Ajker Patrika

অমৃতা প্রীতম

উপসম্পাদকীয়
Thumbnail image

ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা এলাকায় একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে অমৃতা প্রীতমের জন্ম। সাহিত্যের সব শাখায় সমানভাবে বিচরণ করলেও কবিতাই তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

১১ বছর বয়সে মাকে হারান। এর কিছুদিন পর বাবার সঙ্গে লাহোরে চলে যান। লেখার মধ্যেই মাকে হারানোর ব্যথা থেকে মুক্তি খুঁজে পান।
পারিবারিক নাম অমৃতা কৌর। ১৬ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয় বাল্যকালে পরিবারের ঠিক করা বাগ্‌দত্তা প্রীতম সিংয়ের সঙ্গে। প্রীতম সিং ছিলেন পেশায় একজন সম্পাদক। বিয়ের পরে অমৃতা কৌরের নাম হয় অমৃতা প্রীতম। তবে তাঁদের দাম্পত্যজীবন সুখের ছিল না। একসময় তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।

প্রথম কবিতা সংকলন ‘অমৃত তরঙ্গ’ প্রকাশিত হয় ১৯৩৬ সালে। ১৯৪৩ সালের মধ্যে ছয়টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। পরে তিনি প্রগতিশীল লেখক আন্দোলন এবং সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। রাজনৈতিক অস্থিরতায় সাধারণ মানুষের দুর্গতি ও তাদের অধিকার নিয়ে লড়াইয়ের পাশাপাশি জোয়ার আসে তাঁর কলমেও। ১৯৪৪ সালে প্রকাশিত হয় তেতাল্লিশ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির তীব্র সমালোচনাকারী কাব্যগ্রন্থ ‘গণরোষ’।

সাতচল্লিশে দেশভাগের পর তিনি লাহোর থেকে ভারতে চলে আসেন। ১৯৫০ সালে তাঁর উপন্যাস ‘পিঞ্জর’ প্রকাশিত হয়। ২০০৩ সালে বলিউডে চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদী এই উপন্যাস থেকে একই নামে একটি সিনেমা নির্মাণ করেন। এই সিনেমায় ঊর্মিলা মাতন্ডকার, মনোজ বাজপেয়ি ও সঞ্জয় সুরি মূল চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসাসহ জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।

অমৃতা লিখেছেন কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস ও আত্মজীবনী। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী কর্তৃক পেয়েছেন ‘পাঞ্জাব রতন পুরস্কার’। প্রথম নারী হিসেবে ১৯৫৬ সালে পেয়েছেন ‘সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার’; আরও পেয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার ‘জ্ঞানপীঠ পুরস্কার’, ‘পদ্মশ্রী’ ও ‘পদ্মবিভূষণ’ উপাধি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, জবলপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বভারতী তাঁকে ডি লিট ডিগ্রি দিয়েছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে থেকেও অজস্র সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছেন। ৮৬ বছর বয়সে ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর ঘুমের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত