২০১৯ সালে পাস করার পর গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে যাওয়া হিন্দুরাই এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
এ বিষয়ে ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আইনের দ্বারা ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, পারসি, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়ারাও এই আইনের মাধ্যমে কাগজে-কলমে ভারতের স্থায়ী নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
একটি তফসিলি বা তালিকাভুক্ত জাতি হিসাবে মতুয়ারা হলো—নমশূদ্র বা নিম্ন বর্ণের হিন্দু উদ্বাস্তু। যারা বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে গিয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের বাস্তবায়ন ভারতের আসন্ন নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ জনসংখ্যার দিক দিয়ে মতুয়ারা এখন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী। এই সম্প্রদায়ের বেশির ভাগ মানুষ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং নদীয়া, হাওড়া, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহের মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বসবাস করে।
নমশূদ্ররা পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। উত্তরবঙ্গে রাজবংশীদের পরই এরা রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী।
সামগ্রিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের সিংহভাগই হিন্দু (প্রায় ৯৯.৯৬ শতাংশ)। এই রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১০টি আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। এই ১০টি আসনের মধ্যে ২০১৯ সালে বিজেপি জয় পেয়েছিল চারটি আসনে। এই আসনগুলো হলো—কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, বিষ্ণুপুর এবং বনগাঁও।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়—পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়টি হরিচাঁদ ঠাকুর এবং তাঁর বংশধরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাঁরা উত্তর চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা। ভারতের রাজনীতির সঙ্গেও তাঁদের দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে।
হরিচাঁদের প্রপৌত্র প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর ১৯৬২ সালে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন। কিছুদিন আগে পর্যন্তও প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরের বিধবা শতবর্ষী পত্নী বীনাপানি দেবী ছিলেন এই সম্প্রদায়ের সৌভাগ্যের প্রতীক।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মতুয়া মহাসংঘতে নিজেদের অবস্থানের সমর্থনে ঠাকুর পরিবারের একাধিক সদস্য রাজনীতিতে তাঁদের ভাগ্য যাচাই করেছেন।
বিনাপানি দেবীর বড় ছেলে কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর ২০১৪ সালে বনগাঁ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছিলেন। তার ছোট ভাই মঞ্জুল কৃষ্ণ ২০১১ সালে গাইঘাটা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন।
এদিকে তৃণমূল সাংসদ ও কাকা কপিল কৃষ্ণ ঠাকুরের আকস্মিক মৃত্যুর পর মঞ্জুলের বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুর ২০১৫ সালে বিজেপির টিকিটে বনগাঁ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেই নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল থেকে জয়ী হয়েছিলেন তাঁরই চাচি ও কপিল কৃষ্ণের বিধবা স্ত্রী মমতা বালা ঠাকুর।
তবে মতুয়াদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব শক্তিশালী হয়ে ওঠে কয়েক বছরের মধ্যেই। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনেই দেখা যায়—মঞ্জুল কৃষ্ণের ছেলে শান্তনু ঠাকুর বিজেপির হয়ে বনগাঁ লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছেন। বর্তমানে মোদি সরকারের কেন্দ্রীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী। মঞ্জুল কৃষ্ণের আরেক ছেলে সুব্রত ঠাকুর একই অঞ্চলের গাইঘাটা বিধানসভা আসনে বিজেপি থেকে নির্বাচিত বিধায়ক।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের মতো তফসিলি জাতিগুলোকে নিজেদের পক্ষে টেনে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাঁটিতে বড় আঘাত হানতে চাইছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। আর এ জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে একটি বড় চাল হিসেবে দেখছে দলটি।
২০১৯ সালে পাস করার পর গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে যাওয়া হিন্দুরাই এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
এ বিষয়ে ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আইনের দ্বারা ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, পারসি, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়ারাও এই আইনের মাধ্যমে কাগজে-কলমে ভারতের স্থায়ী নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
একটি তফসিলি বা তালিকাভুক্ত জাতি হিসাবে মতুয়ারা হলো—নমশূদ্র বা নিম্ন বর্ণের হিন্দু উদ্বাস্তু। যারা বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে গিয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের বাস্তবায়ন ভারতের আসন্ন নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ জনসংখ্যার দিক দিয়ে মতুয়ারা এখন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী। এই সম্প্রদায়ের বেশির ভাগ মানুষ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং নদীয়া, হাওড়া, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহের মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বসবাস করে।
নমশূদ্ররা পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। উত্তরবঙ্গে রাজবংশীদের পরই এরা রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী।
সামগ্রিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের সিংহভাগই হিন্দু (প্রায় ৯৯.৯৬ শতাংশ)। এই রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১০টি আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। এই ১০টি আসনের মধ্যে ২০১৯ সালে বিজেপি জয় পেয়েছিল চারটি আসনে। এই আসনগুলো হলো—কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, বিষ্ণুপুর এবং বনগাঁও।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়—পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়টি হরিচাঁদ ঠাকুর এবং তাঁর বংশধরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাঁরা উত্তর চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা। ভারতের রাজনীতির সঙ্গেও তাঁদের দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে।
হরিচাঁদের প্রপৌত্র প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর ১৯৬২ সালে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন। কিছুদিন আগে পর্যন্তও প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরের বিধবা শতবর্ষী পত্নী বীনাপানি দেবী ছিলেন এই সম্প্রদায়ের সৌভাগ্যের প্রতীক।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মতুয়া মহাসংঘতে নিজেদের অবস্থানের সমর্থনে ঠাকুর পরিবারের একাধিক সদস্য রাজনীতিতে তাঁদের ভাগ্য যাচাই করেছেন।
বিনাপানি দেবীর বড় ছেলে কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর ২০১৪ সালে বনগাঁ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছিলেন। তার ছোট ভাই মঞ্জুল কৃষ্ণ ২০১১ সালে গাইঘাটা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন।
এদিকে তৃণমূল সাংসদ ও কাকা কপিল কৃষ্ণ ঠাকুরের আকস্মিক মৃত্যুর পর মঞ্জুলের বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুর ২০১৫ সালে বিজেপির টিকিটে বনগাঁ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেই নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল থেকে জয়ী হয়েছিলেন তাঁরই চাচি ও কপিল কৃষ্ণের বিধবা স্ত্রী মমতা বালা ঠাকুর।
তবে মতুয়াদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব শক্তিশালী হয়ে ওঠে কয়েক বছরের মধ্যেই। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনেই দেখা যায়—মঞ্জুল কৃষ্ণের ছেলে শান্তনু ঠাকুর বিজেপির হয়ে বনগাঁ লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছেন। বর্তমানে মোদি সরকারের কেন্দ্রীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী। মঞ্জুল কৃষ্ণের আরেক ছেলে সুব্রত ঠাকুর একই অঞ্চলের গাইঘাটা বিধানসভা আসনে বিজেপি থেকে নির্বাচিত বিধায়ক।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের মতো তফসিলি জাতিগুলোকে নিজেদের পক্ষে টেনে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাঁটিতে বড় আঘাত হানতে চাইছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। আর এ জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে একটি বড় চাল হিসেবে দেখছে দলটি।
২০১৯ সালে পাস করার পর গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে যাওয়া হিন্দুরাই এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
এ বিষয়ে ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আইনের দ্বারা ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, পারসি, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়ারাও এই আইনের মাধ্যমে কাগজে-কলমে ভারতের স্থায়ী নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
একটি তফসিলি বা তালিকাভুক্ত জাতি হিসাবে মতুয়ারা হলো—নমশূদ্র বা নিম্ন বর্ণের হিন্দু উদ্বাস্তু। যারা বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে গিয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের বাস্তবায়ন ভারতের আসন্ন নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ জনসংখ্যার দিক দিয়ে মতুয়ারা এখন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী। এই সম্প্রদায়ের বেশির ভাগ মানুষ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং নদীয়া, হাওড়া, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহের মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বসবাস করে।
নমশূদ্ররা পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। উত্তরবঙ্গে রাজবংশীদের পরই এরা রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী।
সামগ্রিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের সিংহভাগই হিন্দু (প্রায় ৯৯.৯৬ শতাংশ)। এই রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১০টি আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। এই ১০টি আসনের মধ্যে ২০১৯ সালে বিজেপি জয় পেয়েছিল চারটি আসনে। এই আসনগুলো হলো—কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, বিষ্ণুপুর এবং বনগাঁও।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়—পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়টি হরিচাঁদ ঠাকুর এবং তাঁর বংশধরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাঁরা উত্তর চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা। ভারতের রাজনীতির সঙ্গেও তাঁদের দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে।
হরিচাঁদের প্রপৌত্র প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর ১৯৬২ সালে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন। কিছুদিন আগে পর্যন্তও প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরের বিধবা শতবর্ষী পত্নী বীনাপানি দেবী ছিলেন এই সম্প্রদায়ের সৌভাগ্যের প্রতীক।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মতুয়া মহাসংঘতে নিজেদের অবস্থানের সমর্থনে ঠাকুর পরিবারের একাধিক সদস্য রাজনীতিতে তাঁদের ভাগ্য যাচাই করেছেন।
বিনাপানি দেবীর বড় ছেলে কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর ২০১৪ সালে বনগাঁ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছিলেন। তার ছোট ভাই মঞ্জুল কৃষ্ণ ২০১১ সালে গাইঘাটা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন।
এদিকে তৃণমূল সাংসদ ও কাকা কপিল কৃষ্ণ ঠাকুরের আকস্মিক মৃত্যুর পর মঞ্জুলের বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুর ২০১৫ সালে বিজেপির টিকিটে বনগাঁ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেই নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল থেকে জয়ী হয়েছিলেন তাঁরই চাচি ও কপিল কৃষ্ণের বিধবা স্ত্রী মমতা বালা ঠাকুর।
তবে মতুয়াদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব শক্তিশালী হয়ে ওঠে কয়েক বছরের মধ্যেই। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনেই দেখা যায়—মঞ্জুল কৃষ্ণের ছেলে শান্তনু ঠাকুর বিজেপির হয়ে বনগাঁ লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছেন। বর্তমানে মোদি সরকারের কেন্দ্রীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী। মঞ্জুল কৃষ্ণের আরেক ছেলে সুব্রত ঠাকুর একই অঞ্চলের গাইঘাটা বিধানসভা আসনে বিজেপি থেকে নির্বাচিত বিধায়ক।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের মতো তফসিলি জাতিগুলোকে নিজেদের পক্ষে টেনে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাঁটিতে বড় আঘাত হানতে চাইছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। আর এ জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে একটি বড় চাল হিসেবে দেখছে দলটি।
২০১৯ সালে পাস করার পর গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে যাওয়া হিন্দুরাই এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
এ বিষয়ে ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আইনের দ্বারা ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, পারসি, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়ারাও এই আইনের মাধ্যমে কাগজে-কলমে ভারতের স্থায়ী নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
একটি তফসিলি বা তালিকাভুক্ত জাতি হিসাবে মতুয়ারা হলো—নমশূদ্র বা নিম্ন বর্ণের হিন্দু উদ্বাস্তু। যারা বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে গিয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের বাস্তবায়ন ভারতের আসন্ন নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ জনসংখ্যার দিক দিয়ে মতুয়ারা এখন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী। এই সম্প্রদায়ের বেশির ভাগ মানুষ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং নদীয়া, হাওড়া, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহের মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বসবাস করে।
নমশূদ্ররা পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। উত্তরবঙ্গে রাজবংশীদের পরই এরা রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী।
সামগ্রিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের সিংহভাগই হিন্দু (প্রায় ৯৯.৯৬ শতাংশ)। এই রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১০টি আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। এই ১০টি আসনের মধ্যে ২০১৯ সালে বিজেপি জয় পেয়েছিল চারটি আসনে। এই আসনগুলো হলো—কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, বিষ্ণুপুর এবং বনগাঁও।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়—পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়টি হরিচাঁদ ঠাকুর এবং তাঁর বংশধরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাঁরা উত্তর চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা। ভারতের রাজনীতির সঙ্গেও তাঁদের দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে।
হরিচাঁদের প্রপৌত্র প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর ১৯৬২ সালে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন। কিছুদিন আগে পর্যন্তও প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরের বিধবা শতবর্ষী পত্নী বীনাপানি দেবী ছিলেন এই সম্প্রদায়ের সৌভাগ্যের প্রতীক।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মতুয়া মহাসংঘতে নিজেদের অবস্থানের সমর্থনে ঠাকুর পরিবারের একাধিক সদস্য রাজনীতিতে তাঁদের ভাগ্য যাচাই করেছেন।
বিনাপানি দেবীর বড় ছেলে কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর ২০১৪ সালে বনগাঁ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছিলেন। তার ছোট ভাই মঞ্জুল কৃষ্ণ ২০১১ সালে গাইঘাটা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন।
এদিকে তৃণমূল সাংসদ ও কাকা কপিল কৃষ্ণ ঠাকুরের আকস্মিক মৃত্যুর পর মঞ্জুলের বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুর ২০১৫ সালে বিজেপির টিকিটে বনগাঁ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেই নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল থেকে জয়ী হয়েছিলেন তাঁরই চাচি ও কপিল কৃষ্ণের বিধবা স্ত্রী মমতা বালা ঠাকুর।
তবে মতুয়াদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব শক্তিশালী হয়ে ওঠে কয়েক বছরের মধ্যেই। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনেই দেখা যায়—মঞ্জুল কৃষ্ণের ছেলে শান্তনু ঠাকুর বিজেপির হয়ে বনগাঁ লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছেন। বর্তমানে মোদি সরকারের কেন্দ্রীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী। মঞ্জুল কৃষ্ণের আরেক ছেলে সুব্রত ঠাকুর একই অঞ্চলের গাইঘাটা বিধানসভা আসনে বিজেপি থেকে নির্বাচিত বিধায়ক।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের মতো তফসিলি জাতিগুলোকে নিজেদের পক্ষে টেনে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাঁটিতে বড় আঘাত হানতে চাইছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। আর এ জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে একটি বড় চাল হিসেবে দেখছে দলটি।
১৯ অক্টোবর নয়াদিল্লি ছিল বেশ সতর্ক অবস্থায়। সেদিন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, জ্বালানো হয়েছিল মশাল। তাঁদের দাবি—তিস্তা নদী মাস্টারপ্ল্যান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাঁরা মনে করেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিনির্
১ ঘণ্টা আগেগত সপ্তাহে মিসরে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি উদ্যাপনকালে ট্রাম্প তাঁর প্রধান কূটনৈতিক আলোচক স্টিভ উইটকফের দিকে ফিরে বলেন, ‘এবার আমাদের রাশিয়ার বিষয়টা মীমাংসা করতে হবে।’ তবে গাজা ইস্যুতে উইটকফ ও তাঁর দল যে অনুকূল পরিস্থিতি পেয়েছিলেন, তা ইউক্রেন যুদ্ধে পুনরায় সৃষ্টি করা কঠিন। চার বছর ছুঁইছুঁই সময় ধরে চলছে
২০ ঘণ্টা আগেকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অগ্রগতি ডেটা সেন্টারের চাহিদা ক্রমেই বাড়াচ্ছে। কিন্তু তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার থাকা এই গুদামের মতো জায়গাগুলোর জন্য প্রচুর জমি প্রয়োজন এবং এরা বিপুল পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) নিঃসরণ হয়।
১ দিন আগেবেইজিংয়ে এ সপ্তাহে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন চীনের শীর্ষ নেতারা। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তাল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখা এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই বৈঠকের আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচির বাইরে রয়েছে এমন দুটি প্রশ্ন, যা চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে...
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
১৯ অক্টোবর নয়াদিল্লি ছিল বেশ সতর্ক অবস্থায়। সেদিন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, জ্বালানো হয়েছিল মশাল। তাঁদের দাবি—তিস্তা নদী মাস্টারপ্ল্যান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাঁরা মনে করেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে এক নতুন বিপ্লব ঘটাবে।
এই বিক্ষোভ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দেশের নানা প্রান্তে তিস্তা নিয়ে ক্ষোভ জমছে। কারণ, ভারত-বাংলাদেশের বহুদিনের পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে তিস্তা নদী—৪১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এক আন্তর্জাতিক জলধারা, যা একসময় কৃষির প্রাণস্রোত ছিল, এখন পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে।
তিস্তার উৎপত্তি পূর্ব হিমালয়ের পাওহুনরি পর্বত থেকে। এটি ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অতিক্রম করে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগে প্রবেশ করে। পরে যমুনা নদীর সঙ্গে মিশে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ে। দুই দেশই তিস্তার পানি কৃষি ও সেচের কাজে ব্যবহার করে। বাংলাদেশের ছয়টি উত্তরাঞ্চলীয় জেলায় কয়েক লাখ কৃষক শুষ্ক মৌসুমে পানির ঘাটতিতে ফসল ফলাতে হিমশিম খান। আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইএফপিআরআই) হিসাবে, তিস্তার পানির স্বল্পতার কারণে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ টন ধান হারায়।
অন্যদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তিস্তা সেচ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গজলডোবা ব্যারাজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদী ৫৪টি। তবে তিস্তা ব্যবস্থাপনা বরাবরই দুই দেশের মধ্যে বিরোধের বিষয়। ১৯৮৩ সালে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তিতে তিস্তার পানির ৩৯ শতাংশ ভারতের এবং ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশের ভাগে পড়ে। কিন্তু সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১১ সালে নতুন একটি সমঝোতার আশা জেগেছিল, যেখানে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের জন্য ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ পানির অংশ নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতির আশঙ্কায় সেই চুক্তির বিরোধিতা করেন এবং আলোচনা থমকে যায়। এর পর থেকে অগ্রগতি বলতে কার্যত কিছুই হয়নি। এর ফলে ঢাকায় এমন ধারণা তৈরি হয় যে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ভারত হয় অনিচ্ছুক, নয়তো অক্ষম, যদিও তাদের রয়েছে কৌশলগত ও ভৌগোলিক সুবিধা।
বাংলাদেশের জনগণের দাবির বিপরীতে ভারত নীরব—এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ তিস্তা নিয়ে চীনের সহায়তা চাইছে। ২০২৫ সালের মার্চে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বেইজিং সফরে গিয়ে চীনকে ‘পানিব্যবস্থাপনায় পারদর্শী’ বলে প্রশংসা করেন। সেখানে তিনি ৫০ বছরের তিস্তা মাস্টারপ্ল্যান হাতে পান, যা নদী পুনর্বাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেয়।
চীন তিস্তা প্রকল্পে ঋণ, অনুদান ও বিনিয়োগ মিলিয়ে ২১০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তার ঘোষণা দেয়। যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিস্তা রিভার কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্টে (টিআরসিএমআরপি) অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জলাধার নির্মাণ, নদী খনন, সড়ক ও স্যাটেলাইট শহর উন্নয়ন পরিকল্পনা।
এ ছাড়া দুই দেশ যৌথভাবে ইয়ারলুন সাংপো-যমুনা (বাংলাদেশে যা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নামে পরিচিত) নদীর পানিবিজ্ঞান খাতে তথ্য বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নেয়, যা নতুন দিল্লিকে উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ, এতে চীনের পানিনিয়ন্ত্রণ দক্ষিণ এশিয়ার নিম্নাঞ্চলের প্রবাহে প্রভাব ফেলতে পারে। এর পাশাপাশি চীন বাংলাদেশের মোংলা বন্দর, চট্টগ্রাম অর্থনৈতিক অঞ্চল, টেক্সটাইল, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ডিজিটাল অর্থনীতিতেও বিনিয়োগ করছে, যা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে দুই দেশের সহযোগিতাকে গভীর করছে।
ভারতের কাছে এটি কেবল পানি নয়, ‘নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতির প্রশ্ন’। তিস্তা প্রকল্পের অবস্থান ভারতের কৌশলগত ‘শিলিগুড়ি করিডর’–এর কাছাকাছি, যাকে বলা হয় ‘চিকেনস নেক’। মাত্র ৬০ কিলোমিটার লম্বা ও ২২ কিলোমিটার চওড়া এই স্থলপথ ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। ফলে ভারতের দৃষ্টিতে এর আশপাশে কোনো ‘বিদেশি শক্তির’ উপস্থিতি সরাসরি নিরাপত্তা ঝুঁকি।
এরই মধ্যে ভারত সরকার ব্রহ্মপুত্রের উজানে চীনের বিশাল বাঁধ প্রকল্প নিয়েও সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। তিস্তা ইস্যু সামনে আসার সময়টাও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তিস্তা ইস্যুকে কাজে লাগাতে পারে। অপর দিকে আওয়ামী লীগকে অভিযুক্ত ভারতের প্রতি অতিমাত্রায় অনুগত হওয়ার অভিযোগে। তিস্তার তাড়না আরও বেড়েছে ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে। সেই মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তিস্তা প্রশ্নে জাতীয় বিতর্ক এখন নতুন মাত্রা পাচ্ছে।
১৯ অক্টোবর নয়াদিল্লি ছিল বেশ সতর্ক অবস্থায়। সেদিন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, জ্বালানো হয়েছিল মশাল। তাঁদের দাবি—তিস্তা নদী মাস্টারপ্ল্যান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাঁরা মনে করেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে এক নতুন বিপ্লব ঘটাবে।
এই বিক্ষোভ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দেশের নানা প্রান্তে তিস্তা নিয়ে ক্ষোভ জমছে। কারণ, ভারত-বাংলাদেশের বহুদিনের পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে তিস্তা নদী—৪১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এক আন্তর্জাতিক জলধারা, যা একসময় কৃষির প্রাণস্রোত ছিল, এখন পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে।
তিস্তার উৎপত্তি পূর্ব হিমালয়ের পাওহুনরি পর্বত থেকে। এটি ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অতিক্রম করে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগে প্রবেশ করে। পরে যমুনা নদীর সঙ্গে মিশে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ে। দুই দেশই তিস্তার পানি কৃষি ও সেচের কাজে ব্যবহার করে। বাংলাদেশের ছয়টি উত্তরাঞ্চলীয় জেলায় কয়েক লাখ কৃষক শুষ্ক মৌসুমে পানির ঘাটতিতে ফসল ফলাতে হিমশিম খান। আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইএফপিআরআই) হিসাবে, তিস্তার পানির স্বল্পতার কারণে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ টন ধান হারায়।
অন্যদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তিস্তা সেচ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গজলডোবা ব্যারাজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদী ৫৪টি। তবে তিস্তা ব্যবস্থাপনা বরাবরই দুই দেশের মধ্যে বিরোধের বিষয়। ১৯৮৩ সালে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তিতে তিস্তার পানির ৩৯ শতাংশ ভারতের এবং ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশের ভাগে পড়ে। কিন্তু সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১১ সালে নতুন একটি সমঝোতার আশা জেগেছিল, যেখানে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের জন্য ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ পানির অংশ নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতির আশঙ্কায় সেই চুক্তির বিরোধিতা করেন এবং আলোচনা থমকে যায়। এর পর থেকে অগ্রগতি বলতে কার্যত কিছুই হয়নি। এর ফলে ঢাকায় এমন ধারণা তৈরি হয় যে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ভারত হয় অনিচ্ছুক, নয়তো অক্ষম, যদিও তাদের রয়েছে কৌশলগত ও ভৌগোলিক সুবিধা।
বাংলাদেশের জনগণের দাবির বিপরীতে ভারত নীরব—এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ তিস্তা নিয়ে চীনের সহায়তা চাইছে। ২০২৫ সালের মার্চে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বেইজিং সফরে গিয়ে চীনকে ‘পানিব্যবস্থাপনায় পারদর্শী’ বলে প্রশংসা করেন। সেখানে তিনি ৫০ বছরের তিস্তা মাস্টারপ্ল্যান হাতে পান, যা নদী পুনর্বাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেয়।
চীন তিস্তা প্রকল্পে ঋণ, অনুদান ও বিনিয়োগ মিলিয়ে ২১০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তার ঘোষণা দেয়। যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিস্তা রিভার কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্টে (টিআরসিএমআরপি) অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জলাধার নির্মাণ, নদী খনন, সড়ক ও স্যাটেলাইট শহর উন্নয়ন পরিকল্পনা।
এ ছাড়া দুই দেশ যৌথভাবে ইয়ারলুন সাংপো-যমুনা (বাংলাদেশে যা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নামে পরিচিত) নদীর পানিবিজ্ঞান খাতে তথ্য বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নেয়, যা নতুন দিল্লিকে উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ, এতে চীনের পানিনিয়ন্ত্রণ দক্ষিণ এশিয়ার নিম্নাঞ্চলের প্রবাহে প্রভাব ফেলতে পারে। এর পাশাপাশি চীন বাংলাদেশের মোংলা বন্দর, চট্টগ্রাম অর্থনৈতিক অঞ্চল, টেক্সটাইল, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ডিজিটাল অর্থনীতিতেও বিনিয়োগ করছে, যা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে দুই দেশের সহযোগিতাকে গভীর করছে।
ভারতের কাছে এটি কেবল পানি নয়, ‘নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতির প্রশ্ন’। তিস্তা প্রকল্পের অবস্থান ভারতের কৌশলগত ‘শিলিগুড়ি করিডর’–এর কাছাকাছি, যাকে বলা হয় ‘চিকেনস নেক’। মাত্র ৬০ কিলোমিটার লম্বা ও ২২ কিলোমিটার চওড়া এই স্থলপথ ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। ফলে ভারতের দৃষ্টিতে এর আশপাশে কোনো ‘বিদেশি শক্তির’ উপস্থিতি সরাসরি নিরাপত্তা ঝুঁকি।
এরই মধ্যে ভারত সরকার ব্রহ্মপুত্রের উজানে চীনের বিশাল বাঁধ প্রকল্প নিয়েও সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। তিস্তা ইস্যু সামনে আসার সময়টাও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তিস্তা ইস্যুকে কাজে লাগাতে পারে। অপর দিকে আওয়ামী লীগকে অভিযুক্ত ভারতের প্রতি অতিমাত্রায় অনুগত হওয়ার অভিযোগে। তিস্তার তাড়না আরও বেড়েছে ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে। সেই মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তিস্তা প্রশ্নে জাতীয় বিতর্ক এখন নতুন মাত্রা পাচ্ছে।
২০১৯ সালে পাস করার পর গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে যাওয়া হিন্দুরাই এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
১২ মার্চ ২০২৪গত সপ্তাহে মিসরে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি উদ্যাপনকালে ট্রাম্প তাঁর প্রধান কূটনৈতিক আলোচক স্টিভ উইটকফের দিকে ফিরে বলেন, ‘এবার আমাদের রাশিয়ার বিষয়টা মীমাংসা করতে হবে।’ তবে গাজা ইস্যুতে উইটকফ ও তাঁর দল যে অনুকূল পরিস্থিতি পেয়েছিলেন, তা ইউক্রেন যুদ্ধে পুনরায় সৃষ্টি করা কঠিন। চার বছর ছুঁইছুঁই সময় ধরে চলছে
২০ ঘণ্টা আগেকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অগ্রগতি ডেটা সেন্টারের চাহিদা ক্রমেই বাড়াচ্ছে। কিন্তু তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার থাকা এই গুদামের মতো জায়গাগুলোর জন্য প্রচুর জমি প্রয়োজন এবং এরা বিপুল পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) নিঃসরণ হয়।
১ দিন আগেবেইজিংয়ে এ সপ্তাহে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন চীনের শীর্ষ নেতারা। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তাল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখা এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই বৈঠকের আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচির বাইরে রয়েছে এমন দুটি প্রশ্ন, যা চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে...
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ দুই নেতার আসন্ন বৈঠক নিয়ে ছড়িয়ে পড়া খবরগুলো এখন বেশ অতিরঞ্জিত বলেই মনে হচ্ছে। কয়েক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বুদাপেস্টে ‘দুই সপ্তাহের মধ্যেই’ বৈঠক করবেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই বৈঠক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। দুই দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের প্রাথমিক আলোচনাও বাতিল হয়েছে।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি কোনো অর্থহীন বৈঠক করতে চাই না। সময় নষ্ট করতে চাই না, দেখি কী হয়।’ বৈঠক হবে কি হবে না—এই দোলাচলই যেন ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে ট্রাম্পের চেষ্টার সর্বশেষ অধ্যায়। গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি করানোর পর থেকে বিষয়টি তাঁর বিশেষ নজরে এসেছে।
গত সপ্তাহে মিসরে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি উদ্যাপনকালে ট্রাম্প তাঁর প্রধান কূটনৈতিক আলোচক স্টিভ উইটকফের দিকে ফিরে বলেন, ‘এবার আমাদের রাশিয়ার বিষয়টা মীমাংসা করতে হবে।’ তবে গাজা ইস্যুতে উইটকফ ও তাঁর দল যে অনুকূল পরিস্থিতি পেয়েছিলেন, তা ইউক্রেন যুদ্ধে পুনরায় সৃষ্টি করা কঠিন। চার বছর ছুঁইছুঁই সময় ধরে চলছে এই যুদ্ধ।
উইটকফের মতে, গাজা চুক্তি সম্ভব হয়েছিল মূলত ইসরায়েলের এক অপ্রত্যাশিত ভুল পদক্ষেপের কারণে। আর সেটি ছিল কাতারে হামাসের আলোচকদের ওপর হামলা। এতে যুক্তরাষ্ট্রের আরব মিত্ররা ক্ষুব্ধ হয়। একই সঙ্গে এই হামলা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর ট্রাম্পের চাপ প্রয়োগের পথ খুলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পথে আগায়।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে তাঁর প্রথম মেয়াদ থেকেই ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করেছেন, পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিও বদলে দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে সমর্থন জানিয়ে আবারও সেই ঘনিষ্ঠতা দেখিয়েছেন।
ইসরায়েলিদের মধ্যে ট্রাম্প এখন নেতানিয়াহুর চেয়েও জনপ্রিয়। ফলে ইসরায়েলি নেতার ওপর তাঁর প্রভাবও অনন্য। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরব বিশ্বের কয়েকটি প্রধান দেশের সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর কূটনৈতিক প্রভাব ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী।
কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের সে ধরনের প্রভাববলয় নেই। গত ৯ মাসে তিনি পুতিন ও জেলেনস্কি—দুজনকেই কখনো চাপ, কখনো সমঝোতার মাধ্যমে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ফল হয়নি বললেই চলে। তিনি রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু বুঝতে পেরেছেন, এই পদক্ষেপগুলো নিলে বৈশ্বিক অর্থনীতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে এবং যুদ্ধ আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে ভলোদিমির জেলেনস্কির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ও দেশটিতে অস্ত্র পাঠানোও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে ইউরোপীয় মিত্রদের উদ্বেগের মুখে তিনি আবার পিছু হটেন। ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলো সতর্ক করে বলেছিল, ইউক্রেনের পতন পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। মূলত সেই আশঙ্কা থেকেই ট্রাম্প পিছু হটেন।
ট্রাম্প প্রায়ই নিজের ‘চুক্তি করার দক্ষতা’ নিয়ে গর্ব করেন। দাবি করেন, সামনাসামনি বৈঠকেই তিনি সমাধান বের করে ফেলতে পারেন। কিন্তু পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর বৈঠকগুলোর কোনোটি যুদ্ধের সমাধান এগিয়ে নেয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, পুতিন হয়তো ট্রাম্পের এই ‘চুক্তির নেশা’ ও মুখোমুখি আলোচনার প্রতি বিশ্বাসকে নিজের পক্ষে ব্যবহার করছেন।
গত জুলাইয়ে পুতিন আলাস্কায় এক সম্মেলনের প্রস্তাবে রাজি হন। সে সময় মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান সিনেটরদের সমর্থিত রাশিয়ার একটি নিষেধাজ্ঞা বিলে ট্রাম্পের স্বাক্ষরের সম্ভাবনা তৈরি হয়। পরে সেই বিল স্থগিত করা হয়। গত সপ্তাহে খবর ছড়ায়, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে টমাহক ক্রুজ মিসাইল ও প্যাট্রিয়ট অ্যান্টি-এয়ার মিসাইল পাঠানোর কথা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। আর ঠিক তখনই পুতিন ফোন করেন ট্রাম্পকে। আর ট্রাম্প ঘোষণা দেন সম্ভাব্য এক সম্মেলনের, যা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে।
পরদিন ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক ছিল টান টান, জেলেনস্কি ফিরে যান খালি হাতে। ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেন, তাঁকে পুতিন প্রভাবিত করতে পারেননি। তাঁর ভাষায়, ‘জীবনে অনেকবার আমি সেরা চালবাজদের সঙ্গে খেলেছি, কিন্তু প্রতিবারই ভালোভাবে বেরিয়ে এসেছি।’
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পরে ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘যে মুহূর্তে আমাদের জন্য দূরপাল্লার অস্ত্র পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেল, রাশিয়া প্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে কূটনীতিতে আগ্রহ হারাল।’
অল্প ক’দিনের মধ্যেই ট্রাম্প একের পর এক দোদুল্যমান অবস্থান প্রকাশ করেছেন। একদিকে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর ভাবনা, অন্যদিকে পুতিনের সঙ্গে বুদাপেস্টে বৈঠকের পরিকল্পনা, আর ব্যক্তিগতভাবে জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছেন পুরো দনবাস অঞ্চল ছাড়তে। শেষ পর্যন্ত তিনি অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধবিরতির আহ্বানে। তাঁর প্রস্তাবিত বর্তমান যুদ্ধরেখা ধরে অস্ত্রবিরতি রাশিয়া স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত বছর নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ করতে পারবেন। এখন তিনি সে দাবি থেকে সরে এসে স্বীকার করছেন, যুদ্ধ থামানো তাঁর কল্পনার চেয়ে অনেক কঠিন কাজ। এটা এক বিরল স্বীকারোক্তি। বিশেষ করে, নিজের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা এবং এক এমন শান্তির কাঠামো গড়ার জটিলতা, যেখানে কোনো পক্ষই লড়াই ছাড়তে চায় না, বা ছাড়তে পারে না—এমন অবস্থানে যুদ্ধ থামানো আসলেই কঠিন।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ দুই নেতার আসন্ন বৈঠক নিয়ে ছড়িয়ে পড়া খবরগুলো এখন বেশ অতিরঞ্জিত বলেই মনে হচ্ছে। কয়েক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বুদাপেস্টে ‘দুই সপ্তাহের মধ্যেই’ বৈঠক করবেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই বৈঠক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। দুই দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের প্রাথমিক আলোচনাও বাতিল হয়েছে।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি কোনো অর্থহীন বৈঠক করতে চাই না। সময় নষ্ট করতে চাই না, দেখি কী হয়।’ বৈঠক হবে কি হবে না—এই দোলাচলই যেন ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে ট্রাম্পের চেষ্টার সর্বশেষ অধ্যায়। গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি করানোর পর থেকে বিষয়টি তাঁর বিশেষ নজরে এসেছে।
গত সপ্তাহে মিসরে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি উদ্যাপনকালে ট্রাম্প তাঁর প্রধান কূটনৈতিক আলোচক স্টিভ উইটকফের দিকে ফিরে বলেন, ‘এবার আমাদের রাশিয়ার বিষয়টা মীমাংসা করতে হবে।’ তবে গাজা ইস্যুতে উইটকফ ও তাঁর দল যে অনুকূল পরিস্থিতি পেয়েছিলেন, তা ইউক্রেন যুদ্ধে পুনরায় সৃষ্টি করা কঠিন। চার বছর ছুঁইছুঁই সময় ধরে চলছে এই যুদ্ধ।
উইটকফের মতে, গাজা চুক্তি সম্ভব হয়েছিল মূলত ইসরায়েলের এক অপ্রত্যাশিত ভুল পদক্ষেপের কারণে। আর সেটি ছিল কাতারে হামাসের আলোচকদের ওপর হামলা। এতে যুক্তরাষ্ট্রের আরব মিত্ররা ক্ষুব্ধ হয়। একই সঙ্গে এই হামলা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর ট্রাম্পের চাপ প্রয়োগের পথ খুলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পথে আগায়।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে তাঁর প্রথম মেয়াদ থেকেই ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করেছেন, পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিও বদলে দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে সমর্থন জানিয়ে আবারও সেই ঘনিষ্ঠতা দেখিয়েছেন।
ইসরায়েলিদের মধ্যে ট্রাম্প এখন নেতানিয়াহুর চেয়েও জনপ্রিয়। ফলে ইসরায়েলি নেতার ওপর তাঁর প্রভাবও অনন্য। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরব বিশ্বের কয়েকটি প্রধান দেশের সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর কূটনৈতিক প্রভাব ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী।
কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের সে ধরনের প্রভাববলয় নেই। গত ৯ মাসে তিনি পুতিন ও জেলেনস্কি—দুজনকেই কখনো চাপ, কখনো সমঝোতার মাধ্যমে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ফল হয়নি বললেই চলে। তিনি রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু বুঝতে পেরেছেন, এই পদক্ষেপগুলো নিলে বৈশ্বিক অর্থনীতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে এবং যুদ্ধ আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে ভলোদিমির জেলেনস্কির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ও দেশটিতে অস্ত্র পাঠানোও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে ইউরোপীয় মিত্রদের উদ্বেগের মুখে তিনি আবার পিছু হটেন। ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলো সতর্ক করে বলেছিল, ইউক্রেনের পতন পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। মূলত সেই আশঙ্কা থেকেই ট্রাম্প পিছু হটেন।
ট্রাম্প প্রায়ই নিজের ‘চুক্তি করার দক্ষতা’ নিয়ে গর্ব করেন। দাবি করেন, সামনাসামনি বৈঠকেই তিনি সমাধান বের করে ফেলতে পারেন। কিন্তু পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর বৈঠকগুলোর কোনোটি যুদ্ধের সমাধান এগিয়ে নেয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, পুতিন হয়তো ট্রাম্পের এই ‘চুক্তির নেশা’ ও মুখোমুখি আলোচনার প্রতি বিশ্বাসকে নিজের পক্ষে ব্যবহার করছেন।
গত জুলাইয়ে পুতিন আলাস্কায় এক সম্মেলনের প্রস্তাবে রাজি হন। সে সময় মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান সিনেটরদের সমর্থিত রাশিয়ার একটি নিষেধাজ্ঞা বিলে ট্রাম্পের স্বাক্ষরের সম্ভাবনা তৈরি হয়। পরে সেই বিল স্থগিত করা হয়। গত সপ্তাহে খবর ছড়ায়, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে টমাহক ক্রুজ মিসাইল ও প্যাট্রিয়ট অ্যান্টি-এয়ার মিসাইল পাঠানোর কথা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। আর ঠিক তখনই পুতিন ফোন করেন ট্রাম্পকে। আর ট্রাম্প ঘোষণা দেন সম্ভাব্য এক সম্মেলনের, যা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে।
পরদিন ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক ছিল টান টান, জেলেনস্কি ফিরে যান খালি হাতে। ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেন, তাঁকে পুতিন প্রভাবিত করতে পারেননি। তাঁর ভাষায়, ‘জীবনে অনেকবার আমি সেরা চালবাজদের সঙ্গে খেলেছি, কিন্তু প্রতিবারই ভালোভাবে বেরিয়ে এসেছি।’
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পরে ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘যে মুহূর্তে আমাদের জন্য দূরপাল্লার অস্ত্র পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেল, রাশিয়া প্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে কূটনীতিতে আগ্রহ হারাল।’
অল্প ক’দিনের মধ্যেই ট্রাম্প একের পর এক দোদুল্যমান অবস্থান প্রকাশ করেছেন। একদিকে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর ভাবনা, অন্যদিকে পুতিনের সঙ্গে বুদাপেস্টে বৈঠকের পরিকল্পনা, আর ব্যক্তিগতভাবে জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছেন পুরো দনবাস অঞ্চল ছাড়তে। শেষ পর্যন্ত তিনি অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধবিরতির আহ্বানে। তাঁর প্রস্তাবিত বর্তমান যুদ্ধরেখা ধরে অস্ত্রবিরতি রাশিয়া স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত বছর নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ করতে পারবেন। এখন তিনি সে দাবি থেকে সরে এসে স্বীকার করছেন, যুদ্ধ থামানো তাঁর কল্পনার চেয়ে অনেক কঠিন কাজ। এটা এক বিরল স্বীকারোক্তি। বিশেষ করে, নিজের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা এবং এক এমন শান্তির কাঠামো গড়ার জটিলতা, যেখানে কোনো পক্ষই লড়াই ছাড়তে চায় না, বা ছাড়তে পারে না—এমন অবস্থানে যুদ্ধ থামানো আসলেই কঠিন।
২০১৯ সালে পাস করার পর গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে যাওয়া হিন্দুরাই এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
১২ মার্চ ২০২৪১৯ অক্টোবর নয়াদিল্লি ছিল বেশ সতর্ক অবস্থায়। সেদিন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, জ্বালানো হয়েছিল মশাল। তাঁদের দাবি—তিস্তা নদী মাস্টারপ্ল্যান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাঁরা মনে করেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিনির্
১ ঘণ্টা আগেকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অগ্রগতি ডেটা সেন্টারের চাহিদা ক্রমেই বাড়াচ্ছে। কিন্তু তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার থাকা এই গুদামের মতো জায়গাগুলোর জন্য প্রচুর জমি প্রয়োজন এবং এরা বিপুল পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) নিঃসরণ হয়।
১ দিন আগেবেইজিংয়ে এ সপ্তাহে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন চীনের শীর্ষ নেতারা। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তাল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখা এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই বৈঠকের আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচির বাইরে রয়েছে এমন দুটি প্রশ্ন, যা চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে...
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অগ্রগতি ডেটা সেন্টারের চাহিদা ক্রমেই বাড়াচ্ছে। কিন্তু তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার থাকা এই গুদামের মতো জায়গাগুলোর জন্য প্রচুর জমি প্রয়োজন এবং এরা বিপুল পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) নিঃসরণ হয়।
গোল্ডম্যান স্যাকসের তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ডেটা সেন্টারের শক্তি চাহিদা ১৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কিছু ডেটা সেন্টার নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে, আবার কিছু সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে সাইটের নিজস্ব নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন সুবিধাসহ। তবে সোলার বা উইন্ড ফার্মের মতো ক্লিন এনার্জির উৎসগুলোর জন্যও যথেষ্ট জমি প্রয়োজন।
আর তাই এখন কিছু প্রতিষ্ঠান ডেটা সেন্টারকে মহাকাশে স্থাপনের কথা ভাবছে, যাতে ব্যবহারের জন্য জমি খুঁজে পাওয়ার সমস্যা এড়ানো যায়। মহাকাশ আরও ভালো সূর্যালোক পাওয়ার সুযোগ দেয়। এ ছাড়া সেখানে মেঘের কোনো আনাগোনা নেই, রাতের অন্ধকার নেই, নেই ঋতুবৈচিত্র্যের কারণে সৃষ্ট বিড়ম্বনা।
ইউরোপে এএসসিইএনডি (ASCEND) প্রকল্প মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। গত বছর ফ্রান্সের থ্যালিস অ্যালেনিয়া স্পেস, যা ইউরোপীয় কমিশনের তহবিলে ASCEND-এর সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছিল—দেখিয়েছে যে ডেটা সেন্টারকে মহাকাশে পাঠিয়ে নিরবচ্ছিন্ন সৌরশক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হলে ‘তথ্য হোস্টিং ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য আরও পরিবেশবান্ধব এবং সার্বভৌম সমাধান’ হতে পারে। এই বিষয়ে থ্যালিস অ্যালেনিয়া মহাকাশের হাভিয়ের রোশে বলেন, ‘তবে এটি বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে।’
যদিও রকেট উৎক্ষেপণের সময় মোট নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইড বর্তমানে বিমান শিল্পের তুলনায় খুব কম, কিন্তু রকেট বায়ুমণ্ডলের অনেক উঁচুতে দূষক পদার্থ ছাড়ে। কারণ, এই রকেটগুলো দীর্ঘ সময় সেখানে অবস্থানে থাকে। ASCEND-এর গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে, মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টারগুলো যদি কার্যকরভাবে কার্বন নির্গমন কমাতে চায়, তবে এমন একটি লঞ্চারের বিকাশ প্রয়োজন হবে, যা বর্তমান লঞ্চারের তুলনায় তার জীবদ্দশায় ১০ গুণ কম কার্বন নির্গমন করে। কখন এমন রকেট তৈরি হবে, তা এখন স্পষ্ট নয়। স্পেসএক্স, যা ফ্যালকন লঞ্চ ভেহিকেলের ফ্লিটের মাধ্যমে রকেটের ব্যয় কমানো হয়েছে, কিন্তু এখনো পরিবেশবান্ধব নতুন রকেট ডিজাইন প্রকাশের কোনো পরিকল্পনা ঘোষণা করেনি।
আবুধাবিভিত্তিক স্টার্টআপ মাদারি স্পেস থ্যালিস অ্যালেনিয়া স্পেস পরিচালিত একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাক্সিলারেটর প্রোগ্রামে সহযোগিতা করেছে। মাদারি এমন কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে একটি, যারা প্রযুক্তিগত প্রদর্শনের জন্য ছোট কম্পিউটিং উপাদান মহাকাশে পাঠাচ্ছে।
মাদারির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও শারিফ আল রোমাইসি, যিনি ইতিহাদ এয়ারওয়েজের পাইলটও, বলেছেন যে মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টার বিভিন্ন গ্রাহকের জন্য উপকারী হতে পারে, বিশেষ করে যারা পৃথিবী পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট ব্যবহার করে। তিনি বলেছেন, ‘তাদের অপ্রক্রিয়াজাত পর্যবেক্ষণ তথ্য মহাকাশে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ করলে বিশ্লেষণে বিলম্ব কমবে এবং তারা সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।’
তিনি আশা করছেন, ভবিষ্যতে একগাদা ডেটা স্যাটেলাইট কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। যদিও সেই লক্ষ্য এখনো দূরে, তবে মাদারির প্রথম মিশন ২০২৬ সালের জন্য নির্ধারিত। তারা একটি টোস্টার ওভেনের মতো আকারের পেলোড—ডেটা স্টোরেজ ও প্রক্রিয়াকরণ উপাদান নিয়ে একটি স্যাটেলাইট পাঠাবে। এটি জাতিসংঘের আউটার স্পেস অফিসের ‘UNOOSA— Access to Space for All Initiative’-এর অংশ।
অন্যরা এরই মধ্যে উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছে। গত মে মাসে চীন মহাকাশভিত্তিক কম্পিউটিং কনস্টেলেশনের জন্য ১২টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। দেশটি অন্তত ২ হাজার ৮০০টি স্যাটেলাইট পাঠাতে চায়। সেটারই প্রথম ধাপ ছিল এটি। রোমাইসি বলেন, এটি মহাকাশকে ডেটা সেন্টারের সম্ভাব্য অবস্থান হিসেবে বিবেচনা করার জন্য একটি জাগরণের ডাক। তিনি বলেন, ‘এটি এমন এক বাস্তবতা, যা ইতিমধ্যে ঘটতে শুরু করেছে।’
ফ্লোরিডাভিত্তিক কোম্পানি লোনস্টার ডেটা হোল্ডিংস মার্চে জানিয়েছিল, তারা সফলভাবে চাঁদে একটি ছোট ডেটা সেন্টারের পরীক্ষা চালিয়েছে। তবে সিস্টেমটি চাঁদের আলোকিত পার্শ্বে ল্যান্ড করার পর অল্প সময়ের জন্য চালু ছিল। নভেম্বরে ওয়াশিংটনভিত্তিক স্টারক্লাউড একটি স্যাটেলাইট চালু করবে, যা এনভিডিয়ার এইচ–১০০ গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ) দ্বারা সজ্জিত থাকবে। কোম্পানিটি সিএনএন-কে জানিয়েছে, এই স্যাটেলাইট কক্ষপথে সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটিং ক্ষমতার রেকর্ড গড়বে।
স্টারক্লাউডের সিইও ফিলিপ জনস্টন বলেন, ‘আমার ধারণা, ১০ বছরের মধ্যে প্রায় সব নতুন ডেটা সেন্টার মহাকাশে তৈরি করা হবে। কারণ, স্থলভিত্তিক নতুন এনার্জি প্রজেক্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে আমরা সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হচ্ছি।’ তিনি যোগ করেন, এর প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো শূন্যে বিশাল পরিমাণ তাপ বিতরণ করা এবং উচ্চ বিকিরণ পরিবেশে চিপগুলোকে সচল রাখা।
তবু এই খাতের জন্য এখনো খুব প্রাথমিক পর্যায় এবং এমন ডেটা সেন্টার চালু করা যা পৃথিবীতে থাকা ডেটা সেন্টারগুলোর বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে খরচও একটি বড় বিষয়। কারণ, পাঠানোর খরচ নির্ভর করে পেলোডের ওজনের ওপর।
লোনস্টার স্যাটেলাইট নির্মাতা সিডাসের সঙ্গে ১২০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করেছে, যাতে তারা ছয়টি ডেটা স্টোরেজ স্যাটেলাইট তৈরি ও কক্ষপথে স্থাপন এবং এর পরবর্তী সেবা দেয়। তারা পরিকল্পনা করছে, প্রথমটি ২০২৭ সালে লঞ্চ করবে। এটি হবে একটি ১৫-পেটাবাইটের সিস্টেম। চাঁদ থেকে প্রায় ৬০ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকবে এটি। পরের পাঁচটি স্যাটেলাইটের প্রতিটি স্টোরেজ ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে, একই ওজন ও শক্তি চাহিদা বজায় রাখা হবে। প্রতি লঞ্চে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে, যা অনেক স্থলভিত্তিক ডেটা সেন্টারের স্টোরেজের সামগ্রিক ব্যয়ের তুলনায় খুব কম।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মহাশূন্যে ডেটা সেন্টারের অর্থনৈতিক দিক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি ফর স্পেস রিসার্চের পরিচালক কুয়েন্টিন এ পার্কার বলেন, ‘কার্যকরভাবে ব্যয় বিশ্লেষণ করলে সত্যিই ঠিক বলা যায় না যে এই ধরনের প্রকল্প দাঁড়াবে। পৃথিবীকেন্দ্রিক এখনো অনেক সমাধান আছে এবং এগুলো সম্ভবত মহাকাশে কিছু রাখার তুলনায় অনেক সস্তা। মহাকাশে রাখার সঙ্গে অনেক সমস্যা জড়িত।’
বিপরীতে মহাকাশে ডেটা সেন্টার স্থাপনের সমর্থকেরা দাবি করেন, মহাকাশে ডেটা রাখা ডেটা সেন্টার আক্রমণ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা পাবে। তবে পার্কার বলেছেন, মহাকাশের নিজস্ব কিছু ঝুঁকি আছে—রেডিয়েশন, ভ্রাম্যমাণ মহাকাশীয় আবর্জনা এবং মানবসৃষ্ট বস্তু মহাকাশে পাঠানোর পর সেগুলো পরিষ্কার করার কোনো সমাধান না থাকা অন্যতম।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, মহাকাশে মানুষের তৈরি আবর্জনার পরিমাণ বেড়ে চলেছে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, কোনো সংঘর্ষ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রযুক্তি নষ্ট করতে পারে। আরও কিছু মানুষ বলছে, মহাকাশে ডেটা সেন্টারের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত করা বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে এবং সোলার ফ্লেয়ারের মতো স্পেস ওয়েদার সার্ভিসকে ব্যাহত করতে পারে। এ ছাড়া বেশ কিছু দেশ ‘কাউন্টারস্পেস প্রযুক্তি’ যেমন স্যাটেলাইট জ্যামিং সিস্টেম তৈরি করছে।
পার্কারের মতে, মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টারের সমর্থকেরা হয়তো ‘সুবিধাগুলো অতিরঞ্জিত করে বলছেন এবং বড় অসুবিধাগুলো উল্লেখ করছেন না।’ তবে আল রোমাইসির মতে, আমাদের পৃথিবীর বাইরে তাকানো অপরিহার্য। তিনি বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর বিপরীত বিষয় হলো প্রযুক্তিগত স্থবিরতা। আমরা এমন একপর্যায়ে পৌঁছাব, যেখানে শুধু ডেটা সেন্টার চালানোর জন্য আমাদের সম্পদ শেষ হয়ে যাবে।’
সিএনএন থেকে অনূদিত
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অগ্রগতি ডেটা সেন্টারের চাহিদা ক্রমেই বাড়াচ্ছে। কিন্তু তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার থাকা এই গুদামের মতো জায়গাগুলোর জন্য প্রচুর জমি প্রয়োজন এবং এরা বিপুল পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) নিঃসরণ হয়।
গোল্ডম্যান স্যাকসের তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ডেটা সেন্টারের শক্তি চাহিদা ১৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কিছু ডেটা সেন্টার নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে, আবার কিছু সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে সাইটের নিজস্ব নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন সুবিধাসহ। তবে সোলার বা উইন্ড ফার্মের মতো ক্লিন এনার্জির উৎসগুলোর জন্যও যথেষ্ট জমি প্রয়োজন।
আর তাই এখন কিছু প্রতিষ্ঠান ডেটা সেন্টারকে মহাকাশে স্থাপনের কথা ভাবছে, যাতে ব্যবহারের জন্য জমি খুঁজে পাওয়ার সমস্যা এড়ানো যায়। মহাকাশ আরও ভালো সূর্যালোক পাওয়ার সুযোগ দেয়। এ ছাড়া সেখানে মেঘের কোনো আনাগোনা নেই, রাতের অন্ধকার নেই, নেই ঋতুবৈচিত্র্যের কারণে সৃষ্ট বিড়ম্বনা।
ইউরোপে এএসসিইএনডি (ASCEND) প্রকল্প মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। গত বছর ফ্রান্সের থ্যালিস অ্যালেনিয়া স্পেস, যা ইউরোপীয় কমিশনের তহবিলে ASCEND-এর সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছিল—দেখিয়েছে যে ডেটা সেন্টারকে মহাকাশে পাঠিয়ে নিরবচ্ছিন্ন সৌরশক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হলে ‘তথ্য হোস্টিং ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য আরও পরিবেশবান্ধব এবং সার্বভৌম সমাধান’ হতে পারে। এই বিষয়ে থ্যালিস অ্যালেনিয়া মহাকাশের হাভিয়ের রোশে বলেন, ‘তবে এটি বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে।’
যদিও রকেট উৎক্ষেপণের সময় মোট নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইড বর্তমানে বিমান শিল্পের তুলনায় খুব কম, কিন্তু রকেট বায়ুমণ্ডলের অনেক উঁচুতে দূষক পদার্থ ছাড়ে। কারণ, এই রকেটগুলো দীর্ঘ সময় সেখানে অবস্থানে থাকে। ASCEND-এর গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে, মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টারগুলো যদি কার্যকরভাবে কার্বন নির্গমন কমাতে চায়, তবে এমন একটি লঞ্চারের বিকাশ প্রয়োজন হবে, যা বর্তমান লঞ্চারের তুলনায় তার জীবদ্দশায় ১০ গুণ কম কার্বন নির্গমন করে। কখন এমন রকেট তৈরি হবে, তা এখন স্পষ্ট নয়। স্পেসএক্স, যা ফ্যালকন লঞ্চ ভেহিকেলের ফ্লিটের মাধ্যমে রকেটের ব্যয় কমানো হয়েছে, কিন্তু এখনো পরিবেশবান্ধব নতুন রকেট ডিজাইন প্রকাশের কোনো পরিকল্পনা ঘোষণা করেনি।
আবুধাবিভিত্তিক স্টার্টআপ মাদারি স্পেস থ্যালিস অ্যালেনিয়া স্পেস পরিচালিত একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাক্সিলারেটর প্রোগ্রামে সহযোগিতা করেছে। মাদারি এমন কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে একটি, যারা প্রযুক্তিগত প্রদর্শনের জন্য ছোট কম্পিউটিং উপাদান মহাকাশে পাঠাচ্ছে।
মাদারির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও শারিফ আল রোমাইসি, যিনি ইতিহাদ এয়ারওয়েজের পাইলটও, বলেছেন যে মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টার বিভিন্ন গ্রাহকের জন্য উপকারী হতে পারে, বিশেষ করে যারা পৃথিবী পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট ব্যবহার করে। তিনি বলেছেন, ‘তাদের অপ্রক্রিয়াজাত পর্যবেক্ষণ তথ্য মহাকাশে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ করলে বিশ্লেষণে বিলম্ব কমবে এবং তারা সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।’
তিনি আশা করছেন, ভবিষ্যতে একগাদা ডেটা স্যাটেলাইট কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। যদিও সেই লক্ষ্য এখনো দূরে, তবে মাদারির প্রথম মিশন ২০২৬ সালের জন্য নির্ধারিত। তারা একটি টোস্টার ওভেনের মতো আকারের পেলোড—ডেটা স্টোরেজ ও প্রক্রিয়াকরণ উপাদান নিয়ে একটি স্যাটেলাইট পাঠাবে। এটি জাতিসংঘের আউটার স্পেস অফিসের ‘UNOOSA— Access to Space for All Initiative’-এর অংশ।
অন্যরা এরই মধ্যে উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছে। গত মে মাসে চীন মহাকাশভিত্তিক কম্পিউটিং কনস্টেলেশনের জন্য ১২টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। দেশটি অন্তত ২ হাজার ৮০০টি স্যাটেলাইট পাঠাতে চায়। সেটারই প্রথম ধাপ ছিল এটি। রোমাইসি বলেন, এটি মহাকাশকে ডেটা সেন্টারের সম্ভাব্য অবস্থান হিসেবে বিবেচনা করার জন্য একটি জাগরণের ডাক। তিনি বলেন, ‘এটি এমন এক বাস্তবতা, যা ইতিমধ্যে ঘটতে শুরু করেছে।’
ফ্লোরিডাভিত্তিক কোম্পানি লোনস্টার ডেটা হোল্ডিংস মার্চে জানিয়েছিল, তারা সফলভাবে চাঁদে একটি ছোট ডেটা সেন্টারের পরীক্ষা চালিয়েছে। তবে সিস্টেমটি চাঁদের আলোকিত পার্শ্বে ল্যান্ড করার পর অল্প সময়ের জন্য চালু ছিল। নভেম্বরে ওয়াশিংটনভিত্তিক স্টারক্লাউড একটি স্যাটেলাইট চালু করবে, যা এনভিডিয়ার এইচ–১০০ গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ) দ্বারা সজ্জিত থাকবে। কোম্পানিটি সিএনএন-কে জানিয়েছে, এই স্যাটেলাইট কক্ষপথে সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটিং ক্ষমতার রেকর্ড গড়বে।
স্টারক্লাউডের সিইও ফিলিপ জনস্টন বলেন, ‘আমার ধারণা, ১০ বছরের মধ্যে প্রায় সব নতুন ডেটা সেন্টার মহাকাশে তৈরি করা হবে। কারণ, স্থলভিত্তিক নতুন এনার্জি প্রজেক্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে আমরা সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হচ্ছি।’ তিনি যোগ করেন, এর প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো শূন্যে বিশাল পরিমাণ তাপ বিতরণ করা এবং উচ্চ বিকিরণ পরিবেশে চিপগুলোকে সচল রাখা।
তবু এই খাতের জন্য এখনো খুব প্রাথমিক পর্যায় এবং এমন ডেটা সেন্টার চালু করা যা পৃথিবীতে থাকা ডেটা সেন্টারগুলোর বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে খরচও একটি বড় বিষয়। কারণ, পাঠানোর খরচ নির্ভর করে পেলোডের ওজনের ওপর।
লোনস্টার স্যাটেলাইট নির্মাতা সিডাসের সঙ্গে ১২০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করেছে, যাতে তারা ছয়টি ডেটা স্টোরেজ স্যাটেলাইট তৈরি ও কক্ষপথে স্থাপন এবং এর পরবর্তী সেবা দেয়। তারা পরিকল্পনা করছে, প্রথমটি ২০২৭ সালে লঞ্চ করবে। এটি হবে একটি ১৫-পেটাবাইটের সিস্টেম। চাঁদ থেকে প্রায় ৬০ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকবে এটি। পরের পাঁচটি স্যাটেলাইটের প্রতিটি স্টোরেজ ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে, একই ওজন ও শক্তি চাহিদা বজায় রাখা হবে। প্রতি লঞ্চে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে, যা অনেক স্থলভিত্তিক ডেটা সেন্টারের স্টোরেজের সামগ্রিক ব্যয়ের তুলনায় খুব কম।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মহাশূন্যে ডেটা সেন্টারের অর্থনৈতিক দিক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি ফর স্পেস রিসার্চের পরিচালক কুয়েন্টিন এ পার্কার বলেন, ‘কার্যকরভাবে ব্যয় বিশ্লেষণ করলে সত্যিই ঠিক বলা যায় না যে এই ধরনের প্রকল্প দাঁড়াবে। পৃথিবীকেন্দ্রিক এখনো অনেক সমাধান আছে এবং এগুলো সম্ভবত মহাকাশে কিছু রাখার তুলনায় অনেক সস্তা। মহাকাশে রাখার সঙ্গে অনেক সমস্যা জড়িত।’
বিপরীতে মহাকাশে ডেটা সেন্টার স্থাপনের সমর্থকেরা দাবি করেন, মহাকাশে ডেটা রাখা ডেটা সেন্টার আক্রমণ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা পাবে। তবে পার্কার বলেছেন, মহাকাশের নিজস্ব কিছু ঝুঁকি আছে—রেডিয়েশন, ভ্রাম্যমাণ মহাকাশীয় আবর্জনা এবং মানবসৃষ্ট বস্তু মহাকাশে পাঠানোর পর সেগুলো পরিষ্কার করার কোনো সমাধান না থাকা অন্যতম।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, মহাকাশে মানুষের তৈরি আবর্জনার পরিমাণ বেড়ে চলেছে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, কোনো সংঘর্ষ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রযুক্তি নষ্ট করতে পারে। আরও কিছু মানুষ বলছে, মহাকাশে ডেটা সেন্টারের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত করা বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে এবং সোলার ফ্লেয়ারের মতো স্পেস ওয়েদার সার্ভিসকে ব্যাহত করতে পারে। এ ছাড়া বেশ কিছু দেশ ‘কাউন্টারস্পেস প্রযুক্তি’ যেমন স্যাটেলাইট জ্যামিং সিস্টেম তৈরি করছে।
পার্কারের মতে, মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টারের সমর্থকেরা হয়তো ‘সুবিধাগুলো অতিরঞ্জিত করে বলছেন এবং বড় অসুবিধাগুলো উল্লেখ করছেন না।’ তবে আল রোমাইসির মতে, আমাদের পৃথিবীর বাইরে তাকানো অপরিহার্য। তিনি বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর বিপরীত বিষয় হলো প্রযুক্তিগত স্থবিরতা। আমরা এমন একপর্যায়ে পৌঁছাব, যেখানে শুধু ডেটা সেন্টার চালানোর জন্য আমাদের সম্পদ শেষ হয়ে যাবে।’
সিএনএন থেকে অনূদিত
২০১৯ সালে পাস করার পর গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে যাওয়া হিন্দুরাই এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
১২ মার্চ ২০২৪১৯ অক্টোবর নয়াদিল্লি ছিল বেশ সতর্ক অবস্থায়। সেদিন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, জ্বালানো হয়েছিল মশাল। তাঁদের দাবি—তিস্তা নদী মাস্টারপ্ল্যান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাঁরা মনে করেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিনির্
১ ঘণ্টা আগেগত সপ্তাহে মিসরে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি উদ্যাপনকালে ট্রাম্প তাঁর প্রধান কূটনৈতিক আলোচক স্টিভ উইটকফের দিকে ফিরে বলেন, ‘এবার আমাদের রাশিয়ার বিষয়টা মীমাংসা করতে হবে।’ তবে গাজা ইস্যুতে উইটকফ ও তাঁর দল যে অনুকূল পরিস্থিতি পেয়েছিলেন, তা ইউক্রেন যুদ্ধে পুনরায় সৃষ্টি করা কঠিন। চার বছর ছুঁইছুঁই সময় ধরে চলছে
২০ ঘণ্টা আগেবেইজিংয়ে এ সপ্তাহে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন চীনের শীর্ষ নেতারা। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তাল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখা এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই বৈঠকের আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচির বাইরে রয়েছে এমন দুটি প্রশ্ন, যা চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে...
১ দিন আগেদ্য নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধ
আজকের পত্রিকা ডেস্ক
বেইজিংয়ে এ সপ্তাহে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন চীনের শীর্ষ নেতারা। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তাল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখা এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই বৈঠকের আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচির বাইরে রয়েছে এমন দুটি প্রশ্ন, যা চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে, অথচ কেউ উচ্চারণ করতেও সাহস পাচ্ছে না। প্রশ্নটি হলো, সি চিন পিং আর কত দিন ক্ষমতায় থাকবেন? আর তিনি না থাকলে চীনকে নেতৃত্ব দেবেন কে?
টানা ১৩ বছর ধরে চীনের ক্ষমতা সি চিন পিংয়ের হাতে। এই সময়ে তিনি এমন এক প্রভাব প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা মাও সে-তুংয়ের পর আর কেউ পারেননি। এখনো তাঁর পদত্যাগের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে তাঁর এই ক্ষমতা যদি সঠিকভাবে পরিচালিত না হয়, তবে তা রাজনৈতিক অস্থিরতার বীজ বপন করতে পারে। কারণ, সির হাতে এখনো কোনো উত্তরসূরি নেই, এমনকি নেই কাউকে মনোনীত করার স্পষ্ট সময়সূচিও।
প্রতিটি বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সির অনুপস্থিতিতে চীনের ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও গভীর হচ্ছে। যদি তাঁর শারীরিক অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে নেতৃত্বে শূন্যতা দেখা দেয়, তবে নতুন নেতা কি সির কঠোর নীতিতেই অবিচল থাকবেন, নাকি কিছুটা নমনীয় পথে হাঁটবেন; এই প্রশ্ন এখনই ভাবাচ্ছে চীনের নীতিনির্ধারকদের।
সি চিন পিং আসলে সেই পরিচিত দোটানার মুখে; যা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা অনেক কর্তৃত্ববাদী নেতার ক্ষেত্রেই দেখা যায়। উত্তরসূরি মনোনয়ন মানে এক প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাকেন্দ্র তৈরি করা, যা নিজের প্রভাব দুর্বল করতে পারে। আবার উত্তরসূরি নির্ধারণে বিলম্ব করলে তার উত্তরাধিকার ও দলীয় ঐক্য দুটিই বিপদের মুখে পড়তে পারে। সির বয়স এখন ৭২, অর্থাৎ সম্ভাব্য উত্তরসূরি খুঁজতে হলে তাকাতে হবে আরও তরুণ প্রজন্মের দিকে; যাদের এখনো নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে এবং সির আস্থা অর্জন করতে হবে।
যদি শেষ পর্যন্ত সি কোনো উত্তরসূরি বেছে নেন, তবে একটি বিষয় প্রায় নিশ্চিত। আর তা হলো তাঁর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য। কারণ, সি একাধিকবার বলেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মূল কারণ ছিল ‘ভুল উত্তরসূরি বাছাই’। তাঁর মতে, সংস্কারপন্থী মিখাইল গর্বাচেভকে মনোনয়ন দিয়েই সোভিয়েত নেতৃত্ব নিজের অস্তিত্ব ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছিল।
গত শুক্রবারও সেই বার্তাই যেন নতুন করে উচ্চারণ করলেন সি, যখন চীনের সেনাবাহিনী ৯ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। স্পষ্টত এটি ছিল আনুগত্যহীনতার প্রতি সির ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিরই বহিঃপ্রকাশ।
এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের চায়না অ্যানালাইসিস সেন্টারের ফেলো নিল থমাস বলেন, ‘সি নিশ্চয়ই উত্তরাধিকার নির্ধারণের গুরুত্ব জানেন, কিন্তু তিনিও বোঝেন যে এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যা ইঙ্গিত দিলেই নিজের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাঁকে ঘিরে এখনকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটগুলো হয়তো এতটাই অগ্রাধিকার পাচ্ছে যে উত্তরসূরি নির্ধারণের মতো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে।’
চীনে সি চিন পিংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা খুবই স্পর্শকাতর এবং সেন্সরশিপের আওতাভুক্ত। শুধু হাতে গোনা কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা হয়তো জানেন, তিনি নিজে এই বিষয়ে কী ভাবছেন।
কিন্তু বিদেশি কূটনীতিক, বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীরা এখন চেয়ে আছেন বেইজিংয়ের চলমান চার দিনের এই বৈঠকের দিকে। উল্লেখ্য, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির এই অধিবেশন শুরু হয়েছে সোমবার থেকে, যেখানে শত শত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন।
বৈঠকটি সাধারণত বেইজিংয়ে জিংসি হোটেলে গোপনে অনুষ্ঠিত হয়। এবারও সেখানে আগামী পাঁচ বছরের জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুমোদনের আশা করা হচ্ছে। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও উন্নত উৎপাদনে বৈশ্বিক নেতৃত্ব অর্জনকে সি চিন পিং তাঁর প্রধান লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নীতিকে পরাস্ত করার বিষয়ে সি ও তাঁর সহযোগীরা এখনো দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী।
গত মাসে প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটির ওপর পার্লামেন্ট সদস্যদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘পরাশক্তিগুলোর মধ্যে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূল বিষয় হলো সামগ্রিক সক্ষমতার প্রতিযোগিতা। শুধু নিজেদের অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও সামগ্রিক জাতীয় শক্তি দ্রুত বৃদ্ধি করেই আমরা কৌশলগত সুবিধা অর্জন করতে পারি।’
তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে, এই সপ্তাহের বৈঠকটি হতে পারত চীনের পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্বের ইঙ্গিত পাওয়ার একটি সুযোগ; যদি সি তরুণ কর্মকর্তাদের মধ্যে কাউকে আরও দৃশ্যমান ভূমিকায় আনতে চাইতেন। তবে বেশির ভাগ বিশ্লেষকের ধারণা, তিনি এখনই কোনো বড় পদক্ষেপ নেবেন না। অন্তত ২০২৭ সালে তাঁর সম্ভাব্য চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী মেয়াদ শুরু হওয়ার আগে তেমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম।
সি চিন পিং ভালোভাবেই জানেন, নেতৃত্বের উত্তরাধিকারের দ্বন্দ্ব কীভাবে কমিউনিস্ট পার্টিকে নাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ, এই অভিজ্ঞতা তাঁর পারিবারিক ইতিহাসেই আছে। তাঁর বাবা, একসময়কার জ্যেষ্ঠ নেতা, মাও সে-তুংয়ের হাতে অপসারিত হয়েছিলেন। আর ১৯৮৯ সালের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সময় স্থানীয় কর্মকর্তা হিসেবে সি প্রত্যক্ষ করেছেন, কীভাবে শীর্ষ পর্যায়ের মতবিরোধ দেশকে অস্থিরতার দিকে টেনে নিয়েছিল। সেই সময় দেং সিয়াওপিং দল থেকে সাধারণ সম্পাদক ঝাও জিয়াংকে সরিয়ে দিয়ে নতুন উত্তরসূরি হিসেবে জিয়াং জেমিনকে বেছে নেন।
চায়না স্ট্র্যাটেজিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ক্রিস্টোফার কে. জনসন বলেন, ‘চীনের রাজবংশীয় ইতিহাস আর সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির উত্থান-পতনের পাঠে যিনি এতটা নিমগ্ন, তাঁর কাছে উত্তরাধিকার প্রশ্নটা নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সি জানেন, নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিয়ে ভাবা তাঁর জন্য অপরিহার্য।’
তবে আপাতত সি চিন পিং নিজেই বিশ্বাস করেন, চীনের উত্থান অব্যাহত রাখতে হলে নেতৃত্ব তাঁর হাতে থাকাটাই সবচেয়ে জরুরি। তিনি আগের নেতা হু জিনতাওয়ের স্বেচ্ছা অবসরের নজির ভেঙে দিয়েছেন। বরং ২০১৮ সালে তিনি সংবিধান পরিবর্তন করে প্রেসিডেন্ট পদে দুই মেয়াদের সীমা বাতিল করেছেন। ফলে এখন তিনি অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত রাষ্ট্র, দল ও সেনাবাহিনীর শীর্ষে থাকতে পারেন।
কিন্তু সি যত বছর ক্ষমতায় থাকবেন, ততই এমন একজন উত্তরাধিকারী খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়বে, যিনি একই সঙ্গে কয়েক দশক ধরে শাসন করার মতো যথেষ্ট তরুণ হবেন এবং সির ছায়ায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার মতো পর্যাপ্ত অভিজ্ঞ।
সি তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের নিয়োগ দিয়েছেন পার্টির সর্বোচ্চ ক্ষমতাকেন্দ্র; সাত সদস্যবিশিষ্ট পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁদের সবার বয়স এখন ৬০-এর ওপরে, ফলে তাঁরা নিজেরাই উত্তরসূরি হওয়ার পথে বার্ধক্যে পড়েছেন। সি নিজে ২০০৭ সালে ৫৪ বছর বয়সে এই কমিটিতে যোগ দিয়েছিলেন, যা তাঁকে পরবর্তী নেতা হওয়ার অন্যতম প্রধান ইঙ্গিত দিয়েছিল।
ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি সান ডিয়েগোর অধ্যাপক ও চীনের অভিজাত রাজনীতি-বিশেষজ্ঞ ভিক্টর সি বলেন, ‘এমনকি ২০২৭ সালের পরবর্তী কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে উন্নীত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা কর্মকর্তারাও সির উত্তরসূরি হওয়ার জন্য বয়সে অনেকটাই এগিয়ে। অর্থাৎ, সির পরবর্তী উত্তরসূরি হওয়ার মতো তরুণ নন।’
ভিক্টর সির মতে, যদি সি আরও একটি মেয়াদ বা তারও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকেন, তবে পরবর্তী নেতা হতে পারেন ১৯৭০-এর দশকে জন্ম নেওয়া কেউ; যিনি এখন প্রাদেশিক প্রশাসনে বা কোনো কেন্দ্রীয় দপ্তরে কাজ করছেন। তাইওয়ানের ন্যাশনাল চেংচি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও কমিউনিস্ট পার্টি-বিশ্লেষক ওয়াং হসিন-হসিয়েন বলেন, ‘পার্টি ইতিমধ্যে এমন কিছু তরুণ কর্মকর্তাকে উন্নীত করছে, যাদের সঙ্গে এই প্রোফাইল মেলে।’
তবে সি তরুণ কর্মকর্তাদের নিয়েও সতর্ক। তিনি বারবার বলেছেন, কর্মকর্তাদের সামান্য দুর্বলতাও সংকটের মুহূর্তে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘একটি বাঁধে ছোট ফাটলই শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ ধস নামাতে পারে।’
অধ্যাপক ওয়াং বলেন, ‘সি অন্যদের প্রতি অত্যন্ত অবিশ্বাসী, বিশেষ করে যেসব কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই। বয়স যত বাড়ছে, সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের প্রজন্মের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ততই কমে আসছে। আর বিষয়টি ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বছরগুলোতে পার্টির শীর্ষ পর্যায় আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। কারণ সি সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের পরীক্ষা করবেন, আবার অনেককে বাদও দেবেন। আর এর ফাঁকে তাঁর আশপাশের কর্মকর্তারা নিজেদের প্রভাব ও টিকে থাকার জন্য আরও তীব্র প্রতিযোগিতায় নামতে পারেন।
অধ্যাপক ভিক্টর সি বলেন, ‘এই পরিস্থিতি উত্তরসূরি নির্ধারণ প্রক্রিয়াকে আরও খণ্ডিত করে তুলবে। কারণ সি একক কাউকে মনোনীত করতে পারবেন না। বরং একদল সম্ভাব্য উত্তরসূরিকে বেছে নিতে হবে, আর সেটি মানেই তাঁদের মধ্যে নিচু মানের ক্ষমতার লড়াই অনিবার্য।’
বেইজিংয়ে এ সপ্তাহে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন চীনের শীর্ষ নেতারা। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তাল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখা এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই বৈঠকের আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচির বাইরে রয়েছে এমন দুটি প্রশ্ন, যা চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে, অথচ কেউ উচ্চারণ করতেও সাহস পাচ্ছে না। প্রশ্নটি হলো, সি চিন পিং আর কত দিন ক্ষমতায় থাকবেন? আর তিনি না থাকলে চীনকে নেতৃত্ব দেবেন কে?
টানা ১৩ বছর ধরে চীনের ক্ষমতা সি চিন পিংয়ের হাতে। এই সময়ে তিনি এমন এক প্রভাব প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা মাও সে-তুংয়ের পর আর কেউ পারেননি। এখনো তাঁর পদত্যাগের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে তাঁর এই ক্ষমতা যদি সঠিকভাবে পরিচালিত না হয়, তবে তা রাজনৈতিক অস্থিরতার বীজ বপন করতে পারে। কারণ, সির হাতে এখনো কোনো উত্তরসূরি নেই, এমনকি নেই কাউকে মনোনীত করার স্পষ্ট সময়সূচিও।
প্রতিটি বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সির অনুপস্থিতিতে চীনের ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও গভীর হচ্ছে। যদি তাঁর শারীরিক অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে নেতৃত্বে শূন্যতা দেখা দেয়, তবে নতুন নেতা কি সির কঠোর নীতিতেই অবিচল থাকবেন, নাকি কিছুটা নমনীয় পথে হাঁটবেন; এই প্রশ্ন এখনই ভাবাচ্ছে চীনের নীতিনির্ধারকদের।
সি চিন পিং আসলে সেই পরিচিত দোটানার মুখে; যা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা অনেক কর্তৃত্ববাদী নেতার ক্ষেত্রেই দেখা যায়। উত্তরসূরি মনোনয়ন মানে এক প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাকেন্দ্র তৈরি করা, যা নিজের প্রভাব দুর্বল করতে পারে। আবার উত্তরসূরি নির্ধারণে বিলম্ব করলে তার উত্তরাধিকার ও দলীয় ঐক্য দুটিই বিপদের মুখে পড়তে পারে। সির বয়স এখন ৭২, অর্থাৎ সম্ভাব্য উত্তরসূরি খুঁজতে হলে তাকাতে হবে আরও তরুণ প্রজন্মের দিকে; যাদের এখনো নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে এবং সির আস্থা অর্জন করতে হবে।
যদি শেষ পর্যন্ত সি কোনো উত্তরসূরি বেছে নেন, তবে একটি বিষয় প্রায় নিশ্চিত। আর তা হলো তাঁর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য। কারণ, সি একাধিকবার বলেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মূল কারণ ছিল ‘ভুল উত্তরসূরি বাছাই’। তাঁর মতে, সংস্কারপন্থী মিখাইল গর্বাচেভকে মনোনয়ন দিয়েই সোভিয়েত নেতৃত্ব নিজের অস্তিত্ব ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছিল।
গত শুক্রবারও সেই বার্তাই যেন নতুন করে উচ্চারণ করলেন সি, যখন চীনের সেনাবাহিনী ৯ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। স্পষ্টত এটি ছিল আনুগত্যহীনতার প্রতি সির ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিরই বহিঃপ্রকাশ।
এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের চায়না অ্যানালাইসিস সেন্টারের ফেলো নিল থমাস বলেন, ‘সি নিশ্চয়ই উত্তরাধিকার নির্ধারণের গুরুত্ব জানেন, কিন্তু তিনিও বোঝেন যে এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যা ইঙ্গিত দিলেই নিজের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাঁকে ঘিরে এখনকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটগুলো হয়তো এতটাই অগ্রাধিকার পাচ্ছে যে উত্তরসূরি নির্ধারণের মতো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে।’
চীনে সি চিন পিংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা খুবই স্পর্শকাতর এবং সেন্সরশিপের আওতাভুক্ত। শুধু হাতে গোনা কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা হয়তো জানেন, তিনি নিজে এই বিষয়ে কী ভাবছেন।
কিন্তু বিদেশি কূটনীতিক, বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীরা এখন চেয়ে আছেন বেইজিংয়ের চলমান চার দিনের এই বৈঠকের দিকে। উল্লেখ্য, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির এই অধিবেশন শুরু হয়েছে সোমবার থেকে, যেখানে শত শত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন।
বৈঠকটি সাধারণত বেইজিংয়ে জিংসি হোটেলে গোপনে অনুষ্ঠিত হয়। এবারও সেখানে আগামী পাঁচ বছরের জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুমোদনের আশা করা হচ্ছে। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও উন্নত উৎপাদনে বৈশ্বিক নেতৃত্ব অর্জনকে সি চিন পিং তাঁর প্রধান লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নীতিকে পরাস্ত করার বিষয়ে সি ও তাঁর সহযোগীরা এখনো দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী।
গত মাসে প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটির ওপর পার্লামেন্ট সদস্যদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘পরাশক্তিগুলোর মধ্যে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূল বিষয় হলো সামগ্রিক সক্ষমতার প্রতিযোগিতা। শুধু নিজেদের অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও সামগ্রিক জাতীয় শক্তি দ্রুত বৃদ্ধি করেই আমরা কৌশলগত সুবিধা অর্জন করতে পারি।’
তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে, এই সপ্তাহের বৈঠকটি হতে পারত চীনের পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্বের ইঙ্গিত পাওয়ার একটি সুযোগ; যদি সি তরুণ কর্মকর্তাদের মধ্যে কাউকে আরও দৃশ্যমান ভূমিকায় আনতে চাইতেন। তবে বেশির ভাগ বিশ্লেষকের ধারণা, তিনি এখনই কোনো বড় পদক্ষেপ নেবেন না। অন্তত ২০২৭ সালে তাঁর সম্ভাব্য চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী মেয়াদ শুরু হওয়ার আগে তেমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম।
সি চিন পিং ভালোভাবেই জানেন, নেতৃত্বের উত্তরাধিকারের দ্বন্দ্ব কীভাবে কমিউনিস্ট পার্টিকে নাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ, এই অভিজ্ঞতা তাঁর পারিবারিক ইতিহাসেই আছে। তাঁর বাবা, একসময়কার জ্যেষ্ঠ নেতা, মাও সে-তুংয়ের হাতে অপসারিত হয়েছিলেন। আর ১৯৮৯ সালের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সময় স্থানীয় কর্মকর্তা হিসেবে সি প্রত্যক্ষ করেছেন, কীভাবে শীর্ষ পর্যায়ের মতবিরোধ দেশকে অস্থিরতার দিকে টেনে নিয়েছিল। সেই সময় দেং সিয়াওপিং দল থেকে সাধারণ সম্পাদক ঝাও জিয়াংকে সরিয়ে দিয়ে নতুন উত্তরসূরি হিসেবে জিয়াং জেমিনকে বেছে নেন।
চায়না স্ট্র্যাটেজিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ক্রিস্টোফার কে. জনসন বলেন, ‘চীনের রাজবংশীয় ইতিহাস আর সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির উত্থান-পতনের পাঠে যিনি এতটা নিমগ্ন, তাঁর কাছে উত্তরাধিকার প্রশ্নটা নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সি জানেন, নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিয়ে ভাবা তাঁর জন্য অপরিহার্য।’
তবে আপাতত সি চিন পিং নিজেই বিশ্বাস করেন, চীনের উত্থান অব্যাহত রাখতে হলে নেতৃত্ব তাঁর হাতে থাকাটাই সবচেয়ে জরুরি। তিনি আগের নেতা হু জিনতাওয়ের স্বেচ্ছা অবসরের নজির ভেঙে দিয়েছেন। বরং ২০১৮ সালে তিনি সংবিধান পরিবর্তন করে প্রেসিডেন্ট পদে দুই মেয়াদের সীমা বাতিল করেছেন। ফলে এখন তিনি অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত রাষ্ট্র, দল ও সেনাবাহিনীর শীর্ষে থাকতে পারেন।
কিন্তু সি যত বছর ক্ষমতায় থাকবেন, ততই এমন একজন উত্তরাধিকারী খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়বে, যিনি একই সঙ্গে কয়েক দশক ধরে শাসন করার মতো যথেষ্ট তরুণ হবেন এবং সির ছায়ায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার মতো পর্যাপ্ত অভিজ্ঞ।
সি তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের নিয়োগ দিয়েছেন পার্টির সর্বোচ্চ ক্ষমতাকেন্দ্র; সাত সদস্যবিশিষ্ট পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁদের সবার বয়স এখন ৬০-এর ওপরে, ফলে তাঁরা নিজেরাই উত্তরসূরি হওয়ার পথে বার্ধক্যে পড়েছেন। সি নিজে ২০০৭ সালে ৫৪ বছর বয়সে এই কমিটিতে যোগ দিয়েছিলেন, যা তাঁকে পরবর্তী নেতা হওয়ার অন্যতম প্রধান ইঙ্গিত দিয়েছিল।
ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি সান ডিয়েগোর অধ্যাপক ও চীনের অভিজাত রাজনীতি-বিশেষজ্ঞ ভিক্টর সি বলেন, ‘এমনকি ২০২৭ সালের পরবর্তী কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে উন্নীত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা কর্মকর্তারাও সির উত্তরসূরি হওয়ার জন্য বয়সে অনেকটাই এগিয়ে। অর্থাৎ, সির পরবর্তী উত্তরসূরি হওয়ার মতো তরুণ নন।’
ভিক্টর সির মতে, যদি সি আরও একটি মেয়াদ বা তারও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকেন, তবে পরবর্তী নেতা হতে পারেন ১৯৭০-এর দশকে জন্ম নেওয়া কেউ; যিনি এখন প্রাদেশিক প্রশাসনে বা কোনো কেন্দ্রীয় দপ্তরে কাজ করছেন। তাইওয়ানের ন্যাশনাল চেংচি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও কমিউনিস্ট পার্টি-বিশ্লেষক ওয়াং হসিন-হসিয়েন বলেন, ‘পার্টি ইতিমধ্যে এমন কিছু তরুণ কর্মকর্তাকে উন্নীত করছে, যাদের সঙ্গে এই প্রোফাইল মেলে।’
তবে সি তরুণ কর্মকর্তাদের নিয়েও সতর্ক। তিনি বারবার বলেছেন, কর্মকর্তাদের সামান্য দুর্বলতাও সংকটের মুহূর্তে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘একটি বাঁধে ছোট ফাটলই শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ ধস নামাতে পারে।’
অধ্যাপক ওয়াং বলেন, ‘সি অন্যদের প্রতি অত্যন্ত অবিশ্বাসী, বিশেষ করে যেসব কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই। বয়স যত বাড়ছে, সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের প্রজন্মের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ততই কমে আসছে। আর বিষয়টি ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বছরগুলোতে পার্টির শীর্ষ পর্যায় আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। কারণ সি সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের পরীক্ষা করবেন, আবার অনেককে বাদও দেবেন। আর এর ফাঁকে তাঁর আশপাশের কর্মকর্তারা নিজেদের প্রভাব ও টিকে থাকার জন্য আরও তীব্র প্রতিযোগিতায় নামতে পারেন।
অধ্যাপক ভিক্টর সি বলেন, ‘এই পরিস্থিতি উত্তরসূরি নির্ধারণ প্রক্রিয়াকে আরও খণ্ডিত করে তুলবে। কারণ সি একক কাউকে মনোনীত করতে পারবেন না। বরং একদল সম্ভাব্য উত্তরসূরিকে বেছে নিতে হবে, আর সেটি মানেই তাঁদের মধ্যে নিচু মানের ক্ষমতার লড়াই অনিবার্য।’
২০১৯ সালে পাস করার পর গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে যাওয়া হিন্দুরাই এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
১২ মার্চ ২০২৪১৯ অক্টোবর নয়াদিল্লি ছিল বেশ সতর্ক অবস্থায়। সেদিন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, জ্বালানো হয়েছিল মশাল। তাঁদের দাবি—তিস্তা নদী মাস্টারপ্ল্যান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাঁরা মনে করেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিনির্
১ ঘণ্টা আগেগত সপ্তাহে মিসরে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি উদ্যাপনকালে ট্রাম্প তাঁর প্রধান কূটনৈতিক আলোচক স্টিভ উইটকফের দিকে ফিরে বলেন, ‘এবার আমাদের রাশিয়ার বিষয়টা মীমাংসা করতে হবে।’ তবে গাজা ইস্যুতে উইটকফ ও তাঁর দল যে অনুকূল পরিস্থিতি পেয়েছিলেন, তা ইউক্রেন যুদ্ধে পুনরায় সৃষ্টি করা কঠিন। চার বছর ছুঁইছুঁই সময় ধরে চলছে
২০ ঘণ্টা আগেকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অগ্রগতি ডেটা সেন্টারের চাহিদা ক্রমেই বাড়াচ্ছে। কিন্তু তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার থাকা এই গুদামের মতো জায়গাগুলোর জন্য প্রচুর জমি প্রয়োজন এবং এরা বিপুল পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) নিঃসরণ হয়।
১ দিন আগে