Ajker Patrika

ফেমিসাইড: নানা অজুহাতে নারীহত্যা

শাকেরা তাসনীম ইরা, ঢাকা
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০: ০২
Thumbnail image

এক নারীকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করা হচ্ছে, পেটানো হচ্ছে লাঠি দিয়ে। একপর্যায়ে ইট দিয়ে তাঁর মাথা থেঁতলে নিশ্চিত করা হলো মৃত্যু। এর সবটাই করছেন চার থেকে ছয়জন পুরুষ মিলে! এই পুরুষদের মধ্যে একজন নারীটির স্বামী এবং একজন দেবর। 

অতি সম্প্রতি অত্যন্ত রোমহর্ষক এ ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজাপুর জেলায়। আলকানি আদিবাসী গোষ্ঠীর এক নারীকে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত থাকার অভিযোগে কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে প্রকাশ্যে হত্যা করেছেন তাঁর স্বামী। সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পরিবারের সম্মান রক্ষায় পিটিয়ে ও পাথর ছুড়ে ওই নারীকে হত্যা করেছেন অভিযুক্তরা। 

বিশ্বব্যাপী এ ধরনের নারী নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা যেমন নতুন নয়, তেমনি ইংরেজিতে ‘ফেমিসাইড’ শব্দটিও নতুন নয়। তবে নারীহত্যা সংক্রান্ত আলোচনায় ফেমিসাইডকে নতুন সংযোজনই বলা যায়। নারীবিদ্বেষের অন্যতম উদাহরণ এ শব্দটি। ১৮০১ সালে ইংল্যান্ডে নারীবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বড়সড় আওয়াজ উঠলে প্রথম ফেমিসাইড শব্দটি ব্যবহৃত হয়। তবে গত শতাব্দীর সত্তরের দশক থেকে শব্দটির ব্যবহার সর্বজনীন রূপ পায়। 

নারীবিদ্বেষ থেকে কোনো নারীকে হত্যা করাই হচ্ছে ফেমিসাইড। এটি মূলত লিঙ্গভিত্তিক বিদ্বেষমূলক অপরাধ। এ অপরাধ অনেক ধরনের হয়ে থাকে। সিরিয়াল ফেমিসাইড, অনার কিলিং, নারী গণহত্যা, জাতিগত নারী হত্যা, লেসবিয়ান হত্যা, ইন্টিমেট পার্টনার কিলিং ইত্যাদি হচ্ছে ফেমিসাইডের বিশ্বজুড়ে পরিচিত কিছু প্রকরণ। আর আমাদের দেশের ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ উদাহরণ হতে পারে যৌতুক। উপমহাদেশের দেশগুলোতে প্রতি বছর কত নারী প্রাণ দিচ্ছে এর সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না।

২০২১ সালের হিসাবে, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ নারীহত্যার হার ছিল হন্ডুরাসে। সূত্র: স্ট্যাটিস্টাফেমিসাইড প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন এর ধরনগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখা। প্রায় সব মহাদেশে ফেমিসাইডের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। ‘ইকোনমিক কমিশন ফর ল্যাটিন আমেরিকা অ্যান্ড ক্যারাবিয়ানে’র তথ্য মতে, ২০২১ সালে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে হন্ডুরাসে ছিল সর্বোচ্চ নারীহত্যার ঘটনা। ধারণা করা হয়, সে বছর মধ্য আমেরিকার এই দেশটিতে প্রতি এক লাখ নারীর মধ্যে প্রায় পাঁচজনকে হত্যা করা হয়েছিল শুধু তাদের লৈঙ্গিক পরিচয়ের কারণে! 

ইন্টিমেট পার্টনার ফেমিসাইড 
ফেমিসাইডের অন্য যে কোনো ধরনের চেয়ে প্রকট ইন্টিমেট পার্টনার কিলিং। অন্তত ৪৭ শতাংশ ফেমিসাইড ঘটে নারীর অন্তরঙ্গ সঙ্গী, যেমন— স্বামী, প্রেমিক কিংবা সাবেক স্বামী বা প্রেমিকের মাধ্যমে। অন্তরঙ্গ সঙ্গীর হাতে নারী হত্যাই ইন্টিমেট পার্টনার ফেমিসাইড বলে পরিচিত। গবেষণা জানাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ ফেমিসাইড ঘটে ইন্টিমেট পার্টনারের মাধ্যমে। সরকারি হিসাবে, ভারতে প্রতি বছর ৫ হাজার নারী তাঁর স্বামী কিংবা প্রেমিকের হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন। 

গবেষকেরা মনে করেন, ফেমিসাইডের পেছনে পুরুষের কঠোর পিতৃতান্ত্রিক এবং কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব কাজ করে। আরও হতাশাজনক ব্যাপার হচ্ছে, ভারতীয় উপমহাদেশে যৌতুকের ব্যাপারটি বাদ দিলে, ইন্টিমেট পার্টনার ফেমিসাইডের শিকার হওয়া নারীদের মধ্যে সিংহভাগই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। বিশ্লেষকেরা এই ব্যাপারটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, স্বাবলম্বী নারীরা সংসারে কিংবা প্রেমের সম্পর্কে সব বিষয়ে বিনা বাক্যব্যয়ে পুরুষের সব সিদ্ধান্ত মেনে নিতে চান না। ফলে পুরুষের মনে ধীরে ধীরে একধরনের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, যার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ফেমিসাইড। 

ফেমিসাইডের ৪৭ ভাগ দখল করে রেখেছে ইন্টিমেট পার্টনার ফেমিসাইড। সূত্র: স্লাইডশেয়ার ডট নেটরেসিজম ফেমিসাইড 
রেসিজম ফেমিসাইড বা বর্ণবাদী নারী হত্যার হতাশাজনক ব্যাপার হলো, নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের সোচ্চার কণ্ঠ যুক্তরাষ্ট্রে রেসিজম ফেমিসাইডের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে খুন হন বহু কৃষ্ণাঙ্গ নারী। অনেক গবেষকের ধারণা, এ ধরনের রেসিস্ট ফেমিসাইডের মতো অপরাধের সঠিক বিচার হচ্ছে না বলে ক্রমাগত এটি বেড়ে চলেছে। 

সিরিয়াল ফেমিসাইড 
লিঙ্গভিত্তিক ধর্ষকামী নারীহত্যাকে বলা হয় সিরিয়াল ফেমিসাইড। চার্লস শোভরাজ (বিকিনি কিলার নামেই বেশি পরিচিত), জর্জ হেনার্ড, টনি কস্তা, কেন্ডাল ফ্রাংকোয়েস, ওয়াল্টার এলিস, জো বল, ডেনিস রাডার, রবার্ট ইয়েটসসহ আরও অসংখ্য দুর্ধর্ষ সিরিয়াল কিলার এ ধরনের ঘটিয়েছে। সিরিয়াল ফেমিসাইডের জন্য শিকার হিসেবে বেছে নেওয়া হয় নারীদের। যেখানে সিরিয়াল কিলিং–ই একটি ভয়াবহ ব্যাপার সেখানে সিরিয়াল ফেমিসাইড নারীর জন্য আরও বেশি আতঙ্কের বিষয় হয়ে উঠেছে বিশ্বজুড়ে। 

লেসবিসাইড 
সমকামী নারীকে সমকামিতার অপরাধে হত্যা করা হলো লেসবিসাইড। তবে বিশ্বজুড়ে সমকামী নারীদের ওপর অত্যাচার ও হত্যার ইতিহাস অনেক পুরোনো। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্য, মধ্যযুগীয় ইউরোপ, এমনকি ফরাসি বিপ্লবের আগে পর্যন্ত ফ্রান্সেও সমকামী নারীদের হত্যা করা আইনসিদ্ধ ছিল। ‘উইচ হান্ট’ বা ডাইনি নিধনের সময় সবচেয়ে বেশি যে দুটি অভিযোগে নিরপরাধ নারীদের হত্যা করা হতো, তার একটি হচ্ছে ‘হেরেসি’ বা ধর্মদ্রোহিতা এবং অন্যটি সমকামিতা। যদিও বর্তমানে আইনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে সমকামী হত্যা বন্ধ করা হয়েছে তবুও বিশ্বজুড়ে লেসবিসাইড ঘটে চলেছে। দুঃখজনক বিষয় হলো, সমকামিতার প্রতি সহানুভূতিশীল দাবি করা উন্নত দেশগুলোতেও লেসবিসাইডের হার উল্লেখযোগ্য।

