Ajker Patrika

সার্কাস থেকে পালিয়ে সিংহ ঘুরে বেড়াচ্ছিল শহরে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২: ১৫
Thumbnail image

শহরের রাস্তায় যদি হঠাৎ একটি সিংহ ঘুরে বেড়াতে দেখেন, কী অবস্থা হবে বলুন তো! বাস্তবেই এমন ধরনের এক ঘটনা ঘটেছে ইউরোপের দেশ ইতালিতে। সেখানকার সাগরঘেঁষা এক শহরে শনিবার স্থানীয় একটি সার্কাস থেকে পালিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছিল একটি সিংহ। 

রোমের কাছের এই শহরের নাম লাদিসপলি। সেখানকার মেয়র আলেসান্দ্রো গ্র্যান্দো পুলিশ ও সার্কাসের কর্মীরা সিংহটিকে ধরার আগে পর্যন্ত শহরের বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে সিংহটিকে বন্দী করা হয়। এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে। 

ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যমে আসা স্থানীয়দের করা ভিডিওতে পূর্ণবয়স্ক সিংহটিকে অন্ধকার ও জনমানবহীন বিভিন্ন রাস্তায় হেঁটে বেড়াতে দেখা যায়। 

যে সার্কাস থেকে সিংহটি পালিয়েছে, সেই রনি রোলার সার্কাসের বন্যপ্রাণী দেখভালের দায়িত্বে আছেন রনি ভ্যাসালো। তিনি বলেন, একটি সিংহের মুখোমুখি হয়ে যাওয়ার চিন্তাটা বেশির ভাগ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়ালেও কিমবা নামের আট বছর বয়স্ক সিংহটি থেকে বিপদের আশঙ্কা ছিল একেবারেই কম। 

‘এমন একটি পরিবেশে লোকেদের সঙ্গে সিংহটির দেখা হয়েছিল, যার সঙ্গে সে অভ্যস্ত ছিল না...তবে কিছুই ঘটেনি। এক সেকেন্ডের জন্যও কাউকে আক্রমণ করার প্রবৃত্তি দেখা যায়নি তার মধ্যে।’ সার্কাসের এলাকায় বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন রনি ভ্যাসালো। তিনি বলেন, তাঁর ভয় ছিল ‘কেউ ভয়ে বা অতিরিক্ত উৎসাহে’ না আবার প্রাণীটির ক্ষতি করে ফেলে!’ 

মেয়রের বার্তাটি মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে রাত সাড়ে ১০টায় একটি ফেসবুক পোস্টে গ্র্যান্দো জানান, সিংহটিকে চেতনাহীন এবং বন্দী করা হয়েছে। এটিকে এখন সার্কাসের কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। উদ্বেগের সময়টিতে সাহায্য করায় জরুরি পরিষেবা ও স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। 

‘আমি আশা করি, ঘটনাটি বিবেককে আলোড়িত করতে পারে এবং আমরা অবশেষে সার্কাসে প্রাণীদের শোষণের বিষয়টির অবসান ঘটাতে পারি।’ যোগ করেন মেয়র। 

ভ্যাসালো জানান, কিমবার ওপর কেবল হালকা ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করা হয় এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘুম থেকে উঠে যায়। তখন পশু চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে কয়েক ঘণ্টার এই ঘটনাপ্রবাহে সিংহটির ওপর কোনো খারাপ প্রভাব পড়েনি। 

উল্লেখ্য, ভ্যাসালোর পরিবারই এই সার্কাস চালায়। ভ্যাসালো জানান, সিংহটি পালিয়ে যাওয়ার পরে তাঁরা খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তাঁর বিশ্বাস এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। কারণ সিংহটি পালিয়ে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে তিনি নিজে খাঁচা পরীক্ষা করেছিলেন এবং সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। 

তবে কোনো ধরনের নাশকতার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান ভ্যাসালো। তিনি বলেন, ঘটনাটির একটি তদন্ত চলছে। তবে এমন কিছু আগে কখনো ঘটেনি এবং এটি খুব অদ্ভুত বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

কিমবা তার দুই ভাই জিউস ও ইভান এবং বোন মায়ার সঙ্গে বন্দী অবস্থায় জন্ম নেয় এবং বেড়ে ওঠে। ঘটনাটি শহরের প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। তাঁরা মনে করেন, এভাবে বন্যপ্রাণী রাখাটা নিষ্ঠুরতা। 

ইতিমধ্যে ইউরোপের ২০টি দেশ সার্কাসে বন্যপ্রাণী ব্যবহার নিষিদ্ধ কিংবা এতে কঠোরতা আরোপ করেছে। তবে ইতালি এই দেশগুলোর মধ্যে নেই। প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা লেভের সূত্রে জানা যায়, দেশটিতে এ বিষয়ে একটি আইনের খসড়া উত্থাপন করা হয়েছে, কিন্তু ২০২৪ সালের জন্য এটি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। লেভের অনুমান, ইতালিজুড়ে বিভিন্ন সার্কাসে ২ হাজারের কিছু কম প্রাণী আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত