ডেস্ক রিপোর্ট
আফগানিস্তান শুনলে প্রথমেই মনে আসে তালেবান শব্দটি। ক্ষয়ক্ষতির ভার বয়ে বেড়াচ্ছেন দেশটির নারীরা। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর নারীদের ওপর ২০টির বেশি লিখিত ও মৌখিক নির্দেশ জারি করা হয়েছে। কিন্তু এ বছর বিবিসির করা ১০০ নারীর তালিকায় আফগান দুই নারীকে স্থান দেওয়া হয়েছে। এই নারীদের মধ্যে একজন টেলিভিশন উপস্থাপিকা হোসাই আহমদজাই, অন্যজন উদ্বাস্তু অধিকারকর্মী সামিয়া তোরা।
হোসাই আহমদজাই
২০২১ সালের নভেম্বরে টিভি নাটকে নারীদের অভিনয় নিষিদ্ধ করা হয়। নারী সাংবাদিক ও উপস্থাপকদের ক্যামেরার সামনে মাথায় হিজাব পরার নির্দেশ দেওয়া হয়। হোসাই আহমদজাই তাঁর এক সাক্ষাৎকারে জানান, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর নির্দেশ মেনে হিজাব পরে তিনি শামশাদ স্টুডিওতে ক্যামেরার সামনে বসেন। কয়েক দিনের মাথায় তাঁর কর্মক্ষেত্রটি নারীশূন্য হয়ে যায়। তারপরও তিনি কিছুটা ভয় নিয়ে ক্যামেরার সামনে বসতে থাকেন নিয়মিত। সাক্ষাৎকার নেন তালেবান কর্মকর্তাদের। এই অভিজ্ঞতাকে পরাবাস্তব বলে আখ্যা দেন তিনি। হোসাই আহমদজাই তাঁর অন্যান্য সহকর্মীকে কাজে ফিরে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন।
সাত বছরের কর্মজীবনের শুরুর দিকটা যেমন ছিল, তা এক দিনেই পাল্টে গিয়েছিল হোসাইয়ের। বিগত সরকারের আমলে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের ক্যামেরার সামনে যে প্রশ্নগুলো করতে পারতেন, এখন তালেবান কর্মকর্তাদের তা করা সম্ভব নয়। হোসাই সামনাসামনি সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে দেখেছেন, তালেবান কর্মকর্তারা নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যান। অবনতিশীল যেকোনো ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁরা সাক্ষাৎকার বন্ধ করে দিয়ে চলে যেতে চান।
হোসাই আহমদজাই জানেন, আফগানরা নিজস্ব রক্ষণশীলতা থেকে বের হয়ে একজন নারীর কাজ করাকে স্বাভাবিক চোখে দেখেন না। নিকটাত্মীয়রা তাঁর অভিভাবকদের বলেছেন, আপনার মেয়ে কাজ করছে কেন? দরকার হলে আমরা তাকে বেতন দেব। এটা ঠিক নয়। আমাদের পারিবারিক সংস্কৃতি এটাকে অনুমতি দেয় না।
তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার আগেও হামলা হয়েছে হোসাইয়ের কর্মক্ষেত্রে। তিনি কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবলেও কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিকূলতা আর প্রতিবন্ধকতা নিয়েই। হোসাই আইন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেছেন। ২০১৬ সাল থেকে উপস্থাপনা, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, সংবাদ প্রতিবেদন এবং নারী অধিকারের পক্ষে প্রচারিত অনুষ্ঠানসহ বেশ কিছু অনুষ্ঠানে কাজ করেছেন তিনি।
সামিয়া তোরা
সংঘাত আর সহিংসতা দেখে বড় হওয়া আফগান তরুণী সামিয়া তোরা। নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানে তালেবানদের উত্থানের পর তাঁর পরিবার পাকিস্তানে চলে যায়। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পেশোয়ারে, যেখানে সামিয়া থাকতেন, সেখানে থাকত আরও চারটি পরিবার। যে বাড়িতে সামিয়া থাকতেন, সেখানে তাঁদের ছিল একটিমাত্র শোয়ার ঘর।
২০০৪ সাল থেকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর দিয়ে হাজার হাজার ড্রোন উড়ে গেছে। ড্রোন আর বোমার শব্দ তাঁদের কাছে একটা সময় খুব স্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সামিয়া বলেন, ‘আমি সংঘাত-সহিংসতার মধ্যেই বড় হয়েছি। কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না।’
একটা সময় পাকিস্তানকেই সামিয়ার ভালো লাগত। কারণ, সেখানে তিনি স্কুলে লেখাপড়া করতে পারতেন। ২০০২ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন হামলা শুরু হওয়ার পর সামিয়া পরিবারের সঙ্গে কাবুলে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, মন দিয়ে না পড়লে কোনোভাবেই তাঁর পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় নেই। ২২ বছর বয়সী সামিয়া প্রথম আফগান হিসেবে বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক রোডস স্কলারশিপ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি নিতে যান।
সামিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের আর্লহ্যাম কলেজে পড়ছেন। ২০২১, অর্থাৎ তালেবান যখন আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করে, সে বছরই সামিয়া তৈরি করেন ফ্রেন্ডশিপ নেটওয়ার্ক অর্গানাইজেশন নামের একটি সংগঠন। আফগানিস্তান ও এর বাইরে উদ্বাস্তু হিসেবে বসবাসকারী আফগানদের জরুরি সেবা ও তথ্য সরবরাহ করাই ছিল তাঁদের কাজ। সামিয়ার ফ্রেন্ডশিপ নেটওয়ার্ক অর্গানাইজেশনের লক্ষ্যই হলো উদ্বাস্তু পুনর্বাসন ও সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া। তিনি জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, দ্য মালালা ফাউন্ডেশন এবং সেভ দ্য চিলড্রেন ফাউন্ডেশনের মতো সংগঠনের সঙ্গে জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্বাস্তু নারী ও মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিতে কাজ করেন।
আফগানিস্তান শুনলে প্রথমেই মনে আসে তালেবান শব্দটি। ক্ষয়ক্ষতির ভার বয়ে বেড়াচ্ছেন দেশটির নারীরা। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর নারীদের ওপর ২০টির বেশি লিখিত ও মৌখিক নির্দেশ জারি করা হয়েছে। কিন্তু এ বছর বিবিসির করা ১০০ নারীর তালিকায় আফগান দুই নারীকে স্থান দেওয়া হয়েছে। এই নারীদের মধ্যে একজন টেলিভিশন উপস্থাপিকা হোসাই আহমদজাই, অন্যজন উদ্বাস্তু অধিকারকর্মী সামিয়া তোরা।
হোসাই আহমদজাই
২০২১ সালের নভেম্বরে টিভি নাটকে নারীদের অভিনয় নিষিদ্ধ করা হয়। নারী সাংবাদিক ও উপস্থাপকদের ক্যামেরার সামনে মাথায় হিজাব পরার নির্দেশ দেওয়া হয়। হোসাই আহমদজাই তাঁর এক সাক্ষাৎকারে জানান, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর নির্দেশ মেনে হিজাব পরে তিনি শামশাদ স্টুডিওতে ক্যামেরার সামনে বসেন। কয়েক দিনের মাথায় তাঁর কর্মক্ষেত্রটি নারীশূন্য হয়ে যায়। তারপরও তিনি কিছুটা ভয় নিয়ে ক্যামেরার সামনে বসতে থাকেন নিয়মিত। সাক্ষাৎকার নেন তালেবান কর্মকর্তাদের। এই অভিজ্ঞতাকে পরাবাস্তব বলে আখ্যা দেন তিনি। হোসাই আহমদজাই তাঁর অন্যান্য সহকর্মীকে কাজে ফিরে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন।
সাত বছরের কর্মজীবনের শুরুর দিকটা যেমন ছিল, তা এক দিনেই পাল্টে গিয়েছিল হোসাইয়ের। বিগত সরকারের আমলে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের ক্যামেরার সামনে যে প্রশ্নগুলো করতে পারতেন, এখন তালেবান কর্মকর্তাদের তা করা সম্ভব নয়। হোসাই সামনাসামনি সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে দেখেছেন, তালেবান কর্মকর্তারা নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যান। অবনতিশীল যেকোনো ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁরা সাক্ষাৎকার বন্ধ করে দিয়ে চলে যেতে চান।
হোসাই আহমদজাই জানেন, আফগানরা নিজস্ব রক্ষণশীলতা থেকে বের হয়ে একজন নারীর কাজ করাকে স্বাভাবিক চোখে দেখেন না। নিকটাত্মীয়রা তাঁর অভিভাবকদের বলেছেন, আপনার মেয়ে কাজ করছে কেন? দরকার হলে আমরা তাকে বেতন দেব। এটা ঠিক নয়। আমাদের পারিবারিক সংস্কৃতি এটাকে অনুমতি দেয় না।
তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার আগেও হামলা হয়েছে হোসাইয়ের কর্মক্ষেত্রে। তিনি কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবলেও কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিকূলতা আর প্রতিবন্ধকতা নিয়েই। হোসাই আইন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেছেন। ২০১৬ সাল থেকে উপস্থাপনা, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, সংবাদ প্রতিবেদন এবং নারী অধিকারের পক্ষে প্রচারিত অনুষ্ঠানসহ বেশ কিছু অনুষ্ঠানে কাজ করেছেন তিনি।
সামিয়া তোরা
সংঘাত আর সহিংসতা দেখে বড় হওয়া আফগান তরুণী সামিয়া তোরা। নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানে তালেবানদের উত্থানের পর তাঁর পরিবার পাকিস্তানে চলে যায়। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পেশোয়ারে, যেখানে সামিয়া থাকতেন, সেখানে থাকত আরও চারটি পরিবার। যে বাড়িতে সামিয়া থাকতেন, সেখানে তাঁদের ছিল একটিমাত্র শোয়ার ঘর।
২০০৪ সাল থেকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর দিয়ে হাজার হাজার ড্রোন উড়ে গেছে। ড্রোন আর বোমার শব্দ তাঁদের কাছে একটা সময় খুব স্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সামিয়া বলেন, ‘আমি সংঘাত-সহিংসতার মধ্যেই বড় হয়েছি। কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না।’
একটা সময় পাকিস্তানকেই সামিয়ার ভালো লাগত। কারণ, সেখানে তিনি স্কুলে লেখাপড়া করতে পারতেন। ২০০২ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন হামলা শুরু হওয়ার পর সামিয়া পরিবারের সঙ্গে কাবুলে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, মন দিয়ে না পড়লে কোনোভাবেই তাঁর পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় নেই। ২২ বছর বয়সী সামিয়া প্রথম আফগান হিসেবে বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক রোডস স্কলারশিপ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি নিতে যান।
সামিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের আর্লহ্যাম কলেজে পড়ছেন। ২০২১, অর্থাৎ তালেবান যখন আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করে, সে বছরই সামিয়া তৈরি করেন ফ্রেন্ডশিপ নেটওয়ার্ক অর্গানাইজেশন নামের একটি সংগঠন। আফগানিস্তান ও এর বাইরে উদ্বাস্তু হিসেবে বসবাসকারী আফগানদের জরুরি সেবা ও তথ্য সরবরাহ করাই ছিল তাঁদের কাজ। সামিয়ার ফ্রেন্ডশিপ নেটওয়ার্ক অর্গানাইজেশনের লক্ষ্যই হলো উদ্বাস্তু পুনর্বাসন ও সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া। তিনি জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, দ্য মালালা ফাউন্ডেশন এবং সেভ দ্য চিলড্রেন ফাউন্ডেশনের মতো সংগঠনের সঙ্গে জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্বাস্তু নারী ও মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিতে কাজ করেন।
বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকারের জন্য অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করেছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন
৩ দিন আগেপ্রতিবন্ধী নারীদের জন্য সহজলভ্য ও নিরাপদ স্যানিটারি পণ্য উদ্ভাবনে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মিলনায়তনে আয়োজিত ‘প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য স্যানিটারি পণ্য উদ্ভাবন’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁরা
৫ দিন আগেনারীর সংজ্ঞা জৈবিক লিঙ্গের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে বলে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট। ট্রান্সজেন্ডারদের লৈঙ্গিকভিত্তিক সুরক্ষার আবেদন খারিজ করে আদালত জানিয়েছেন, লিঙ্গ একটি দ্বৈত ধারণা—নারী অথবা পুরুষ। তবে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা বিদ্যমান আইনে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সুরক্ষা পান।
৬ দিন আগেমধ্যবিত্ত এক পরিবারে বেড়ে ওঠা মানুষের গন্তব্য লেখাপড়া শেষ করে চাকরি পাওয়া। তারপর নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া। কিন্তু কখনো কখনো কিছু মানুষ এই বৃত্ত ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। সে এক বিশাল লড়াই। তেমনই লড়াই করে চলেছেন এক তরুণ উদ্যোক্তা ইফ্ফাত আলম জেসিকা। নিজের তো বটেই, কর্মসংস্থান করেছেন আরও প্রায় ৩২ জন নারীর।
৬ দিন আগে