অনলাইন ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে লাঞ্চের সময় বৈঠকে বসেন। সেখানে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল কীভাবে জাপান আলাস্কায় গ্যাস উত্তোলন এবং এশিয়ার মিত্র দেশগুলোতে তা রপ্তানির লক্ষ্যে এক দশক আগের একটি প্রস্তাব বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পারে। ট্রাম্প এবং তাঁর জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ডগ বার্গাম এই উদ্যোগকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে জাপানের জ্বালানি আমদানির বিকল্প এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য উন্নয়নের উপায় হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার এটি ছিল প্রথম বৈঠক। তিনি মূলত মার্কিন শুল্ক থেকে সুরক্ষা পাওয়ার আলোচনাতে বেশি আগ্রহী ছিলেন। আলাস্কা এলএনজি প্রকল্পের সম্ভাবনা নিয়েও আশাবাদী ছিলেন। যদিও প্রকল্পটির বাস্তবায়ন নিয়ে খোদ জাপানের মধ্যেই সংশয় রয়েছে। তবুও প্রধানমন্ত্রী ইশিবা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বার্গামকে জানান যে, জাপান ৪৪ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে আগ্রহী। তবে, এই আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে, বিশেষ করে আমেরিকান জীবাশ্ম জ্বালানি, মূলত তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)–এ বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে। এই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুল্ক এবং জ্বালানি আমদানির সমুদ্রপথের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।
আলাস্কা এলএনজি প্রকল্পটির ব্যয় এবং যৌক্তিক চ্যালেঞ্জ উল্লেখযোগ্য। তবে এরপরও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান এবং অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্যাস আমদানি বৃদ্ধির ধারণায় আগ্রহ দেখাচ্ছে। এটি মার্কিন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং চীন ও রাশিয়ার প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পে জাপানের অংশগ্রহণ ট্রাম্পের কৌশলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাপান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এলএনজি ক্রেতা এবং জ্বালানি অবকাঠামোতে বড় বিনিয়োগকারী দেশ। এ ছাড়া জাপান এলএনজি বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ হাব। ফলে আলাস্কা প্রকল্পে জাপান যুক্ত হলে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন গ্যাসের জন্য নতুন বাজার খুলতে সাহায্য করতে পারে।
হাডসন ইনস্টিটিউটের জাপান চেয়ার কেনেথ ওয়াইনস্টাইন বলেন, ‘যদি ট্রাম্প প্রশাসন তার পথে চলতে পারে, তাহলে মার্কিন এলএনজি বিপুল পরিমাণে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবাহিত হবে এবং এরপর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রবাহিত হবে...এতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এটি জ্বালানি নির্ভরতার মানচিত্র নতুন করে লিখবে।’
জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতিতে আমেরিকার ‘সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি’, বিশেষ করে এলএনজি ভান্ডার খুলে দেওয়ার মাধ্যমে জ্বালানি নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে সম্মত হয়েছেন। অবশ্য তাঁরা আলাস্কার কথা উল্লেখ করেননি।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজেস রয়টার্সকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে কম কার্বন নিঃসরণ এলএনজি উৎপাদন করে এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, জাপানিরা আমেরিকার প্রচুর তেল এবং গ্যাস ক্রয়ে আরও বড় অবদান রাখতে পারে।’
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইশিবা–ট্রাম্প বৈঠকের বিবরণ সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী আগামী মাসে ওয়াশিংটন সফরের পরিকল্পনা করছেন, যেখানে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত শুল্ক থেকে অব্যাহতি চাইবেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও এলএনজি কেনার পরিকল্পনা নিয়েও তাঁরা আলোচনা করবেন।
আলাস্কা এলএনজি প্রকল্পটি আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের উত্তর ঢালের গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে একটি রপ্তানি টার্মিনাল পর্যন্ত ৮০০ মাইল পাইপলাইন নির্মাণের ধারণা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় রয়েছে। উচ্চ ব্যয় এবং দুর্গম ভূখণ্ডের কারণে এই প্রকল্পটি এগোতে পারেনি। তবে, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সমর্থন থাকায় জাপান এই প্রকল্পে প্রাথমিক সমর্থন জানাতে প্রস্তুত বলেই মনে হয়।
যুক্তরাষ্ট্র জাপানকে আলাস্কা এলএনজি প্রকল্পে অবকাঠামোগত বিনিয়োগ এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্রয় চুক্তি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেছে। মার্কিন পক্ষ জাপানের কাছে এই প্রকল্পের কৌশলগত সুবিধাগুলো তুলে ধরেছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের তুলনায় জাপানের নিকটবর্তী হওয়া এবং সংবেদনশীল সমুদ্রপথ যেমন: হরমুজ প্রণালি, মালাক্কা প্রণালি এবং দক্ষিণ চীন সাগর এড়ানোর সুবিধা এর মধ্যে অন্যতম।
আলাস্কার সিনেটর ড্যান সুলিভান বলেছেন, ‘আলাস্কা এলএনজি ইশিবার সঙ্গে আলোচনার একটি বড় অংশ ছিল। একজন প্রেসিডেন্ট যিনি সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অটল, এই প্রকল্পে এত সময় ব্যয় করছেন, তা নিশ্চয়ই জাপানিদের ওপর প্রভাব ফেলেছে।’
এই প্রকল্প উন্নয়নকারীরা ইনপেক্সের মতো কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। এই সংস্থা আবার টোকিওতে তালিকাভুক্ত তেল–গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি। এবং এর বৃহত্তম শেয়ারহোল্ডার জাপান সরকার। ইনপেক্সের একজন মুখপাত্র বলেন, তারা নির্দিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা বা লেনদেন সম্পর্কে মন্তব্য করবে না।
জাপান অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় এক–দশমাংশ এলএনজি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে। একই অনুপাতে রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করে তারা। আর অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করে চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ। জাপান ২০২৪ সালে ৬৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি করেছে।
জাপানের ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনমিকসের সিনিয়র বিশ্লেষক হিরোশি হাশিমোতো বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে জাপানের মোট এলএনজি আমদানির ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে কোনো এলএনজি রপ্তানি টার্মিনাল নেই। এশিয়ার জন্য সরাসরি রুট এটি। তবে, মেক্সিকোতে সেম্প্রার কোস্টা আজুল প্রকল্প, যা যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাসেই চলে, সেটি আগামী বছর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে পারে।
ট্রাম্পের জ্বালানি নিরাপত্তা পরিকল্পনা এশিয়ার অন্য দেশগুলোতেও প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে বাণিজ্য শুল্কের হুমকি ভালোই কাজে দিচ্ছে বলা যায়! ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও অনুরূপ গ্যাস চুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাইওয়ানও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও জ্বালানি, বিশেষ করে আলাস্কা থেকে এলএনজি কেনার বিষয়টি বিবেচনা করছে।
দক্ষিণ কোরিয়াও আলাস্কা এলএনজি এবং অন্যান্য মার্কিন জ্বালানি প্রকল্পে বিনিয়োগের কথা বিবেচনা করছে। সিউল আশা করছে, এর বিনিময়ে ট্রাম্পের কাছ থেকে কিছু ছাড় পাওয়া যাবে।
এ পর্যন্ত মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে জ্বালানি নিরাপত্তা সম্পর্ক শক্তিশালী করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত মৈত্রী গড়ে তুলতে চাচ্ছে। এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে লাঞ্চের সময় বৈঠকে বসেন। সেখানে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল কীভাবে জাপান আলাস্কায় গ্যাস উত্তোলন এবং এশিয়ার মিত্র দেশগুলোতে তা রপ্তানির লক্ষ্যে এক দশক আগের একটি প্রস্তাব বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পারে। ট্রাম্প এবং তাঁর জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ডগ বার্গাম এই উদ্যোগকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে জাপানের জ্বালানি আমদানির বিকল্প এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য উন্নয়নের উপায় হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার এটি ছিল প্রথম বৈঠক। তিনি মূলত মার্কিন শুল্ক থেকে সুরক্ষা পাওয়ার আলোচনাতে বেশি আগ্রহী ছিলেন। আলাস্কা এলএনজি প্রকল্পের সম্ভাবনা নিয়েও আশাবাদী