আজকের পত্রিকা ডেস্ক
জীবনের ১৮টি বছর বিমানবন্দরের বেঞ্চে কাটিয়েছেন এক ব্যক্তি! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই ঘটেছে ইরানি নাগরিক মেহরান কারিমি নাসেরির জীবনে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে এত দীর্ঘ সময় আটকা পড়ে ছিলেন তিনি।
টম হ্যাঙ্কসের ‘দ্য টার্মিনাল’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন নিশ্চয়ই। জানেন কি, নাসেরির সেই ঘটনা অবলম্বনেই নির্মাণ করা হয়েছে এই সিনেমা?
১৯৮৮ সালের ৮ আগস্ট, প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে পৌঁছান ৪২ বছর বয়সী নাসেরি। তাঁর গন্তব্য ছিল লন্ডন। সে জন্য ফ্রান্সে ট্রানজিট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধে বিপত্তি। তাঁর কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনো ফ্লাইটে উঠতে দেয়নি। ফলস্বরূপ তিনি আটকা পড়ে যান সেখানেই।
এদিকে, ফ্রান্সে থাকার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলোও ছিল না নাসেরির। যেকারণে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও হতে হয়েছে তাঁকে। তাই শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কূটনৈতিকভাবে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’। সেখানে থাকার জন্য কোনো বৈধ নথিপত্রের দরকার হয় না।
বিমানবন্দরে থাকার সময়কার প্রত্যেকটা দিনের খুঁটিনাটি লিখে রাখতেন নাসেরি। এই ব্যক্তিগত দিনপঞ্জি অবলম্বেই পরে আস্ত একটি বই লেখেন ব্রিটিশ লেখক এন্ড্রু ডনকিন, নাম দেন ‘দ্য টার্মিনাল ম্যান’। বই প্রকাশিত হয় নাসেরি বিমানবন্দরে থাকা অবস্থায়ই।
এই বই অবলম্বনেই পরবর্তীতে নির্মিত হয় হলিউড চলচ্চিত্র দ্য টার্মিনাল। বইটির লেখক বলেন, ‘আমার মনে হয় তিনি (নাসেরি) ভেবেছিলেন, এভাবে বিমানবন্দরের বেঞ্চে কয়েকটা দিন থাকলে, কেউ একদিন এসে বলবে—ঠিক আছে, আপনি এখন যেতে পারেন। তিনি ভেবেছিলেন, এমন নীরব প্রতিবাদ তাঁকে হয়তো শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পথ খুলে দেবে।’
১৯৪৫ সালে ইরানে জন্মগ্রহণ করেন নাসেরি। তবে, ফরাসি বিমানবন্দরে আটকে পড়ার আগে জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে বেলজিয়ামে। তাঁর বাবা ইরানি হলেও মা ছিলেন ব্রিটিশ। তিনি মূলত লন্ডনে মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলেন।
ডনকিন জানান, ২০০৪ সালে এক বন্ধুর মাধ্যমে নাসেরির ব্যাপারে জানতে পারেন তিনি। নাসেরির এই কৌতূহলোদ্দীপক জীবন সম্পর্কে জানতে তিনি প্রায় আড়াই সপ্তাহ প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে নাসেরির সঙ্গে বিমানবন্দরে সময় কাটান।
এন্ড্রু ডনকিন বলেন, নাসেরি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। বিমানবন্দর সব সময় খুব ব্যস্ত এলাকা। সারাক্ষণ শব্দ, মাইকে ঘোষণা, লোকজনের যাতায়াত—এসব চলতেই থাকে। নাসেরির সেখানে কোনো প্রাইভেসি ছিল না। অনেক কষ্ট করে সেখানে থাকতে হয়েছে। আশপাশে লোকদের দিক থেকেও নানা বিপদের ঝুঁকি ছিল।’
ডনকিন আরও বলেন, ‘নাসেরি সব সময় মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তখন সারা দুনিয়ার কোথায় কী ঘটছে সেসব ব্যাপারে বেশ আগ্রহী ছিলেন। যার সঙ্গেই কথা বলতেন, খুব মনোযোগ দিয়ে বাইরের খবর শুনতেন।’
নাসেরি আলফ্রেড নামেও পরিচিত ছিলেন। নাগরিকত্ব চেয়ে ব্রিটিশ দূতাবাসকে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছিলেন নাসেরি। সেই চিঠির জবাবে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে যা লিখেছিল সেখাকে তাঁকে সম্বোধন করা হয়েছিল—ডিয়ার স্যার অথবা ডিয়ার আলফ্রেড। এ নিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কৌতুক করে নাসেরি বলেন, ‘ব্রিটিশ সরকার আমাকে নাগরিকত্ব দেয়নি, কিন্তু নাইটহুড দিয়েছে!’
দীর্ঘ ১৮ বছর বিমানবন্দরে কীভাবে জীবন কাটালেন নাসেরি তা এক বিস্ময়! কারণ তাঁর আয়ের কোনো উৎস ছিল না। থাকার কোনো ঘর ছিল না। কীভাবে সেখানে এত দীর্ঘ সময় তিনি কাটিয়ে দিলেন!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডনকিন বিবিসিকে বলেন, বিমানবন্দরে থাকতে থাকতে সেখানকার কর্মচারীদের সঙ্গে নাসেরির সখ্য তৈরি হয়। তাঁরা খাবারের জন্য যে মিল ভাউচার পেতেন, সেখান থেকে নাসেরিকেও দিতেন। ওই ভাউচার দিয়েই অনায়াসে নাসেরির তিন বেলা খাবার জুটে যেত।
ডনকিনের দেওয়া তথ্যমতে, বিমানবন্দরের এক নম্বর টার্মিনালের ডিপারচার লাউঞ্জে ছোট একটা লাল বেঞ্চই ছিল নাসেরির ‘ঘর’। সেখানেই ১৮ বছর কাটিয়েছেন তিনি। সকালে যখন মাইকে শিডিউল ঘোষণা শুরু হতো তখনই ঘুম থেকে উঠে পড়তেন। ওয়াশরুমে ভিড় লেগে যাওয়ার আগেই হাত–মুখ ধুয়ে নিতেন। এপর নাশতা সেরে যাত্রী–কর্মীদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গল্প করতেন। সময় পেলেই দিনলিপি লিখতেন।
দীর্ঘ ১১ বছর অপেক্ষা ও আইনি লড়াইয়ের পর মেহরান কারিমি নাসেরি ১৯৯৯ সালে ফ্রান্সে শরণার্থীর মর্যাদা পান। তবে সেখানে থাকতে চাননি। তাঁর মতে, দীর্ঘদিন ধরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় একটি বিমানবন্দরে আটকে থাকাটা ছিল চরম অবিচার। এ জন্য ফ্রান্স সরকারের দয়া তিনি নিতে চাননি।
এ সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মনোযোগ পেতে শুরু করেন নাসেরি। তাঁর জীবনের গল্প নিয়ে ‘দ্য টার্মিনাল’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন অস্কারজয়ী পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। নাসেরির চরিত্রে অভিনয় করেন টম হ্যাঙ্কস। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। এর জন্য পৌনে ৩ লাখ ডলার পান নাসেরি। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন তিনি। বহু শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁকে চিঠি পাঠান। ডনকিন বলেন, ‘নাসেরি পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া এক মানুষ, যার গল্প সবার হৃদয় ছুঁয়েছে।’
নাসেরি ২০০৬ সালে শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে কথিত বাড়িটি ছেড়ে চলে যান। কয়েক দিন পরই ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। পরে নাসেরিকে আর বিমানবন্দরে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁর জিনিসপত্র প্যারিসে গৃহহীনদের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। তবে ২০২২ সালে আবার বিমানবন্দরে ফিরে আসেন নাসেরি। এর কয়েক সপ্তাহ পর ১২ নভেম্বরে নাসেরি মারা যান। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
জীবনের ১৮টি বছর বিমানবন্দরের বেঞ্চে কাটিয়েছেন এক ব্যক্তি! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই ঘটেছে ইরানি নাগরিক মেহরান কারিমি নাসেরির জীবনে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে এত দীর্ঘ সময় আটকা পড়ে ছিলেন তিনি।
টম হ্যাঙ্কসের ‘দ্য টার্মিনাল’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন নিশ্চয়ই। জানেন কি, নাসেরির সেই ঘটনা অবলম্বনেই নির্মাণ করা হয়েছে এই সিনেমা?
১৯৮৮ সালের ৮ আগস্ট, প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে পৌঁছান ৪২ বছর বয়সী নাসেরি। তাঁর গন্তব্য ছিল লন্ডন। সে জন্য ফ্রান্সে ট্রানজিট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধে বিপত্তি। তাঁর কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনো ফ্লাইটে উঠতে দেয়নি। ফলস্বরূপ তিনি আটকা পড়ে যান সেখানেই।
এদিকে, ফ্রান্সে থাকার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলোও ছিল না নাসেরির। যেকারণে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও হতে হয়েছে তাঁকে। তাই শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কূটনৈতিকভাবে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’। সেখানে থাকার জন্য কোনো বৈধ নথিপত্রের দরকার হয় না।
বিমানবন্দরে থাকার সময়কার প্রত্যেকটা দিনের খুঁটিনাটি লিখে রাখতেন নাসেরি। এই ব্যক্তিগত দিনপঞ্জি অবলম্বেই পরে আস্ত একটি বই লেখেন ব্রিটিশ লেখক এন্ড্রু ডনকিন, নাম দেন ‘দ্য টার্মিনাল ম্যান’। বই প্রকাশিত হয় নাসেরি বিমানবন্দরে থাকা অবস্থায়ই।
এই বই অবলম্বনেই পরবর্তীতে নির্মিত হয় হলিউড চলচ্চিত্র দ্য টার্মিনাল। বইটির লেখক বলেন, ‘আমার মনে হয় তিনি (নাসেরি) ভেবেছিলেন, এভাবে বিমানবন্দরের বেঞ্চে কয়েকটা দিন থাকলে, কেউ একদিন এসে বলবে—ঠিক আছে, আপনি এখন যেতে পারেন। তিনি ভেবেছিলেন, এমন নীরব প্রতিবাদ তাঁকে হয়তো শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পথ খুলে দেবে।’
১৯৪৫ সালে ইরানে জন্মগ্রহণ করেন নাসেরি। তবে, ফরাসি বিমানবন্দরে আটকে পড়ার আগে জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে বেলজিয়ামে। তাঁর বাবা ইরানি হলেও মা ছিলেন ব্রিটিশ। তিনি মূলত লন্ডনে মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলেন।
ডনকিন জানান, ২০০৪ সালে এক বন্ধুর মাধ্যমে নাসেরির ব্যাপারে জানতে পারেন তিনি। নাসেরির এই কৌতূহলোদ্দীপক জীবন সম্পর্কে জানতে তিনি প্রায় আড়াই সপ্তাহ প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে নাসেরির সঙ্গে বিমানবন্দরে সময় কাটান।
এন্ড্রু ডনকিন বলেন, নাসেরি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। বিমানবন্দর সব সময় খুব ব্যস্ত এলাকা। সারাক্ষণ শব্দ, মাইকে ঘোষণা, লোকজনের যাতায়াত—এসব চলতেই থাকে। নাসেরির সেখানে কোনো প্রাইভেসি ছিল না। অনেক কষ্ট করে সেখানে থাকতে হয়েছে। আশপাশে লোকদের দিক থেকেও নানা বিপদের ঝুঁকি ছিল।’
ডনকিন আরও বলেন, ‘নাসেরি সব সময় মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তখন সারা দুনিয়ার কোথায় কী ঘটছে সেসব ব্যাপারে বেশ আগ্রহী ছিলেন। যার সঙ্গেই কথা বলতেন, খুব মনোযোগ দিয়ে বাইরের খবর শুনতেন।’
নাসেরি আলফ্রেড নামেও পরিচিত ছিলেন। নাগরিকত্ব চেয়ে ব্রিটিশ দূতাবাসকে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছিলেন নাসেরি। সেই চিঠির জবাবে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে যা লিখেছিল সেখাকে তাঁকে সম্বোধন করা হয়েছিল—ডিয়ার স্যার অথবা ডিয়ার আলফ্রেড। এ নিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কৌতুক করে নাসেরি বলেন, ‘ব্রিটিশ সরকার আমাকে নাগরিকত্ব দেয়নি, কিন্তু নাইটহুড দিয়েছে!’
দীর্ঘ ১৮ বছর বিমানবন্দরে কীভাবে জীবন কাটালেন নাসেরি তা এক বিস্ময়! কারণ তাঁর আয়ের কোনো উৎস ছিল না। থাকার কোনো ঘর ছিল না। কীভাবে সেখানে এত দীর্ঘ সময় তিনি কাটিয়ে দিলেন!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডনকিন বিবিসিকে বলেন, বিমানবন্দরে থাকতে থাকতে সেখানকার কর্মচারীদের সঙ্গে নাসেরির সখ্য তৈরি হয়। তাঁরা খাবারের জন্য যে মিল ভাউচার পেতেন, সেখান থেকে নাসেরিকেও দিতেন। ওই ভাউচার দিয়েই অনায়াসে নাসেরির তিন বেলা খাবার জুটে যেত।
ডনকিনের দেওয়া তথ্যমতে, বিমানবন্দরের এক নম্বর টার্মিনালের ডিপারচার লাউঞ্জে ছোট একটা লাল বেঞ্চই ছিল নাসেরির ‘ঘর’। সেখানেই ১৮ বছর কাটিয়েছেন তিনি। সকালে যখন মাইকে শিডিউল ঘোষণা শুরু হতো তখনই ঘুম থেকে উঠে পড়তেন। ওয়াশরুমে ভিড় লেগে যাওয়ার আগেই হাত–মুখ ধুয়ে নিতেন। এপর নাশতা সেরে যাত্রী–কর্মীদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গল্প করতেন। সময় পেলেই দিনলিপি লিখতেন।
দীর্ঘ ১১ বছর অপেক্ষা ও আইনি লড়াইয়ের পর মেহরান কারিমি নাসেরি ১৯৯৯ সালে ফ্রান্সে শরণার্থীর মর্যাদা পান। তবে সেখানে থাকতে চাননি। তাঁর মতে, দীর্ঘদিন ধরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় একটি বিমানবন্দরে আটকে থাকাটা ছিল চরম অবিচার। এ জন্য ফ্রান্স সরকারের দয়া তিনি নিতে চাননি।
এ সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মনোযোগ পেতে শুরু করেন নাসেরি। তাঁর জীবনের গল্প নিয়ে ‘দ্য টার্মিনাল’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন অস্কারজয়ী পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। নাসেরির চরিত্রে অভিনয় করেন টম হ্যাঙ্কস। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। এর জন্য পৌনে ৩ লাখ ডলার পান নাসেরি। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন তিনি। বহু শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁকে চিঠি পাঠান। ডনকিন বলেন, ‘নাসেরি পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া এক মানুষ, যার গল্প সবার হৃদয় ছুঁয়েছে।’
নাসেরি ২০০৬ সালে শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে কথিত বাড়িটি ছেড়ে চলে যান। কয়েক দিন পরই ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। পরে নাসেরিকে আর বিমানবন্দরে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁর জিনিসপত্র প্যারিসে গৃহহীনদের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। তবে ২০২২ সালে আবার বিমানবন্দরে ফিরে আসেন নাসেরি। এর কয়েক সপ্তাহ পর ১২ নভেম্বরে নাসেরি মারা যান। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক
জীবনের ১৮টি বছর বিমানবন্দরের বেঞ্চে কাটিয়েছেন এক ব্যক্তি! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই ঘটেছে ইরানি নাগরিক মেহরান কারিমি নাসেরির জীবনে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে এত দীর্ঘ সময় আটকা পড়ে ছিলেন তিনি।
টম হ্যাঙ্কসের ‘দ্য টার্মিনাল’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন নিশ্চয়ই। জানেন কি, নাসেরির সেই ঘটনা অবলম্বনেই নির্মাণ করা হয়েছে এই সিনেমা?
১৯৮৮ সালের ৮ আগস্ট, প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে পৌঁছান ৪২ বছর বয়সী নাসেরি। তাঁর গন্তব্য ছিল লন্ডন। সে জন্য ফ্রান্সে ট্রানজিট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধে বিপত্তি। তাঁর কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনো ফ্লাইটে উঠতে দেয়নি। ফলস্বরূপ তিনি আটকা পড়ে যান সেখানেই।
এদিকে, ফ্রান্সে থাকার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলোও ছিল না নাসেরির। যেকারণে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও হতে হয়েছে তাঁকে। তাই শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কূটনৈতিকভাবে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’। সেখানে থাকার জন্য কোনো বৈধ নথিপত্রের দরকার হয় না।
বিমানবন্দরে থাকার সময়কার প্রত্যেকটা দিনের খুঁটিনাটি লিখে রাখতেন নাসেরি। এই ব্যক্তিগত দিনপঞ্জি অবলম্বেই পরে আস্ত একটি বই লেখেন ব্রিটিশ লেখক এন্ড্রু ডনকিন, নাম দেন ‘দ্য টার্মিনাল ম্যান’। বই প্রকাশিত হয় নাসেরি বিমানবন্দরে থাকা অবস্থায়ই।
এই বই অবলম্বনেই পরবর্তীতে নির্মিত হয় হলিউড চলচ্চিত্র দ্য টার্মিনাল। বইটির লেখক বলেন, ‘আমার মনে হয় তিনি (নাসেরি) ভেবেছিলেন, এভাবে বিমানবন্দরের বেঞ্চে কয়েকটা দিন থাকলে, কেউ একদিন এসে বলবে—ঠিক আছে, আপনি এখন যেতে পারেন। তিনি ভেবেছিলেন, এমন নীরব প্রতিবাদ তাঁকে হয়তো শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পথ খুলে দেবে।’
১৯৪৫ সালে ইরানে জন্মগ্রহণ করেন নাসেরি। তবে, ফরাসি বিমানবন্দরে আটকে পড়ার আগে জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে বেলজিয়ামে। তাঁর বাবা ইরানি হলেও মা ছিলেন ব্রিটিশ। তিনি মূলত লন্ডনে মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলেন।
ডনকিন জানান, ২০০৪ সালে এক বন্ধুর মাধ্যমে নাসেরির ব্যাপারে জানতে পারেন তিনি। নাসেরির এই কৌতূহলোদ্দীপক জীবন সম্পর্কে জানতে তিনি প্রায় আড়াই সপ্তাহ প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে নাসেরির সঙ্গে বিমানবন্দরে সময় কাটান।
এন্ড্রু ডনকিন বলেন, নাসেরি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। বিমানবন্দর সব সময় খুব ব্যস্ত এলাকা। সারাক্ষণ শব্দ, মাইকে ঘোষণা, লোকজনের যাতায়াত—এসব চলতেই থাকে। নাসেরির সেখানে কোনো প্রাইভেসি ছিল না। অনেক কষ্ট করে সেখানে থাকতে হয়েছে। আশপাশে লোকদের দিক থেকেও নানা বিপদের ঝুঁকি ছিল।’
ডনকিন আরও বলেন, ‘নাসেরি সব সময় মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তখন সারা দুনিয়ার কোথায় কী ঘটছে সেসব ব্যাপারে বেশ আগ্রহী ছিলেন। যার সঙ্গেই কথা বলতেন, খুব মনোযোগ দিয়ে বাইরের খবর শুনতেন।’
নাসেরি আলফ্রেড নামেও পরিচিত ছিলেন। নাগরিকত্ব চেয়ে ব্রিটিশ দূতাবাসকে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছিলেন নাসেরি। সেই চিঠির জবাবে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে যা লিখেছিল সেখাকে তাঁকে সম্বোধন করা হয়েছিল—ডিয়ার স্যার অথবা ডিয়ার আলফ্রেড। এ নিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কৌতুক করে নাসেরি বলেন, ‘ব্রিটিশ সরকার আমাকে নাগরিকত্ব দেয়নি, কিন্তু নাইটহুড দিয়েছে!’
দীর্ঘ ১৮ বছর বিমানবন্দরে কীভাবে জীবন কাটালেন নাসেরি তা এক বিস্ময়! কারণ তাঁর আয়ের কোনো উৎস ছিল না। থাকার কোনো ঘর ছিল না। কীভাবে সেখানে এত দীর্ঘ সময় তিনি কাটিয়ে দিলেন!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডনকিন বিবিসিকে বলেন, বিমানবন্দরে থাকতে থাকতে সেখানকার কর্মচারীদের সঙ্গে নাসেরির সখ্য তৈরি হয়। তাঁরা খাবারের জন্য যে মিল ভাউচার পেতেন, সেখান থেকে নাসেরিকেও দিতেন। ওই ভাউচার দিয়েই অনায়াসে নাসেরির তিন বেলা খাবার জুটে যেত।
ডনকিনের দেওয়া তথ্যমতে, বিমানবন্দরের এক নম্বর টার্মিনালের ডিপারচার লাউঞ্জে ছোট একটা লাল বেঞ্চই ছিল নাসেরির ‘ঘর’। সেখানেই ১৮ বছর কাটিয়েছেন তিনি। সকালে যখন মাইকে শিডিউল ঘোষণা শুরু হতো তখনই ঘুম থেকে উঠে পড়তেন। ওয়াশরুমে ভিড় লেগে যাওয়ার আগেই হাত–মুখ ধুয়ে নিতেন। এপর নাশতা সেরে যাত্রী–কর্মীদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গল্প করতেন। সময় পেলেই দিনলিপি লিখতেন।
দীর্ঘ ১১ বছর অপেক্ষা ও আইনি লড়াইয়ের পর মেহরান কারিমি নাসেরি ১৯৯৯ সালে ফ্রান্সে শরণার্থীর মর্যাদা পান। তবে সেখানে থাকতে চাননি। তাঁর মতে, দীর্ঘদিন ধরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় একটি বিমানবন্দরে আটকে থাকাটা ছিল চরম অবিচার। এ জন্য ফ্রান্স সরকারের দয়া তিনি নিতে চাননি।
এ সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মনোযোগ পেতে শুরু করেন নাসেরি। তাঁর জীবনের গল্প নিয়ে ‘দ্য টার্মিনাল’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন অস্কারজয়ী পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। নাসেরির চরিত্রে অভিনয় করেন টম হ্যাঙ্কস। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। এর জন্য পৌনে ৩ লাখ ডলার পান নাসেরি। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন তিনি। বহু শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁকে চিঠি পাঠান। ডনকিন বলেন, ‘নাসেরি পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া এক মানুষ, যার গল্প সবার হৃদয় ছুঁয়েছে।’
নাসেরি ২০০৬ সালে শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে কথিত বাড়িটি ছেড়ে চলে যান। কয়েক দিন পরই ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। পরে নাসেরিকে আর বিমানবন্দরে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁর জিনিসপত্র প্যারিসে গৃহহীনদের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। তবে ২০২২ সালে আবার বিমানবন্দরে ফিরে আসেন নাসেরি। এর কয়েক সপ্তাহ পর ১২ নভেম্বরে নাসেরি মারা যান। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
জীবনের ১৮টি বছর বিমানবন্দরের বেঞ্চে কাটিয়েছেন এক ব্যক্তি! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই ঘটেছে ইরানি নাগরিক মেহরান কারিমি নাসেরির জীবনে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে এত দীর্ঘ সময় আটকা পড়ে ছিলেন তিনি।
টম হ্যাঙ্কসের ‘দ্য টার্মিনাল’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন নিশ্চয়ই। জানেন কি, নাসেরির সেই ঘটনা অবলম্বনেই নির্মাণ করা হয়েছে এই সিনেমা?
১৯৮৮ সালের ৮ আগস্ট, প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে পৌঁছান ৪২ বছর বয়সী নাসেরি। তাঁর গন্তব্য ছিল লন্ডন। সে জন্য ফ্রান্সে ট্রানজিট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধে বিপত্তি। তাঁর কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনো ফ্লাইটে উঠতে দেয়নি। ফলস্বরূপ তিনি আটকা পড়ে যান সেখানেই।
এদিকে, ফ্রান্সে থাকার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলোও ছিল না নাসেরির। যেকারণে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও হতে হয়েছে তাঁকে। তাই শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কূটনৈতিকভাবে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’। সেখানে থাকার জন্য কোনো বৈধ নথিপত্রের দরকার হয় না।
বিমানবন্দরে থাকার সময়কার প্রত্যেকটা দিনের খুঁটিনাটি লিখে রাখতেন নাসেরি। এই ব্যক্তিগত দিনপঞ্জি অবলম্বেই পরে আস্ত একটি বই লেখেন ব্রিটিশ লেখক এন্ড্রু ডনকিন, নাম দেন ‘দ্য টার্মিনাল ম্যান’। বই প্রকাশিত হয় নাসেরি বিমানবন্দরে থাকা অবস্থায়ই।
এই বই অবলম্বনেই পরবর্তীতে নির্মিত হয় হলিউড চলচ্চিত্র দ্য টার্মিনাল। বইটির লেখক বলেন, ‘আমার মনে হয় তিনি (নাসেরি) ভেবেছিলেন, এভাবে বিমানবন্দরের বেঞ্চে কয়েকটা দিন থাকলে, কেউ একদিন এসে বলবে—ঠিক আছে, আপনি এখন যেতে পারেন। তিনি ভেবেছিলেন, এমন নীরব প্রতিবাদ তাঁকে হয়তো শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পথ খুলে দেবে।’
১৯৪৫ সালে ইরানে জন্মগ্রহণ করেন নাসেরি। তবে, ফরাসি বিমানবন্দরে আটকে পড়ার আগে জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে বেলজিয়ামে। তাঁর বাবা ইরানি হলেও মা ছিলেন ব্রিটিশ। তিনি মূলত লন্ডনে মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলেন।
ডনকিন জানান, ২০০৪ সালে এক বন্ধুর মাধ্যমে নাসেরির ব্যাপারে জানতে পারেন তিনি। নাসেরির এই কৌতূহলোদ্দীপক জীবন সম্পর্কে জানতে তিনি প্রায় আড়াই সপ্তাহ প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে নাসেরির সঙ্গে বিমানবন্দরে সময় কাটান।
এন্ড্রু ডনকিন বলেন, নাসেরি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। বিমানবন্দর সব সময় খুব ব্যস্ত এলাকা। সারাক্ষণ শব্দ, মাইকে ঘোষণা, লোকজনের যাতায়াত—এসব চলতেই থাকে। নাসেরির সেখানে কোনো প্রাইভেসি ছিল না। অনেক কষ্ট করে সেখানে থাকতে হয়েছে। আশপাশে লোকদের দিক থেকেও নানা বিপদের ঝুঁকি ছিল।’
ডনকিন আরও বলেন, ‘নাসেরি সব সময় মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তখন সারা দুনিয়ার কোথায় কী ঘটছে সেসব ব্যাপারে বেশ আগ্রহী ছিলেন। যার সঙ্গেই কথা বলতেন, খুব মনোযোগ দিয়ে বাইরের খবর শুনতেন।’
নাসেরি আলফ্রেড নামেও পরিচিত ছিলেন। নাগরিকত্ব চেয়ে ব্রিটিশ দূতাবাসকে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছিলেন নাসেরি। সেই চিঠির জবাবে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে যা লিখেছিল সেখাকে তাঁকে সম্বোধন করা হয়েছিল—ডিয়ার স্যার অথবা ডিয়ার আলফ্রেড। এ নিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কৌতুক করে নাসেরি বলেন, ‘ব্রিটিশ সরকার আমাকে নাগরিকত্ব দেয়নি, কিন্তু নাইটহুড দিয়েছে!’
দীর্ঘ ১৮ বছর বিমানবন্দরে কীভাবে জীবন কাটালেন নাসেরি তা এক বিস্ময়! কারণ তাঁর আয়ের কোনো উৎস ছিল না। থাকার কোনো ঘর ছিল না। কীভাবে সেখানে এত দীর্ঘ সময় তিনি কাটিয়ে দিলেন!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডনকিন বিবিসিকে বলেন, বিমানবন্দরে থাকতে থাকতে সেখানকার কর্মচারীদের সঙ্গে নাসেরির সখ্য তৈরি হয়। তাঁরা খাবারের জন্য যে মিল ভাউচার পেতেন, সেখান থেকে নাসেরিকেও দিতেন। ওই ভাউচার দিয়েই অনায়াসে নাসেরির তিন বেলা খাবার জুটে যেত।
ডনকিনের দেওয়া তথ্যমতে, বিমানবন্দরের এক নম্বর টার্মিনালের ডিপারচার লাউঞ্জে ছোট একটা লাল বেঞ্চই ছিল নাসেরির ‘ঘর’। সেখানেই ১৮ বছর কাটিয়েছেন তিনি। সকালে যখন মাইকে শিডিউল ঘোষণা শুরু হতো তখনই ঘুম থেকে উঠে পড়তেন। ওয়াশরুমে ভিড় লেগে যাওয়ার আগেই হাত–মুখ ধুয়ে নিতেন। এপর নাশতা সেরে যাত্রী–কর্মীদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গল্প করতেন। সময় পেলেই দিনলিপি লিখতেন।
দীর্ঘ ১১ বছর অপেক্ষা ও আইনি লড়াইয়ের পর মেহরান কারিমি নাসেরি ১৯৯৯ সালে ফ্রান্সে শরণার্থীর মর্যাদা পান। তবে সেখানে থাকতে চাননি। তাঁর মতে, দীর্ঘদিন ধরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় একটি বিমানবন্দরে আটকে থাকাটা ছিল চরম অবিচার। এ জন্য ফ্রান্স সরকারের দয়া তিনি নিতে চাননি।
এ সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মনোযোগ পেতে শুরু করেন নাসেরি। তাঁর জীবনের গল্প নিয়ে ‘দ্য টার্মিনাল’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন অস্কারজয়ী পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। নাসেরির চরিত্রে অভিনয় করেন টম হ্যাঙ্কস। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। এর জন্য পৌনে ৩ লাখ ডলার পান নাসেরি। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন তিনি। বহু শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁকে চিঠি পাঠান। ডনকিন বলেন, ‘নাসেরি পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া এক মানুষ, যার গল্প সবার হৃদয় ছুঁয়েছে।’
নাসেরি ২০০৬ সালে শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে কথিত বাড়িটি ছেড়ে চলে যান। কয়েক দিন পরই ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। পরে নাসেরিকে আর বিমানবন্দরে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁর জিনিসপত্র প্যারিসে গৃহহীনদের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। তবে ২০২২ সালে আবার বিমানবন্দরে ফিরে আসেন নাসেরি। এর কয়েক সপ্তাহ পর ১২ নভেম্বরে নাসেরি মারা যান। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৫ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান
১৯৮৮ সালের ৮ আগস্ট, প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে পৌঁছান ৪২ বছর বয়সী নাসেরি। তাঁর গন্তব্য ছিল লন্ডন। সে জন্য ফ্রান্সে ট্রানজিট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধে বিপত্তি। তাঁর কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনো ফ্লাইটে উঠতে দেয়নি। ফলস্বরূপ তিনি আটকা পড়ে যান সেখানেই।
০৩ এপ্রিল ২০২৫কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৫ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৬ দিন আগেকুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দা শাহীনা সোবহান।
ড. নাসের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আবু নাসের রাজীবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জামানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ সাহা, কুমারখালী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি রহমান আজিজ, কবি রজত হুদা ও কবি সবুর বাদশা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক সোহেল আমিন বাবু, কবি বাবলু জোয়ার্দার, কবি ও সাংবাদিক মাহমুদ শরীফ, জিটিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক কাজী সাইফুল, দৈনিক নয়া দিগন্তের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি (মাল্টিমিডিয়া) সোহাগ মাহমুদ প্রমুখ।
এ সাহিত্য আড্ডায় কুষ্টিয়া ও কুমারখালীর কবি-সাহিত্যিকেরা অংশ নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী জিয়াউর রহমান মানিক।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দা শাহীনা সোবহান।
ড. নাসের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আবু নাসের রাজীবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জামানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ সাহা, কুমারখালী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি রহমান আজিজ, কবি রজত হুদা ও কবি সবুর বাদশা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক সোহেল আমিন বাবু, কবি বাবলু জোয়ার্দার, কবি ও সাংবাদিক মাহমুদ শরীফ, জিটিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক কাজী সাইফুল, দৈনিক নয়া দিগন্তের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি (মাল্টিমিডিয়া) সোহাগ মাহমুদ প্রমুখ।
এ সাহিত্য আড্ডায় কুষ্টিয়া ও কুমারখালীর কবি-সাহিত্যিকেরা অংশ নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী জিয়াউর রহমান মানিক।
১৯৮৮ সালের ৮ আগস্ট, প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে পৌঁছান ৪২ বছর বয়সী নাসেরি। তাঁর গন্তব্য ছিল লন্ডন। সে জন্য ফ্রান্সে ট্রানজিট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধে বিপত্তি। তাঁর কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনো ফ্লাইটে উঠতে দেয়নি। ফলস্বরূপ তিনি আটকা পড়ে যান সেখানেই।
০৩ এপ্রিল ২০২৫আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১ ঘণ্টা আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৫ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়
১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির সরদার ভবনে সরে আসে নান্না মিয়ার ব্যবসা। দোকানের নাম হয় হাজি নান্না বিরিয়ানি।
একে একে লালবাগ চৌরাস্তা, নবাবগঞ্জ বাজার, ফকিরাপুল ও নাজিমুদ্দিন রোডে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। একই নামে শত শত ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও আসল নান্নার মোরগ পোলাওয়ের স্বাদকে টেক্কা দিতে পারেনি কেউ। তাই তো ভোজনপ্রেমীরা ঠিকই চিনে নেন আদি রেসিপিটি। মোরগ পোলাওয়ের পাশাপাশি হাজি নান্না বিরিয়ানিতে পাওয়া যায় খাসির বিরিয়ানি, খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, বোরহানি, টিকিয়া, লাবাং ও ফিরনি। প্রতি মাসের ৫ তারিখে থাকে বিশেষ আয়োজন—আস্ত মুরগির পোলাও। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির সরদার ভবনে সরে আসে নান্না মিয়ার ব্যবসা। দোকানের নাম হয় হাজি নান্না বিরিয়ানি।
একে একে লালবাগ চৌরাস্তা, নবাবগঞ্জ বাজার, ফকিরাপুল ও নাজিমুদ্দিন রোডে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। একই নামে শত শত ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও আসল নান্নার মোরগ পোলাওয়ের স্বাদকে টেক্কা দিতে পারেনি কেউ। তাই তো ভোজনপ্রেমীরা ঠিকই চিনে নেন আদি রেসিপিটি। মোরগ পোলাওয়ের পাশাপাশি হাজি নান্না বিরিয়ানিতে পাওয়া যায় খাসির বিরিয়ানি, খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, বোরহানি, টিকিয়া, লাবাং ও ফিরনি। প্রতি মাসের ৫ তারিখে থাকে বিশেষ আয়োজন—আস্ত মুরগির পোলাও। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
১৯৮৮ সালের ৮ আগস্ট, প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে পৌঁছান ৪২ বছর বয়সী নাসেরি। তাঁর গন্তব্য ছিল লন্ডন। সে জন্য ফ্রান্সে ট্রানজিট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধে বিপত্তি। তাঁর কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনো ফ্লাইটে উঠতে দেয়নি। ফলস্বরূপ তিনি আটকা পড়ে যান সেখানেই।
০৩ এপ্রিল ২০২৫আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগেচলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়
চলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না। ব্যাপারটা ভদ্রলোক করেছিলেন ১৯৩৬ সালে, এ কথা ভুলবেন না। আর সেই যে সেই ‘উত্তরায়ণ’-এ বড়ুয়া সাহেবের জ্বর হওয়ার পরে ক্যামেরা সোজা সিঁড়ি দিয়ে উঠে বিছানায় গিয়ে আছড়ে পড়ল—সেটাই কি ভোলা যায়! কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন ভদ্রলোক ডেভিড লিনের ‘অলিভার টুইস্ট’-এর বহু আগে। সাবজেকটিভ ক্যামেরা সম্পর্কে অনেক কথা আজকাল শুনতে পাই, বিভিন্ন পরিচালক নাকি খুব ভালোভাবে ব্যবহার করছেন।
...আমার কাছে গুলিয়ে গেছে সিনেমার প্রাচীন আর আধুনিক বলতে আপনারা কী বোঝাতে চেয়েছেন। এসব ধরনের কথা শুনলে আমার একটা কথাই মনে হয়, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’।
...চলচ্চিত্রের সামাজিক দায়িত্ব সব সময়ে হয়েছে। হয় পজিটিভ, না হয় নেগেটিভভাবে। ছবিটাকে আমি একটা শিল্প বলি। কাজেই মনে করি সর্বশিল্পের শর্ত পালিত হচ্ছে এখানেও। আমি মনে করি না যে সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতা’ চ্যাপলিনের ‘এসানে’ যুগের এক রিলের ছবিগুলোর চেয়ে বেশি সচেতন।
১৯২৫ সালে তোলা আইজেনস্টাইনের ‘স্ট্রাইক’ ছবির চেয়ে বেশি সমাজসচেতন ছবি কি আজ পর্যন্ত তোলা হয়েছে? পাবস্ট-এর ‘কামেরা ডে শেফট’ আজও পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে বেশি সমাজসচেতন একটি ছবি। চারু রায়ের ‘বাংলার মেয়ে’ বহু আগে তোলা—প্রথম বাংলা ছবি, যাতে আউটডোর ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশিভাবে, তাতেও সমাজচেতনা পরিপূর্ণ ছিল।
...রবিঠাকুর মশায় একটা বড় ভালো কথা বলে গিয়েছিলেন, ‘শিল্পকে শিল্প হতে হলে সর্বাগ্রে সত্যনিষ্ঠ হতে হয়, তারপরে সৌন্দর্যনিষ্ঠ’। কথাটা ভাবার মতো। যদি পারেন ভেবে দেখবেন।
সূত্র: ঋত্বিক ঘটকের গৃহীত সাক্ষাৎকার, ‘সাক্ষাৎ ঋত্বিক’, শিবাদিত্য দাশগুপ্ত ও সন্দীপন ভট্টাচার্য সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ১৮-১৯
চলচ্চিত্র নির্মাণের পদ্ধতি-টদ্ধতি বুঝি না মশাই। আমার কাছে আজও প্রমথেশ বড়ুয়া ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালক। আমরা কেউই তাঁর পায়ের নখের যোগ্য নই। আমার আজও মনে পড়ে ‘গৃহদাহ’র সেই অসম্ভব ট্রানজিশন—সেই যে হাইহিল জুতো-পরা দুটো পা থেকে সোজা কেটে দুটো আলতা-মাখা পা পালকি থেকে নামছে—আমি কখনো ভুলব না। ব্যাপারটা ভদ্রলোক করেছিলেন ১৯৩৬ সালে, এ কথা ভুলবেন না। আর সেই যে সেই ‘উত্তরায়ণ’-এ বড়ুয়া সাহেবের জ্বর হওয়ার পরে ক্যামেরা সোজা সিঁড়ি দিয়ে উঠে বিছানায় গিয়ে আছড়ে পড়ল—সেটাই কি ভোলা যায়! কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন ভদ্রলোক ডেভিড লিনের ‘অলিভার টুইস্ট’-এর বহু আগে। সাবজেকটিভ ক্যামেরা সম্পর্কে অনেক কথা আজকাল শুনতে পাই, বিভিন্ন পরিচালক নাকি খুব ভালোভাবে ব্যবহার করছেন।
...আমার কাছে গুলিয়ে গেছে সিনেমার প্রাচীন আর আধুনিক বলতে আপনারা কী বোঝাতে চেয়েছেন। এসব ধরনের কথা শুনলে আমার একটা কথাই মনে হয়, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’।
...চলচ্চিত্রের সামাজিক দায়িত্ব সব সময়ে হয়েছে। হয় পজিটিভ, না হয় নেগেটিভভাবে। ছবিটাকে আমি একটা শিল্প বলি। কাজেই মনে করি সর্বশিল্পের শর্ত পালিত হচ্ছে এখানেও। আমি মনে করি না যে সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতা’ চ্যাপলিনের ‘এসানে’ যুগের এক রিলের ছবিগুলোর চেয়ে বেশি সচেতন।
১৯২৫ সালে তোলা আইজেনস্টাইনের ‘স্ট্রাইক’ ছবির চেয়ে বেশি সমাজসচেতন ছবি কি আজ পর্যন্ত তোলা হয়েছে? পাবস্ট-এর ‘কামেরা ডে শেফট’ আজও পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে বেশি সমাজসচেতন একটি ছবি। চারু রায়ের ‘বাংলার মেয়ে’ বহু আগে তোলা—প্রথম বাংলা ছবি, যাতে আউটডোর ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশিভাবে, তাতেও সমাজচেতনা পরিপূর্ণ ছিল।
...রবিঠাকুর মশায় একটা বড় ভালো কথা বলে গিয়েছিলেন, ‘শিল্পকে শিল্প হতে হলে সর্বাগ্রে সত্যনিষ্ঠ হতে হয়, তারপরে সৌন্দর্যনিষ্ঠ’। কথাটা ভাবার মতো। যদি পারেন ভেবে দেখবেন।
সূত্র: ঋত্বিক ঘটকের গৃহীত সাক্ষাৎকার, ‘সাক্ষাৎ ঋত্বিক’, শিবাদিত্য দাশগুপ্ত ও সন্দীপন ভট্টাচার্য সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ১৮-১৯
১৯৮৮ সালের ৮ আগস্ট, প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে পৌঁছান ৪২ বছর বয়সী নাসেরি। তাঁর গন্তব্য ছিল লন্ডন। সে জন্য ফ্রান্সে ট্রানজিট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধে বিপত্তি। তাঁর কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনো ফ্লাইটে উঠতে দেয়নি। ফলস্বরূপ তিনি আটকা পড়ে যান সেখানেই।
০৩ এপ্রিল ২০২৫আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
১ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কবি শাহীনা সোবহানের সম্মানে কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য আড্ডা। গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কুমারখালী পৌর শহরের সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরে ড. নাসের ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই আড্ডার আয়োজন করা হয়।
৪ দিন আগে১৯৬০-এর দশকে হাজি নান্না মিয়া তাঁর দুই ভাই জুম্মুন মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে ছোট্ট একটা দোকানে পাতলা মাদুর বিছিয়ে তাঁরা পরিবেশন করতেন মোরগ পোলাও। সেই মোরগ পোলাওয়ের সুঘ্রাণের সঙ্গে এর সুখ্যাতি ছড়াতে সময় লাগেনি। মৌলভীবাজার থেকে পরে বেচারাম দেউড়ির...
৫ দিন আগে