লুৎফর রহমান রিটন
দর্শনের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হাদীর একটাই হবি—ফিশিং। ছুটির দিনে ছিপ ফেলে মাছ ধরাটা বলতে গেলে একমাত্র নেশা মিস্টার হাদীর। মফস্বলের বিখ্যাত কলেজের ততোধিক বিখ্যাত অধ্যাপক মিস্টার হাদীকে শুক্রবারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাড়িতে পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
আজও তিনি ছিপ ফেলে বসে আছেন। আজ একটিবারের জন্যও কোনো মাছ এসে ঠোকর দেয়নি হাদীর বড়শিতে। সময় মধ্যদুপুর। সূর্যের তেজ একেবারেই ক্ষীণ। ক্ষণে ক্ষণে মেঘ এসে ঢেকে দিচ্ছে আকাশের নীল। নদীতে ছায়া পড়ছে মেঘের।
শিগগিরই ফাতনাটা নড়ে উঠল। নিশ্বাস টান টান করে অপেক্ষায় থাকেন সৈয়দ আবদুল হাদী। আয় রে মাছ আয়। সকাল থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিস। এবার তো ধরা দে।
ফাতনাটা টুপ করে ডুবে যেতেই জোরসে টান মারেন হাদী।
ফ্যানটাস্টিক! বড়শিতে গাঁথা মাঝারি সাইজের একটা মাগুর সমানে লেজ নাড়ছে। কালো বা ধূসর নয়। কিছুটা হলদেটে তার গায়ের বরণ।
ঠিক সেই সময় কেউ একজন বললেন, আপনি একটা প্রতারক প্রফেসর সৈয়দ আবদুল হাদী।
কে বলে এমন কথা?
ঘাড় ঘুরিয়ে পেছন দিকে তাকান হাদী। কিন্তু না কেউ নেই পেছনে। হাদী ভাবলেন, এটা ভ্রম। বিভ্রম। কেউ তাকে প্রতারক বলেনি এবং তিনি প্রতারক নন। জীবনেও কারও সঙ্গে কোনো প্রতারণা তিনি করেননি।
কিন্তু আবারও শুনলেন তিনি সেই একই সংলাপ—আপনি একটা প্রতারক প্রফেসর সৈয়দ আবদুল হাদী।
ডানে-বামে-পেছনে কাছাকাছি বা দূরে কোনো জনমনিষ্যি নেই। তাহলে কোথা থেকে ভেসে আসছে এ রকম উদ্ভট অভিযোগ! চিন্তিত হয়ে পড়েন হাদী। কাহিনি কী?
এবার স্পষ্ট উচ্চারণে সেই একই কণ্ঠ বলে উঠল—কাল বৃহস্পতিবার ক্লাসে প্রতারণার ওপর এত বড় লেকচার দিলেন অথচ আজকে আপনি নিজেই কিনা একজন প্রতারক!
সৈয়দ আবদুল হাদী শুনলেন সংলাপটা এসেছে তাঁর সামনে থেকেই। পেছন থেকে নয়। কিন্তু সামনে তো কেউই নেই! না তাঁর কোনো ছাত্র, না কোনো সহকর্মী অধ্যাপক। সামনে তো নিস্তরঙ্গ জলরাশি ছাড়া আর কিছুই দৃশ্যমান নয়! মাগুর মাছটাকে বড়শি থেকে ছাড়াতে ডান হাতে ধরে থাকা ছিপটার সুতো বাঁ হাতের নাগালের কাছে আনতেই খানিকটা ভড়কে গেলেন হাদী। বিস্মিত হয়ে তিনি লক্ষ করলেন—ক্রমাগত লেজ নাড়াতে নাড়াতে মাগুর মাছটা তাঁকে বলছে—এই যে খাদ্যের ভেতরে বড়শি লুকিয়ে রেখে আমার সঙ্গে প্রতারণা করলেন হাদী সাহেব, আপনার কি একটুও লজ্জা করল না? একবারও মনে হয়নি আপনার যে কাজটা অন্যায়? এ রকম প্রকাশ্যে দিনদুপুরে এমন জঘন্য প্রতারণা করে যে মানুষ, সে আর যা-ই হোক প্রতারণার বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের নসিহত করার অধিকার রাখে না।
কেঁপে উঠলেন প্রফেসর।
ছিপটা পড়ে গেল তাঁর হাত থেকে।
ক্ষিপ্র গতিতে বসা থেকে উঠেই বাড়ির
দিকে দৌড় দিলেন দর্শনের বিখ্যাত প্রফেসর সৈয়দ আবদুল হাদী।
দর্শনের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হাদীর একটাই হবি—ফিশিং। ছুটির দিনে ছিপ ফেলে মাছ ধরাটা বলতে গেলে একমাত্র নেশা মিস্টার হাদীর। মফস্বলের বিখ্যাত কলেজের ততোধিক বিখ্যাত অধ্যাপক মিস্টার হাদীকে শুক্রবারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাড়িতে পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
আজও তিনি ছিপ ফেলে বসে আছেন। আজ একটিবারের জন্যও কোনো মাছ এসে ঠোকর দেয়নি হাদীর বড়শিতে। সময় মধ্যদুপুর। সূর্যের তেজ একেবারেই ক্ষীণ। ক্ষণে ক্ষণে মেঘ এসে ঢেকে দিচ্ছে আকাশের নীল। নদীতে ছায়া পড়ছে মেঘের।
শিগগিরই ফাতনাটা নড়ে উঠল। নিশ্বাস টান টান করে অপেক্ষায় থাকেন সৈয়দ আবদুল হাদী। আয় রে মাছ আয়। সকাল থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিস। এবার তো ধরা দে।
ফাতনাটা টুপ করে ডুবে যেতেই জোরসে টান মারেন হাদী।
ফ্যানটাস্টিক! বড়শিতে গাঁথা মাঝারি সাইজের একটা মাগুর সমানে লেজ নাড়ছে। কালো বা ধূসর নয়। কিছুটা হলদেটে তার গায়ের বরণ।
ঠিক সেই সময় কেউ একজন বললেন, আপনি একটা প্রতারক প্রফেসর সৈয়দ আবদুল হাদী।
কে বলে এমন কথা?
ঘাড় ঘুরিয়ে পেছন দিকে তাকান হাদী। কিন্তু না কেউ নেই পেছনে। হাদী ভাবলেন, এটা ভ্রম। বিভ্রম। কেউ তাকে প্রতারক বলেনি এবং তিনি প্রতারক নন। জীবনেও কারও সঙ্গে কোনো প্রতারণা তিনি করেননি।
কিন্তু আবারও শুনলেন তিনি সেই একই সংলাপ—আপনি একটা প্রতারক প্রফেসর সৈয়দ আবদুল হাদী।
ডানে-বামে-পেছনে কাছাকাছি বা দূরে কোনো জনমনিষ্যি নেই। তাহলে কোথা থেকে ভেসে আসছে এ রকম উদ্ভট অভিযোগ! চিন্তিত হয়ে পড়েন হাদী। কাহিনি কী?
এবার স্পষ্ট উচ্চারণে সেই একই কণ্ঠ বলে উঠল—কাল বৃহস্পতিবার ক্লাসে প্রতারণার ওপর এত বড় লেকচার দিলেন অথচ আজকে আপনি নিজেই কিনা একজন প্রতারক!
সৈয়দ আবদুল হাদী শুনলেন সংলাপটা এসেছে তাঁর সামনে থেকেই। পেছন থেকে নয়। কিন্তু সামনে তো কেউই নেই! না তাঁর কোনো ছাত্র, না কোনো সহকর্মী অধ্যাপক। সামনে তো নিস্তরঙ্গ জলরাশি ছাড়া আর কিছুই দৃশ্যমান নয়! মাগুর মাছটাকে বড়শি থেকে ছাড়াতে ডান হাতে ধরে থাকা ছিপটার সুতো বাঁ হাতের নাগালের কাছে আনতেই খানিকটা ভড়কে গেলেন হাদী। বিস্মিত হয়ে তিনি লক্ষ করলেন—ক্রমাগত লেজ নাড়াতে নাড়াতে মাগুর মাছটা তাঁকে বলছে—এই যে খাদ্যের ভেতরে বড়শি লুকিয়ে রেখে আমার সঙ্গে প্রতারণা করলেন হাদী সাহেব, আপনার কি একটুও লজ্জা করল না? একবারও মনে হয়নি আপনার যে কাজটা অন্যায়? এ রকম প্রকাশ্যে দিনদুপুরে এমন জঘন্য প্রতারণা করে যে মানুষ, সে আর যা-ই হোক প্রতারণার বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের নসিহত করার অধিকার রাখে না।
কেঁপে উঠলেন প্রফেসর।
ছিপটা পড়ে গেল তাঁর হাত থেকে।
ক্ষিপ্র গতিতে বসা থেকে উঠেই বাড়ির
দিকে দৌড় দিলেন দর্শনের বিখ্যাত প্রফেসর সৈয়দ আবদুল হাদী।
সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পকর্মকে ‘বুর্জোয়া’ ও ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করা হয় চীনে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই শেকসপিয়ারের সব সাহিত্যকর্ম—যেমন হ্যামলেট, ম্যাকবেথ, রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, ওথেলো ইত্যাদি—চীনে নিষিদ্ধ হয়, কারণ সেগুলোতে চীনা কমিউনিস্ট আদর্শের ‘সঠিক রাজনৈতিক
১৩ দিন আগেকবি নজরুল ইসলামের বহুল পরিচিতি ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে, কিন্তু নজরুল উঁচুমার্গের ‘সাম্যবাদী কবি’ও বটেন। নজরুলের সাম্যচিন্তা তাঁর জীবনের বাস্তবতা থেকে উদ্ভূত। তাঁর শৈশব-কৈশোরের জীবন-অভিজ্ঞতা, তাঁর যৌবনের যাপিত জীবন তাঁকে বাস্তব পৃথিবীর দারিদ্র্য, অসমতা ও অসাম্যের সঙ্গে পরিচিত করেছে অত্যন্ত নগ্নভাবে...
১৩ দিন আগেবাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় সাহিত্যিকদের মধ্যে নজরুল অন্যতম। সাধারণত জনপ্রিয় সাহিত্যিকদের বেলায় দেখা যায় কালের সীমা অতিক্রম করলে তাঁদের নাম ইতিহাসের পাতায় আর পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে নজরুলের জীবন ও সাহিত্য কালের সীমা অতিক্রম করে আজও পাঠকপ্রিয় হয়ে আছে। এর মূলে রয়েছে তাঁর সচেতন জীবনবোধ...
১৩ দিন আগেনজরুলকে ভুল ভাবে পড়ার আরেকটি বড় উদাহরণ হলো তাঁকে প্রায়শই রবীন্দ্রনাথের ‘প্রতিপক্ষ’ হিসেবে দাঁড় করানোর রাজনৈতিক প্রবণতা। এই আইডেনটিটি পলিটিকস শুধু বিভাজন তৈরি করে না, নজরুলের মৌলিক অবস্থানকেও বিকৃত করে।
১৪ দিন আগে