সভাপতি অসীম দেওয়ানের ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাটার্মিনাল এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

বাস শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদশী সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মাদারীপুরগামী একটি বাস হর্ন বাজাচ্ছিল। এ সময় বাস মালিক সমিতির কর্মচারী বাবাই এসে চালককে বাসটি সরাতে বলেন, কিন্তু তা না শোনায় বাবাই ওই চালককে মারধর করেন। ওই ঘটনায় দুই শ্রমিক সৌরভ ও সাকিল ভিডিও করতে গেলে তাঁদেরও আটকে মারধর করে বাবাইয়ের লোকজন। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই শ্রমিককে উদ্ধারের দাবিতে শ্রমিকেরা একজোট হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে টার্মিনালের ভেতর ও বাইরে। পরে শতাধিক শ্রমিক টার্মিনালের বাইরে থাকা মেয়র খোকনের ব্যানার এবং বাস মালিক সমিতির সভাপতি অসীম দেওয়ানের ছবি ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে টার্মিনালের ভেতর আসবাব এবং মালিক সমিতির কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা চালান শ্রমিকেরা। এ সময় প্রতিপক্ষ শ্রমিক নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মোল্লা বাস টার্মিনালে উপস্থিত ছিলেন। 

শ্রমিকেরা অভিযোগ করেছেন, সদ্য গঠিত শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি কাজী কবির আহমেদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তিনি কোনো বাধা দেননি। এতে ক্ষুব্ধ হন সাধারণ শ্রমিকেরা। তাঁরা সংঘবদ্ধ হয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। শ্রমিকদের মারধর করার অভিযোগে বহিরাগত অজাদ ও সৈয়দ রাব্বী নামে দুই যুবককে আটকে শ্রমিকেরা মারধর করেন। এ সময় শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে ঢুকে তছনছ করা হয়। 

বাস শ্রমিকদের সঙ্গে টেম্পো শ্রমিকদের সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকাবিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা জানান, টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণ করছে বাহিরাগতরা। শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতির সামনে একজন চালককে মারধরের সময় তিনি বাধা দেননি। শ্রমিকদের কোনো নিরাপত্তা নেই। তাঁরা এর প্রতিবাদ করেছেন মাত্র।

তবে জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি কাজী কবির বলেন, এ ঘটনায় তিনি ও বাবাই জড়িত নন। শ্রমিক নেতা লিটন মোল্লা উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের উত্তেজিত করেছেন। এর নেপথ্যে অন্য কোনো মহলের ইন্ধন রয়েছে। 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. ফারুক হোসেন বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে একদল শ্রমিক ক্ষুব্ধ ছিলেন। বহিরাগতরা এক চালককে মারধরের ঘটনার জের ধরে ক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় ও টার্মিনাল এলাকায় ভাঙচুর করেছেন। মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা চলছে। তবে বর্তমানে বাস চলাচল বন্ধ আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত