Ajker Patrika

দুর্বার ইয়ানা জিনকেভিচ

ফিচার ডেস্ক  
দুর্বার ইয়ানা জিনকেভিচ

যুদ্ধবিধ্বস্ত সেনাদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিজের জীবন বিপন্ন করে হুইলচেয়ারকে করেছেন সঙ্গী। মাত্র ২৪ বছর বয়সে তাঁর জীবন নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে চলচ্চিত্র। আর ২৭ বছর বয়সে জায়গা করে নিয়েছেন বিবিসির ক্ষমতাশালী ১০০ নারীর তালিকায়। সমুদ্রের বিশালতার সঙ্গে তাঁকে তুলনা করা হয়। নাম তাঁর ইয়ানা জিনকেভিচ। নিবাস ইউক্রেন।  

সালটা ২০১৪। উনিশ বছর বয়সী জিনকেভিচ তখন লভিভ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মেডিকেল ফ্যাকাল্টিতে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু সে বছরের বসন্তে ইউক্রেনের দনবাসে যুদ্ধের সূত্রপাত তাঁর জীবন বদলে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চিন্তা ছেড়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন হসপিটালিয়ারি মেডিকেল স্বেচ্ছাসেবক ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করার।

এটি পরে ভলান্টিয়ার ইউক্রেনীয় কর্পসের অংশ হয়ে ওঠে। ২০১৪-১৫ সালের দিকে দনবাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বেশ ভয়ংকর রূপ নেয়। সে সময়টাতেই জিনকেভিচ ও তাঁর সহকর্মীরা নিজেদের সংগঠন হসপিটালিয়ারি থেকে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনা ও স্বেচ্ছাসেবক যোদ্ধাকে চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতা দিয়েছিলেন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের বিপজ্জনক জায়গা ইলোভাইস্ক, শাইরোকাইন, দেবল্টসেভ, পিস্কি ও ডোনেটস্ক বিমানবন্দরের মতো জায়গাগুলোতেও ছিল হসপিটালিয়ারির সাহসী উপস্থিতি। জিনকেভিচ নিজেই সামনের সারিতে থেকে বাঁচিয়েছিলেন ২০০ জনের জীবন। মেডিকেল সার্টিফিকেট না থাকলেও তিনি অপারেশন করা শিখেছিলেন।  

২০১৫ সালের ডিসেম্বর। জীবন জিনকেভিচের দিকে ছুড়ে দেয় আরও একটি চ্যালেঞ্জ। ভয়ানক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও মেরুদণ্ড, পাঁজর আর অভ্যন্তরীণ শারীরিক আঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি। দুই মাস ধরে চিকিৎসকেরা তাঁর মেরুদণ্ডের ভাঙা টুকরা হাড় মেরামতের কাজ করেন। গাড়ি দুর্ঘটনার এক মাস পরে জিনকেভিচ জানতে পারেন, তিনি গর্ভবতী ছিলেন। চিকিৎসকদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তিনি সেই শিশুকে বহন করেন নিজের মধ্যে। অবশেষে ৩১ অক্টোবর তিনি একটি মেয়েশিশুর জন্ম দেন। সেই শিশুর নাম রাখা হয় বোগদানা। যার অর্থ ‘ঈশ্বরের দান’। দুর্ঘটনার পর থেকে ইয়ানা জিনকেভিচ হুইলচেয়ারে চলাচল করেন। কিন্তু হসপিটালিয়ারি ব্যাটালিয়ন পরিচালনার কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেননি।

২০২২ সালে বিবিসির করা ১০০ সেরা ক্ষমতাশালী নারীর তালিকায় যুক্ত হয় ইয়ানা জিনকেভিচের নাম। এ ছাড়া বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। তাঁর জীবন নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘ওয়ার মাদার্স: আনব্রেইকেবল’ মুক্তি পায় ২০১৯ সালে। পশ্চিম ইউক্রেনের শহর রিভনেতে ১৯৯৫ সালের ২ জুন জন্মেছিলেন ইয়ানা জিনকেভিচ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত