অনলাইন ডেস্ক
সাইরেনের শব্দে যখন রাতের নিস্তব্ধতা ভাঙে আর ইসরায়েল বা ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করে, তখন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কৌশল নিয়ে একটি বিশেষ চিত্র সামনে আসে—রাতের আঁধার। বারবার রাতের বেলাতেই ইরান বা ইসরায়েল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয় বরং এটি গোপনীয়তা, চমক এবং ভয় সৃষ্টির এক সুচিন্তিত সামরিক ও প্রযুক্তিগত কৌশল।
যদিও রাত কোনো কিছু দৃশ্যমান হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়, তারপরও রাতের আঁধারে হামলার পেছনে গভীর কারণ রয়েছে। এটি প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, অপারেশনাল প্রয়োজনীয়তা এবং মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের এক সমন্বিত রূপ।
উড়োজাহাজ যেমন তার জ্বালানি পোড়ানোর জন্য বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেনের ওপর নির্ভর করে, ক্ষেপণাস্ত্র তেমনটা পারে না। প্রপেলার হিসেবে কাজ করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্রের জ্বালানি এবং অক্সিডাইজার—দহন প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান—উভয়ই নিজস্ব সিস্টেমে বহন করতে হয়। কারণ, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এমন উচ্চতায় পৌঁছায় যেখানে অক্সিজেন খুব কম বা একেবারেই থাকে না।
এই মৌলিক প্রয়োজনীয়তার কারণে ক্ষেপণাস্ত্র দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত—তরল জ্বালানি চালিত এবং কঠিন জ্বালানি চালিত। এই দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রেরই নিজস্ব কৌশলগত প্রভাব রয়েছে।
তরল জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্র: শক্তিশালী কিন্তু অরক্ষিত
ইরানের শাহাব সিরিজের মতো দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সাধারণত তরল জ্বালানি ব্যবহার করে। এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের আগে একটি জটিল জ্বালানি প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজন হয়, যেখানে জ্বালানি এবং অক্সিডাইজারের জন্য দুটি আলাদা ট্যাংক থাকে। এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর জন্য স্থির উৎক্ষেপণ অবকাঠামো ও গ্রাউন্ড ক্রু প্রয়োজন।
এ কারণে জ্বালানি ভরার পর্যায়টিই ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময়, বিশেষ করে শত্রুর স্যাটেলাইট ও নজরদারি বিমানের চোখে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। শনাক্তকরণ ও হামলার ঝুঁকি কমাতে ইরান প্রায়শই রাতে জ্বালানি ভরার কাজ সম্পন্ন করে, যখন দৃশ্যময়তা কম থাকে এবং আকাশপথে শনাক্ত হওয়ার সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
কঠিন জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্র: সহজে ব্যবহারযোগ্য ও যেকোনো সময় উৎক্ষেপণে প্রস্তুত
অন্যদিকে, ফাতেহ-১১০ এবং জুলফিকারের মতো স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সাধারণত কঠিন জ্বালানি চালিত। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ভেতরেই একই সঙ্গে জ্বালানি ও অক্সিডাইজারের মিশ্রণ ভরা থাকে। এগুলো উৎক্ষেপণের জন্য সর্বদা প্রস্তুত। এগুলোর জন্য উৎক্ষেপণস্থলে জ্বালানি ভরার প্রয়োজন হয় না এবং মোবাইল (চলাচলে সক্ষম) প্ল্যাটফর্ম থেকে নিক্ষেপ করা যায়।
তবে একবার জ্বলে উঠলে কঠিন জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্রের ইঞ্জিন বন্ধ বা এর গতিনিয়ন্ত্রণ করা যায় না। উৎক্ষেপণের পর এটিকে থামানোর কোনো সুযোগ থাকে না। অবশ্য বেশি গতি পাওয়ার জন্য অনেক দেশই এই ছাড় দিয়ে থাকে।
কেন ক্ষেপণাস্ত্রকে নিজস্ব অক্সিজেন বহন করতে হয়?
ক্ষেপণাস্ত্রের কেন নিজস্ব অক্সিডাইজার প্রয়োজন, এই প্রশ্নটি প্রায়শই ওঠে। জেট ইঞ্জিন যেমন বায়ুমণ্ডল থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে, ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিনকে এমন পরিবেশে কাজ করতে হয় যেখানে অক্সিজেন অপর্যাপ্ত বা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কয়েক শ কিলোমিটার পর্যন্ত উপরে উঠতে পারে, যেখানে অক্সিজেন নেই। এ কারণে, ধারাবাহিক প্রপালশন নিশ্চিত করতে এসব ক্ষেপণাস্ত্রে জ্বালানি দহনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু শুরু থেকেই বহন করতে হয়।
প্রযুক্তি ও কৌশল দ্বারা প্রভাবিত সামরিক মতবাদ
ইরানের বারবার রাতে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কোনো এলোমেলো সিদ্ধান্ত নয়। এটি একটি বহু-স্তরীয় সামরিক মতবাদকে প্রতিফলিত করে, যা প্রযুক্তিগত বাস্তবতা, কৌশলগত সুযোগ এবং যুদ্ধের মনস্তাত্ত্বিক গতিশীলতাকে বিবেচনা করে গৃহীত। কঠিন ও তরল উভয় ধরনের জ্বালানি চালিত ক্ষেপণাস্ত্র, মোবাইল উৎক্ষেপণ প্ল্যাটফর্ম এবং রাতের প্রাকৃতিক আবরণকে কাজে লাগিয়ে ইরান এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছে যা টিকে থাকা, চমক এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবকে অগ্রাধিকার দেয়—এমনকি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যদি তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থও হয়। প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষার চলমান যুদ্ধে, উৎক্ষেপণের সময় ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: জেরুসালেম পোস্ট
সাইরেনের শব্দে যখন রাতের নিস্তব্ধতা ভাঙে আর ইসরায়েল বা ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করে, তখন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কৌশল নিয়ে একটি বিশেষ চিত্র সামনে আসে—রাতের আঁধার। বারবার রাতের বেলাতেই ইরান বা ইসরায়েল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয় বরং এটি গোপনীয়তা, চমক এবং ভয় সৃষ্টির এক সুচিন্তিত সামরিক ও প্রযুক্তিগত কৌশল।
যদিও রাত কোনো কিছু দৃশ্যমান হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়, তারপরও রাতের আঁধারে হামলার পেছনে গভীর কারণ রয়েছে। এটি প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, অপারেশনাল প্রয়োজনীয়তা এবং মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের এক সমন্বিত রূপ।
উড়োজাহাজ যেমন তার জ্বালানি পোড়ানোর জন্য বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেনের ওপর নির্ভর করে, ক্ষেপণাস্ত্র তেমনটা পারে না। প্রপেলার হিসেবে কাজ করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্রের জ্বালানি এবং অক্সিডাইজার—দহন প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান—উভয়ই নিজস্ব সিস্টেমে বহন করতে হয়। কারণ, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এমন উচ্চতায় পৌঁছায় যেখানে অক্সিজেন খুব কম বা একেবারেই থাকে না।
এই মৌলিক প্রয়োজনীয়তার কারণে ক্ষেপণাস্ত্র দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত—তরল জ্বালানি চালিত এবং কঠিন জ্বালানি চালিত। এই দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রেরই নিজস্ব কৌশলগত প্রভাব রয়েছে।
তরল জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্র: শক্তিশালী কিন্তু অরক্ষিত
ইরানের শাহাব সিরিজের মতো দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সাধারণত তরল জ্বালানি ব্যবহার করে। এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের আগে একটি জটিল জ্বালানি প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজন হয়, যেখানে জ্বালানি এবং অক্সিডাইজারের জন্য দুটি আলাদা ট্যাংক থাকে। এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর জন্য স্থির উৎক্ষেপণ অবকাঠামো ও গ্রাউন্ড ক্রু প্রয়োজন।
এ কারণে জ্বালানি ভরার পর্যায়টিই ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময়, বিশেষ করে শত্রুর স্যাটেলাইট ও নজরদারি বিমানের চোখে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। শনাক্তকরণ ও হামলার ঝুঁকি কমাতে ইরান প্রায়শই রাতে জ্বালানি ভরার কাজ সম্পন্ন করে, যখন দৃশ্যময়তা কম থাকে এবং আকাশপথে শনাক্ত হওয়ার সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
কঠিন জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্র: সহজে ব্যবহারযোগ্য ও যেকোনো সময় উৎক্ষেপণে প্রস্তুত
অন্যদিকে, ফাতেহ-১১০ এবং জুলফিকারের মতো স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সাধারণত কঠিন জ্বালানি চালিত। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ভেতরেই একই সঙ্গে জ্বালানি ও অক্সিডাইজারের মিশ্রণ ভরা থাকে। এগুলো উৎক্ষেপণের জন্য সর্বদা প্রস্তুত। এগুলোর জন্য উৎক্ষেপণস্থলে জ্বালানি ভরার প্রয়োজন হয় না এবং মোবাইল (চলাচলে সক্ষম) প্ল্যাটফর্ম থেকে নিক্ষেপ করা যায়।
তবে একবার জ্বলে উঠলে কঠিন জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্রের ইঞ্জিন বন্ধ বা এর গতিনিয়ন্ত্রণ করা যায় না। উৎক্ষেপণের পর এটিকে থামানোর কোনো সুযোগ থাকে না। অবশ্য বেশি গতি পাওয়ার জন্য অনেক দেশই এই ছাড় দিয়ে থাকে।
কেন ক্ষেপণাস্ত্রকে নিজস্ব অক্সিজেন বহন করতে হয়?
ক্ষেপণাস্ত্রের কেন নিজস্ব অক্সিডাইজার প্রয়োজন, এই প্রশ্নটি প্রায়শই ওঠে। জেট ইঞ্জিন যেমন বায়ুমণ্ডল থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে, ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিনকে এমন পরিবেশে কাজ করতে হয় যেখানে অক্সিজেন অপর্যাপ্ত বা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কয়েক শ কিলোমিটার পর্যন্ত উপরে উঠতে পারে, যেখানে অক্সিজেন নেই। এ কারণে, ধারাবাহিক প্রপালশন নিশ্চিত করতে এসব ক্ষেপণাস্ত্রে জ্বালানি দহনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু শুরু থেকেই বহন করতে হয়।
প্রযুক্তি ও কৌশল দ্বারা প্রভাবিত সামরিক মতবাদ
ইরানের বারবার রাতে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কোনো এলোমেলো সিদ্ধান্ত নয়। এটি একটি বহু-স্তরীয় সামরিক মতবাদকে প্রতিফলিত করে, যা প্রযুক্তিগত বাস্তবতা, কৌশলগত সুযোগ এবং যুদ্ধের মনস্তাত্ত্বিক গতিশীলতাকে বিবেচনা করে গৃহীত। কঠিন ও তরল উভয় ধরনের জ্বালানি চালিত ক্ষেপণাস্ত্র, মোবাইল উৎক্ষেপণ প্ল্যাটফর্ম এবং রাতের প্রাকৃতিক আবরণকে কাজে লাগিয়ে ইরান এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছে যা টিকে থাকা, চমক এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবকে অগ্রাধিকার দেয়—এমনকি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যদি তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থও হয়। প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষার চলমান যুদ্ধে, উৎক্ষেপণের সময় ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: জেরুসালেম পোস্ট
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের কেবল শুরু। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস ও সামরিক বাহিনীকে পঙ্গু করে দিতে ‘যত দিন লাগবে’ ইসরায়েল তত দিন আঘাত হানতে থাকবে। এটি প্রাথমিকভাবে কয়েক সপ্তাহ হতে পারে। ইরান এরই মধ্যে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইসরায়েলের
৩৮ মিনিট আগেইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যকে এক নতুন অস্থিরতার মুখে ঠেলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বড় আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ভূমিকাও হয়ে উঠেছে নজরকাড়া। এর মধ্যে রাশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু জটিল অবস্থানে রয়েছে। একদিকে তাদের ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্ক ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থ, অন্যদিকে বর্তমান সংঘাতে
২ ঘণ্টা আগেগত শুক্রবার ভোরে আকস্মিকভাবে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করে ইরানও। মূলত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি হামলার জবাব দিচ্ছে দেশটি। ইসরায়েল দাবি করেছে, গত শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত ইরান মোট ৩৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
২ ঘণ্টা আগেইরান আসলে কী করবে এখন? বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে সর্তক অবস্থানে থাকবে ইরান। শেষমেষ নিজেদের মর্যাদা বজায় রেখে যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে। জয়-পরাজয়ের হিসাবে ইরানকে যেন কোনোভাবেই পরাজিত বলা না যায়, সেটি এখন তেহরানের মূল লক্ষ্য।
৮ ঘণ্টা আগে