ধর্ষণ পরবর্তী ফেমিসাইড
প্রতিবছর বিশ্বে অর্ধকোটি নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ সালের হিসাবে শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাতেই বছরে ৫ লাখের বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হয়। ওই গবেষণায় আরও বলা হয়, অন্তত ৪০ ভাগ দক্ষিণ আফ্রিকান নারী তাঁদের জীবনের কোনো না কোনো সময় ধর্ষিত হবেনই! হতাশাজনক ব্যাপার হলো, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে নারী ধর্ষণের হার বেশি। ধর্ষণের এই উদ্বেগজনক হার বাংলাদেশেও ক্রমাগত বাড়ছে। সরকারি হিসাবে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ১ হাজার ৭৩৭ টি। গত কয়েক বছরে এই হার আরও বেড়েছে।

‘কারেকটিভ রেপ’ নামে নতুন এক বিকৃত যৌনাচারের কথা সাম্প্রতিককালে প্রায়ই গণমাধ্যমে আসছে। মূলত সমকামী নারীদের সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করে তাঁর মধ্যে ‘নারীত্ব’ দেওয়ার চেষ্টা কিংবা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ জাগানোর চেষ্টাই হচ্ছে সংশোধনমূলক ধর্ষণ বা কারেকটিভ রেপ! এর ফলাফল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যু। 

অনার কিলিং
সামাজিক সম্মান রক্ষার অজুহাতে কোনো পরিবারের সদস্যের হাতে নারী খুন হওয়ার ঘটনাকে বলে অনার কিলিং ফেমিসাইড। অনার কিলিংয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারীকে তাঁর সতীত্ব ধরে রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে হত্যা করা হয়। এসব ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্যের বিষয়টিই প্রকট হয়।

ভারতে প্রতি বছর ঠিক কত মেয়ে অনার কিলিংয়ের শিকার হয় তার সঠিক হিসাব নেই। তবে ধারণা করা হয়, প্রায় ৯০০ মেয়ে প্রতি বছর এর শিকার। যেসব রাজ্যে এসব ঘটনা ঘটে তার মধ্যে হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ উল্লেখযোগ্য। পাকিস্তানে সরকারি হিসাবে বছরে ১ হাজার ২০০ টির মতো অনার কিলিংয়ের ঘটনা ঘটে। 

যৌতুকের জন্য ফেমিসাইড
বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বাইরে ইরান এবং অস্ট্রেলিয়াতেও প্রতি বছর ঘটছে যৌতুকের জন্য নারী হত্যার ঘটনা। তবে আশার কথা হচ্ছে, ভারতীয় উপমহাদেশে এর সংখ্যাটা দিন দিন কমছে। 

গবেষক, বিশ্লেষক এবং নারীবাদীদের মতে, ফেমিসাইডের মূল কারণ আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এবং কর্তৃত্বপরায়ণ দৃষ্টিভঙ্গি। একদিকে নারীর অধিকার এবং ক্ষমতায়নের জন্য সোচ্চার হচ্ছে পুরুষদের একাংশ, অন্যদিকে নারীর ক্ষমতায়নকেই আবার নিজেদের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ মনে করছে পুরুষদের আরেক অংশ। ফলে কারণে–অকারণে বেড়েই চলেছে নারীর প্রতি বিদ্বেষ। 

সত্তর দশকের নারীবাদী আন্দোলন। সংগৃহীতনারীহত্যা প্রসঙ্গটা দ্বিতীয় তরঙ্গের নারীবাদী আন্দোলনের সময়ও ইউরোপ–আমেরিকায় আলোচনায় ছিল। ফেমিসাইড শব্দটির আইনগত ও সমাজতাত্ত্বিক সংজ্ঞা দিয়েছিলেন ডায়না রাসেল। তিনি সে সংজ্ঞায় ‘উইমেন’ শব্দটি না লিখে ‘ফিমেল’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন মূলত পুরো স্ত্রীলিঙ্গ অর্থাৎ শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক সব বয়সের নারীকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। 

ফেমিসাইড সংক্রান্ত তাত্ত্বিক বিতর্কে নারীবাদীরা যে প্রশ্নটির মুখোমুখি হন সেটি হলো, হত্যা তো হত্যাই, সে ক্ষেত্রে ফেমিসাইডকে কেন আলাদা করে দেখা হবে? সত্তরের দশকের নারীবাদী আন্দোলনকারীরা মনে করেন, নারীহত্যা বা ফেমিসাইড হোমিসাইডের চেয়ে আলাদা। কেননা নারীহত্যা হচ্ছে সেই হত্যাকাণ্ড, যেখানে একজন নারী বা বালিকা বা নারী শিশুকে হত্যা করা হয় শুধু নারী বলে। আরও স্পষ্টভাবে বললে, নারীর লিঙ্গ পরিচয়ই এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। 

ডায়না রাসেলের সংজ্ঞা অনুযায়ী, নারীহত্যা হচ্ছে নারীর বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে পরিচালিত যে কোনো সহিংসতা, যার মধ্যে আছে সকল প্রকার যৌন নির্যাতন, হোক সেটা কথা দিয়ে বা শারীরিকভাবে। 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও নারীহত্যা আইন নিয়ে ভাবা উচিত বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। কেননা ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ৮০০ নারী স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যৌতুকের জন্য তাঁরা সহিংসতা বা হত্যার শিকার হন। অধিকাংশ ঘটনারই বিচার দূরের কথা, কোনো মামলাও হয় না। 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক নিবন্ধন খাতার তথ্য বলছে, বাংলাদেশে শুধু ঢাকায় ২০১৬ সালে ২৭ জন, ২০১৫ সালে ২৫ জন, ২০১৪ সালে ২২ জন, ২০১৩ সালে ৩০ জন, ২০১২ সালে ২৫ জন, ২০১১ সালে ২৬ জন এবং ২০১০ সালে ১৫ জন নারীকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ কারণে ঢাকায় যে হারে নারীরা হত্যার শিকার হয়েছেন, সে অনুপাতে সাজার হার খুব কম। একই সূত্রের তথ্য আরও জানাচ্ছে, ২০০২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নিষ্পত্তি হওয়া যৌতুকের জন্য হত্যা মামলার মাত্র ৩ শতাংশের সাজা হয়েছে। 

যেসব দেশে ফেমিসাইডের হার দিন দিন বাড়ছে সেসব দেশে এটি রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। তাই বাংলাদেশেও নারী হত্যার জন্য বিশেষ আইনে প্রণয়নের পাশাপাশি প্রচলিত আইনের সংশোধন এবং সংযোজন নিয়ে নতুন করে ভাবা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। 

সূত্র: 
ফেমিসাইড কানাডা ডট সিএ
ইউএনওডিসি
স্লাইডশেয়ার ডট নেট 
ইমতিয়াজ মাহমুদ, ফেমিসাইড বা নারীহত্যা প্রসঙ্গে, ফেমিসাইট ফ্যাক্টর ডট কম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
আসাদুজ্জামান, ঢাকায় যৌতুকের কারণে বছরে হত্যা ২২ নারী, প্রথম আলো, ২০ মে ২০১৯ 
পাকিস্তানে নারীকে পাথর নিক্ষেপ করে, মাথা থেঁতলে হত্যা, ডন, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত