Ajker Patrika

এসএমই মেলায় স্বপ্নবান নারী উদ্যোক্তারা

মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫: ৪৯
Thumbnail image

তাঁদের কেউ কেউ প্রতিদিন ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করেন। একই সঙ্গে সামলান পরিবার আর কর্মক্ষেত্র। সমান তালে সাজিয়ে তোলেন সহকর্মীদের স্বপ্নসৌধ। আপনার চারদিক যখন হতাশা আর ‘নেই নেই’ চিৎকারে ভরে আছে, তখন তাঁরা স্বপ্ন দেখছেন সফল হওয়ার। যখন আপনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যাপক ‘ফানে’ মজে আওড়ে চলেছেন গালগল্প, তখন তাঁরা সাজিয়ে চলেছেন পরিবার-সন্তান-সহকর্মীর ভবিষ্যৎ। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গেলে এমন দৃশ্যই এখন চোখে পড়বে আপনার।

মেলায় সুঁই-সুতার কাজ করছেন ইলোরারাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসএমই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শুরু হয়েছে দশম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের পণ্য বিপণনের জন্য প্রতিবছর এসএমই ফাউন্ডেশন এই মেলার আয়োজন করে। মেলায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলার উদ্যোক্তারা অংশ নেন। সে উদ্যোক্তাদের গল্প জানতে এক দুপুরে হাজির হই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।

মেলায় সিল্কের শাড়ি বুনছেন যশোরের সোহেলী শারমিনমেলায় ঘুরতে ঘুরতে কথা হয় ঢাকার বাইরে থেকে আসা কয়েকজন নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে। তাঁদের চোখমুখে ঝিলিক দিয়ে উঠছে সফল হওয়ার স্বপ্ন। এঁদের কেউ প্রথমবারের মতো মেলায় এসেছেন। বিক্রির ফাঁকে তাঁরা কথা বলছেন দেশের অন্য প্রান্ত থেকে আসা নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। বিনিময় হচ্ছে অভিজ্ঞতা। এতে একজনের সাহস ও প্রতিজ্ঞা ছড়িয়ে যাচ্ছে অন্যজনের মধ্যে। এ যেন ‘এনার্জি পাসিং গেম’, একান্তই নারীদের।

মেলায় হাঁটতে হাঁটতে চোখ আটকে গেল ইলোরা পারভিনের বৈচিত্র্যময় স্টলে। তিনি এসেছেন নড়াইল থেকে। বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের নিকটতম আত্মীয় তিনি। ইলোরা সুই-সুতা দিয়ে তৈরি করেছেন পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের প্রতিকৃতি। তাঁর বয়স যখন ৮ থেকে ১০ বছর, তখন তিনি তাঁর কাকু বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ছবি আঁকা দেখতেন। সে সময় তাঁর মনে কৌতূহল জাগে। তা থেকে সূচিশিল্পের প্রতি আগ্রহ বাড়ে ইলোরার। গতবারের এসএমই মেলায় তিনি সেরা উদ্যোক্তা হিসেবে বিজয়ী হন। নিজের প্রাপ্তি নিয়ে ইলোরা বলেন, ‘কাজ করে যাও। খ্যাতি নিজে থেকে আসবে। আমি প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করি। জাদুঘর আমার ছবি কিনেছে। এটা আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া। বাংলা একাডেমি থেকে ১০০ গুণী শিল্পীর বই প্রকাশিত হবে। সে ১০০ জনের মধ্যে আমি একজন।’

মেলায় নিজের তৈরি গহনা বিক্রি করছেন মিলিশ্রীমঙ্গল থেকে এসেছেন বৃষ্টি। বিভিন্নভাবে অসহায় হয়ে যাওয়া নারীদের নিয়ে কাজ করেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০ জন নারী কাজ করছেন। বৃষ্টি জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতার সারমর্ম। বললেন, ‘আমাদের দেশের নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া প্রয়োজন। এতে সংসারের জন্য ভালো হয়। কারণ, বেশির ভাগ নারী অর্থের জন্য পুরুষদের ওপর নির্ভরশীল। এতে সংসারে একজনের ওপর চাপ পড়ে বেশি।’

 মেলায় ক্রেতাদের ভিড়একটি সেলাই মেশিন দিয়ে শুরু করেছিলেন নিজের স্বপ্ন পূরণের কাজ। ধীরে ধীরে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। তাঁর নাম নীলাঞ্জনা, এসেছেন রাজশাহী থেকে। খুলনার মেয়ে সাবিনা। মেলায় প্রথমবারের মতো এসেছেন। জানালেন, একসঙ্গে অনেক নারী উদ্যোক্তা দেখে তাঁর ভালো লাগছে। সাবিনার সঙ্গে কাজ করেন প্রায় ৩৫০ জন নারী কর্মী। সবার স্বপ্ন পূরণের ভার যেন একা সাবিনার ওপর!

কক্সবাজার থেকে প্রথম এসেছেন ফাতেমা। তাঁর ‘বন্ধুতা’ স্টল থেকে একখানা শাড়ি চলে গেছে সুদূর আমেরিকায়। এতে ভীষণ খুশি ফাতেমা। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের খারাপ সময় শুরু হলে নিজেই কিছু একটা করার কথা ভাবেন তিনি। মাত্র ১ হাজার ৩০০  টাকা নিয়ে শুরু করেন ‘বন্ধুতা’র কাজ।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত