বিভুরঞ্জন সরকার
বিড়াল যে আমার খুব পছন্দের তা নয়। তবে বিড়াল ভালোবাসেন—এমন কিছু মানুষ আমার পছন্দের। যেমন সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। অগ্নিকন্যা বলে খ্যাতি পেলেও তাঁর মনটা আসলে দরদে ভরা। তিনি অনেক আগে থেকেই বিড়াল পোষেন, সন্তানতুল্য আদরযত্ন করেন বিড়ালদের। মতিয়া আপা যখন ন্যাপ করতেন, থাকতেন সিদ্দিকবাজারের বাসায়, তখন বজলু ভাইয়ের (বজলুর রহমান, দৈনিক সংবাদের প্রয়াত সাবেক সম্পাদক এবং মতিয়া আপার স্বামী) সঙ্গে দেখা করতে যেতাম মূলত মতিয়া আপার বিড়ালের আকর্ষণে।
প্রাণীপ্রেমীদের আমি পছন্দ করি। তাদের আমার জীবশ্রেষ্ঠ বলে মনে হয়। কারণ, ‘জীবে দয়া করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’। নিজে ঈশ্বরপ্রেমী হতে না পারার দুঃখ ভুলি অন্য ঈশ্বরপ্রেমীদের দেখে।
হঠাৎ করেই বিড়ালের প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেছে বেশ পরিমাণে। কারণ, প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট স্থানে দেখতে হচ্ছে একটি মা বিড়াল এবং তার চার ছানাকে। আমার উপস্থিতিও ওরা টের পায়। কখনো মা ও শিশুরা আমার আগমনকে যেন স্বাগত জানিয়ে ছোটাছুটি করে। কখনো-বা পিটপিট করে চেয়ে থাকে। আহা, বিড়ালের চোখেও এত মায়া ছড়ানো!
একবার একটি মেয়েকে আমার ভালো লেগেছিল। কালো মেয়ে, এবং কাজল কালো চোখ। কিন্তু ওর চোখের মণি দুটো জ্বলজ্বল করে জ্বলত। লোকে বলত বিড়াল চোখ। ওই চোখ আমাকে টানত। তাই এটা বলাই হয়তো ভালো যে, আমি যতটা না মেয়েটির, তারচেয়ে বেশি ওর চোখের প্রেমে পড়েছিলাম। একতরফা প্রেম, তাই টেকেনি। ওর চোখ আমার ভালো লাগলেও আমার কিছুই ভালো লাগেনি মেয়েটির।
বিড়ালেই ফিরি। সময় পেলেই আমি বিড়ালগুলোকে দেখি। বিশেষ করে মা যখন চার ছানাকে একসঙ্গে বুকের দুধ খাওয়ায়, তখনকার দৃশ্যটি অসাধারণ। সন্তানের জন্য মায়ের দরদ। কারও জন্য কম নয়, কারও জন্য বেশি নয়। এমন মমতা ভাগ কি মানুষ করতে পারে! আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওদের কাণ্ডকারখানা দেখি বলে ওরাও দু-একবার আমার রুমে এসে ঢুঁ মেরে যায়।
বিড়াল নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও কবিতা লিখেছেন: ‘আমি আজ কানাই মাস্টার, পড়ো মোর বিড়াল ছানাটি। আমি ওকে মারি না মা বেত, মিছিমিছি বসি নিয়ে কাঠি’—পড়েছেন নিশ্চয়ই আপনিও। এ ছাড়া বিড়াল নিয়ে আরও অনেকে মজার মজার শিশুতোষ ছড়া লিখেছেন।
‘কালো বিড়াল কে পোষে পাড়ায়’—গানটি আমার খুব প্রিয়। বিড়াল নিয়ে অনেক গান-কবিতা-ছড়া আছে। বিড়ালের কত আদুরে নাম—মিনি, পুষি ইত্যাদি।
একটি কবিতার কয়েক লাইন—
‘এক আকাশ অন্ধকার মাথায় নিয়ে বসে আছে একটা কালো বিড়াল,
চারদিকে গা ছমছমে নীরবতা আর হাড় হিম করা অন্ধকার।
সেই কবে থেকে বসে আছে বিড়ালটা—’
বিড়াল বিষয়ে আমার জানা তথ্যগুলো সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই।
*প্রায় সাড়ে ৯ হাজার বছর ধরে বিড়াল গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে পরিচিত। এরা মানুষকে সঙ্গ দেওয়া এবং বাসাবাড়ির বিভিন্ন পোকামাকড় ও ইঁদুর নিধনে পারদর্শী বলে জনপ্রিয়।
*বিড়াল খুবই আরামপ্রিয়। বাংলাদেশে বিড়ালকে ‘বাঘের মাসি’ও বলা হয়। ইঁদুর মারার জন্য অনেকে পোষে। আবার সহজে পোষ মানে বলেও পোষে। ইঁদুর যেমন পোকামাকড় খায় তেমনি দুধ, মাছও খায়।
*বিড়ালের পায়ের নিচে নরম মাংসপিণ্ড থাকায় নিঃশব্দে চলাচল করতে পারে। গোপন অভিসারে যাওয়ার সময় কেউ পা টিপে হাঁটলে তাই ‘বিড়াল পায়ে হাঁটা’ বলা হয়।
*বিড়ালের চোখ পিঙ্গল। দৃষ্টিশক্তি মানুষের তুলনায় তীক্ষ্ণ। মানুষের চোখের নজর প্রখর হলে তাই ‘বিড়ালদৃষ্টি’ বলা হয়। নিশাচর বলে এরা রাতের চেয়ে দিনে কম দেখে।
*বিড়াল নিয়ে দেশে দেশে নানা সংস্কার-কুসংস্কারও কম নেই। বাংলাদেশে কালো বিড়ালকে অশুভ হিসেবে দেখে থাকেন কেউ কেউ।
*মিসরে বিড়াল দেবীরূপে পূজিত। সে দেশে একসময় বিড়াল মারা ছিল গুরুতর অপরাধ। শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড!
*জাপানিরা মনে করেন, মুমূর্ষু মানুষের কাছে বিড়াল ঘুরলে নাকি ওই মানুষটির আত্মা নিজের মধ্যে টেনে নিয়ে সে ‘ভ্যামপায়ার’ হয়ে যায়! ভূত-প্রেতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে জীবন্ত বিড়ালকে বাড়ির দেয়ালে গেঁথে দেওয়ার রীতি ছিল জাপানিদের মধ্যে।
*স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেবী ফ্লেজারের রথের সারথি ছিল বিড়াল।
*আইরিশরা ‘তৃতীয় নয়ন’ লাভের আশায় জীবন্ত বিড়ালের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিত।
একটি সতর্কতা: বিড়ালের লোম বা পশম নাকে মুখে পেটে গেলে নাকি হাঁপানি হয়!
এত যার ঐতিহ্য, সেই বিড়াল থেকে চোখ সরিয়ে রাখি কীভাবে! কিন্তু মনে একটা ভয়ও শিরশির করছে। আমার এই আকস্মিক বিড়াল-প্রেমের কথা পাঁচ কান হলে গৃহদাহের কারণ হবে না তো!
বিড়াল যে আমার খুব পছন্দের তা নয়। তবে বিড়াল ভালোবাসেন—এমন কিছু মানুষ আমার পছন্দের। যেমন সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। অগ্নিকন্যা বলে খ্যাতি পেলেও তাঁর মনটা আসলে দরদে ভরা। তিনি অনেক আগে থেকেই বিড়াল পোষেন, সন্তানতুল্য আদরযত্ন করেন বিড়ালদের। মতিয়া আপা যখন ন্যাপ করতেন, থাকতেন সিদ্দিকবাজারের বাসায়, তখন বজলু ভাইয়ের (বজলুর রহমান, দৈনিক সংবাদের প্রয়াত সাবেক সম্পাদক এবং মতিয়া আপার স্বামী) সঙ্গে দেখা করতে যেতাম মূলত মতিয়া আপার বিড়ালের আকর্ষণে।
প্রাণীপ্রেমীদের আমি পছন্দ করি। তাদের আমার জীবশ্রেষ্ঠ বলে মনে হয়। কারণ, ‘জীবে দয়া করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’। নিজে ঈশ্বরপ্রেমী হতে না পারার দুঃখ ভুলি অন্য ঈশ্বরপ্রেমীদের দেখে।
হঠাৎ করেই বিড়ালের প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেছে বেশ পরিমাণে। কারণ, প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট স্থানে দেখতে হচ্ছে একটি মা বিড়াল এবং তার চার ছানাকে। আমার উপস্থিতিও ওরা টের পায়। কখনো মা ও শিশুরা আমার আগমনকে যেন স্বাগত জানিয়ে ছোটাছুটি করে। কখনো-বা পিটপিট করে চেয়ে থাকে। আহা, বিড়ালের চোখেও এত মায়া ছড়ানো!
একবার একটি মেয়েকে আমার ভালো লেগেছিল। কালো মেয়ে, এবং কাজল কালো চোখ। কিন্তু ওর চোখের মণি দুটো জ্বলজ্বল করে জ্বলত। লোকে বলত বিড়াল চোখ। ওই চোখ আমাকে টানত। তাই এটা বলাই হয়তো ভালো যে, আমি যতটা না মেয়েটির, তারচেয়ে বেশি ওর চোখের প্রেমে পড়েছিলাম। একতরফা প্রেম, তাই টেকেনি। ওর চোখ আমার ভালো লাগলেও আমার কিছুই ভালো লাগেনি মেয়েটির।
বিড়ালেই ফিরি। সময় পেলেই আমি বিড়ালগুলোকে দেখি। বিশেষ করে মা যখন চার ছানাকে একসঙ্গে বুকের দুধ খাওয়ায়, তখনকার দৃশ্যটি অসাধারণ। সন্তানের জন্য মায়ের দরদ। কারও জন্য কম নয়, কারও জন্য বেশি নয়। এমন মমতা ভাগ কি মানুষ করতে পারে! আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওদের কাণ্ডকারখানা দেখি বলে ওরাও দু-একবার আমার রুমে এসে ঢুঁ মেরে যায়।
বিড়াল নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও কবিতা লিখেছেন: ‘আমি আজ কানাই মাস্টার, পড়ো মোর বিড়াল ছানাটি। আমি ওকে মারি না মা বেত, মিছিমিছি বসি নিয়ে কাঠি’—পড়েছেন নিশ্চয়ই আপনিও। এ ছাড়া বিড়াল নিয়ে আরও অনেকে মজার মজার শিশুতোষ ছড়া লিখেছেন।
‘কালো বিড়াল কে পোষে পাড়ায়’—গানটি আমার খুব প্রিয়। বিড়াল নিয়ে অনেক গান-কবিতা-ছড়া আছে। বিড়ালের কত আদুরে নাম—মিনি, পুষি ইত্যাদি।
একটি কবিতার কয়েক লাইন—
‘এক আকাশ অন্ধকার মাথায় নিয়ে বসে আছে একটা কালো বিড়াল,
চারদিকে গা ছমছমে নীরবতা আর হাড় হিম করা অন্ধকার।
সেই কবে থেকে বসে আছে বিড়ালটা—’
বিড়াল বিষয়ে আমার জানা তথ্যগুলো সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই।
*প্রায় সাড়ে ৯ হাজার বছর ধরে বিড়াল গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে পরিচিত। এরা মানুষকে সঙ্গ দেওয়া এবং বাসাবাড়ির বিভিন্ন পোকামাকড় ও ইঁদুর নিধনে পারদর্শী বলে জনপ্রিয়।
*বিড়াল খুবই আরামপ্রিয়। বাংলাদেশে বিড়ালকে ‘বাঘের মাসি’ও বলা হয়। ইঁদুর মারার জন্য অনেকে পোষে। আবার সহজে পোষ মানে বলেও পোষে। ইঁদুর যেমন পোকামাকড় খায় তেমনি দুধ, মাছও খায়।
*বিড়ালের পায়ের নিচে নরম মাংসপিণ্ড থাকায় নিঃশব্দে চলাচল করতে পারে। গোপন অভিসারে যাওয়ার সময় কেউ পা টিপে হাঁটলে তাই ‘বিড়াল পায়ে হাঁটা’ বলা হয়।
*বিড়ালের চোখ পিঙ্গল। দৃষ্টিশক্তি মানুষের তুলনায় তীক্ষ্ণ। মানুষের চোখের নজর প্রখর হলে তাই ‘বিড়ালদৃষ্টি’ বলা হয়। নিশাচর বলে এরা রাতের চেয়ে দিনে কম দেখে।
*বিড়াল নিয়ে দেশে দেশে নানা সংস্কার-কুসংস্কারও কম নেই। বাংলাদেশে কালো বিড়ালকে অশুভ হিসেবে দেখে থাকেন কেউ কেউ।
*মিসরে বিড়াল দেবীরূপে পূজিত। সে দেশে একসময় বিড়াল মারা ছিল গুরুতর অপরাধ। শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড!
*জাপানিরা মনে করেন, মুমূর্ষু মানুষের কাছে বিড়াল ঘুরলে নাকি ওই মানুষটির আত্মা নিজের মধ্যে টেনে নিয়ে সে ‘ভ্যামপায়ার’ হয়ে যায়! ভূত-প্রেতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে জীবন্ত বিড়ালকে বাড়ির দেয়ালে গেঁথে দেওয়ার রীতি ছিল জাপানিদের মধ্যে।
*স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেবী ফ্লেজারের রথের সারথি ছিল বিড়াল।
*আইরিশরা ‘তৃতীয় নয়ন’ লাভের আশায় জীবন্ত বিড়ালের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিত।
একটি সতর্কতা: বিড়ালের লোম বা পশম নাকে মুখে পেটে গেলে নাকি হাঁপানি হয়!
এত যার ঐতিহ্য, সেই বিড়াল থেকে চোখ সরিয়ে রাখি কীভাবে! কিন্তু মনে একটা ভয়ও শিরশির করছে। আমার এই আকস্মিক বিড়াল-প্রেমের কথা পাঁচ কান হলে গৃহদাহের কারণ হবে না তো!
সময়টা ১৮৫৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরের সকাল। এক সুসজ্জিত ব্যক্তি সান ফ্রান্সিসকোর ‘দ্য সান ফ্রান্সিসকো ইভনিং বুলেটিনের’ কার্যালয়ে প্রবেশ করে একটি ঘোষণাপত্র জমা দেন, যেখানে নিজেকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সম্রাট’ বলে ঘোষণা করেন। ওই ব্যক্তি ছিলেন জোশুয়া নর্টন।
১ দিন আগেআজ ফোর টুয়েন্টি (৪২০) দিবস। সংখ্যাটা পড়েই ভাবছেন প্রতারকদের দিবস আজ? না না। এই ফোর টুয়েন্টি সেই ফোর টুয়েন্টি নয়। পশ্চিমা বিশ্বে এই সংখ্যা গাঁজা সংস্কৃতির কোড ভাষা।
৩ দিন আগেসাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ ও এশিয়ায় বিপুল পরিমাণে পাচার হচ্ছে বড় আকারের লাখ লাখ পিঁপড়া। ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোতে এসব পিঁপড়া পোষা প্রাণী হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আফ্রিকার দেশ কেনিয়া থেকে সম্প্রতি হাজার হাজার জীবন্ত পিঁপড়া পাচারকালে ৪ চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।
৭ দিন আগেগত বছর একটি রাতের অনুষ্ঠানে এক ভ্লগারের ক্যামেরায় অপ্রত্যাশিত এবং অশালীন মন্তব্য করে রাতারাতি ভাইরাল হন হেইলি ওয়েলচ। দ্রুতই ‘হক তুয়াহ’ নামে খ্যাতি পান তিনি। সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন এই তরুণী। তিনি জানিয়েছেন, নিজের নামে চালু করা বিতর্কিত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে...
৯ দিন আগে