মিডল ইস্ট মনিটরের নিবন্ধ
অনলাইন ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা এবং দেশটির ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী ঔদ্ধত্য এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যেখান থেকে আর পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অন্তহীন যুদ্ধ এখন হামলে পড়েছে দামেস্কে। রক্তক্ষরণ ঘটাচ্ছে সিরিয়ায়। তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনার যেন কেউই নেই।
বিশ্ব গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা, বৈশ্বিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র এসব হামলার মুখে নির্লিপ্ত আচরণ করে যাচ্ছে। দুঃখজনকভাবে একের পর এক ইসরায়েলি সরকারের প্রতি অনুগত অবস্থানে রয়ে গেছে। আর এটা করতে গিয়ে দেশটি নিজেদেরই প্রতিষ্ঠিত বহু মৌলিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক আইন জলাঞ্জলি দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্লজ্জ আচরণ গত ২১ মাসে গাজায় সবচেয়ে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। শুরুটা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাত ধরে। তিনি তাঁর ‘ইসরায়েলপন্থী’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে সঙ্গে নিয়ে বারবার নেতানিয়াহুর চরমপন্থী ও বর্ণবাদী আচরণ প্রশ্রয় দিয়ে গেছেন। এই পরিস্থিতির সবচেয়ে হাস্যকর দৃষ্টান্তগুলোর একটি হলো, ভাসমান একটি পিয়ারের নির্মাণকাজ। এটি করার উদ্দেশ্য ছিল—গাজা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার বা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার নয়—এমন ধারণা দেওয়া। প্রকৃত সাহায্য না দিয়ে এই প্রতীকী উদ্যোগ কেবলই ইসরায়েল আরোপিত দুর্ভিক্ষ ও অবরোধকে আরও সুসংহত করেছে, নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক চাপ থেকে নেতানিয়াহুকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে। অথচ একই সঙ্গে গাজার ওপর ইসরায়েলের গণহত্যামূলক অবরোধ বহাল রাখারও সুযোগ দিয়েছে।
এই ভাসমান পিয়ার বা জেটি ছিল মূলত নেতানিয়াহুরই একটি ফাঁদ। আর বাইডেন সেই ফাঁদে কেবল পা-ই দেননি, সেখানে অর্থায়নও করেছেন। শুরু থেকেই এই প্রকল্প ছিল একটি প্রহসন। ৩২০ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পের সঙ্গে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সমন্বয় কেমন হবে, তার পরিকল্পনা করতেই চলে গেছে কয়েক মাস। এরপর যখন এটি আংশিকভাবে কার্যকর হলো—একাধিক ফটোশুটের মাধ্যমে অন্তত তা-ই প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে—তার কিছু দিনের মধ্যেই যেন এটি ভূমধ্যসাগরের ঢেউয়ে তলিয়ে গেছে। এরপর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি এর। এই পিয়ার কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল না, বরং ছিল নৈতিক বিপর্যয়।
যাই হোক, এই ভাসমান পিয়ার বা এখনকার গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বালকসুলভ নির্বুদ্ধিতা এবং নেতানিয়াহুর ধোঁকার এক অপূর্ব মিশ্রণ। এগুলো দেখায় যে, ওয়াশিংটন আসলে গাজাবাসীকে সহায়তা করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তারা আসলে তা করছে না, সহায়তা করার ভান করছে মাত্র।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান ইসরায়েলকে গাজাবাসীকে অনাহারে রাখার কৌশল চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ব বিবেককে চোখ বন্ধ করে রেখে শান্তি বোধ করার সুযোগও হয়তো দিয়েছে। ইসরায়েলকে গাজায় ত্রাণপ্রবাহ নিশ্চিত করতে বাধ্য না করে বরং যুক্তরাষ্ট্র এক ফালতু নাটক চালিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে।
ভাসমান পিয়ার যখন ডুবছিল, তখন বাইডেন ও জর্ডানের বাদশাহ আরেক নাটকের অবতারণা করেন। তাঁরা ‘মানবতার দূত’ সাজার ভঙ ধরে গাজায় বিমান থেকে ত্রাণসহায়তা ফেলার নাটক চালিয়ে যান কিছু দিন। তবে বেশ কিছু মানুষের প্রাণহানির পর সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। যাই হোক, অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা না নিয়ে ইসরায়েল ও তার নপুংসক আরব সহযোগীরা আবারও গাজায় ত্রাণসহায়তা ফেলার ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবছে। কিন্তু এসব কৌশল মূলত ইসরায়েলকে তার নারকীয় ভূমি দখলমূলক কর্মকাণ্ডকে চালিয়ে যাওয়ারই সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে, যুদ্ধ বন্ধে কোনো চাপ সৃষ্টি করছে না।
বিগত কয়েক দিনে গাজায় অনাহারে অন্তত ৫৭ জন মারা গেছে। অথচ বিপরীত চিত্র হলো, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, তাদের কাছে গাজার পুরো জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর মতো অন্তত তিন মাসের খাবার রয়েছে। কিন্তু তারপরও ইসরায়েল খাদ্যকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে যাচ্ছে। আর ইসরায়েলের এই হত্যাযজ্ঞে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে মূলত গাজায় খাদ্য প্রবেশ করতে না দিয়ে শিশুদের অনাহারে রাখছে।
যখন সবাই ভাবছে যে, গাজায় ত্রাণসহায়তা দেওয়ার জন্য পিয়ার নির্মাণ, বিমান থেকে খাবার ফেলা—কৃত্রিমতা বই আর কিছু নয়, তখনই ইসরায়েল চালু করে আরও এক চতুর পরিকল্পনা—গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। টানা চার মাসের অনাহার আর বোমাবর্ষণের পর এই প্রকল্প আনা হলো নতুন এক ধোঁকা হিসেবে। এ ক্ষেত্রেও পরিকল্পনা ইসরায়েলের, আর অর্থ আগের মতোই যুক্তরাষ্ট্রের। এই প্রকল্পের লক্ষ্য গাজাবাসীর অনাহার ঘোচানো নয়, বরং আন্তর্জাতিক চাপ প্রশমিত করা। এটি আশ্চর্যের কিছু নয় যে, ট্রাম্পও বাইডেনের মতো, ইসরায়েলের প্রতি একই রকম অনুগত ভঙ্গিতে এই প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছেন।
তিন মাস চালু থাকার পর দেখা যাচ্ছে, জিএইচএফ আদতে ইসরায়েলের আরও একটি প্রাণঘাতী প্রতারণা। বেঁচে থাকার আশা জাগানো এই প্রকল্প এখন এক মরণফাঁদ। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৯০০ ফিলিস্তিনি—মানে প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ জন—জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলোর কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছে। যারা এই মৃত্যুফাঁদ এড়িয়ে বাড়িতে ছিল, তাদের জন্য ছিল অনাহার। আর যারা ত্রাণ সংগ্রহে গিয়েছিল, তাদের জন্য অপেক্ষায় ছিল ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি। আর এই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীই পরিকল্পিতভাবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে, তারাই আবার ত্রাণকেন্দ্র খুলছে, সেখানে যেতে বাধ্য করে ফিলিস্তিনিদের সেখানে গুলি করে মারছে।
মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত জিএইচএফ ইসরায়েলের হাতে তুলে দিয়েছে গাজায় খাদ্যসহায়তা নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি। আর এখন দেখা যাচ্ছে, পানি সংগ্রহ করতে যাওয়া কিশোরীও টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। টিকে থাকার প্রতিটি মৌলিক উপাদান—খাবার, পানি, ওষুধকে ইসরায়েল অস্ত্রে পরিণত করেছে। এগুলো এমন অস্ত্র, যা দিয়ে মানুষকে অনাহারে মারা যায়, পানি থেকে বঞ্চিত করা যায়, ওষুধ আটকানো যায়, এমনকি একটি জাতিকে জিম্মি করে তাদের নিজ ভূমি থেকে ‘স্বেচ্ছায়’ বিতাড়নের পরিস্থিতি গড়ে তোলা যায়।
এই তথাকথিত হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের পর ইসরায়েল আরও একটি ‘অরওয়েলীয়’ প্রকল্প প্রকাশ করেছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান সিটির’ নামে। এর উদ্দেশ্য, গাজা উপত্যকার উত্তরাংশ থেকে ৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে একটি প্রাচীরঘেরা শিবিরে রাখা, যেখানে প্রবেশ করা যাবে, কিন্তু বের হওয়া যাবে না। এই নতুন শিবিরকে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের মতো লোকেরাও ‘আধুনিক কনসেনট্রেশন ক্যাম্প’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। এই ক্যাম্প মূলত গাজার এক-চতুর্থাংশ জনগণকে বন্দী করার পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি। এর আয়তন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক নাৎসি বন্দিশিবিরকেও ছাপিয়ে গেছে।
হিউম্যানিটারিয়ান সিটি বা মানবিক শহর—একটি বন্দিশিবিরকে এই নামে আখ্যা দেওয়া মূলত ইসরায়েলের ‘লিঙ্গুইস্টিক ওয়ার’ বা ভাষাগত যুদ্ধেরই অংশ। এই যুদ্ধে ভাষাকে অস্ত্রে পরিণত করেছে ইসরায়েল। তারা ফিলিস্তিনিদের না খাইয়ে মারে না, বরং তাদের জন্য আরোপ করে ‘ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ।’ তারা ঘেটো বানায় না, তৈরি করে তথাকথিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’—যেখানে মূলত ফিলিস্তিনিদের ঘেটোর মধ্যেই বন্দী করার বাস্তবতা প্রকাশ করা হয়। ইসরায়েল সরাসরি জাতিগত নির্মূলীকরণে অংশ নেয় না, বরং দেয় ‘স্বেচ্ছায়’ দেশত্যাগের বিকল্প। এখানে ইসরায়েল গণবিচ্যুতি ঘটায় না, বরং প্রস্তাব দেয় একটি তথাকথিত ‘মানবিক শহর’ গড়ার।
ইসরায়েল এই ভাষার ভেলকি দেখাতে পারে একটাই কারণে। সেটি হলো—ওয়াশিংটনে আমেরিকান রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে এআইপিএসি বা আমেরিকান-ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি। ইসরায়েলপন্থী এই লবিং গ্রুপে প্রাথমিক লক্ষ্য হলো, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে প্রভাবিত করে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা। এই কমিটি ইহুদি রাজনৈতিক সক্রিয়তাকে উৎসাহিত করার জন্য কাজ করে, বিদেশি সাহায্য ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার মতো বিষয়গুলোতে কংগ্রেসে লবি করে এবং উভয় জাতির জন্য উপকারী নীতির পক্ষে লবিং করে।
ইসরায়েল যখন এই ভাষা সন্ত্রাস চালিয়ে যায়, তখনই বিশ্ব শক্তিগুলো কেবল ভান করে যেন, তারা কিছু একটা করছে। ফ্রান্স দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে প্রতীকী স্বীকৃতির ইঙ্গিত দেয় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিবৃতি দেয় কিছু সম্ভাব্য রাজনৈতিক পরিণতির কথা বলে, যা আদতে অর্থহীন। ব্রিটেন সর্বদা কূটকৌশলের ধারা বজায় রেখে কেবল ইসরায়েলকে পরামর্শ দেয়, যেন তারা ‘মানবিকভাবে’ যুদ্ধ চালায় এবং যেন তারা পশ্চিম তীরে তাণ্ডব চালানো ইসরায়েলি সেটলার সন্ত্রাসীদের ‘নিয়ন্ত্রণে’ রাখে। এসব কোনো কঠিন বার্তা নয়, বরং ফাঁপা, নিষ্ক্রিয় অঙ্গীকার—যেগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলকে দায়মুক্তি দিয়ে যাওয়ার সুযোগ রাখা।
আর আরব বিশ্ব? যেন তারা ভূতের মতো নীরব এবং সমানভাবে দায়ী। তারা বিভক্ত তিনটি নোংরা গোষ্ঠীতে। পশ্চিমে মিসর কার্যত গাজা অবরোধের সক্রিয় অংশীদার। পূর্ব দিকে জর্ডান ও উপসাগরীয় দেশগুলো ইসরায়েলের বাণিজ্যিক ও সামরিক সুরক্ষাবলয়। আর রয়েছে সেই রাষ্ট্রগুলো—যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের পায়ে অর্থের স্রোত বইয়ে দিচ্ছে। আর আরব দেশগুলো এসব করছে ঠিক তখনই, যখন গাজায় আগুন জ্বলছে আর পশ্চিম তীর টুকরো টুকরো করে ফেলা হচ্ছে একের পর এক ইহুদি বসতি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ একচেটিয়া সড়ক স্থাপনের মাধ্যমে।
এই সম্মিলিত নীরবতা—এই মঞ্চস্থ ক্ষোভ, যেখানে সরাসরি নিন্দাও অনুপস্থিত—এটা নিছক উদাসীনতা নয়, বরং ষড়যন্ত্র। এটা সেই নাৎসি মতাদর্শেরই পুনরুত্থান—শুধু পতাকা আর পোশাক বদলে গেছে। গণহত্যার কলাকৌশল হুবহু অনুসরণ করছে না ঠিকই, কিন্তু যে নৈতিক ঔদাসীন্য এমন বর্বরতা সম্ভব করে তোলে, সেই একই নির্মম নির্লিপ্ততার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখছি।
আমি একজন ফিলিস্তিনি হিসেবে ক্ষুব্ধ। কিন্তু তারচেয়েও বেশি ক্ষুব্ধ একজন আমেরিকান ও মানুষ হিসেবে। পুরো বিশ্ব যখন ‘মানবিক শহর’ নামের একটি নতুন বন্দিশিবির গঠনের সাক্ষী হয়, তখন কেবল আপত্তির অভিনয় করে চলে—এটা আমাদের সবার জন্য অপমানজনক। আমি ভাবি, যদি কোনো নাৎসি একসময় অশউইৎজকে ‘বিনোদনকেন্দ্র’ বলত, তখন বিশ্ব—বিশেষ করে ইহুদিরা—কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাত?
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা এবং দেশটির ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী ঔদ্ধত্য এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যেখান থেকে আর পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অন্তহীন যুদ্ধ এখন হামলে পড়েছে দামেস্কে। রক্তক্ষরণ ঘটাচ্ছে সিরিয়ায়। তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনার যেন কেউই নেই।
বিশ্ব গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা, বৈশ্বিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র এসব হামলার মুখে নির্লিপ্ত আচরণ করে যাচ্ছে। দুঃখজনকভাবে একের পর এক ইসরায়েলি সরকারের প্রতি অনুগত অবস্থানে রয়ে গেছে। আর এটা করতে গিয়ে দেশটি নিজেদেরই প্রতিষ্ঠিত বহু মৌলিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক আইন জলাঞ্জলি দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্লজ্জ আচরণ গত ২১ মাসে গাজায় সবচেয়ে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। শুরুটা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাত ধরে। তিনি তাঁর ‘ইসরায়েলপন্থী’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে সঙ্গে নিয়ে বারবার নেতানিয়াহুর চরমপন্থী ও বর্ণবাদী আচরণ প্রশ্রয় দিয়ে গেছেন। এই পরিস্থিতির সবচেয়ে হাস্যকর দৃষ্টান্তগুলোর একটি হলো, ভাসমান একটি পিয়ারের নির্মাণকাজ। এটি করার উদ্দেশ্য ছিল—গাজা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার বা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার নয়—এমন ধারণা দেওয়া। প্রকৃত সাহায্য না দিয়ে এই প্রতীকী উদ্যোগ কেবলই ইসরায়েল আরোপিত দুর্ভিক্ষ ও অবরোধকে আরও সুসংহত করেছে, নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক চাপ থেকে নেতানিয়াহুকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে। অথচ একই সঙ্গে গাজার ওপর ইসরায়েলের গণহত্যামূলক অবরোধ বহাল রাখারও সুযোগ দিয়েছে।
এই ভাসমান পিয়ার বা জেটি ছিল মূলত নেতানিয়াহুরই একটি ফাঁদ। আর বাইডেন সেই ফাঁদে কেবল পা-ই দেননি, সেখানে অর্থায়নও করেছেন। শুরু থেকেই এই প্রকল্প ছিল একটি প্রহসন। ৩২০ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পের সঙ্গে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সমন্বয় কেমন হবে, তার পরিকল্পনা করতেই চলে গেছে কয়েক মাস। এরপর যখন এটি আংশিকভাবে কার্যকর হলো—একাধিক ফটোশুটের মাধ্যমে অন্তত তা-ই প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে—তার কিছু দিনের মধ্যেই যেন এটি ভূমধ্যসাগরের ঢেউয়ে তলিয়ে গেছে। এরপর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি এর। এই পিয়ার কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল না, বরং ছিল নৈতিক বিপর্যয়।
যাই হোক, এই ভাসমান পিয়ার বা এখনকার গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বালকসুলভ নির্বুদ্ধিতা এবং নেতানিয়াহুর ধোঁকার এক অপূর্ব মিশ্রণ। এগুলো দেখায় যে, ওয়াশিংটন আসলে গাজাবাসীকে সহায়তা করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তারা আসলে তা করছে না, সহায়তা করার ভান করছে মাত্র।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান ইসরায়েলকে গাজাবাসীকে অনাহারে রাখার কৌশল চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ব বিবেককে চোখ বন্ধ করে রেখে শান্তি বোধ করার সুযোগও হয়তো দিয়েছে। ইসরায়েলকে গাজায় ত্রাণপ্রবাহ নিশ্চিত করতে বাধ্য না করে বরং যুক্তরাষ্ট্র এক ফালতু নাটক চালিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে।
ভাসমান পিয়ার যখন ডুবছিল, তখন বাইডেন ও জর্ডানের বাদশাহ আরেক নাটকের অবতারণা করেন। তাঁরা ‘মানবতার দূত’ সাজার ভঙ ধরে গাজায় বিমান থেকে ত্রাণসহায়তা ফেলার নাটক চালিয়ে যান কিছু দিন। তবে বেশ কিছু মানুষের প্রাণহানির পর সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। যাই হোক, অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা না নিয়ে ইসরায়েল ও তার নপুংসক আরব সহযোগীরা আবারও গাজায় ত্রাণসহায়তা ফেলার ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবছে। কিন্তু এসব কৌশল মূলত ইসরায়েলকে তার নারকীয় ভূমি দখলমূলক কর্মকাণ্ডকে চালিয়ে যাওয়ারই সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে, যুদ্ধ বন্ধে কোনো চাপ সৃষ্টি করছে না।
বিগত কয়েক দিনে গাজায় অনাহারে অন্তত ৫৭ জন মারা গেছে। অথচ বিপরীত চিত্র হলো, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, তাদের কাছে গাজার পুরো জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর মতো অন্তত তিন মাসের খাবার রয়েছে। কিন্তু তারপরও ইসরায়েল খাদ্যকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে যাচ্ছে। আর ইসরায়েলের এই হত্যাযজ্ঞে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে মূলত গাজায় খাদ্য প্রবেশ করতে না দিয়ে শিশুদের অনাহারে রাখছে।
যখন সবাই ভাবছে যে, গাজায় ত্রাণসহায়তা দেওয়ার জন্য পিয়ার নির্মাণ, বিমান থেকে খাবার ফেলা—কৃত্রিমতা বই আর কিছু নয়, তখনই ইসরায়েল চালু করে আরও এক চতুর পরিকল্পনা—গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। টানা চার মাসের অনাহার আর বোমাবর্ষণের পর এই প্রকল্প আনা হলো নতুন এক ধোঁকা হিসেবে। এ ক্ষেত্রেও পরিকল্পনা ইসরায়েলের, আর অর্থ আগের মতোই যুক্তরাষ্ট্রের। এই প্রকল্পের লক্ষ্য গাজাবাসীর অনাহার ঘোচানো নয়, বরং আন্তর্জাতিক চাপ প্রশমিত করা। এটি আশ্চর্যের কিছু নয় যে, ট্রাম্পও বাইডেনের মতো, ইসরায়েলের প্রতি একই রকম অনুগত ভঙ্গিতে এই প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছেন।
তিন মাস চালু থাকার পর দেখা যাচ্ছে, জিএইচএফ আদতে ইসরায়েলের আরও একটি প্রাণঘাতী প্রতারণা। বেঁচে থাকার আশা জাগানো এই প্রকল্প এখন এক মরণফাঁদ। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৯০০ ফিলিস্তিনি—মানে প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ জন—জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলোর কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছে। যারা এই মৃত্যুফাঁদ এড়িয়ে বাড়িতে ছিল, তাদের জন্য ছিল অনাহার। আর যারা ত্রাণ সংগ্রহে গিয়েছিল, তাদের জন্য অপেক্ষায় ছিল ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি। আর এই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীই পরিকল্পিতভাবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে, তারাই আবার ত্রাণকেন্দ্র খুলছে, সেখানে যেতে বাধ্য করে ফিলিস্তিনিদের সেখানে গুলি করে মারছে।
মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত জিএইচএফ ইসরায়েলের হাতে তুলে দিয়েছে গাজায় খাদ্যসহায়তা নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি। আর এখন দেখা যাচ্ছে, পানি সংগ্রহ করতে যাওয়া কিশোরীও টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। টিকে থাকার প্রতিটি মৌলিক উপাদান—খাবার, পানি, ওষুধকে ইসরায়েল অস্ত্রে পরিণত করেছে। এগুলো এমন অস্ত্র, যা দিয়ে মানুষকে অনাহারে মারা যায়, পানি থেকে বঞ্চিত করা যায়, ওষুধ আটকানো যায়, এমনকি একটি জাতিকে জিম্মি করে তাদের নিজ ভূমি থেকে ‘স্বেচ্ছায়’ বিতাড়নের পরিস্থিতি গড়ে তোলা যায়।
এই তথাকথিত হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের পর ইসরায়েল আরও একটি ‘অরওয়েলীয়’ প্রকল্প প্রকাশ করেছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান সিটির’ নামে। এর উদ্দেশ্য, গাজা উপত্যকার উত্তরাংশ থেকে ৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে একটি প্রাচীরঘেরা শিবিরে রাখা, যেখানে প্রবেশ করা যাবে, কিন্তু বের হওয়া যাবে না। এই নতুন শিবিরকে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের মতো লোকেরাও ‘আধুনিক কনসেনট্রেশন ক্যাম্প’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। এই ক্যাম্প মূলত গাজার এক-চতুর্থাংশ জনগণকে বন্দী করার পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি। এর আয়তন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক নাৎসি বন্দিশিবিরকেও ছাপিয়ে গেছে।
হিউম্যানিটারিয়ান সিটি বা মানবিক শহর—একটি বন্দিশিবিরকে এই নামে আখ্যা দেওয়া মূলত ইসরায়েলের ‘লিঙ্গুইস্টিক ওয়ার’ বা ভাষাগত যুদ্ধেরই অংশ। এই যুদ্ধে ভাষাকে অস্ত্রে পরিণত করেছে ইসরায়েল। তারা ফিলিস্তিনিদের না খাইয়ে মারে না, বরং তাদের জন্য আরোপ করে ‘ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ।’ তারা ঘেটো বানায় না, তৈরি করে তথাকথিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’—যেখানে মূলত ফিলিস্তিনিদের ঘেটোর মধ্যেই বন্দী করার বাস্তবতা প্রকাশ করা হয়। ইসরায়েল সরাসরি জাতিগত নির্মূলীকরণে অংশ নেয় না, বরং দেয় ‘স্বেচ্ছায়’ দেশত্যাগের বিকল্প। এখানে ইসরায়েল গণবিচ্যুতি ঘটায় না, বরং প্রস্তাব দেয় একটি তথাকথিত ‘মানবিক শহর’ গড়ার।
ইসরায়েল এই ভাষার ভেলকি দেখাতে পারে একটাই কারণে। সেটি হলো—ওয়াশিংটনে আমেরিকান রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে এআইপিএসি বা আমেরিকান-ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি। ইসরায়েলপন্থী এই লবিং গ্রুপে প্রাথমিক লক্ষ্য হলো, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে প্রভাবিত করে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা। এই কমিটি ইহুদি রাজনৈতিক সক্রিয়তাকে উৎসাহিত করার জন্য কাজ করে, বিদেশি সাহায্য ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার মতো বিষয়গুলোতে কংগ্রেসে লবি করে এবং উভয় জাতির জন্য উপকারী নীতির পক্ষে লবিং করে।
ইসরায়েল যখন এই ভাষা সন্ত্রাস চালিয়ে যায়, তখনই বিশ্ব শক্তিগুলো কেবল ভান করে যেন, তারা কিছু একটা করছে। ফ্রান্স দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে প্রতীকী স্বীকৃতির ইঙ্গিত দেয় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিবৃতি দেয় কিছু সম্ভাব্য রাজনৈতিক পরিণতির কথা বলে, যা আদতে অর্থহীন। ব্রিটেন সর্বদা কূটকৌশলের ধারা বজায় রেখে কেবল ইসরায়েলকে পরামর্শ দেয়, যেন তারা ‘মানবিকভাবে’ যুদ্ধ চালায় এবং যেন তারা পশ্চিম তীরে তাণ্ডব চালানো ইসরায়েলি সেটলার সন্ত্রাসীদের ‘নিয়ন্ত্রণে’ রাখে। এসব কোনো কঠিন বার্তা নয়, বরং ফাঁপা, নিষ্ক্রিয় অঙ্গীকার—যেগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলকে দায়মুক্তি দিয়ে যাওয়ার সুযোগ রাখা।
আর আরব বিশ্ব? যেন তারা ভূতের মতো নীরব এবং সমানভাবে দায়ী। তারা বিভক্ত তিনটি নোংরা গোষ্ঠীতে। পশ্চিমে মিসর কার্যত গাজা অবরোধের সক্রিয় অংশীদার। পূর্ব দিকে জর্ডান ও উপসাগরীয় দেশগুলো ইসরায়েলের বাণিজ্যিক ও সামরিক সুরক্ষাবলয়। আর রয়েছে সেই রাষ্ট্রগুলো—যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের পায়ে অর্থের স্রোত বইয়ে দিচ্ছে। আর আরব দেশগুলো এসব করছে ঠিক তখনই, যখন গাজায় আগুন জ্বলছে আর পশ্চিম তীর টুকরো টুকরো করে ফেলা হচ্ছে একের পর এক ইহুদি বসতি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ একচেটিয়া সড়ক স্থাপনের মাধ্যমে।
এই সম্মিলিত নীরবতা—এই মঞ্চস্থ ক্ষোভ, যেখানে সরাসরি নিন্দাও অনুপস্থিত—এটা নিছক উদাসীনতা নয়, বরং ষড়যন্ত্র। এটা সেই নাৎসি মতাদর্শেরই পুনরুত্থান—শুধু পতাকা আর পোশাক বদলে গেছে। গণহত্যার কলাকৌশল হুবহু অনুসরণ করছে না ঠিকই, কিন্তু যে নৈতিক ঔদাসীন্য এমন বর্বরতা সম্ভব করে তোলে, সেই একই নির্মম নির্লিপ্ততার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখছি।
আমি একজন ফিলিস্তিনি হিসেবে ক্ষুব্ধ। কিন্তু তারচেয়েও বেশি ক্ষুব্ধ একজন আমেরিকান ও মানুষ হিসেবে। পুরো বিশ্ব যখন ‘মানবিক শহর’ নামের একটি নতুন বন্দিশিবির গঠনের সাক্ষী হয়, তখন কেবল আপত্তির অভিনয় করে চলে—এটা আমাদের সবার জন্য অপমানজনক। আমি ভাবি, যদি কোনো নাৎসি একসময় অশউইৎজকে ‘বিনোদনকেন্দ্র’ বলত, তখন বিশ্ব—বিশেষ করে ইহুদিরা—কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাত?
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
দুই দেশের মধ্যে প্রকাশ্য বিরোধ শুরু হয় ২০০৮ সালে। আন্তর্জাতিকভাবে ওই ৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার এলাকা ‘বিরোধপূর্ণ এলাকা’ হিসেবে পরিচিত। মূলত দুটি মন্দিরের মালিকানা নিয়ে বিরোধ দুই দেশের। ২০০৮ সালে ওই দুই মন্দিরের একটিকে (প্রিয়াহ ভিহিয়ার) বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে ইউনেসকোর কাছে আবেদন করে কম্বোডিয়া
৮ ঘণ্টা আগেদ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানকে নিজেদের মতবাদ অনুযায়ী পুনর্গঠনের পথে এগোতে শুরু করে তালেবান। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে—চিকিৎসা কেন্দ্র, কারাগার, সামরিক ঘাঁটি থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কট্টর ইসলামি আদর্শে গড়ে তোলা।
১ দিন আগেগত জুনে ঘটে যাওয়া তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ইউক্রেনের ক্ষমতার অলিন্দে এক নতুন সুর তৈরি করেছে। এসব ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রে ইয়ারমাক দেশের অভ্যন্তরে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছেন। বর্তমানে তাঁর ভূমিকা থেকে স্পষ্ট যে, তিনি নির্বাচিত না হয়েও...
২ দিন আগেবিশ্ব রাজনীতির মানচিত্রে প্রাচীন দুই সভ্যতা ভারত ও চীন। দ্রুত বর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে দেশ দুটি নিজেদের অবস্থান সুসংহত করছে। তবে তাদের সম্পর্কের ইতিহাস জটিল—যেখানে সহাবস্থান ও সংঘাত হাত ধরাধরি করে চলে।
৩ দিন আগে