ছিলেন। যদিও প্রকল্পটির বাস্তবায়ন নিয়ে খোদ জাপানের মধ্যেই সংশয় রয়েছে। তবুও প্রধানমন্ত্রী ইশিবা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বার্গামকে জানান যে, জাপান ৪৪ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে আগ্রহী। তবে, এই আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে, বিশেষ করে আমেরিকান জীবাশ্ম জ্বালানি, মূলত তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)–এ বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে। এই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুল্ক এবং জ্বালানি আমদানির সমুদ্রপথের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।
আলাস্কা এলএনজি প্রকল্পটির ব্যয় এবং যৌক্তিক চ্যালেঞ্জ উল্লেখযোগ্য। তবে এরপরও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান এবং অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্যাস আমদানি বৃদ্ধির ধারণায় আগ্রহ দেখাচ্ছে। এটি মার্কিন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং চীন ও রাশিয়ার প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পে জাপানের অংশগ্রহণ ট্রাম্পের কৌশলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাপান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এলএনজি ক্রেতা এবং জ্বালানি অবকাঠামোতে বড় বিনিয়োগকারী দেশ। এ ছাড়া জাপান এলএনজি বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ হাব। ফলে আলাস্কা প্রকল্পে জাপান যুক্ত হলে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন গ্যাসের জন্য নতুন বাজার খুলতে সাহায্য করতে পারে।
হাডসন ইনস্টিটিউটের জাপান চেয়ার কেনেথ ওয়াইনস্টাইন বলেন, ‘যদি ট্রাম্প প্রশাসন তার পথে চলতে পারে, তাহলে মার্কিন এলএনজি বিপুল পরিমাণে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবাহিত হবে এবং এরপর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রবাহিত হবে...এতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এটি জ্বালানি নির্ভরতার মানচিত্র নতুন করে লিখবে।’
জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতিতে আমেরিকার ‘সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি’, বিশেষ করে এলএনজি ভান্ডার খুলে দেওয়ার মাধ্যমে জ্বালানি নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে সম্মত হয়েছেন। অবশ্য তাঁরা আলাস্কার কথা উল্লেখ করেননি।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজেস রয়টার্সকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে কম কার্বন নিঃসরণ এলএনজি উৎপাদন করে এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, জাপানিরা আমেরিকার প্রচুর তেল এবং গ্যাস ক্রয়ে আরও বড় অবদান রাখতে পারে।’
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইশিবা–ট্রাম্প বৈঠকের বিবরণ সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী আগামী মাসে ওয়াশিংটন সফরের পরিকল্পনা করছেন, যেখানে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত শুল্ক থেকে অব্যাহতি চাইবেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও এলএনজি কেনার পরিকল্পনা নিয়েও তাঁরা আলোচনা করবেন।
আলাস্কা এলএনজি প্রকল্পটি আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের উত্তর ঢালের গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে একটি রপ্তানি টার্মিনাল পর্যন্ত ৮০০ মাইল পাইপলাইন নির্মাণের ধারণা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় রয়েছে। উচ্চ ব্যয় এবং দুর্গম ভূখণ্ডের কারণে এই প্রকল্পটি এগোতে পারেনি। তবে, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সমর্থন থাকায় জাপান এই প্রকল্পে প্রাথমিক সমর্থন জানাতে প্রস্তুত বলেই মনে হয়।
যুক্তরাষ্ট্র জাপানকে আলাস্কা এলএনজি প্রকল্পে অবকাঠামোগত বিনিয়োগ এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্রয় চুক্তি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেছে। মার্কিন পক্ষ জাপানের কাছে এই প্রকল্পের কৌশলগত সুবিধাগুলো তুলে ধরেছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের তুলনায় জাপানের নিকটবর্তী হওয়া এবং সংবেদনশীল সমুদ্রপথ যেমন: হরমুজ প্রণালি, মালাক্কা প্রণালি এবং দক্ষিণ চীন সাগর এড়ানোর সুবিধা এর মধ্যে অন্যতম।
আলাস্কার সিনেটর ড্যান সুলিভান বলেছেন, ‘আলাস্কা এলএনজি ইশিবার সঙ্গে আলোচনার একটি বড় অংশ ছিল। একজন প্রেসিডেন্ট যিনি সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অটল, এই প্রকল্পে এত সময় ব্যয় করছেন, তা নিশ্চয়ই জাপানিদের ওপর প্রভাব ফেলেছে।’
এই প্রকল্প উন্নয়নকারীরা ইনপেক্সের মতো কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। এই সংস্থা আবার টোকিওতে তালিকাভুক্ত তেল–গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি। এবং এর বৃহত্তম শেয়ারহোল্ডার জাপান সরকার। ইনপেক্সের একজন মুখপাত্র বলেন, তারা নির্দিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা বা লেনদেন সম্পর্কে মন্তব্য করবে না।
জাপান অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় এক–দশমাংশ এলএনজি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে। একই অনুপাতে রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করে তারা। আর অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করে চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ। জাপান ২০২৪ সালে ৬৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি করেছে।
জাপানের ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনমিকসের সিনিয়র বিশ্লেষক হিরোশি হাশিমোতো বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে জাপানের মোট এলএনজি আমদানির ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে কোনো এলএনজি রপ্তানি টার্মিনাল নেই। এশিয়ার জন্য সরাসরি রুট এটি। তবে, মেক্সিকোতে সেম্প্রার কোস্টা আজুল প্রকল্প, যা যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাসেই চলে, সেটি আগামী বছর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে পারে।
ট্রাম্পের জ্বালানি নিরাপত্তা পরিকল্পনা এশিয়ার অন্য দেশগুলোতেও প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে বাণিজ্য শুল্কের হুমকি ভালোই কাজে দিচ্ছে বলা যায়! ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও অনুরূপ গ্যাস চুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাইওয়ানও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও জ্বালানি, বিশেষ করে আলাস্কা থেকে এলএনজি কেনার বিষয়টি বিবেচনা করছে।
দক্ষিণ কোরিয়াও আলাস্কা এলএনজি এবং অন্যান্য মার্কিন জ্বালানি প্রকল্পে বিনিয়োগের কথা বিবেচনা করছে। সিউল আশা করছে, এর বিনিময়ে ট্রাম্পের কাছ থেকে কিছু ছাড় পাওয়া যাবে।
এ পর্যন্ত মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে জ্বালানি নিরাপত্তা সম্পর্ক শক্তিশালী করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত মৈত্রী গড়ে তুলতে চাচ্ছে। এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
ইউক্রেনের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘ট্রাম্প জেলেনস্কিকে সরাতে চান বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তিনি কখনোই তাঁকে পছন্দ করেননি। জেলেনস্কিকে সামলোনো কঠিন বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাই, নির্বাচন তাঁর কাছে কোনো ইস্যু নয়, উদ্দেশ্য জেলেনস্কিকে সরিয়ে দেওয়া।’
২ দিন আগেরাখাইনের সংকট জটিল হলেও এটি অমীমাংসিত নয়। অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন, কৌশলগত সহযোগিতা এবং টেকসই আন্তর্জাতিক সহায়তার মাধ্যমে অঞ্চলটি সংঘাত থেকে স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঐতিহাসিক ক্ষোভের সমাধান ও সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা গেলে রাখাইন একসময় সংকটপূর্ণ অঞ্চল থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন
২ দিন আগেআমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিশ্বকূটনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন এনেছেন। এসবের শুরু হয় ১২ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের মধ্য দিয়ে। এই ফোনালাপে তাঁরা সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপরই মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনের ডাক...
৩ দিন আগেপুতিন ‘বাজি ধরছেন’ যে, তিনি ইউক্রেনের চেয়ে দীর্ঘ সময় লড়াই চালিয়ে যেতে পারবেন, অথবা তিনি এমন একটি সমঝোতা ট্রাম্পের মাধ্যমে আদায় করতে পারবেন, যা রাশিয়াকে বিশ্ব অর্থনীতিতে পুনরায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেবে, ইউক্রেনকে বিভক্ত ও আধা–ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করবে এবং ইউরোপকে এতটাই হতবাক করে দেবে যে...
৩ দিন আগে